আশুলিয়া অস্থির, পোশাকশ্রমিকেরা আগুন-আতঙ্কে
আগুনে ১১১ শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে গতকাল বুধবারও অস্থির ছিল আশুলিয়া। শ্রমিকেরা খণ্ড খণ্ড মিছিল, রাস্তা অবরোধ, ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষও হয় শ্রমিকদের।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গতকাল বুধবার সকালে নরসিংহপুর এলাকার হা-মীম গ্রুপের একটি কারখানায় আগুন-আতঙ্ক থেকে সৃষ্ট বিক্ষোভ। কারখানাটির একটি টিউবলাইট থেকে ধোঁয়া বের হলে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে আগুন-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকদের দাবি, অনেক শ্রমিক একসঙ্গে হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এ সময় ফটক বন্ধ দেখে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে কারখানা থেকে বের হয়ে এসে রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাজরীন ফ্যাশনসের ঘটনার পর এখন পুরো তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যেই আগুন-আতঙ্ক কাজ করছে। সামান্য ধোঁয়া বা গুজবেও তাঁরা আতঙ্কিত ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। গত তিন দিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাঁচটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ও আগুনের গুজব ছড়িয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে। এতে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহতও হয়েছেন অনেকে।
হা-মীম গ্রুপের কারখানায় আগুন-আতঙ্কে সৃষ্ট পরিস্থিতির পর ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ডিইপিজেড) বাইরে আশুলিয়ার সব পোশাক কারখানা গতকাল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। ফলে রাস্তার বিক্ষোভে তাঁদের অংশগ্রহণ বেড়ে যায়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কাজের সময় প্রত্যেক তলার ফটক খোলা রাখার পাশাপাশি তাজরীনের মালিককে গ্রেপ্তার ও কারখানাগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান।
তাজরীন লিমিটেডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১১ জনের প্রাণহানির ঘটনায় শোক পালনের জন্য গত মঙ্গলবার আশুলিয়ার সব কারখানা বন্ধ ছিল। গতকাল শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
আশুলিয়া থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকাল সোয়া আটটার দিকে আশুলিয়ার ইউনিক এলাকার জাপান-বাংলা নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা কারখানা থেকে বের হয়ে পাশের হাসমত উল্লাহ, গুডলাক, পুলম্যান, আরবা, বনানীসহ বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় বাইরে থেকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করেন। এতে ওই সব কারখানায়ও ছুটি ঘোষণা করা হয়। ছুটি পেয়ে ওই সব কারখানার শ্রমিকেরা একজোট হয়ে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার হা-মীম গ্রুপের একটি কারখানার আটতলায় জেনারেটরের লাইন পরিবর্তন করার সময় একটি টিউবলাইট থেকে ধোঁয়া বের হলে শ্রমিকদের মধ্যে আগুন-আতঙ্ক ছড়ায়। কয়েক হাজার শ্রমিক হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁরা কয়েকটি কলাপসিবল গেটে তালা দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে নিচে নেমে কারখানাসংলগ্ন আবদুল্লাপুর-বাইপাইল সড়কে মিছিল করার চেষ্টা করেন। পুলিশ ধাওয়া করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রমিকেরা নরসিংহপুরের শারমীন গ্রুপের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ ধাওয়া করলে শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর হামলা চালান। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে।
পৌনে ১১টার দিকে শ্রমিকদের একটি বিশাল মিছিল বের হয় আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের ইউনিক এলাকা থেকে। মিছিলটি বাইপাইলের দিকে কিছুদূর যাওয়ার পর পুলিশ তা ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সোয়া ১১টার দিকে শ্রমিকেরা আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় আজমত গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার সামনে দুটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেন। মোটরসাইকেল দুটি ওই প্রতিষ্ঠানেরই দুই কর্মকর্তার বলে জানা গেছে।
দুপুর ১২টার দিকে ইউনিক এলাকায় একদল শ্রমিক জড়ো হয়ে কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর চালান। পুলিশ ধাওয়া করলে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, লাঠিপেটা করে। প্রায় আধা ঘণ্টা সংঘর্ষ চলার পর শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েক শ শ্রমিক জিরাবো এলাকায় জড়ো হয়ে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পর বেলা পৌনে একটার দিকে পুলিশ প্রহরায় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকেরা বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। আগুনে পুড়ে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনসের সামনেও দফায় দফায় মিছিল হয়েছে। মিছিলের ফাঁকে ফাঁকে শ্রমিকেরা সড়কে গিয়ে কিছু যানবাহন ভাঙচুর করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
