বিশ্ব সংগীত- অ্যামন অ্যামার্থ
মেলোডিক ডেথ মেটাল ধারার গানের শ্রোতাদের কাছে ‘অ্যামন অ্যামার্থ’ একটি অতি পরিচিত ব্যান্ডের নাম। তারা মেলোডিক ডেথ মেটাল ধারার অন্যতম পথপ্রদর্শক। আজ আমরা পাঠকদের কাছে ‘অ্যামন অ্যামার্থ’ নামক ব্যান্ডটির কথা তুলে ধরব।
অ্যামন অ্যামার্থ সুইডেনের টুমবার একটি ব্যান্ড। ব্যান্ডটি ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করে। মাউন্ট ডুমের সিনডারিন নাম নিয়ে তাঁরা ব্যান্ডের নামকরণ করেছেন। মাউন্ট ডুম হলো জে আর আর টেলিকিয়েনের মিডল-আর্থ নামক কাল্পনিক পৃথিবীর এক আগ্নেয়গিরি। অ্যামন অ্যামার্থ ব্যান্ডটির বেশির ভাগ সদস্য আরও আগে থেকেই সংগীতের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা ১৯৮৮ সাল থেকে ‘স্কাম’ নামে কার্যক্রম চালিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পল থেমগরথ মাকিটালো ছিলেন ব্যান্ডের ভোকাল। ওলাভি মিকোনেল ও ভেসা মারিলাইনেন ছিলেন দুই গিটারিস্ট েড্রামার হিসেবে ছিলেন নিকো মেহরা।
শুরুতে ‘স্কাম’ মূলত গ্রাইন্ডকোর ধাঁচের গান করত। তারা কয়েক বছর গান করেও স্টকহোমের মেটাল শ্রোতাদের কাছে আলাদাভাবে পরিচিত হতে পারেনি। এরপর পল থেমগরথ মাকিটালো দল ত্যাগ করার পর ভোকাল হিসেবে জোহান হেগ স্কামে যোগ দেন। টেড লুন্ড স্ট্রোম ও অ্যান্ডারস হ্যানসন যোগ দেন বেজিস্ট ও গিটারিস্ট হিসেবে।
জোহান হেগ যোগদানের পর থেকেই ব্যান্ডটি একটি অবস্থানে যাওয়া শুরু করে। ১৯৯১ সালে ‘স্কাম’ একটি ডেমো টেপ রেকর্ড করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৯২ সালে তাঁরা ব্যান্ডের নাম বদল করে অ্যামন অ্যামার্থ রাখেন।
১৯৯৪ সালে তাঁরা ‘দ্য অ্যারাইভাল অব দ্য ফিমবুল উইন্টার’ রেকর্ড করেন। এবার তাঁরা এই ডেমো অ্যালবামের এক হাজার কপি বের করেন। এটা ইপি হিসেবে বের করা হয়েছিল।
১৯৯৬ সালে তাঁরা পালভেরাইজভ রেকর্ডসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। এখান থেকে তাঁরা সরো থ্রোআউট দ্য নাইন ওয়ার্ল্ডসন শিরোনামে তাঁদের মিনি সিডি বের করেন। যার ছয় হাজার কপি বিক্রি হয়। এটা তাঁদের সাফল্যের রাস্তায় নিতে থাকে। এই মিনি সিডি প্রকাশের পর তাঁরা মেটাল ব্লেড রেকর্ডসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। মেটাল ব্লেড রেকর্ডস থেকে তাঁদের প্রথম অ্যালবাম ওয়ানস সেন্ট ফ্রম দ্য গোল্ডেন হল ১৯৯৮ সালে বের হয়। এই অ্যালবামের অসাধারণ কাজ তাঁদের আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। এই অ্যালবামে তাঁদের সঙ্গে ড্রামার হিসেবে ছিলেন মার্টিন লোপেজ। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে তাঁরা ডেসাইড, সিক্স ফিট আন্ডার ও ব্রুটাল ট্রুথের সঙ্গে ট্যুর করেন। গিটারিস্ট অ্যান্ডারস হ্যানসন তখন দল ত্যাগ করেন। তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করেন জোহান সোডারবার্গ। তাঁদের সেই গুরুত্বপূর্ণ ট্যুরের পর মার্টিন লোপেজ দল ত্যাগ করে ওপেথ নামের আরেক ব্যান্ডে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ড্রামার হিসেবেও শ্রোতামহলে খুবই পরিচিতি পান। তখন অ্যামন অ্যামার্থের ড্রামার হিসেবে যোগ দেন ফ্রেডরিক অ্যান্ডারসন। তাঁকে নিয়েই দ্বিতীয় অ্যালবাম দ্য অ্যাভেঞ্জার রেকর্ড করা হয় ১৯৯৯ সালে। অ্যালবামটির প্রচারণা চালানো হয় এক্স-মাস ম্যাসাকার ট্যুরের মাধ্যমে। সেখানে তাঁরা মরবিড অ্যাঞ্জেলের মতো বিখ্যাত ব্যান্ডের সঙ্গে কনসার্ট করেন।
২০০১ সালে তাঁরা দ্য ক্রাশার অ্যালবামটি বের করেন, যা তাঁদের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক অ্যালবাম হিসেবে পরিচিত। অ্যালবামটির প্রচারের লক্ষ্যে তাঁরা মারডাক ও ভেইডারের সঙ্গে নো মারসি ফেস্টিভ্যালে যোগ দেন। ২০০২-এ তাঁরা আমেরিকা ট্যুরে যান হেডলাইনার হিসেবে। একই বছর তাঁরা ভমিটরির সঙ্গে ইউরোপ ট্যুর করেন এবং ২০০২-এর আগস্ট মাসে ওয়াকেন ওপেন এয়ারে ১২ হাজার মেটালভক্তের সামনে গান পরিবেশন করেন। ২০০২-এর নভেম্বরে তাঁদের ভারসেস দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যালবাম বের হয়। এরপর ২০০৪ সাল পর্যন্ত তাঁরা ট্যুর করতেই ব্যস্ত ছিলেন। ২০০৪-এর মাঝামাঝি তাঁরা তাদের ফেইট অব নর্নস অ্যালবামের কাজ শুরু করেন ও ৬ সেপ্টেম্বর তা বের করেন। ফেইট অব নর্নস-এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অ্যালবাম উইথ ওডেন অন আওয়ার সাইড ২০০৬ সালে বের হয়। এ অ্যালবামটি অ্যামন অ্যামার্থের ইতিহাসে স্মরণীয়। কারণ এটা তাঁদের প্রথম অ্যালবাম, যা বিলবোর্ড শীর্ষ তালিকায় প্রবেশ করে। বিলবোর্ডের দুটি ধারার শীর্ষ তালিকায় এই অ্যালবাম ১৫ ও ২৬তম স্থান দখল করে, যা একটি ডেথ মেটাল ব্যান্ডের পক্ষে কল্পনার মতো।
২০১১ সালের মার্চ মাসে তাঁদের সারটার রাইজিং অ্যালবামটি বের হয়। এটাই এখন পর্যন্ত তাঁদের সর্বশেষ অ্যালবাম। সারটার রাইজিং অ্যালবামটিও বিলবোর্ড শীর্ষ ২০০ অ্যালবামের তালিকায় ৩৪তম স্থান নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
২০১১ সালে তাঁরা র্যাপ সাকস নামক একটি চলচ্চিত্রেও কাজ করেন।
সমালোচকেরা অ্যামন অ্যামার্থের গানের ধারাকে ভাইকিং মেটাল বলতে চাইলেও ব্যান্ডের সদস্যরা নিজেদের মোটেও ভাইকিং মেটাল বা পাগান মেটাল বলেন না। তাঁরা নিজেদের ডেথ মেটাল ব্যান্ড হিসেবেই দেখেন। তাঁদের গানের বিষয়বস্তুতে নর্স পৌরাণিক কাহিনি, ভাইকিংদের কাহিনি বিশেষভাবে উঠে এসেছে।
অ্যামন অ্যামার্থের যত অ্যালবাম
থোর অ্যারাইজ (ডেমো)—১৯৯৩
দ্য অ্যারাইভাল অব দ্য ফিমবুল উইন্টার (ইপি)—১৯৯৪
সরো থ্রুআউট দ্য নাইন ওয়ার্ল্ডস (ইপি)—১৯৯৬
ওয়ানস সেট ফ্রম দ্য গোল্ডেন হল—১৯৯৮
দ্য অ্যাভেঞ্জার—১৯৯৯
দ্য ক্রাশার—২০০১
ভারসেস দ্য ওয়ার্ল্ড—২০০২
