পদ্মায় কর্তৃত্ব বাড়াতে বিশ্বব্যাংক এডিবি জাইকার বৈঠক-বিশেষজ্ঞ দল আসছে ১ ডিসেম্বর
পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন পদ্ধতি পুনর্নির্ধারণে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা একসঙ্গে গতকাল বুধবার ফিলিপাইনে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। ম্যানিলায় এডিবির সদর দপ্তরে ওই বৈঠক হয়।
এতে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি এলেন গোল্ডস্টেইন ও এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি তেরেসা খো যোগ দেন। একটি সূত্রে জানা গেছে, সেতু প্রকল্পে কেনাকাটাসহ সব কর্মকাণ্ডে তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার পুরো বা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে সহ-অর্থায়নকারীদের এ বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এডিবি ও জাইকার প্রতিনিধিরা অক্টোবরের প্রথম দিকে ঢাকায় এসে ঘুরেও গেছেন। বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা না আসায় তখন এ বৈঠক হয়নি। তবে ওই দুই সংস্থার প্রতিনিধিরা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে দেখা করে যান।
এদিকে গতকালই বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি তদন্তের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বিতীয় দফায় ঢাকা সফরে আসছে আগামী ১ ডিসেম্বর।
চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের ছুটি শেষে কাজে যোগ দেওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় বেশ চাপের মধ্যে পড়ে সরকার। খবরটি যে সত্যি নয়, বিশ্বব্যাংককে তা বোঝাতে সরকারকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। এ ঘটনার পর থেকে পদ্মা সেতু প্রকল্পে সহ-অর্থায়নকারীদের বৈঠক নিয়ে সরকার বেশ সতর্ক অবস্থান নেয়। বৈঠকটি ঢাকায় না করে ওয়াশিংটন, টোকিও বা ম্যানিলায় অনুষ্ঠানের বিষয়ে অর্থায়নকারী সংস্থাগুলো আগাম ধারণা দিয়েছিল বলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একটি সূত্র কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছিল।
আগামী ১ ডিসেম্বর শনিবার বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের যে বিশেষজ্ঞ প্যানেল ঢাকায় আসছে, তার নেতৃত্বে থাকবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান আইনজীবী লুই গ্যাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো। গতকাল বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞ প্যানেল শনিবার ঢাকায় পৌঁছালেও তারা দুদকের সঙ্গে বৈঠক করবে রবিবার। এবারও এ প্যানেল তিন দিন ঢাকায় অবস্থান করবে বলে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল গত ১৪ অক্টোবর প্রথম দফায় ঢাকা সফরে এসেছিল। তখন দুদকের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয় এ প্যানেলের। ওই সফরে দুদকের চলমান সব কার্যক্রম এবং বাংলাদেশের আইন ও আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত হয় বিশেষজ্ঞ প্যানেলটি। ভবিষ্যতে দুদকের সঙ্গে কিভাবে কাজ করা হবে সে বিষয়েও আলোচনা হয়। সে সময় দুদককে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলটি। গত ১৩ নভেম্বর বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্টসি দুদককে আরো কিছু তথ্য জানায়। প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহ করে দুদক পুরোদমে তদন্তে নামে। সব শেষে গত মঙ্গলবার দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন যে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।
বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সফরের ঠিক আগে গতকাল পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নকারী তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা একটি বৈঠক করেছে। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে যোগ দেন। বৈঠকে সেতু প্রকল্পের বিকল্প বাস্তবায়ন ব্যবস্থা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। দুর্নীতি তদন্তে পর্যাপ্ত অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে প্রকল্প বাস্তবায়ন। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ভূমিকা আরো শক্তিশালী হবে বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্র জানায়, গত ১৩ নভেম্বর বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্টসি দুদককে আরো কিছু তথ্য দেওয়ার পরই তদন্তের অগ্রগতি দ্রুত এগোতে থাকে। এ তথ্যের আলোকেই দুদক নতুন করে আশার আলো দেখে। ঠিক দুই সপ্তাহ পর দুদকের চেয়ারম্যান পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রথমবারের মতো ঘোষণা দেন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দুদক তাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তিন সদস্যের প্যানেল গঠনের ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক। বিশেষজ্ঞ এ দলের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান আইনজীবী লুই গ্যাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পোকে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং ও যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অল্ডারম্যান।
