আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের হিসাব-নিকাশ শুরু- কোন্দল মেটাতে নেতাদের বাসায় যাচ্ছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী by একরামুল হক
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চট্টগ্রামে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতি নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সক্রিয় আওয়ামী লীগের মহানগর শাখার সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
দলীয় সূত্র জানায়, আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি সামনে রেখে দলীয় কোন্দল মেটানোর কথা বলে মাঠে নেমেছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে সব নেতাকে এক মঞ্চে আনার উদ্যোগ হিসেবে তিনি দলীয় রাজনীতিতে তাঁর বিপক্ষের নেতাদের বাসায় যাওয়া শুরু করেছেন। এরই মধ্যে আকস্মিকভাবে বৃহস্পতিবার রাতে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাংসদ নুরুল ইসলাম বিএসসির খুলশীর বাসায় গিয়ে হাজির হন মহিউদ্দিন চৌধুরী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি তো (নুরুল ইসলাম) অনেক দিন দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন না। এবার জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করতে চাই। তাই তাঁর বাসায় গিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছি।’
সর্বশেষ দুই বছর আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট চাইতে নুরুল ইসলামের বাসায় গিয়েছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরাজয়ের জন্য দলীয় কোন্দলকে বড় কারণ বলে মনে করা হয়। মেয়র নির্বাচনে মন্ত্রী আফছারুল আমীনের সমর্থকেরাও মহিউদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন না বলে তখন প্রচার ছিল।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা জানান, তিনি শিগগিরই মন্ত্রী আফছারুল আমীনের বাসায়ও যাবেন এবং শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানাবেন। এ ব্যাপারে তিনি গতকাল শুক্রবার দুপুরে আফছারুল আমীনের ব্যক্তিগত সহকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী ও নির্বাচনমুখী করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারণে সব উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে বলে দলের শীর্ষ নেতাদের আশঙ্কা।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অনেকের মধ্যে মান-অভিমান থাকতে পারে। এটা বেশি দিন থাকা ঠিক নয়। সামনে নির্বাচন। আমাদের তো প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই আমি প্রত্যেক নেতার বাড়িতে যাব, যাতে এক মঞ্চে কর্মসূচি পালন করতে পারি। আর তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরাও নেতাদের মধ্যে বিভেদ আর পছন্দ করছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে কর্মসূচিতে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। যাব কি না সেটা নির্ভর করছে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ওপর। কারণ, আমি একা গেলে আমার সঙ্গে আরও অনেকে আছেন, তাঁদের কী হবে? মহিউদ্দিন চৌধুরীর উচিত তাঁদেরও বলা, যাতে সবাই এক মঞ্চে কাজ করতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি তো দলের ভেতর বিভেদ সৃষ্টি করিনি; করেছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। বিভেদ দূর করার দায়িত্বও তাঁর।’
দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুটি ধারা চলে আসছে। পরস্পরবিরোধী এই দুটি ধারার একটির নেতৃত্বে আছেন সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আরেকটি নেতৃত্বে আছেন সাংসদ নুরুল ইসলাম। এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীনের অবস্থানও ছিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিপক্ষে।
চট্টগ্রাম-৮ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) হলো মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্বাচনী আসন। এই আসনে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন তিনি। ওই নির্বাচনে তিনি বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমানের কাছে হেরে যান। এরপর ১৯৯৬ সালে ও ২০০১ সালে ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নান। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নুরুল ইসলাম নির্বাচিত হন। নুরুল ইসলামের অনুসারীদের দাবি, গত নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরী মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন না। কারণ, তখন তিনি চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন। তবে তাঁর চেষ্টা ছিল, ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শামসুল আলম যাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। অবশ্য শামসুল আলম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে পরে একই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করে হেরে যান। তখন নুরুল ইসলাম ও মহিউদ্দিন চৌধুরীর মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করে। গত সাড়ে তিন বছরে তা আর কমেনি।
