চার ধর্মানুসারীদের যৌথ ইফতার

ইফতারের টেবিলে মিলিত হলেন তারা। মুসলিম, খ্রিষ্টান, হিন্দু আর শিখ। এ চার ধর্মের বিজ্ঞজন আর অনুসারীরা। শুক্রবার ব্যতিক্রমী এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়ে দুবাইয়ে। খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অভিনব এ উদ্যোগটি। বিশেষ ওই ইফতার আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন চার ধর্মের ধর্মীয় নেতারা। তারা প্রত্যেকেই ইন্টারফেইথ ডায়ালগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং যুদ্ধ বিলোপের একমাত্র উপায় হলো নবীন সম্প্রদায়কে ধর্মীয় চর্চা এবং দৃষ্টিভঙ্গির মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে শিক্ষাদান করা। ব্যতিক্রমধর্মী এ ইফতার ও নৈশভোজ আয়োজিত হয় দুবাইয়ের আল কৌজ এলাকার আল মানার কমিউনিটি অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারে। এর লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে রমজান মাসে ইতিবাচক বোঝাপড়া প্রতিষ্ঠা করা। আল মানার ইসলামিক সেন্টারটি পরিচালিত হয় শেইখা হিন্দ বিনতে মাখতুম বিন জুমা আল মাখতুমের পৃষ্ঠপোষকতায়। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী, ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাখতুমের স্ত্রী। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধর্মানুসারীদের মধ্যে ইসলাম নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারণা করে। বিভিন্ন  কনফারেন্স, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, লেকচার এবং ইন্টারফেইল আলোচনা আয়োজনের মাধ্যমে তারা এটা করে থাকেন। অনুষ্ঠানে ইসলাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক এক বক্তা আহমেদ হামেদ বলেন, শুধুমাত্র আলোচনাই পারে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং পার্থক্য দূর করতে। ভবিষ্যতে আরও মানুষের অংশগ্রহণে  আরও বড় আকারের অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানটি শুরু হয় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে। দুবাই সরকারের ইসলাম এবং দাতব্য কর্মকাণ্ড বিষয়ক গ্রান্ড মুফতি ড. মোহাম্মদ আল কুবাইসি সহিষ্ণুতা এবং বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক ও  ইসলামের শিক্ষা নিয়ে কথা বলেন। শান্তিপূর্ণ একটি সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় হযরম মোহাম্মদ (স.)- এর অবদানের নানা ঘটনা তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া ক্রাইস্ট চার্চের যাজক রেভারেন্ড টাইম হিনি খালিজ টাইমসকে বলেন, যে কোন ধর্মই শান্তির প্রচারণা করতে পারে কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, কাজ দিয়ে মানুষকে যাচাই করা হয় কথা দিয়ে নয়। সেই অর্থে এ ধরনের একটি আয়োজন শান্তি ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতা প্রচারণার ক্ষেত্রে খুবই বাস্তবসম্মত ও কার্যকর উপায়। দুবাইয়ের শিব ও কৃষ্ণ মন্দিরের প্রধান প্রকাশ ছাব্রিয়া বলেন, এমন আলোচনা শান্তির প্রচারণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। গুরু নানক দরবারের চেয়ারম্যান সুরেন্দর সিং কান্ধারি বলেন, আজকের অনুষ্ঠান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা অন্যান্য ধর্মের প্রতি উদার দৃষ্টিভঙ্গি ও সহায়তার মানসিকতা ছড়িয়ে দেয়ার এটা শুরু। এতে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে।

No comments

Powered by Blogger.