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি এলেন গোল্ডস্টেইন বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণ জানে যে পদ্মা সেতু প্রকল্প দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে এবং দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত করবে। ওই অঞ্চলের সব সাধারণ মানুষ চায় সেতুটির নির্মাণ দুর্নীতিমুক্ত হোক। কেননা দুর্নীতি গরিবের টাকা কেড়ে নেয়।' গোল্ডস্টেইন বলেন, 'আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত প্যানেলটি বিশ্বব্যাংক ও প্রকল্পের অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীকে সরকারের তদন্তের পর্যাপ্ততা বিষয়ে পরামর্শ দেবে।'
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ সরকারের কাছে একাধিকবার তুলে ধরেছিল বিশ্বব্যাংক। এ সময় সরকারকে চারটি শর্ত পূরণের সুপারিশ করে সংস্থাটি। সুপারিশগুলো হচ্ছে- প্রথমত, যেসব সরকারি কর্মকর্তা ও সরকারি ব্যক্তির (আমলা ও রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকারি দায়িত্ব থেকে তাঁদের ছুটিতে পাঠানো। দ্বিতীয়ত, দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি বিশেষ তদন্তদল নিয়োগ করা। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত বিশ্বব্যাংকের নিয়োগ করা একটি প্যানেলের কাছে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সব তথ্যের পূর্ণ ও পর্যাপ্ত প্রবেশাধিকারে সরকারের সম্মতি দেওয়া, যাতে এই প্যানেল তদন্তের অগ্রগতি, ব্যাপকতা ও সুষ্ঠুতার ব্যাপারে উন্নয়ন সহযোগীদের নির্দেশনা দিতে পারে। সর্বশেষ হচ্ছে, বিকল্প বাস্তবায়ন ব্যবস্থার বিষয়ে একমত হওয়া, যাতে বিশ্বব্যাংক ও অন্য তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা প্রকল্পের ক্রয় কর্মকাণ্ড আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পায়।
কিন্তু এ চার শর্ত পূরণে সরকারের কাছ থেকে যথাযথ সাড়া না পাওয়ায় গত ২৯ জুন ১২০ কোটি ডলার ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। পরে সরকার চার শর্ত পূরণ করায় গত ২০ সেপ্টেম্বর সংস্থাটি পুনরায় এ প্রকল্পে ফিরে আসার ঘোষণা দেয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে সহ-অর্থায়নকারীদের এ বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এডিবি ও জাইকার প্রতিনিধিরা অক্টোবরের প্রথম দিকে ঢাকায় এসে ঘুরেও গেছেন। বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা না আসায় তখন এ বৈঠক হয়নি। তবে ওই দুই সংস্থার প্রতিনিধিরা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে দেখা করে যান।
এদিকে গতকালই বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি তদন্তের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বিতীয় দফায় ঢাকা সফরে আসছে আগামী ১ ডিসেম্বর।
চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের ছুটি শেষে কাজে যোগ দেওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় বেশ চাপের মধ্যে পড়ে সরকার। খবরটি যে সত্যি নয়, বিশ্বব্যাংককে তা বোঝাতে সরকারকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। এ ঘটনার পর থেকে পদ্মা সেতু প্রকল্পে সহ-অর্থায়নকারীদের বৈঠক নিয়ে সরকার বেশ সতর্ক অবস্থান নেয়। বৈঠকটি ঢাকায় না করে ওয়াশিংটন, টোকিও বা ম্যানিলায় অনুষ্ঠানের বিষয়ে অর্থায়নকারী সংস্থাগুলো আগাম ধারণা দিয়েছিল বলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একটি সূত্র কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছিল।