নুরুল ইসলামের অনুসারীদের আশঙ্কা, মহিউদ্দিন চৌধুরী যেহেতু মেয়র নির্বাচিত হতে পারেননি, আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি এই আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। আর এ জন্য চট্টগ্রামে দলীয় রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রের মনোযোগ আকর্ষণ করতে তিনি ঐক্যের কথা বলে আগেভাগে মাঠে নেমে গেছেন।
সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ, আগামী বছরের ২৭ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি তো (নুরুল ইসলাম) অনেক দিন দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন না। এবার জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করতে চাই। তাই তাঁর বাসায় গিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছি।’
সর্বশেষ দুই বছর আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট চাইতে নুরুল ইসলামের বাসায় গিয়েছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরাজয়ের জন্য দলীয় কোন্দলকে বড় কারণ বলে মনে করা হয়। মেয়র নির্বাচনে মন্ত্রী আফছারুল আমীনের সমর্থকেরাও মহিউদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে ছিলেন না বলে তখন প্রচার ছিল।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা জানান, তিনি শিগগিরই মন্ত্রী আফছারুল আমীনের বাসায়ও যাবেন এবং শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানাবেন। এ ব্যাপারে তিনি গতকাল শুক্রবার দুপুরে আফছারুল আমীনের ব্যক্তিগত সহকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী ও নির্বাচনমুখী করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারণে সব উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে বলে দলের শীর্ষ নেতাদের আশঙ্কা।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অনেকের মধ্যে মান-অভিমান থাকতে পারে। এটা বেশি দিন থাকা ঠিক নয়। সামনে নির্বাচন। আমাদের তো প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই আমি প্রত্যেক নেতার বাড়িতে যাব, যাতে এক মঞ্চে কর্মসূচি পালন করতে পারি। আর তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরাও নেতাদের মধ্যে বিভেদ আর পছন্দ করছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে কর্মসূচিতে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। যাব কি না সেটা নির্ভর করছে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ওপর। কারণ, আমি একা গেলে আমার সঙ্গে আরও অনেকে আছেন, তাঁদের কী হবে? মহিউদ্দিন চৌধুরীর উচিত তাঁদেরও বলা, যাতে সবাই এক মঞ্চে কাজ করতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি তো দলের ভেতর বিভেদ সৃষ্টি করিনি; করেছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। বিভেদ দূর করার দায়িত্বও তাঁর।’
দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুটি ধারা চলে আসছে। পরস্পরবিরোধী এই দুটি ধারার একটির নেতৃত্বে আছেন সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আরেকটি নেতৃত্বে আছেন সাংসদ নুরুল ইসলাম। এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীনের অবস্থানও ছিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিপক্ষে।
চট্টগ্রাম-৮ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) হলো মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্বাচনী আসন। এই আসনে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন তিনি। ওই নির্বাচনে তিনি বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমানের কাছে হেরে যান। এরপর ১৯৯৬ সালে ও ২০০১ সালে ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নান। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নুরুল ইসলাম নির্বাচিত হন। নুরুল ইসলামের অনুসারীদের দাবি, গত নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরী মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন না। কারণ, তখন তিনি চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন। তবে তাঁর চেষ্টা ছিল, ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শামসুল আলম যাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। অবশ্য শামসুল আলম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে পরে একই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করে হেরে যান। তখন নুরুল ইসলাম ও মহিউদ্দিন চৌধুরীর মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করে। গত সাড়ে তিন বছরে তা আর কমেনি।
নুরুল ইসলামের অনুসারীদের আশঙ্কা, মহিউদ্দিন চৌধুরী যেহেতু মেয়র নির্বাচিত হতে পারেননি, আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি এই আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। আর এ জন্য চট্টগ্রামে দলীয় রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রের মনোযোগ আকর্ষণ করতে তিনি ঐক্যের কথা বলে আগেভাগে মাঠে নেমে গেছেন।
সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ, আগামী বছরের ২৭ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হবে।
No comments