সমকালীন ভাবনার যৌথ শিল্পকর্ম আর্ট সেন্টারে- সংস্কৃতি সংবাদ
নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এগিয়ে চলেছে সমকালীন চিত্রকলা। এ থেকে পিছিয়ে নেই দেশের চারুশিল্পের আঙ্গিনা। আর এ কথার প্রমাণ পাওয়া গেল ঢাকা আর্ট সেন্টারের পাঁচটি প্রদর্শনী কক্ষে। দেয়ালে দেয়ালে সাজানো হয়েছে সমকালীন ভাবনার অসংখ্য চিত্রকর্ম। আর এসব চিত্রকর্মে রয়েছে এদেশের শিল্পীদের চলমান সময়ের
চারুকলার নিরীক্ষাধর্মী প্রয়াস। আঁকার কৌশল, রঙের ব্যবহার কিংবা বিন্যাস সব ক্ষেত্রেই যেন দৃশ্যমান নতুনত্বের ছাপ। আর এমন সব সমকালীন আঙ্গিকের ছবির সমাহার ঘটেছে কনটেমপ্লেটিং দ্য কনটেম্পোরারি শিরোনামের প্রদর্শনীতে। যৌথ এ চিত্রকলা প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন ২১ চিত্রশিল্পী। আর এদের মধ্যে ১৯ জনই নতুন প্রজন্মের চিত্রকলার প্রতিনিধি। শুক্রবার থেকে শুরু হয় এ প্রদর্শনী। কোন আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন ছিল না প্রদর্শনীতে উদ্বোধনী আয়োজনে। ছিল না কোন আনুষ্ঠানিকতা। দুপুর ৩টার পর থেকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় প্রদর্শনী। আর রোজার মাস হলেও দর্শনার্থীর সংখ্যা নেহাত কম ছিল না। নতুন প্রজন্মের সমকালীন ধারার শিল্পকর্ম দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকেই।
প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া ২১ শিল্পী হলেনÑ আবদুল হালিম চঞ্চল, আবদুস সালাম, আবদুস সাত্তার তৌফিক, আলী আকবর, আনিসুজ্জামান সোহেল, অনুকুল চন্দ্র মজুমদার, অস্মিতা আলম শাম্মি, জয়া শাহরিন হক, মনিকা জাহান বোস, নিত্যানন্দ গায়েন, রফি হক, রশীদ আমিন, রতেœশ্বর সূত্রধর, রোকনুজ্জামান, রোজভেল্ট বি ডি রোজারিও, রুহুল করিম রুমি, শহীদ কাজী, সাব্বির আলম, সঞ্জীব দত্ত, শিশির ভট্টাচার্য ও ওয়াকিলুর রহমান। আর্ট সেন্টারের এ প্রদর্শনী আয়োজনের পেছনের রয়েছে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য। সে কথা জানালেন প্রদর্শনী আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত চিত্রশিল্পী ওয়াকিলুর রহমান। বললেন, সারাদেশেই চিত্রকলার চর্চার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অনেক তরুণ শিল্পী। আর্থিক কারণে তাদের সবার পক্ষে একক প্রদর্শনী করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে দলীয়ভাবে প্রদর্শনীর আয়োজন করাটা বেশ সহজ হয়। আর এতে একসঙ্গে অনেক বৈচিত্র্যময় কাজ দেখার সুযোগ পায় দর্শনার্থীরা। একই সঙ্গে শিল্পীদের মধ্যে বন্ধনটাও দৃঢ় হয়। আর এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই আর্ট সেন্টারের এ যৌথ প্রদর্শনীর আয়োজন। এর মাধ্যমে যৌথভাবে শিল্পসম্ভার এক আঙ্গিনায় মেলে ধরার চর্চা শুরু হলো। এখন থেকে নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীদের নিয়ে এমন দলবদ্ধ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া ২১ শিল্পীর একজন মনিকা জাহান বোস। এমন যৌথ প্রদর্শনী সম্পর্কে বললেন, সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছেÑ দর্শক একসঙ্গে বিচিত্র রকমের কাজ দেখার সুযোগ পায়। আর শিল্পী হিসেবে অন্যের কাজের সঙ্গে নিজের কাজের মূল্যায়ন করা যায়। সবার সঙ্গে ভাবনার আদান-প্রদানের একটি ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়।
