ঈদ অণুগল্প: ১ম সেরা- মেয়েটি আর ছেলেটি
মেয়েটি এই শহরে থাকে বলেই এখানে আসা সহজ হয়েছে। আর ছেলেটির কাছে ভ্রমণ কখনোই কঠিন ব্যাপার নয়। মেয়েটির শ্যাম্পু করা চুল হাওয়ায় উড়ছে। ছেলেটির চুলে জেল দেওয়া বিধায় ও ঝামেলা নেই।মেয়েটি, ছেলেদের ঘাড় অবধি চুল পছন্দ করে, ছেলেটির পছন্দ মেয়েদের এলোঘন চুল।
মেয়েটির নাকে ঘাম। টিস্যু পেপার দিয়ে মোছে। ছেলেটি রুমাল ব্যবহার করে হাতের তালু মুছতে।
মেয়েটি চিত্র প্রদর্শনীর টিকিট সংগ্রহ করে এখানে এসেছে, ফিরতি পথে একবার নজর বুলিয়ে যাবে। ছেলেটি রিটার্ন টিকিট কেটে নিয়ে এই শহরে এসেছে, যাতে ফিরতে অসুবিধা না হয়।
মেয়েটির উৎসাহ ঘুরে বেড়ানোতে। ছেলেটি আড্ডা দেয় বটে, তবে অন্যের বাড়ি বসে।
মেয়েটির অবস্থা বর্ষার মতো, কাঁদো কাঁদো ভাব। ছেলেটি বসন্তের মতো গা-ছাড়া ভাব।
তবুও মেয়েটি বলতে ভালোবাসে, সে বাথরুমে গুনগুন করে। ছেলেটি রক গান শোনে সেলুনে দাড়ি কামাতে কামাতে। মেয়েটির কাছে গল্পের অভাব হয় না। ছেলেটি অন্যের গল্প শুনে চাঁছাছোলা মন্তব্য করে।
মেয়েটি হাতে করে নিয়ে এসেছে রজনীগন্ধা আর প্রিয় লেখকের গল্পের বই। ছেলেটির এক হাতে গোলাপ, অন্য হাতে একই লেখকের নাটকের সিডি।
মেয়েটির পছন্দ শ্যামবর্ণ। ছেলেটির চাই ফর্সা ঘরনি।
মেয়েটির ইচ্ছা ফ্যাশনে ক্যারিয়ার গড়া। ছেলেটি এক চাকরিতে লেগে থাকার পক্ষপাতী নয়। মেয়েটি যখন তখন এমনকি অকারণেও হাসতে পারে। ছেলেটি কারও জন্মদিনেও উইশ করে কাষ্ঠ হাসি হেসে এবং চোখ দু হাতে রগড়াতে রগড়াতে। মেয়েটির প্রিয় টিভি চ্যানেল এমটিভি। ছেলেটি সবার সামনে দেখে স্পোর্টস চ্যানেল। পিছে ফ্যাশন চ্যানেল ছাড়া চলে না। মেয়েটি রাশিফলে বিশ্বাস রাখে। ছেলেটি ওসব পাত্তা দেয় না। তাহলে তো তার এখানে আসাই হতো না—যাত্রা অশুভ ছিল যে। মেয়েটির ঘাড়ে একটা ভ্যানিটি ব্যাগ। ছেলেটি প্রয়োজনীয় সব প্যান্টের পেছনের পকেট আর মানিব্যাগেই গুঁজে নেয়। মেয়েটির উপলব্ধি সে রোমান্টিক। ছেলেটির উপলব্ধি প্রেমে পড়া পর্যন্ত সব ঠিকঠাক থাকলেই হলো। ‘ব্রেকআপ’ তো হবেই। মেয়েটি কেন প্রেমে পড়তে পারছে না। এটা জানানোর মতো কেউ না থাকলেও সে বিশেষ দিনে বান্ধবীদের সংক্ষিপ্ত বার্তা পাঠায়। ছেলেটি প্রথমে দেখে কতজন তাকে মনে রেখেছে। এরপর সে এসএমএসের চিন্তা করে।
দুজনেই সেদিন বিকেলে সাদা পোশাকে এসেছিল। দুজনের দেখা হয়েছিল এক বিখ্যাত ব্যক্তির মৃত্যু-পরবর্তী স্মরণসভায়। ভাগ্যিস, তাদের মধ্যে প্রেম জমেনি! তাই একে অপরকে এতসব তথ্য জানানোরও দরকার পড়েনি!
