বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতার নেপথ্যে ॥ এক শ্রেণীর শিক্ষক!- ০ এই সুযোগে মাঠে নামছে শিবির, হিযবুত তাহ্্রীর- ০ শিক্ষকদের আচরণে ক্ষুব্ধ সাধারণ ছাত্রছাত্রী by বিভাষ বাড়ৈ
ছাত্র সংগঠনের কোন্দল আর শিক্ষা কার্যক্রম বাদ দিয়ে আধিপত্য বিস্তারের জন্য শিক্ষক নেতাদের অপরাজনীতির শিকার হয়ে একের পর এক অচল হয়ে পড়ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। অস্থিরতার সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠছে সংগঠন ছাত্র শিবির, হিযবুত তাহরীর।
শিক্ষক নেতাদের আশীর্বাদে মাঠে নেমে পড়েছে ছাত্রদল। এতদিন ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হলেও এখন শিক্ষা নয় বরং উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদ দখলসহ আধিপত্য বিস্তারের জন্য চালানো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে প্রশ্নের মুখে শিক্ষক রাজনীতি। বুয়েট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সর্বশেষ জাহাঙ্গীনগরে বুধবারের তা-বেও মূল কলকাঠি নেড়েছেন বিতর্কিত শিক্ষক নেতারাই। ছাত্র সংগঠনের কোন্দলে কয়েকটিতে জটিলতার শুরু হলেও প্রতিটিতেই ক্যাম্পাস অচলে মূল অভিযোগ উঠেছে এক শ্রেণীর শিক্ষকের বিরুদ্ধেই। অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে, হাইকোর্ট শিক্ষার স্বার্থে ধর্মঘটের বিরুদ্ধে আদেশ দিলেও বুয়েটের সেই শিক্ষক নেতারা এখন আদালতে আপীল করতে যাচ্ছেন আন্দোলন, ধর্মঘটের দাবি নিয়ে !
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ছাত্র সংগঠনের কোন্দল ও শিক্ষক রাজনীতি-তথ্য প্রমাণসহ গোয়েন্দা সংস্থার এমন রিপোর্টের প্রেক্ষাপটে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি সীমিত করার জন্য সরকার ১৯৮৬ সালের মন্ত্রিসভা বৈঠকের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রাজনীতির বতর্মান চেহারায় ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, শিক্ষক নেতারা বাসমালিক সমিতির মতো পুরো প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করে ফেলেছে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেআইনীভাবে কাজ করে লাখ লাখ টাকা কামাচ্ছে আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবহার করছে রাজনীতি ও আধিপত্য বিস্তারের কেন্দ্র হিসেবে। শিক্ষক রাজনীতির টানাপোড়েনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীলতা স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকরা তাঁদের রাজনীতির স্বার্থে ছাত্রদেরও ব্যবহার করছেন। একদিকে ছাত্র সংগঠনের খুন-খারাবি, অন্যদিকে শিক্ষক রাজনীতির যাঁতাকলে পিষ্ট সাধারণ শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে অস্থির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে বলা হয়েছে, শিক্ষক আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের কোন্দলে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। আর উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- অস্থিরতার সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠছে জামায়াতপন্থী শিক্ষক, ছাত্রশিবির, হিযবুত তাহরীর। বলা হয়েছে, বুয়েট এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল শিক্ষকের তুলনায় সক্রিয় জামায়াত-বিএনপিপন্থী শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। দু’পক্ষের শিক্ষকরাই রাজনৈতিক কারণে একে অপরকে ছাড় দিতে চাচ্ছেন না। এ কারণে পরিস্থিতির সুরাহা হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে পুলিশের বিশেষ শাখার গোয়েন্দারা সম্প্রতি শিক্ষকদের ওপর একটি জরিপ চলিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা ছয় শতাধিক। এর মধ্যে ১২৫ জন দেশের বাইরে রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে ২২৫ জন আওয়ামী লীগ, ২০০ জন বিএনপি ও ৭৫ জন জামায়াতপন্থী। গোয়েন্দা রিপোর্টে বুয়েট শিক্ষকদের সম্পর্কে সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে আবারও বলা হয়েছে, উপাচার্য ও উপ-উপাচর্যের নিয়োগের ফলে জামায়াত ও হিযবুত তাহরীর প্রভাবিত শিক্ষক সমিতির একচ্ছত্র আধিপত্য খর্ব হওয়াই বুয়েট অস্থিরতার মূল কারণ। প্রতিষ্ঠানটির মাত্র ২২ ভাগ শিক্ষক বর্তমান সরকার ও প্রগতিশীল মতাদর্শের অনুসারী। ৭০ ভাগ শিক্ষকই বিএনপি-জামায়াত ও হিযবুত তাহরীরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাকি আট ভাগ শিক্ষক মোটামুুটি নিরপেক্ষ। ১৩ সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষক সমিতির অধিকাংশই সরকারের ঘোরতর বিরোধী এবং তারাই হিযবুত তাররীরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রদের মদদ দিচ্ছেন।