প্রদর্শনীর প্রতিটি ছবি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলেন জাহি মুস্তাফা নামের এক দর্শনার্থী। প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বললেন, তরুণ প্রজন্মের শিল্পীরা সব সময় নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। আর সেটার প্রকাশ ঘটেছে এ প্রদর্শনীতে। চিত্রকর্ম সৃজনের ক্ষেত্রে রয়েছে নতুনত্বের ছাপ। ছবি আঁকার আঙ্গিক ও কৌশলগত ক্ষেত্রেও রয়েছে নয়া চিন্তাভাবনার প্রকাশ।
আর্ট সেন্টারের একতলা ও দোতলার পাঁচটি কক্ষজুড়ে ঝোলানো হয়েছেন একুশ শিল্পীর শিল্পকর্ম। প্রত্যেক শিল্পীর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে একটি করে দেয়াল। সেখানে রয়েছে অধিকাংশ শিল্পীর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল একাধিক শিল্পকর্ম। তেল রং, ছাপচিত্র, লিথোগ্রাফি, পেইন্টিং, মিশ্র মাধ্যম, স্থাপনা শিল্পসহ নানা মাধ্যমের সমকালীন ধারার শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। এ্যাক্রেলিক মাধ্যমে আঁকা আবদুল হাকিমের যমজ শিরোনামের চিত্রকর্মটি যেন দর্শনার্থীকে পৌঁছে দেয় নতুনের বারতা। বিশাল ক্যানভাসের সবুজ জমিনে দৃশ্যমান গ্রাম-বাংলার রূপময় এক খাল। কেউ সেই খালে গোসল সারছেন, আবার কেউ বা মাছ ধরছেন। এমন দৃশ্যকে ভেদ করে ভেসে উঠেছে অনেকটা যেন জানালার শিকের মতো লম্বা লম্বা অনেক রেখা। সেই রেখার ওপর আবার চিত্রায়িত হয়েছে ভিন্ন বাস্তবতার দুই পুরুষ ও এক নারীর অবয়ব। সব মিলিয়ে ছবিটি যেন দর্শনার্থীর চোখে ছড়িয়ে দেয় একই সঙ্গে বিভ্রম ও মুগ্ধতার প্রলেপ।
সাদা-কালো জমিনে দৃশ্যমান খোলা চুলের এক নারী। মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে একটি পাখি। আর ঠিক উল্টোদিকের ক্যানভাসে কালো কাগজের কোলাজের ভেতর থেকে উদ্ভাসিত এক শিশুর মুখ। মা ও শিশু শিরোনামের এ ছবির চিত্রকর শহীদ কাজী। ধারাবাহিকভাবে একের পর এক ৯টি ছবিতে ঘরের জানালা ভেদ করে আলো পড়ার দৃশ্য এঁকেছেন রোকনুজ্জামান। লিথোগ্রাফি মাধ্যমে আঁকা এ সিরিজ ছবিতে আছে আলোর খেলা। ক্রমশ আলো ম্লান হতে হতে একপর্যায়ে নেমে এসেছে অন্ধকার। সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা, রাতÑএকটি দিনের নানা সময়কে শিল্পী ক্যানভাসে মেলে ধরেছেন।
আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ঈদের ছুটির কারণে ১৫ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া ২১ শিল্পী হলেনÑ আবদুল হালিম চঞ্চল, আবদুস সালাম, আবদুস সাত্তার তৌফিক, আলী আকবর, আনিসুজ্জামান সোহেল, অনুকুল চন্দ্র মজুমদার, অস্মিতা আলম শাম্মি, জয়া শাহরিন হক, মনিকা জাহান বোস, নিত্যানন্দ গায়েন, রফি হক, রশীদ আমিন, রতেœশ্বর সূত্রধর, রোকনুজ্জামান, রোজভেল্ট বি ডি রোজারিও, রুহুল করিম রুমি, শহীদ কাজী, সাব্বির আলম, সঞ্জীব দত্ত, শিশির ভট্টাচার্য ও ওয়াকিলুর রহমান। আর্ট সেন্টারের এ প্রদর্শনী আয়োজনের পেছনের রয়েছে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য। সে কথা জানালেন প্রদর্শনী আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত চিত্রশিল্পী ওয়াকিলুর রহমান। বললেন, সারাদেশেই চিত্রকলার চর্চার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অনেক তরুণ শিল্পী। আর্থিক কারণে তাদের সবার পক্ষে একক প্রদর্শনী করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে দলীয়ভাবে প্রদর্শনীর আয়োজন