সিনাইয়ে মিসরীয় সেনাসমাবেশঃ নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে বেদুঈনে নেতাদের সহায়তার আশ্বাস
সিনাই উপদ্বীপে মিসরীয় বাহিনী সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। সীমান্ত পুলিশের ওপর অজ্ঞাত পরিচয় বন্দুকধারীদের হামলার পর মিসর এই সেনা সমাবেশ ঘটালো। বেদুইন নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সহায়তা করার অঙ্গীকার করেছেন। এদিকে মিসরের এক সামরিক সূত্রে গতকাল বলা হয়েছে, সিনাই এলাকা থেকে ৬ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা থানায় হামলা চালালে ১৬ সীমান্তরক্ষী নিহত হয়।
ওই ঘটনার পর মিসর নিরাপত্তা রক্ষায় অভিযান জোরদার করেছে। ইসরাইল সীমান্ত অঞ্চলে জঙ্গিদের মোকাবিলায় মিসর বৃহস্পতিবার উত্তর সিনাইয়ে সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। সেনা কমান্ডাররা জানান, এরই মধ্যে সেনা অভিযানে ২০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। উত্তর সিনাইয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানে কোনো আইনশৃঙ্খলা নেই বললেই চলে। সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পতনের পর সিনাইয়ের উত্তরাঞ্চলে জঙ্গি তত্পরতা বেড়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গাজা সীমান্তের ৫০ কিমি. পশ্চিমে আল-আরিশ শহরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ গামাল আল-দিয়ের সঙ্গে বেদুইন উপজাতি নেতারা বৈঠকে মিলিত হন। বুধবার নিহত জঙ্গিদের লাশ দেখানোর দাবি জানান বেদুইন নেতারা। ‘আমরা দাবি করি তারা আমাদের অন্তত দু’-একটি লাশ দেখাক, যাতে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি।’ বৈঠকে অংশ নেয়া অন্যতম বেদুইন নেতা ঈদ আবু মারজুকা একথা বলেন। অন্যরা বলেন, এ ব্যাপারে তাদের সংশয় রয়েছে। সিনাইয়ের সামরিক কমান্ডার অবশ্য হত্যার সত্যতা নিশ্চিত করেন। উপজাতি বেদুইন নেতারা বলেন, নৈরাজ্যকর সিনাই উপত্যকায় নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে সামরিক বাহিনী ও পুলিশকে সহায়তা করতে তারা সম্মত হয়েছেন। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে অস্ত্র ও বেআইনি রসদ সরবরাহের চালান আসা রোধে সুড়ঙ্গপথ বন্ধ করতেও সম্মত হন। সুড়ঙ্গপথ ধ্বংসে বেদুইন নেতারা সর্বসম্মত সমর্থন দেন। তারা বলেন, এতে গাজার শাসক হামাস সরকার বিপর্যস্ত হলে তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের বিষয়টি মিসরের মোকাবিলা করা উচিত। মারজুকা আরও বলেন, আমরা চোরাচালান এবং অবরোধের বিরুদ্ধে। ইসরাইলের আধা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে—সে প্রসঙ্গে তিনি (মারজুকা) একথা বলেন।
২০০৭ সালে গাজায় হামাসের শাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইসরাইল এরকম অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেদুইন গোষ্ঠীর সহায়তা নিয়ে সহিংসতা সৃষ্টির জন্য কেন্দ্রীয় সররকারের প্রতি বৈরী মনোভাবাপন্ন দায়ী গ্রুপগুলোকে পরাজিত করা হবেই। তিনি বলেন, সিনাইয়ের জনগণের সাহায্য-সহযোগিতায় এ মিশন সফল হবে। বেদুইন নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা বলেন। তবে সিনাইয়ে অবস্থানকারী আরেক সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, দুর্গম পার্বত্য মরু এলাকার কারণে জঙ্গিরা একটা বাড়তি সুযোগ পায়। তাই পর্যায়ক্রমে এ সাফল্য আসবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে ওই কর্মকর্তা নিজের পরিচয় গোপন রাখেন। এদিকে হামাস সরকারের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেয়ার জন্য মিসরের প্রতি বৃহস্পতিবার আহ্বান জানান।
No comments