পারলেন না ব্যাটসম্যানরা by তারেক মাহমুদ
স্পিন
দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের বশে আনার পরিকল্পনা কিছুটা হলেও সফল
হলো। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকারও যে পাল্টা স্পিন আছে! আছে ক্ষুরধার পেস
বোলিং। উইকেটের গতিমন্থরতাও যাদের গতির ঝড় তোলায় বাধা হতে পারে না।
পেস-স্পিনের সেই যুগল আক্রমণের সামনেই বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পর
পাকিস্তান আর ভারত সিরিজটাও স্বপ্নের মতো কাটানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকার
বিপক্ষে সিরিজ শুরুর টি-টোয়েন্টি যেন মাটিতে নেমে আসা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও জয় দিয়ে সিরিজ শুরু হবে, ফ্যাফ ডু প্লেসি-জেপি ডুমিনিরা মাশরাফি-সাকিবদের সামনে কাঁপতে থাকবেন—এমন আশা বাংলাদেশ শিবিরেও ছিল না। বরং সিরিজ-পূর্ব কথাবার্তায় বারবারই মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে শক্তিমত্তায় প্রোটিয়ারা কতটা এগিয়ে। ডু প্লেসির দল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। এই উইকেটে ১৪৮-ই যে অনেক বড় স্কোর, ৭ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশের ৯৬ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ায়ও সেটিরই প্রমাণ।
অথচ শুরুতে কী চমকটাই না দিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা! সেই চমকে চমকিত এবি ডি ভিলিয়ার্সকে ফিরে যেতে হলো ইনিংসের প্রথম ওভারেই। ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কোচ-অধিনায়কের কথা শুনে ডি ভিলিয়ার্স ভেবে থাকতে পারেন, বাংলাদেশ শিবিরে আসলেই তাঁর জন্য কোনো পরিকল্পনা নেই। ব্যাট তাঁর পরাক্রমশালী, অপ্রতিরোধ্য। ডি ভিলিয়ার্সকে আটকানোর সাধ্য কই বাংলাদেশের! ভুলটা ভাঙল মাঠে। টিকলেন মাত্র ৬ বল, তাতে ‘ভয়’ ছড়াতে ব্যর্থ ডি ভিলিয়ার্স।
চমকটা বাংলাদেশ অধিনায়ক দিয়েছেন নতুন বলে আরাফাত সানি আর নাসির হোসেনকে এনে। নাসিরকে অবশ্য পেলেন না ডি ভিলিয়ার্স। সানির করা ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে কাভারে ক্যাচ হয়ে গেলেন মাশরাফির, অর্ধেক ভরা গ্যালারিতে আনন্দের ঢেউ তুলে ফিরলেন ড্রেসিংরুমে। আউট হওয়ার আগের বলে ২ রান নিলেও শুরুর চার বলেই বোঝা যাচ্ছিল তাঁর অস্বস্তি। সানি-নাসির মিলে ৪ ওভার করার পর সাকিব আল হাসান এলেন ইনিংসের পঞ্চম ওভারে। ততক্ষণে ৩১ রানে ২ উইকেট নেই।
তবে বাংলাদেশে যে দলটা শুধু ডি ভিলিয়ার্সের ওপর নির্ভর করে আসেনি, সেটা জানিয়ে দিলেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ডু প্লেসি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করেছেন। জোহানেসবার্গ থেকে সেই ফর্মটা ঢাকায় নিয়ে এসে কাল অপরাজিত ৭৯। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ১১ বাউন্ডারির ৮টিই তাঁর ব্যাট থেকে। ৯০ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর ৫৮ রানের পঞ্চম উইকেট জুটিতে অধিনায়কের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত সংগত করে গেছেন রাইলি রুশো (৩১)। ইনিংসের তিন ছক্কার দুটিই তাঁর। প্রথমটি নাসিরকে তাঁর মাথার ওপর দিয়ে, মুস্তাফিজুরের বলে পরেরটি উড়ে গেল লং অনের ওপর দিয়ে।
