তেলকূপ দুর্ঘটনা-বিপন্ন উপকূল, বিক্ষুব্ধ ওবামা by বদরূল ইমাম
ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম—সংক্ষেপে বিপি—বিশ্বের অন্যতম সেরা তেল কোম্পানি। যে সাতটি তেল কোম্পানি (বিশ্বখ্যাত লেখক এন্থনি সিমসনের সেভেন সিসটার) গত শতাব্দীতে বিশ্বের বিশাল তেলভান্ডারগুলো আবিষ্কারের মাধ্যমে তেল বিপ্লবের সূচনা করেছিল, তাদেরই একটি এই ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম।
বিপি বাস্তবিক পক্ষেই পুঁজিবাদী বিশ্বের ধ্বজাধার ইঙ্গ-মার্কিন আঁতাতের প্রতীক। অথচ খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই এখন বয়ে চলেছে বিপিরিরোধী বিক্ষোভ, প্রকাশ হচ্ছে বিপির প্রতি ঘৃণা, প্রতীকী বর্জন চলছে বিপির পেট্রলপাম্প, কাদার প্রলেপ পড়ছে বিপির সাইনবোর্ডে। আর এসবের কারণ একটিই। তা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্রবক্ষে বিপির তেলকূপে সংঘটিত হয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেলকূপ দুর্ঘটনা, যা কিনা সে দেশের সমুদ্রবক্ষ ও উপকূল এলাকায় বয়ে এনেছে সর্বকালের সর্ববৃহৎ পরিবেশ দূষণ বা বিপর্যয়। আজ প্রায় দুই মাস হতে চলল, এখনো বন্ধ হয়নি সাগরের তলে দুর্ঘটনাকবলিত কূপ থেকে ভেসে আসা তেলের প্রবাহ; কবে হবে তারও নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না।
সেদিন ছিল ২০ এপ্রিল ২০১০। তেল-গ্যাসসমৃদ্ধ গালফ অব মেক্সিকোর গভীর সমুদ্রবক্ষে বিপির তেলকূপবাহী রিগ ও প্লাটফর্মটি সহসাই দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে অগ্নিদগ্ধ ও বিস্ফোরিত হয়। মুহূর্তেই ১১ জন কর্মীর মৃত্যু ঘটে, প্রায় ১০০ জন কর্মী আহত অবস্থায় পালিয়ে রক্ষা পায়। এদিকে পাঁচ হাজার ফুট গভীর সমুদ্রতলে ভাঙা তেলকূপটি থেকে বিরামহীনভাবে লাখ লাখ গ্যালন তেল বের হয়ে সমুদ্রের পানিতে মিশে যেতে থাকে। বিপি একাধিক পদ্ধতিতে তেলকূপটি বন্ধ করতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বিপিকে অপরাধ আইনে অভিযুক্ত করে আদালতে নেওয়ার দাবি ওঠে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবার প্রেসিডেন্ট ওবামাকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারার দোষে দুষ্ট দেখাতে সচেষ্ট হয়ে ওঠে।
একসময় ওবামা ঠিকই বুঝতে পারেন, সাইক্লোন ক্যাটরিনা যেমন প্রেসিডেন্ট বুশের পতনের গোড়াপত্তন করেছিল, বিপির এই অভিশপ্ত কূপ তাঁর জন্য অশুভ ক্ষণ বয়ে নিয়ে আসতে পারে। পরিস্থিতি এতটা খারাপ হওয়ার আগেই তিনি দুইবার উপকূল এলাকা ঘুরে এসেছেন। কিন্তু এখন যেন সবকিছুই ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে। তৃতীয়বার তিনি উপকূল এলাকা ঘুরে এসে বুঝতে পারলেন, এ কূপ সহসা বন্ধ হবে না, আরও লাখ লাখ গ্যালন তেলের দূষণ তাঁকে তাড়া করে ছাড়বে। প্রেসিডেন্ট ওবামা বিশ্বব্যাপী একজন ঠান্ডা মাথার সুষ্ঠুভাষী বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে সুপরিচিত। কিন্তু পরিস্থিতি তাঁকে এতটাই ক্ষিপ্ত করে তুলেছে যে তাঁর বক্তব্যে ভিন্নতর সুর চলে আসে। ৭ জুন অর্থাৎ দুর্ঘটনার ৫০ দিন পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি উচ্চস্বরেই বললেন, ‘...I talk to the experts because they have the best answer, so I know whose ass to kick...’ অর্থাৎ ‘...আমি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি, এটি ঠিক করার জন্য যে, কার পশ্চাৎদেশে আমাকে লাথিটা মারতে হবে।’ অনেকেই বুঝতে পেরেছেন যে প্রেসিডেন্ট ওবামা বিপির প্রধান কর্তাব্যক্তি টনি হেইউডকে মাথায় রেখেই কথাটি বলেছেন।