ঠিক এমন এক অবস্থায় বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিরতা ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ অথবা সীমিত করার জন্য সরকার ১৯৮৬ সালের মন্ত্রিসভা বৈঠকের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি কার্যকর করা নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়া না হলেও শিক্ষক রাজনীতির বিষয়টির ভাবিয়ে তুলেছে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের। গতমাসে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো একটি চিঠিতে মন্ত্রিসভা-বৈঠকের সিদ্ধান্ত বান্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বাস্তবায়নাধীন সাম্প্রতিক কয়েকটি সিদ্ধান্তের সঙ্গে ১৯৮৬ সালের একটি সিদ্ধান্ত যুক্ত করে দিয়ে বলেছে ওটাও বাস্তবায়নাধীন আছে। এরশাদ সরকারের আমলে নেয়া ওই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে ইহাদের রাজনীতি মুক্ত করা উচিত।’ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকবৃন্দ রাজনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে তাদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। শিক্ষকদের অপরাজনীতির বর্তমান চেহারার তীব্র সমালোচনা করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, ছাত্রদের নৈতিক অবক্ষয় হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে শিক্ষকরাই নৈতিকতা হারিয়েছেন। তাঁরা নিজেদের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ রেখে তাঁদের আন্দোলনে টেনে আনছেন। যাঁরা মানুষ গড়ার কারিগর তাঁরাই যদি এই অপরাজনীতি শুরু করেন তাহলে আমাদের শিক্ষায় ধস নামবেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সংগঠনের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন কেউ কেউ। তাঁদের বলি, এর পেছনে কারা আছে খুঁজে দেখুন। এদিকে এরই মধ্যে জাবির ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ থেমে গেলেও বৃহস্পতিবার টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়ে ক্যাম্পাসে কারা তা-ব চালিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, উপাচার্যসহ কর্তৃপক্ষকে ব্যর্থ করে দিতে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সেই শিক্ষক নেতারাই কলকাঠি নেড়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষের সময় বের হতে না পারলেও সেই শিক্ষকরা কিভাবে নির্বিঘেœ দিনভর তৎপর ছিলেন? রামদা, চাপাতিসহ ছাত্রদলের নবাগত কিছু সদস্যকে চেনা গেলেও অধিকাংশই অপরিচিত। সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে প্রতিক্রিয়াশীরা সক্রিয়া ছিল বলেই উপাচার্যসহ প্রগতিশীল শিক্ষকরা আক্রান্ত হয়েছেন।
এর আগে গত এক মাস ধরে বুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে লাগাতার ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছিল শিক্ষক সমিতি। অভিযোগের বিষয়ে কোন তথ্য প্রমাণ না থাকলেও সমিতি একগুঁয়েমি অবস্থান নিলে আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমিতির বিরুদ্ধে মাঠে নামে। সঙ্কট সমাধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনে সকল মহলের দাবিও অগ্রাহ্য করে সমিতি শিক্ষার্থীদের জড়ো করে আন্দোলন চালায়। অভিযোগ ওঠে, আধিপত্য বিস্তার করতেই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীর প্রভাবিত শিক্ষক সমিতি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে আন্দোলন করছে। আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট সমাধনের উদ্যোগ নিলেও সমিতির বিরুদ্ধে তাতে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ তোলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা বিভক্ত হয়ে পড়লেও একটি বিশেষ গ্রুপ কর্মকা- চালিয়ে যেতে থাকে। এতে অস্থিরতা নিরসন করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর জন্য এক অভিভাবক ও আইনজীবী আদালনে রিট করেন। এরপর মঙ্গলবার বুয়েটের চলমান আন্দোলন, ধর্মঘটের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া বুয়েটে চলমান আন্দোলন, ধর্মঘট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা- জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে আদালত। