স্মরণ-বিচিত্রার শাহাদত চৌধুরী by জাহাঙ্গীর হোসেন অরুণ
অস্ত্র খুব ছোটও হয়। যার হাতে যায় তার সাহস হয়ে যায় বড়। একবার অস্ত্র ধরলে পরে খালি হাতে থাকা দায়। ১৯৭১ সালে ঢাকায় ক্র্যাক প্লাটুন নামের গেরিলা বাহিনীতে যোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। সেক্টর-২-এর কমান্ডার জেনারেল খালেদ মোশাররফের সহযোগী হয়ে যুদ্ধ করেছেন।
হাটখোলায় তাঁদের বাড়িটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের একটা গোপন আস্তানা। মুক্তিকামী বাঙালিরা হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ যুদ্ধ করল। দেশ স্বাধীন হলো। অস্ত্র জমা দেওয়া হলো। কিন্তু হাতে তো একটা অস্ত্র চাই, কী নেওয়া যায়? দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সবচেয়ে বড় অস্ত্রটাই হাতে ধরলেন। কলম হাতে নিয়ে দেশের কথা বলার পথকে জীবিকা হিসেবে বেছে নিলেন। তাঁর নাম শাহাদত চৌধুরী। বিচিত্রার শাহাদত চৌধুরী।
জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৮ জুলাই। বাবা ছিলেন জেলা জজ আবুল হক চৌধুরী, আর মা জাহানারা চৌধুরী। ভাইবোন ছিলেন মোট ১২ জন। ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। কচিকাঁচার আসরের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা গ্র্যাজুয়েট হাই স্কুলে। পরে ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টসে পড়াশোনা করেন পেইন্টিংয়ে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর হিসেবে যোগদান করলেন সাপ্তাহিক বিচিত্রায় ১৯৭২ সালে। ঘরে ঘরে যে বিচিত্রা এত জনপ্রিয়তা পায়, সেই বিচিত্রার পেছনে বেশির ভাগ অবদান রাখেন শাহাদত চৌধুরী, যদিও সম্পাদক হিসেবে নাম লেখা হতো কবি শামসুর রাহমানের। কারণ বিচিত্রা ছিল 'দৈনিক বাংলা' পত্রিকার একটা সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন। আর দৈনিক বাংলার সম্পাদক ছিলেন কবি শামসুর রাহমান। অবশেষে তিনি বিচিত্রার সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় তিনি হাল ধরে রাখেন বিচিত্রার। ১৯৯৭ সালে অবশ্য তৎকালীন সরকার তা বন্ধ করে দেয়।
বিচিত্রার পর তিনি ১৯৯৮ সালে 'সাপ্তাহিক ২০০০' নামের একটি সাপ্তাহিক আর 'পাক্ষিক আনন্দধারা' নামে একটি পাক্ষিক ম্যাগাজিন চালু করেন। এই দুটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। তবে এ জনপ্রিয়তার ঢেউ বিচিত্রার জনপ্রিয়তার কাছে যেতে পারেনি।
২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি বারডেমের কার্ডিয়াক সেন্টারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ৬২ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি দেশকে অনেক দিয়েছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব তাঁর কাজ থেকে শেখা এবং তাঁকে মনে রেখে তাঁর কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো।
জাহাঙ্গীর হোসেন অরুণ
জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৮ জুলাই। বাবা ছিলেন জেলা জজ আবুল হক চৌধুরী, আর মা জাহানারা চৌধুরী। ভাইবোন ছিলেন মোট ১২ জন। ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। কচিকাঁচার আসরের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা গ্র্যাজুয়েট হাই স্কুলে। পরে ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টসে পড়াশোনা করেন পেইন্টিংয়ে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর হিসেবে যোগদান করলেন সাপ্তাহিক বিচিত্রায় ১৯৭২ সালে। ঘরে ঘরে যে বিচিত্রা এত জনপ্রিয়তা পায়, সেই বিচিত্রার পেছনে বেশির ভাগ অবদান রাখেন শাহাদত চৌধুরী, যদিও সম্পাদক হিসেবে নাম লেখা হতো কবি শামসুর রাহমানের। কারণ বিচিত্রা ছিল 'দৈনিক বাংলা' পত্রিকার একটা সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন। আর দৈনিক বাংলার সম্পাদক ছিলেন কবি শামসুর রাহমান। অবশেষে তিনি বিচিত্রার সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় তিনি হাল ধরে রাখেন বিচিত্রার। ১৯৯৭ সালে অবশ্য তৎকালীন সরকার তা বন্ধ করে দেয়।
বিচিত্রার পর তিনি ১৯৯৮ সালে 'সাপ্তাহিক ২০০০' নামের একটি সাপ্তাহিক আর 'পাক্ষিক আনন্দধারা' নামে একটি পাক্ষিক ম্যাগাজিন চালু করেন। এই দুটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। তবে এ জনপ্রিয়তার ঢেউ বিচিত্রার জনপ্রিয়তার কাছে যেতে পারেনি।
২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি বারডেমের কার্ডিয়াক সেন্টারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ৬২ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি দেশকে অনেক দিয়েছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব তাঁর কাজ থেকে শেখা এবং তাঁকে মনে রেখে তাঁর কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো।
জাহাঙ্গীর হোসেন অরুণ
No comments