বাংলাদেশের বোলারদের সাফল্য বলতে সানির ১৯ রানে ২ উইকেট। মন্থর উইকেটে তাঁর বলই যা একটু সমস্যায় ফেলেছে প্রোটিয়াদের। সাকিবকেও মনে হয়েছে সাবলীল। কিন্তু প্রায় এক বছর পর জাতীয় দলে ফেরা অফ স্পিনার সোহাগ গাজীকে সম্ভবত নতুন অ্যাকশনে আরেকটু ধাতস্থ হতে হবে। ২ ওভার বল করে ‘ডট’ মাত্র দুটি, রান দিয়েছেন ১৬।
সীমিত ওভারের ক্রিকেট ইদানীং যে রকম ধুমধাড়াক্কা হয়ে উঠেছে, তাতে ১৪৮ রান কমই মনে হতে পারে। কিন্তু শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে কাল এই রান টপকে জেতাও কঠিন ছিল। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে রুশো জানালেন, ১৪৮ রান করে নিজেদের নিরাপদই ভাবছিলেন তাঁরা। বাংলাদেশের ব্যাটিং শেষ পর্যন্ত সে ধারণাটাকেই সত্যি প্রমাণ করল। এলোমেলো শট খেলে আউট হওয়ার শুরুটা করলেন ওপেনার তামিম ইকবাল। বাকিরাও যে প্রায় একই রকম ভুলে উইকেট বিসর্জন দিয়েছেন, সেটা বোঝা যাচ্ছে ব্যাটসম্যানদের আউটের ধরনেই। ১০ জনের মধ্যে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন আটজনই। সাকিব আর লিটনের লড়াইয়েও তাই রানটা এক শ পার হলো না। বাংলাদেশের স্পিনের বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার ছিল পেস-স্পিনের যুগলবন্দী। দুই স্পিনার অ্যারন ফাঙ্গিসো ও জেপি ডুমিনি নিয়েছেন তিন উইকেট। বাকি সাত ব্যাটসম্যানের ছয়জনই আউট হয়েছেন পেসারদের বলে।
হারের কারণটা তো বোঝাই যাচ্ছে। ম্যাচ শেষে সেটাকে আরও পরিষ্কার করে দিলেন অধিনায়ক মাশরাফি, ‘ওরা আমাদের স্পিনারদের যেভাবে সামলেছে, আমরা সেটা পারিনি।’
দেখা যাক, এই শিক্ষা আগামীকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে কাজে আসে কি না!
দ. আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৪৮/৪
বাংলাদেশ: ১৮.৫ ওভারে ৯৬
ফল: দ. আফ্রিকা ৫২ রানে জয়ী
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও জয় দিয়ে সিরিজ শুরু হবে, ফ্যাফ ডু প্লেসি-জেপি ডুমিনিরা মাশরাফি-সাকিবদের সামনে কাঁপতে থাকবেন—এমন আশা বাংলাদেশ শিবিরেও ছিল না। বরং সিরিজ-পূর্ব কথাবার্তায় বারবারই মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে শক্তিমত্তায় প্রোটিয়ারা কতটা এগিয়ে। ডু প্লেসির দল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। এই উইকেটে ১৪৮-ই যে অনেক বড় স্কোর, ৭ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশের ৯৬ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ায়ও সেটিরই প্রমাণ।
অথচ শুরুতে কী চমকটাই না দিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা! সেই চমকে চমকিত এবি ডি ভিলিয়ার্সকে ফিরে যেতে হলো ইনিংসের প্রথম ওভারেই। ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কোচ-অধিনায়কের কথা শুনে ডি ভিলিয়ার্স ভেবে থাকতে পারেন, বাংলাদেশ শিবিরে আসলেই তাঁর জন্য কোনো পরিকল্পনা নেই। ব্যাট তাঁর পরাক্রমশালী, অপ্রতিরোধ্য। ডি ভিলিয়ার্সকে আটকানোর সাধ্য কই বাংলাদেশের! ভুলটা ভাঙল মাঠে। টিকলেন মাত্র ৬ বল, তাতে ‘ভয়’ ছড়াতে ব্যর্থ ডি ভিলিয়ার্স।