ফেইট অব নর্নস—২০০৪
উইথ ওডেন অন আওয়ার সাইড—২০০৬
টোয়াইলাইট অব দ্য থান্ডারগড—২০০৮
সারটার রাইজিং—২০১১
অ্যামন অ্যামার্থের সদস্যরা হলেন
ওলাভি মিকোনেন—গিটার (১৯৯২-বর্তমান)
টেড লুন্ড স্ট্রোম—বেজ (১৯৯২-বর্তমান)
জোহান হেগ—ভোকালস (১৯৯২-বর্তমান)
জোহান সোডারবার্গ—গিটার (১৯৯৮-বর্তমান)
ফ্রেডরিক অ্যান্ডারসন—ড্রামস (১৯৯৯-বর্তমান)
মেলোডিক ডেথ মেটাল নামে বর্তমানে যে ধারা প্রচলিত তার পেছনে অ্যামন অ্যামার্থের গানের অবদান অনেক।
মনোয়ারুল হক
শুরুতে ‘স্কাম’ মূলত গ্রাইন্ডকোর ধাঁচের গান করত। তারা কয়েক বছর গান করেও স্টকহোমের মেটাল শ্রোতাদের কাছে আলাদাভাবে পরিচিত হতে পারেনি। এরপর পল থেমগরথ মাকিটালো দল ত্যাগ করার পর ভোকাল হিসেবে জোহান হেগ স্কামে যোগ দেন। টেড লুন্ড স্ট্রোম ও অ্যান্ডারস হ্যানসন যোগ দেন বেজিস্ট ও গিটারিস্ট হিসেবে।
জোহান হেগ যোগদানের পর থেকেই ব্যান্ডটি একটি অবস্থানে যাওয়া শুরু করে। ১৯৯১ সালে ‘স্কাম’ একটি ডেমো টেপ রেকর্ড করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৯২ সালে তাঁরা ব্যান্ডের নাম বদল করে অ্যামন অ্যামার্থ রাখেন।
১৯৯৪ সালে তাঁরা ‘দ্য অ্যারাইভাল অব দ্য ফিমবুল উইন্টার’ রেকর্ড করেন। এবার তাঁরা এই ডেমো অ্যালবামের এক হাজার কপি বের করেন। এটা ইপি হিসেবে বের করা হয়েছিল।
১৯৯৬ সালে তাঁরা পালভেরাইজভ রেকর্ডসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। এখান থেকে তাঁরা সরো থ্রোআউট দ্য নাইন ওয়ার্ল্ডসন শিরোনামে তাঁদের মিনি সিডি বের করেন। যার ছয় হাজার কপি বিক্রি হয়। এটা তাঁদের সাফল্যের রাস্তায় নিতে থাকে। এই মিনি সিডি প্রকাশের পর তাঁরা মেটাল ব্লেড রেকর্ডসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। মেটাল ব্লেড রেকর্ডস থেকে তাঁদের প্রথম অ্যালবাম ওয়ানস সেন্ট ফ্রম দ্য গোল্ডেন হল ১৯৯৮ সালে বের হয়। এই অ্যালবামের অসাধারণ কাজ তাঁদের আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। এই অ্যালবামে তাঁদের সঙ্গে ড্রামার হিসেবে ছিলেন মার্টিন লোপেজ। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে তাঁরা ডেসাইড, সিক্স ফিট আন্ডার ও ব্রুটাল ট্রুথের সঙ্গে ট্যুর করেন। গিটারিস্ট অ্যান্ডারস হ্যানসন তখন দল ত্যাগ করেন। তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করেন জোহান সোডারবার্গ। তাঁদের সেই গুরুত্বপূর্ণ ট্যুরের পর মার্টিন লোপেজ দল ত্যাগ করে ওপেথ নামের আরেক ব্যান্ডে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ড্রামার হিসেবেও শ্রোতামহলে খুবই পরিচিতি পান। তখন অ্যামন অ্যামার্থের ড্রামার হিসেবে যোগ দেন ফ্রেডরিক অ্যান্ডারসন। তাঁকে নিয়েই দ্বিতীয় অ্যালবাম দ্য অ্যাভেঞ্জার রেকর্ড করা হয় ১৯৯৯ সালে। অ্যালবামটির প্রচারণা চালানো হয় এক্স-মাস ম্যাসাকার ট্যুরের মাধ্যমে। সেখানে তাঁরা মরবিড অ্যাঞ্জেলের মতো বিখ্যাত ব্যান্ডের সঙ্গে কনসার্ট করেন।