আগামী ১ ডিসেম্বর শনিবার বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের যে বিশেষজ্ঞ প্যানেল ঢাকায় আসছে, তার নেতৃত্বে থাকবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান আইনজীবী লুই গ্যাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো। গতকাল বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞ প্যানেল শনিবার ঢাকায় পৌঁছালেও তারা দুদকের সঙ্গে বৈঠক করবে রবিবার। এবারও এ প্যানেল তিন দিন ঢাকায় অবস্থান করবে বলে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল গত ১৪ অক্টোবর প্রথম দফায় ঢাকা সফরে এসেছিল। তখন দুদকের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয় এ প্যানেলের। ওই সফরে দুদকের চলমান সব কার্যক্রম এবং বাংলাদেশের আইন ও আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত হয় বিশেষজ্ঞ প্যানেলটি। ভবিষ্যতে দুদকের সঙ্গে কিভাবে কাজ করা হবে সে বিষয়েও আলোচনা হয়। সে সময় দুদককে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলটি। গত ১৩ নভেম্বর বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্টসি দুদককে আরো কিছু তথ্য জানায়। প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহ করে দুদক পুরোদমে তদন্তে নামে। সব শেষে গত মঙ্গলবার দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন যে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।
বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সফরের ঠিক আগে গতকাল পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নকারী তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা একটি বৈঠক করেছে। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে যোগ দেন। বৈঠকে সেতু প্রকল্পের বিকল্প বাস্তবায়ন ব্যবস্থা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। দুর্নীতি তদন্তে পর্যাপ্ত অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে প্রকল্প বাস্তবায়ন। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ভূমিকা আরো শক্তিশালী হবে বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্র জানায়, গত ১৩ নভেম্বর বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্টসি দুদককে আরো কিছু তথ্য দেওয়ার পরই তদন্তের অগ্রগতি দ্রুত এগোতে থাকে। এ তথ্যের আলোকেই দুদক নতুন করে আশার আলো দেখে। ঠিক দুই সপ্তাহ পর দুদকের চেয়ারম্যান পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রথমবারের মতো ঘোষণা দেন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দুদক তাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তিন সদস্যের প্যানেল গঠনের ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক। বিশেষজ্ঞ এ দলের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান আইনজীবী লুই গ্যাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পোকে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং ও যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অল্ডারম্যান।
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি এলেন গোল্ডস্টেইন বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণ জানে যে পদ্মা সেতু প্রকল্প দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে এবং দারিদ্র্য বিমোচন ত্বরান্বিত করবে। ওই অঞ্চলের সব সাধারণ মানুষ চায় সেতুটির নির্মাণ দুর্নীতিমুক্ত হোক। কেননা দুর্নীতি গরিবের টাকা কেড়ে নেয়।' গোল্ডস্টেইন বলেন, 'আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত প্যানেলটি বিশ্বব্যাংক ও প্রকল্পের অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীকে সরকারের তদন্তের পর্যাপ্ততা বিষয়ে পরামর্শ দেবে।'
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ সরকারের কাছে একাধিকবার তুলে ধরেছিল বিশ্বব্যাংক। এ সময় সরকারকে চারটি শর্ত পূরণের সুপারিশ করে সংস্থাটি। সুপারিশগুলো হচ্ছে- প্রথমত, যেসব সরকারি কর্মকর্তা ও সরকারি ব্যক্তির (আমলা ও রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকারি দায়িত্ব থেকে তাঁদের ছুটিতে পাঠানো। দ্বিতীয়ত, দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি বিশেষ তদন্তদল নিয়োগ করা। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত বিশ্বব্যাংকের নিয়োগ করা একটি প্যানেলের কাছে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সব তথ্যের পূর্ণ ও পর্যাপ্ত প্রবেশাধিকারে সরকারের সম্মতি দেওয়া, যাতে এই প্যানেল তদন্তের অগ্রগতি, ব্যাপকতা ও সুষ্ঠুতার ব্যাপারে উন্নয়ন সহযোগীদের নির্দেশনা দিতে পারে। সর্বশেষ হচ্ছে, বিকল্প বাস্তবায়ন ব্যবস্থার বিষয়ে একমত হওয়া, যাতে বিশ্বব্যাংক ও অন্য তিন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা প্রকল্পের ক্রয় কর্মকাণ্ড আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পায়।
কিন্তু এ চার শর্ত পূরণে সরকারের কাছ থেকে যথাযথ সাড়া না পাওয়ায় গত ২৯ জুন ১২০ কোটি ডলার ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। পরে সরকার চার শর্ত পূরণ করায় গত ২০ সেপ্টেম্বর সংস্থাটি পুনরায় এ প্রকল্পে ফিরে আসার ঘোষণা দেয়।
No comments