কি করে বুঝবেন সঙ্গী চ্যাটে মিথ্যা বলছে by নাজমুল আহসান
আপনি
হয়তো চ্যাট-কথোপকথনে মজে আছেন। হঠাৎ পর্দার অপর পাশে বিশাল নীরবতা। আপনার
চ্যাটসঙ্গী প্রত্যুত্তর দেয়ার আগে বিশাল বিরতি নিচ্ছে। এর কারণ কি? হয়তো সে
কোন ফোন কল পেয়েছে। অথবা কোন কাজে মনোসংযোগচ্যুতি ঘটেছে। কিংবা, তার
আঙুলের হয়তো কিছুটা বিশ্রামের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আপনার পাঠানো সর্বশেষ
বার্তার কিছু যদি অপর ব্যক্তির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবার সম্ভাবনা
থাকে, তাহলে এ বিশাল বিরতির অর্থ হতে পারে অন্য কিছু। হয়তো আপনার পাঠানো
বার্তার প্রত্যুত্তরে সময় নিয়ে মিথ্যা বলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আপনার
চ্যাটসঙ্গী। এক গবেষণার বরাত দিয়ে এমনটিই জানিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন।
ব্রিগহ্যাম ইয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা শতাধিক কলেজ শিক্ষার্থীর মধ্যে
একটি গবেষণা চালিয়েছেন। গবেষণার অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের ৩০টি স্বয়ংক্রিয়
বা অপর ব্যক্তির পাঠানো প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হলো। পৃথকভাবে এদের
অর্ধেককে বলা হলো, প্রত্যুত্তরে তারা যাতে মিথ্যা বলে। দেখা গেল,
প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে ওই শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি
সময় লেগেছে। এছাড়া তাদের উত্তরে কাটাছেঁড়া অর্থাৎ সমপাদনার হারও ছিল বেশি।
গবেষকদের মতে, মানুষ অপরজনের মিথ্যা ধরতে পারে ৫৪ শতাংশ ক্ষেত্রে।
সাধারণত, অপরজনের চোখমুখের কিছু আচরণের কারণে মানুষ মিথ্যা ধরতে পারে।
কিন্তু অনলাইনে বা ফোনে যখন আপনি চ্যাট করেন, তখন এ বিষয়গুলো আপনি দেখতে
পারবেন না। চ্যাটের সময় আপনি অপরজনের গলার স্বরও শুনতে পান না, চেহারার
অভিব্যক্তিও দেখতে পান না। ফলে অনলাইনে মিথ্যা উত্তর দেয়া সহজ। ২০১১ সালের
একটি গবেষণায়ও দেখা গেছে, মানুষ অপরজনের সঙ্গে মুখোমুখি বা ভিডিও
কনফারেন্সে যতটা মিথ্যা বলে, অনলাইনে তার চেয়ে বেশি মিথ্যা বলে এ কারণেই।
কিন্তু এরপরও কিছু কৌশল অনুসরণ ও লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করলে কিছুটা হলেও চ্যাটে
অপরজনের মিথ্যা ধরা সম্ভব। চ্যাটে মিথ্যা বলার কিছু ধরন রয়েছে, যেমন:
উত্তর দেয়ার প্রবাহে বিলম্ব বা বিরতি। এখনও এ গবেষণা প্রাথমিক স্তরে রয়েছে।
কিন্তু গবেষকদের দাবি, তারা এ ব্যাপারে বেশ মজার কিছু তথ্য পেয়েছেন। কিছু
মানুষের ক্ষেত্রে অনলাইনে মিথ্যা বলার লক্ষণ চিহ্নিত করার কাজটি বেশ কঠিন।
সে কাজটিই এখন শুরু করেছেন ব্রিগহ্যাম ইয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তাই
যারা প্রিয়জনের সঙ্গে অনলাইনে বিভিন্ন মিথ্যা বলে এতদিন পার পেয়েছেন, তারা
সাবধান! আর যারা কাউকে সন্দেহ করেন তাদের জন্য রয়েছে আলাদা পরামর্শ।
অনলাইনে অপরজনের চোখের পর্দার অতিরিক্ত নাড়াচাড়া, ঢোক গেলা, চোখেমুখে
অস্থিরতা দেখার সুযোগ আপনার নেই। সেহেতু মিথ্যা ধরতে আপনি হাতের কাছে রাখতে
পারেন স্টপওয়াচ। দেখুন পর্দার ওপাশের ব্যক্তিটি উত্তর দিতে অতিরিক্ত সময়
নিচ্ছে কিনা। স্টপওয়াচ থেকে চোখ কিন্তু একদমই সরানো যাবে না!
No comments