শ্রমিকেরা জানান, কাজের সময় কারখানার প্রতি তলার ফটকগুলো (কেঁচিগেটগুলো) বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ফটকগুলো খুলে না দিয়ে বরং শ্রমিকদের ভেতরে আটকে রাখার চেষ্টা করেন নিরপত্তাকর্মীরা। এ কারণে দুর্ঘটনায় শুধু শ্রমিকেরাই প্রাণ হারান। কর্মকর্তারা নিরাপদে বের হয়ে যান। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে তাঁরা কাজ করবেন না বলেও জানান।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম বলেন, শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের পর কারখানাগুলো ছুটি দেওয়া হয়েছে।
পোশাকশিল্পে আগুন-আতঙ্ক: গতকাল রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে একটি পোশাক কারখানায় আগুন-আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে আটজন আহত হয়েছেন।
এলিফ্যান্ট রোড পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, ২/বি এলিফ্যান্ট রোডে নাসা গ্রুপের ইস্টার্ন লাইফ নিটওয়্যারের ছয়তলা থেকে সামান্য ধোঁয়া বের হলে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। এ সময় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আটজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আগুন-আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে চট্টগ্রাম ইপিজেডের একটি কারখানায়ও আহত হয়েছেন ৪৫ জন। গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে ইপিজেডের সেকশান-৭ নামে পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ৪৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কারখানায় মোটরের কয়েল পুড়ে ধোঁয়া বের হলে আগুন-আতঙ্ক ছড়ায়।
এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় গিলড্যান স্ফিল বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি কারখানার রক্ষণাবেক্ষণ কক্ষে আগুন ধরে। এই খবর ছড়ালে কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিকসহ আশপাশের আরও কয়েকটি কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক কারখানার সামনে ভিড় করেন। তাঁরা ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। অগ্নিকাণ্ডে সুষ্ঠু তদন্তসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানান। ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরা আধা ঘণ্টার মধ্যে আগুন নেভান।
গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সাভারের হেমায়েতপুরে ব্যাবিলন গ্রুপের ব্যাবিলন ক্যাজুয়াল লিমিটেডের ছয়তলায় একটি বাল্ব থেকে ধোঁয়া বের হয়। এ সময় ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠলে শ্রমিকেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বের হওয়ার চেষ্টা চালান। নিরাপত্তাকর্মীরা কলাপসিবল ফটক বন্ধ করে দেন। পরে শ্রমিকদের চাপের মুখে ফটক খুলেন তাঁরা। এখানেও হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হন। এঁদের সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাজরীন ফ্যাশনসের ঘটনার পর এখন পুরো তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যেই আগুন-আতঙ্ক কাজ করছে। সামান্য ধোঁয়া বা গুজবেও তাঁরা আতঙ্কিত ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। গত তিন দিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাঁচটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ও আগুনের গুজব ছড়িয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে। এতে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহতও হয়েছেন অনেকে।
হা-মীম গ্রুপের কারখানায় আগুন-আতঙ্কে সৃষ্ট পরিস্থিতির পর ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ডিইপিজেড) বাইরে আশুলিয়ার সব পোশাক কারখানা গতকাল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। ফলে রাস্তার বিক্ষোভে তাঁদের অংশগ্রহণ বেড়ে যায়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কাজের সময় প্রত্যেক তলার ফটক খোলা রাখার পাশাপাশি তাজরীনের মালিককে গ্রেপ্তার ও কারখানাগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান।
তাজরীন লিমিটেডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১১ জনের প্রাণহানির ঘটনায় শোক পালনের জন্য গত মঙ্গলবার আশুলিয়ার সব কারখানা বন্ধ ছিল। গতকাল শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
আশুলিয়া থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকাল সোয়া আটটার দিকে আশুলিয়ার ইউনিক এলাকার জাপান-বাংলা নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা কারখানা থেকে বের হয়ে পাশের হাসমত উল্লাহ, গুডলাক, পুলম্যান, আরবা, বনানীসহ বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় বাইরে থেকে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করেন। এতে ওই সব কারখানায়ও ছুটি ঘোষণা করা হয়। ছুটি পেয়ে ওই সব কারখানার শ্রমিকেরা একজোট হয়ে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার হা-মীম গ্রুপের একটি কারখানার আটতলায় জেনারেটরের লাইন পরিবর্তন করার সময় একটি টিউবলাইট থেকে ধোঁয়া বের হলে শ্রমিকদের মধ্যে আগুন-আতঙ্ক ছড়ায়। কয়েক হাজার শ্রমিক হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁরা কয়েকটি কলাপসিবল গেটে তালা দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে নিচে নেমে কারখানাসংলগ্ন আবদুল্লাপুর-বাইপাইল সড়কে মিছিল করার চেষ্টা করেন। পুলিশ ধাওয়া করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রমিকেরা নরসিংহপুরের শারমীন গ্রুপের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ ধাওয়া করলে শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর হামলা চালান। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে।