লক্ষ্মী চক্রবর্তী
কোতোয়ালি নতুন উপশহর
যশোর।
মেয়েটি চিত্র প্রদর্শনীর টিকিট সংগ্রহ করে এখানে এসেছে, ফিরতি পথে একবার নজর বুলিয়ে যাবে। ছেলেটি রিটার্ন টিকিট কেটে নিয়ে এই শহরে এসেছে, যাতে ফিরতে অসুবিধা না হয়।
মেয়েটির উৎসাহ ঘুরে বেড়ানোতে। ছেলেটি আড্ডা দেয় বটে, তবে অন্যের বাড়ি বসে।
মেয়েটির অবস্থা বর্ষার মতো, কাঁদো কাঁদো ভাব। ছেলেটি বসন্তের মতো গা-ছাড়া ভাব।
তবুও মেয়েটি বলতে ভালোবাসে, সে বাথরুমে গুনগুন করে। ছেলেটি রক গান শোনে সেলুনে দাড়ি কামাতে কামাতে। মেয়েটির কাছে গল্পের অভাব হয় না। ছেলেটি অন্যের গল্প শুনে চাঁছাছোলা মন্তব্য করে।
মেয়েটি হাতে করে নিয়ে এসেছে রজনীগন্ধা আর প্রিয় লেখকের গল্পের বই। ছেলেটির এক হাতে গোলাপ, অন্য হাতে একই লেখকের নাটকের সিডি।
মেয়েটির পছন্দ শ্যামবর্ণ। ছেলেটির চাই ফর্সা ঘরনি।
মেয়েটির ইচ্ছা ফ্যাশনে ক্যারিয়ার গড়া। ছেলেটি এক চাকরিতে লেগে থাকার পক্ষপাতী নয়। মেয়েটি যখন তখন এমনকি অকারণেও হাসতে পারে। ছেলেটি কারও জন্মদিনেও উইশ করে কাষ্ঠ হাসি হেসে এবং চোখ দু হাতে রগড়াতে রগড়াতে। মেয়েটির প্রিয় টিভি চ্যানেল এমটিভি। ছেলেটি সবার সামনে দেখে স্পোর্টস চ্যানেল। পিছে ফ্যাশন চ্যানেল ছাড়া চলে না। মেয়েটি রাশিফলে বিশ্বাস রাখে। ছেলেটি ওসব পাত্তা দেয় না। তাহলে তো তার এখানে আসাই হতো না—যাত্রা অশুভ ছিল যে। মেয়েটির ঘাড়ে একটা ভ্যানিটি ব্যাগ। ছেলেটি প্রয়োজনীয় সব প্যান্টের পেছনের পকেট আর মানিব্যাগেই গুঁজে নেয়। মেয়েটির উপলব্ধি সে রোমান্টিক। ছেলেটির উপলব্ধি প্রেমে পড়া পর্যন্ত সব ঠিকঠাক থাকলেই হলো। ‘ব্রেকআপ’ তো হবেই। মেয়েটি কেন প্রেমে পড়তে পারছে না। এটা জানানোর মতো কেউ না থাকলেও সে বিশেষ দিনে বান্ধবীদের সংক্ষিপ্ত বার্তা পাঠায়। ছেলেটি প্রথমে দেখে কতজন তাকে মনে রেখেছে। এরপর সে এসএমএসের চিন্তা করে।
দুজনেই সেদিন বিকেলে সাদা পোশাকে এসেছিল। দুজনের দেখা হয়েছিল এক বিখ্যাত ব্যক্তির মৃত্যু-পরবর্তী স্মরণসভায়। ভাগ্যিস, তাদের মধ্যে প্রেম জমেনি! তাই একে অপরকে এতসব তথ্য জানানোরও দরকার পড়েনি!
লক্ষ্মী চক্রবর্তী
কোতোয়ালি নতুন উপশহর
যশোর।
No comments