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন, ধর্মঘটের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বুয়েট ক্যাম্পাসের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের আইজি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দের জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আন্দোলন স্থগিত করেন সমিতির নেতারা। তবে এই মুহূর্তে বুয়েটের সার্বিক ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি তুলেছেন সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁরা বলছেন, কমিশন গঠন হলে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে। অপরদিকে আদালতের নির্দেশের পরেও আন্দোলনকারী এক নেতা পরিচালক অধ্যাপক লুৎফুল কবীরের বিরুদ্ধে সকল আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ ও অশ্লীল গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট গোপনে দখল করে একজন শিক্ষকের এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বুয়েটে।
তবে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ ধরনের কাজ করলেন? এ বিষয়ে জানতে তাঁর মোবাইলে কল করা হলে পরিচয় দিতেই অপরপ্রান্ত থেকে একজন স্যারকে দিচ্ছি বলে লাইন কেটে দেন। এরপর বহুবার রিং করা হলেও মোবাইল রিসিভ করেননি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্র নেতা সোহেল নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও উপাচার্যের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সভাপতির সঙ্গে। মূলত এখানে সরকারপন্থী শিক্ষকরাই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে ইতোমধ্যে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টরের ওপর কিছু ছাত্রের হামলার ঘটনায় অস্থিরতা সৃষ্টি হলে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনার জন্য দায়ী পাঁচ ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্কট চলছে বহুদিন। শিক্ষকদের সাম্প্রতিক শিক্ষা বহির্ভূত কর্মকা-ে উদ্বিগ্নœ সরকার। চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরিস্থিতি দেশের সামগ্রিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যাহত করছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ প্রয়োজন মনে করলে ইউজিসি সর্বাত্মক সহায়তা প্রদানে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, আগে দেখা যেত ছাত্ররা আন্দোলন করে এবং সেখানে শিক্ষকরা সংহতি প্রকাশ করে। কিন্তু এখন যেখা যাচ্ছে শিক্ষক নেতারাই আন্দোলন করে এবং সেখানে ছাত্রদের টেনে আনা হচ্ছে। শিক্ষক রাজনীতির বিরুদ্ধে সারাসরি কোন কথা না বললেও পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্নœ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তবে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এমন কোন কাজ করবেন না যাতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হয়। শিক্ষার্থীদের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেই বিষয়টি চিন্তা করে শিক্ষকরা কাজ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ছাত্র সংগঠনের কোন্দল ও শিক্ষক রাজনীতি-তথ্য প্রমাণসহ গোয়েন্দা সংস্থার এমন রিপোর্টের প্রেক্ষাপটে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি সীমিত করার জন্য সরকার ১৯৮৬ সালের মন্ত্রিসভা বৈঠকের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রাজনীতির বতর্মান চেহারায় ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, শিক্ষক নেতারা বাসমালিক সমিতির মতো পুরো প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করে ফেলেছে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেআইনীভাবে কাজ করে লাখ লাখ টাকা কামাচ্ছে আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবহার করছে রাজনীতি ও আধিপত্য বিস্তারের কেন্দ্র হিসেবে। শিক্ষক রাজনীতির টানাপোড়েনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীলতা স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকরা তাঁদের রাজনীতির স্বার্থে ছাত্রদেরও ব্যবহার করছেন। একদিকে ছাত্র সংগঠনের খুন-খারাবি, অন্যদিকে শিক্ষক রাজনীতির যাঁতাকলে পিষ্ট সাধারণ শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে অস্থির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে বলা হয়েছে, শিক্ষক আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের কোন্দলে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। আর উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- অস্থিরতার সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠছে জামায়াতপন্থী শিক্ষক, ছাত্রশিবির, হিযবুত তাহরীর। বলা হয়েছে, বুয়েট এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল শিক্ষকের তুলনায় সক্রিয় জামায়াত-বিএনপিপন্থী শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। দু’পক্ষের শিক্ষকরাই রাজনৈতিক কারণে একে অপরকে ছাড় দিতে চাচ্ছেন না। এ কারণে পরিস্থিতির সুরাহা হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে পুলিশের বিশেষ শাখার গোয়েন্দারা সম্প্রতি শিক্ষকদের ওপর একটি জরিপ চলিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা ছয় শতাধিক। এর মধ্যে ১২৫ জন দেশের বাইরে রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে ২২৫ জন আওয়ামী লীগ, ২০০ জন বিএনপি ও ৭৫ জন জামায়াতপন্থী। গোয়েন্দা রিপোর্টে বুয়েট শিক্ষকদের সম্পর্কে সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে আবারও বলা হয়েছে, উপাচার্য ও উপ-উপাচর্যের নিয়োগের ফলে জামায়াত ও হিযবুত তাহরীর প্রভাবিত শিক্ষক সমিতির একচ্ছত্র আধিপত্য খর্ব হওয়াই বুয়েট অস্থিরতার মূল কারণ। প্রতিষ্ঠানটির মাত্র ২২ ভাগ শিক্ষক বর্তমান সরকার ও প্রগতিশীল মতাদর্শের অনুসারী। ৭০ ভাগ শিক্ষকই বিএনপি-জামায়াত ও হিযবুত তাহরীরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাকি আট ভাগ শিক্ষক মোটামুুটি নিরপেক্ষ। ১৩ সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষক সমিতির অধিকাংশই সরকারের ঘোরতর বিরোধী এবং তারাই হিযবুত তাররীরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রদের মদদ দিচ্ছেন।
ঠিক এমন এক অবস্থায় বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিরতা ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ অথবা সীমিত করার জন্য সরকার ১৯৮৬ সালের মন্ত্রিসভা বৈঠকের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি কার্যকর করা নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়া না হলেও শিক্ষক রাজনীতির বিষয়টির ভাবিয়ে তুলেছে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের। গতমাসে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো একটি চিঠিতে মন্ত্রিসভা-বৈঠকের সিদ্ধান্ত বান্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বাস্তবায়নাধীন সাম্প্রতিক কয়েকটি সিদ্ধান্তের সঙ্গে ১৯৮৬ সালের একটি সিদ্ধান্ত যুক্ত করে দিয়ে বলেছে ওটাও বাস্তবায়নাধীন আছে। এরশাদ সরকারের আমলে নেয়া ওই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে ইহাদের রাজনীতি মুক্ত করা উচিত।’ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকবৃন্দ রাজনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে তাদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। শিক্ষকদের অপরাজনীতির বর্তমান চেহারার তীব্র সমালোচনা করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, ছাত্রদের নৈতিক অবক্ষয় হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে শিক্ষকরাই নৈতিকতা হারিয়েছেন। তাঁরা নিজেদের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ রেখে তাঁদের আন্দোলনে টেনে আনছেন। যাঁরা মানুষ গড়ার কারিগর তাঁরাই যদি এই অপরাজনীতি শুরু করেন তাহলে আমাদের শিক্ষায় ধস নামবেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সংগঠনের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন কেউ কেউ। তাঁদের বলি, এর পেছনে কারা আছে খুঁজে দেখুন। এদিকে এরই মধ্যে জাবির ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ থেমে গেলেও বৃহস্পতিবার টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়ে ক্যাম্পাসে কারা তা-ব চালিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, উপাচার্যসহ কর্তৃপক্ষকে ব্যর্থ করে দিতে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সেই শিক্ষক নেতারাই কলকাঠি নেড়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষের সময় বের হতে না পারলেও সেই শিক্ষকরা কিভাবে নির্বিঘেœ দিনভর তৎপর ছিলেন? রামদা, চাপাতিসহ ছাত্রদলের নবাগত কিছু সদস্যকে চেনা গেলেও অধিকাংশই অপরিচিত। সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে প্রতিক্রিয়াশীরা সক্রিয়া ছিল বলেই উপাচার্যসহ প্রগতিশীল শিক্ষকরা আক্রান্ত হয়েছেন।