পৌনে ১১টার দিকে শ্রমিকদের একটি বিশাল মিছিল বের হয় আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের ইউনিক এলাকা থেকে। মিছিলটি বাইপাইলের দিকে কিছুদূর যাওয়ার পর পুলিশ তা ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সোয়া ১১টার দিকে শ্রমিকেরা আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় আজমত গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার সামনে দুটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেন। মোটরসাইকেল দুটি ওই প্রতিষ্ঠানেরই দুই কর্মকর্তার বলে জানা গেছে।
দুপুর ১২টার দিকে ইউনিক এলাকায় একদল শ্রমিক জড়ো হয়ে কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর চালান। পুলিশ ধাওয়া করলে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, লাঠিপেটা করে। প্রায় আধা ঘণ্টা সংঘর্ষ চলার পর শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েক শ শ্রমিক জিরাবো এলাকায় জড়ো হয়ে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পর বেলা পৌনে একটার দিকে পুলিশ প্রহরায় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকেরা বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। আগুনে পুড়ে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনসের সামনেও দফায় দফায় মিছিল হয়েছে। মিছিলের ফাঁকে ফাঁকে শ্রমিকেরা সড়কে গিয়ে কিছু যানবাহন ভাঙচুর করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
শ্রমিকেরা জানান, কাজের সময় কারখানার প্রতি তলার ফটকগুলো (কেঁচিগেটগুলো) বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ফটকগুলো খুলে না দিয়ে বরং শ্রমিকদের ভেতরে আটকে রাখার চেষ্টা করেন নিরপত্তাকর্মীরা। এ কারণে দুর্ঘটনায় শুধু শ্রমিকেরাই প্রাণ হারান। কর্মকর্তারা নিরাপদে বের হয়ে যান। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে তাঁরা কাজ করবেন না বলেও জানান।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম বলেন, শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের পর কারখানাগুলো ছুটি দেওয়া হয়েছে।
পোশাকশিল্পে আগুন-আতঙ্ক: গতকাল রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে একটি পোশাক কারখানায় আগুন-আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে আটজন আহত হয়েছেন।
এলিফ্যান্ট রোড পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, ২/বি এলিফ্যান্ট রোডে নাসা গ্রুপের ইস্টার্ন লাইফ নিটওয়্যারের ছয়তলা থেকে সামান্য ধোঁয়া বের হলে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। এ সময় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আটজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আগুন-আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে চট্টগ্রাম ইপিজেডের একটি কারখানায়ও আহত হয়েছেন ৪৫ জন। গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে ইপিজেডের সেকশান-৭ নামে পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ৪৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কারখানায় মোটরের কয়েল পুড়ে ধোঁয়া বের হলে আগুন-আতঙ্ক ছড়ায়।
এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় গিলড্যান স্ফিল বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি কারখানার রক্ষণাবেক্ষণ কক্ষে আগুন ধরে। এই খবর ছড়ালে কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিকসহ আশপাশের আরও কয়েকটি কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক কারখানার সামনে ভিড় করেন। তাঁরা ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। অগ্নিকাণ্ডে সুষ্ঠু তদন্তসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানান। ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরা আধা ঘণ্টার মধ্যে আগুন নেভান।
গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সাভারের হেমায়েতপুরে ব্যাবিলন গ্রুপের ব্যাবিলন ক্যাজুয়াল লিমিটেডের ছয়তলায় একটি বাল্ব থেকে ধোঁয়া বের হয়। এ সময় ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠলে শ্রমিকেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বের হওয়ার চেষ্টা চালান। নিরাপত্তাকর্মীরা কলাপসিবল ফটক বন্ধ করে দেন। পরে শ্রমিকদের চাপের মুখে ফটক খুলেন তাঁরা। এখানেও হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হন। এঁদের সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
No comments