২০০১ সালে তাঁরা দ্য ক্রাশার অ্যালবামটি বের করেন, যা তাঁদের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক অ্যালবাম হিসেবে পরিচিত। অ্যালবামটির প্রচারের লক্ষ্যে তাঁরা মারডাক ও ভেইডারের সঙ্গে নো মারসি ফেস্টিভ্যালে যোগ দেন। ২০০২-এ তাঁরা আমেরিকা ট্যুরে যান হেডলাইনার হিসেবে। একই বছর তাঁরা ভমিটরির সঙ্গে ইউরোপ ট্যুর করেন এবং ২০০২-এর আগস্ট মাসে ওয়াকেন ওপেন এয়ারে ১২ হাজার মেটালভক্তের সামনে গান পরিবেশন করেন। ২০০২-এর নভেম্বরে তাঁদের ভারসেস দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যালবাম বের হয়। এরপর ২০০৪ সাল পর্যন্ত তাঁরা ট্যুর করতেই ব্যস্ত ছিলেন। ২০০৪-এর মাঝামাঝি তাঁরা তাদের ফেইট অব নর্নস অ্যালবামের কাজ শুরু করেন ও ৬ সেপ্টেম্বর তা বের করেন। ফেইট অব নর্নস-এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অ্যালবাম উইথ ওডেন অন আওয়ার সাইড ২০০৬ সালে বের হয়। এ অ্যালবামটি অ্যামন অ্যামার্থের ইতিহাসে স্মরণীয়। কারণ এটা তাঁদের প্রথম অ্যালবাম, যা বিলবোর্ড শীর্ষ তালিকায় প্রবেশ করে। বিলবোর্ডের দুটি ধারার শীর্ষ তালিকায় এই অ্যালবাম ১৫ ও ২৬তম স্থান দখল করে, যা একটি ডেথ মেটাল ব্যান্ডের পক্ষে কল্পনার মতো।
২০১১ সালের মার্চ মাসে তাঁদের সারটার রাইজিং অ্যালবামটি বের হয়। এটাই এখন পর্যন্ত তাঁদের সর্বশেষ অ্যালবাম। সারটার রাইজিং অ্যালবামটিও বিলবোর্ড শীর্ষ ২০০ অ্যালবামের তালিকায় ৩৪তম স্থান নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
২০১১ সালে তাঁরা র্যাপ সাকস নামক একটি চলচ্চিত্রেও কাজ করেন।
সমালোচকেরা অ্যামন অ্যামার্থের গানের ধারাকে ভাইকিং মেটাল বলতে চাইলেও ব্যান্ডের সদস্যরা নিজেদের মোটেও ভাইকিং মেটাল বা পাগান মেটাল বলেন না। তাঁরা নিজেদের ডেথ মেটাল ব্যান্ড হিসেবেই দেখেন। তাঁদের গানের বিষয়বস্তুতে নর্স পৌরাণিক কাহিনি, ভাইকিংদের কাহিনি বিশেষভাবে উঠে এসেছে।
অ্যামন অ্যামার্থের যত অ্যালবাম
থোর অ্যারাইজ (ডেমো)—১৯৯৩
দ্য অ্যারাইভাল অব দ্য ফিমবুল উইন্টার (ইপি)—১৯৯৪
সরো থ্রুআউট দ্য নাইন ওয়ার্ল্ডস (ইপি)—১৯৯৬
ওয়ানস সেট ফ্রম দ্য গোল্ডেন হল—১৯৯৮
দ্য অ্যাভেঞ্জার—১৯৯৯
দ্য ক্রাশার—২০০১
ভারসেস দ্য ওয়ার্ল্ড—২০০২
ফেইট অব নর্নস—২০০৪
উইথ ওডেন অন আওয়ার সাইড—২০০৬
টোয়াইলাইট অব দ্য থান্ডারগড—২০০৮
সারটার রাইজিং—২০১১
অ্যামন অ্যামার্থের সদস্যরা হলেন
ওলাভি মিকোনেন—গিটার (১৯৯২-বর্তমান)
টেড লুন্ড স্ট্রোম—বেজ (১৯৯২-বর্তমান)
জোহান হেগ—ভোকালস (১৯৯২-বর্তমান)
জোহান সোডারবার্গ—গিটার (১৯৯৮-বর্তমান)
ফ্রেডরিক অ্যান্ডারসন—ড্রামস (১৯৯৯-বর্তমান)
মেলোডিক ডেথ মেটাল নামে বর্তমানে যে ধারা প্রচলিত তার পেছনে অ্যামন অ্যামার্থের গানের অবদান অনেক।
মনোয়ারুল হক
No comments