চমকটা বাংলাদেশ অধিনায়ক দিয়েছেন নতুন বলে আরাফাত সানি আর নাসির হোসেনকে এনে। নাসিরকে অবশ্য পেলেন না ডি ভিলিয়ার্স। সানির করা ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে কাভারে ক্যাচ হয়ে গেলেন মাশরাফির, অর্ধেক ভরা গ্যালারিতে আনন্দের ঢেউ তুলে ফিরলেন ড্রেসিংরুমে। আউট হওয়ার আগের বলে ২ রান নিলেও শুরুর চার বলেই বোঝা যাচ্ছিল তাঁর অস্বস্তি। সানি-নাসির মিলে ৪ ওভার করার পর সাকিব আল হাসান এলেন ইনিংসের পঞ্চম ওভারে। ততক্ষণে ৩১ রানে ২ উইকেট নেই।
তবে বাংলাদেশে যে দলটা শুধু ডি ভিলিয়ার্সের ওপর নির্ভর করে আসেনি, সেটা জানিয়ে দিলেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ডু প্লেসি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করেছেন। জোহানেসবার্গ থেকে সেই ফর্মটা ঢাকায় নিয়ে এসে কাল অপরাজিত ৭৯। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ১১ বাউন্ডারির ৮টিই তাঁর ব্যাট থেকে। ৯০ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর ৫৮ রানের পঞ্চম উইকেট জুটিতে অধিনায়কের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত সংগত করে গেছেন রাইলি রুশো (৩১)। ইনিংসের তিন ছক্কার দুটিই তাঁর। প্রথমটি নাসিরকে তাঁর মাথার ওপর দিয়ে, মুস্তাফিজুরের বলে পরেরটি উড়ে গেল লং অনের ওপর দিয়ে।
বাংলাদেশের বোলারদের সাফল্য বলতে সানির ১৯ রানে ২ উইকেট। মন্থর উইকেটে তাঁর বলই যা একটু সমস্যায় ফেলেছে প্রোটিয়াদের। সাকিবকেও মনে হয়েছে সাবলীল। কিন্তু প্রায় এক বছর পর জাতীয় দলে ফেরা অফ স্পিনার সোহাগ গাজীকে সম্ভবত নতুন অ্যাকশনে আরেকটু ধাতস্থ হতে হবে। ২ ওভার বল করে ‘ডট’ মাত্র দুটি, রান দিয়েছেন ১৬।
সীমিত ওভারের ক্রিকেট ইদানীং যে রকম ধুমধাড়াক্কা হয়ে উঠেছে, তাতে ১৪৮ রান কমই মনে হতে পারে। কিন্তু শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে কাল এই রান টপকে জেতাও কঠিন ছিল। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে রুশো জানালেন, ১৪৮ রান করে নিজেদের নিরাপদই ভাবছিলেন তাঁরা। বাংলাদেশের ব্যাটিং শেষ পর্যন্ত সে ধারণাটাকেই সত্যি প্রমাণ করল। এলোমেলো শট খেলে আউট হওয়ার শুরুটা করলেন ওপেনার তামিম ইকবাল। বাকিরাও যে প্রায় একই রকম ভুলে উইকেট বিসর্জন দিয়েছেন, সেটা বোঝা যাচ্ছে ব্যাটসম্যানদের আউটের ধরনেই। ১০ জনের মধ্যে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন আটজনই। সাকিব আর লিটনের লড়াইয়েও তাই রানটা এক শ পার হলো না। বাংলাদেশের স্পিনের বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার ছিল পেস-স্পিনের যুগলবন্দী। দুই স্পিনার অ্যারন ফাঙ্গিসো ও জেপি ডুমিনি নিয়েছেন তিন উইকেট। বাকি সাত ব্যাটসম্যানের ছয়জনই আউট হয়েছেন পেসারদের বলে।
হারের কারণটা তো বোঝাই যাচ্ছে। ম্যাচ শেষে সেটাকে আরও পরিষ্কার করে দিলেন অধিনায়ক মাশরাফি, ‘ওরা আমাদের স্পিনারদের যেভাবে সামলেছে, আমরা সেটা পারিনি।’
দেখা যাক, এই শিক্ষা আগামীকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে কাজে আসে কি না!
দ. আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৪৮/৪
বাংলাদেশ: ১৮.৫ ওভারে ৯৬
ফল: দ. আফ্রিকা ৫২ রানে জয়ী
No comments