এর আগে গত এক মাস ধরে বুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে লাগাতার ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছিল শিক্ষক সমিতি। অভিযোগের বিষয়ে কোন তথ্য প্রমাণ না থাকলেও সমিতি একগুঁয়েমি অবস্থান নিলে আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমিতির বিরুদ্ধে মাঠে নামে। সঙ্কট সমাধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনে সকল মহলের দাবিও অগ্রাহ্য করে সমিতি শিক্ষার্থীদের জড়ো করে আন্দোলন চালায়। অভিযোগ ওঠে, আধিপত্য বিস্তার করতেই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীর প্রভাবিত শিক্ষক সমিতি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে আন্দোলন করছে। আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট সমাধনের উদ্যোগ নিলেও সমিতির বিরুদ্ধে তাতে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ তোলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা বিভক্ত হয়ে পড়লেও একটি বিশেষ গ্রুপ কর্মকা- চালিয়ে যেতে থাকে। এতে অস্থিরতা নিরসন করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর জন্য এক অভিভাবক ও আইনজীবী আদালনে রিট করেন। এরপর মঙ্গলবার বুয়েটের চলমান আন্দোলন, ধর্মঘটের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া বুয়েটে চলমান আন্দোলন, ধর্মঘট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা- জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে আদালত। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন, ধর্মঘটের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বুয়েট ক্যাম্পাসের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের আইজি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দের জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আন্দোলন স্থগিত করেন সমিতির নেতারা। তবে এই মুহূর্তে বুয়েটের সার্বিক ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি তুলেছেন সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁরা বলছেন, কমিশন গঠন হলে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে। অপরদিকে আদালতের নির্দেশের পরেও আন্দোলনকারী এক নেতা পরিচালক অধ্যাপক লুৎফুল কবীরের বিরুদ্ধে সকল আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ ও অশ্লীল গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট গোপনে দখল করে একজন শিক্ষকের এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বুয়েটে।
তবে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ ধরনের কাজ করলেন? এ বিষয়ে জানতে তাঁর মোবাইলে কল করা হলে পরিচয় দিতেই অপরপ্রান্ত থেকে একজন স্যারকে দিচ্ছি বলে লাইন কেটে দেন। এরপর বহুবার রিং করা হলেও মোবাইল রিসিভ করেননি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্র নেতা সোহেল নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও উপাচার্যের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সভাপতির সঙ্গে। মূলত এখানে সরকারপন্থী শিক্ষকরাই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে ইতোমধ্যে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টরের ওপর কিছু ছাত্রের হামলার ঘটনায় অস্থিরতা সৃষ্টি হলে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনার জন্য দায়ী পাঁচ ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্কট চলছে বহুদিন। শিক্ষকদের সাম্প্রতিক শিক্ষা বহির্ভূত কর্মকা-ে উদ্বিগ্নœ সরকার। চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরিস্থিতি দেশের সামগ্রিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যাহত করছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ প্রয়োজন মনে করলে ইউজিসি সর্বাত্মক সহায়তা প্রদানে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, আগে দেখা যেত ছাত্ররা আন্দোলন করে এবং সেখানে শিক্ষকরা সংহতি প্রকাশ করে। কিন্তু এখন যেখা যাচ্ছে শিক্ষক নেতারাই আন্দোলন করে এবং সেখানে ছাত্রদের টেনে আনা হচ্ছে। শিক্ষক রাজনীতির বিরুদ্ধে সারাসরি কোন কথা না বললেও পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্নœ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তবে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এমন কোন কাজ করবেন না যাতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হয়। শিক্ষার্থীদের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেই বিষয়টি চিন্তা করে শিক্ষকরা কাজ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
No comments