করাটা বেশ সহজ হয়। আর এতে একসঙ্গে অনেক বৈচিত্র্যময় কাজ দেখার সুযোগ পায় দর্শনার্থীরা। একই সঙ্গে শিল্পীদের মধ্যে বন্ধনটাও দৃঢ় হয়। আর এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই আর্ট সেন্টারের এ যৌথ প্রদর্শনীর আয়োজন। এর মাধ্যমে যৌথভাবে শিল্পসম্ভার এক আঙ্গিনায় মেলে ধরার চর্চা শুরু হলো। এখন থেকে নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীদের নিয়ে এমন দলবদ্ধ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া ২১ শিল্পীর একজন মনিকা জাহান বোস। এমন যৌথ প্রদর্শনী সম্পর্কে বললেন, সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছেÑ দর্শক একসঙ্গে বিচিত্র রকমের কাজ দেখার সুযোগ পায়। আর শিল্পী হিসেবে অন্যের কাজের সঙ্গে নিজের কাজের মূল্যায়ন করা যায়। সবার সঙ্গে ভাবনার আদান-প্রদানের একটি ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়।
প্রদর্শনীর প্রতিটি ছবি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলেন জাহি মুস্তাফা নামের এক দর্শনার্থী। প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বললেন, তরুণ প্রজন্মের শিল্পীরা সব সময় নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। আর সেটার প্রকাশ ঘটেছে এ প্রদর্শনীতে। চিত্রকর্ম সৃজনের ক্ষেত্রে রয়েছে নতুনত্বের ছাপ। ছবি আঁকার আঙ্গিক ও কৌশলগত ক্ষেত্রেও রয়েছে নয়া চিন্তাভাবনার প্রকাশ।
আর্ট সেন্টারের একতলা ও দোতলার পাঁচটি কক্ষজুড়ে ঝোলানো হয়েছেন একুশ শিল্পীর শিল্পকর্ম। প্রত্যেক শিল্পীর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে একটি করে দেয়াল। সেখানে রয়েছে অধিকাংশ শিল্পীর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল একাধিক শিল্পকর্ম। তেল রং, ছাপচিত্র, লিথোগ্রাফি, পেইন্টিং, মিশ্র মাধ্যম, স্থাপনা শিল্পসহ নানা মাধ্যমের সমকালীন ধারার শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। এ্যাক্রেলিক মাধ্যমে আঁকা আবদুল হাকিমের যমজ শিরোনামের চিত্রকর্মটি যেন দর্শনার্থীকে পৌঁছে দেয় নতুনের বারতা। বিশাল ক্যানভাসের সবুজ জমিনে দৃশ্যমান গ্রাম-বাংলার রূপময় এক খাল। কেউ সেই খালে গোসল সারছেন, আবার কেউ বা মাছ ধরছেন। এমন দৃশ্যকে ভেদ করে ভেসে উঠেছে অনেকটা যেন জানালার শিকের মতো লম্বা লম্বা অনেক রেখা। সেই রেখার ওপর আবার চিত্রায়িত হয়েছে ভিন্ন বাস্তবতার দুই পুরুষ ও এক নারীর অবয়ব। সব মিলিয়ে ছবিটি যেন দর্শনার্থীর চোখে ছড়িয়ে দেয় একই সঙ্গে বিভ্রম ও মুগ্ধতার প্রলেপ।
সাদা-কালো জমিনে দৃশ্যমান খোলা চুলের এক নারী। মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে একটি পাখি। আর ঠিক উল্টোদিকের ক্যানভাসে কালো কাগজের কোলাজের ভেতর থেকে উদ্ভাসিত এক শিশুর মুখ। মা ও শিশু শিরোনামের এ ছবির চিত্রকর শহীদ কাজী। ধারাবাহিকভাবে একের পর এক ৯টি ছবিতে ঘরের জানালা ভেদ করে আলো পড়ার দৃশ্য এঁকেছেন রোকনুজ্জামান। লিথোগ্রাফি মাধ্যমে আঁকা এ সিরিজ ছবিতে আছে আলোর খেলা। ক্রমশ আলো ম্লান হতে হতে একপর্যায়ে নেমে এসেছে অন্ধকার। সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা, রাতÑএকটি দিনের নানা সময়কে শিল্পী ক্যানভাসে মেলে ধরেছেন।
আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ঈদের ছুটির কারণে ১৫ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
No comments