এদিকে কী পরিমাণ তেল প্রতিদিন ফাটা পাইপ দিয়ে বের হয়ে সাগরের পানিতে মিশছে, তা নিয়ে বেধে যায় আরেক হইচই। বিপি প্রথম দিকে জানায়, এর পরিমাণ প্রতিদিন পাঁচ হাজার গ্যালন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বিপির কর্মকাণ্ডে অবিশ্বাসী মনোভাবের গন্ধ পায় মার্কিন জনগণ। একজন কংগ্রেসম্যান বিপিকে বাধ্য করেন সাগরের তলদেশে লাগানো ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করা চলমান চিত্র প্রকাশ করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক চলমান ভিডিও চিত্রের ওপর ভিত্তি করে তেলের প্রবাহ নির্ধারণ করার পন্থা উদ্ভাবন করেন। তিনি হিসাব কষে দেখান, ভাঙা কূপ দিয়ে বের হওয়া তেলের পরিমাণ প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার গ্যালন। প্রবাহিত তেলের প্রকৃত পরিমাণ না জানানোর উদ্দেশ্য কী তা সহজেই বুঝতে পারে জনগণ। দূষণের মাত্রা ও বিনষ্ট তেলের পরিমাণের ওপর নির্ভর করবে চূড়ান্তভাবে বিপিকে কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
নির্গত তেল সরাসরি সাগর ও উপকূল ভূমিকে দূষিত করেছে বটে, কিন্তু ক্ষতির মাত্রা তাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সমুদ্র উপকূল বরাবর বিস্তীর্ণ এলাকায় মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী চাষ করে জীবিকা অর্জন করে এমন হাজার হাজার কর্মী সমুদ্র দূষণের কারণে বেকার হয়ে পথে বসেছে। সমুদ্র উপকূল দূষণের ফলে কেবল ফ্লোরিডা প্রদেশে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকতের পর্যটন ব্যবসায় ধস নামার ফলে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হারাতে হয়েছে। ইতিমধ্যেই পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে প্রেসিডেন্ট ওবামা আগামী ছয় মাস সমুদ্রে নতুন কূপ খননের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। ফলে তেলকূপ খনন ব্যবসায় নিয়োজিত হাজার হাজার কর্মী তাঁদের চাকরি হারিয়েছে।
সবার মুখে এখন প্রশ্ন, এই তেলপ্রবাহ আর এই তেল দূষণ কবে থামবে? ইতিমধ্যে বিপি কয়েক দফায় কয়েক প্রকারের পদ্ধতিতে কূপের মুখ বন্ধ করতে চেষ্টা চালায়, কিন্তু কোনোটিই সফল হয়নি। সমস্যা হলো, সাগরের তলে যেখানে কূপটি দিয়ে তেল বের হয়ে চলেছে, সেখানে পানির গভীরতা পাঁচ হাজার ফুট। এত গভীরে কোনো মানুষ গিয়ে কাজ করতে পারে না। সবই করতে হয় দূর থেকে নিয়ন্ত্রিত রোবট দিয়ে। অথচ এ গভীরতায় তীব্র পানির চাপ ও অতিনিম্ন তাপমাত্রা যেকোনো ধরনের কাজকে অতিশয় জটিল করে তোলে। বিশ্বে ইতিপূর্বে কোথাও কখনো এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তাই তা সামাল দেওয়াব অভিজ্ঞতাও কারও নেই।
বিপি তার ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, সহসা এই তেলপ্রবাহ বন্ধ করা যাবে না। এর জন্য প্রকৃত পদ্ধতি রিলিফ কূপ খনন করা দরকার, যা ইতিমধ্যে শুরু করা হয়েছে। কিন্তু রিলিফ কূপ খনন সম্পন্ন করতে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময় লাগবে। তার আগ পর্যন্ত তেলপ্রবাহ ও সমুদ্র দূষণ চলতে থাকবে। এই তেলকূপ দুর্ঘটনায় হাজার হাজার মার্কিন জনগণের জীবনে যেমন দুর্যোগ নেমে এসেছে, বিপির অবস্থাও সেই রকম বেসামাল। ইতিমধ্যে স্টক মার্কেটে বিপির শেয়ারের দামে পতন ঘটেছে। কোটি কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি সামলাতে আগামী মাস ও বছরগুলোতে বিপি হিমশিম খাবে। অনেকে মনে করেন, এই দুর্ঘটনা বিপিকে দেউলিয়া করে ছাড়বে।সর্বকালের সর্ববৃহৎ এই তেলকূপ দুর্ঘটনা ইতিহাসের পাতায় বিপি কোম্পানিকে কালো অক্ষরে চিহ্নিত করে রাখবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
ড. বদরূল ইমাম: অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, রেজাইনা বিশ্ববিদ্যালয়।
সেদিন ছিল ২০ এপ্রিল ২০১০। তেল-গ্যাসসমৃদ্ধ গালফ অব মেক্সিকোর গভীর সমুদ্রবক্ষে বিপির তেলকূপবাহী রিগ ও প্লাটফর্মটি সহসাই দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে অগ্নিদগ্ধ ও বিস্ফোরিত হয়। মুহূর্তেই ১১ জন কর্মীর মৃত্যু ঘটে, প্রায় ১০০ জন কর্মী আহত অবস্থায় পালিয়ে রক্ষা পায়। এদিকে পাঁচ হাজার ফুট গভীর সমুদ্রতলে ভাঙা তেলকূপটি থেকে বিরামহীনভাবে লাখ লাখ গ্যালন তেল বের হয়ে সমুদ্রের পানিতে মিশে যেতে থাকে। বিপি একাধিক পদ্ধতিতে তেলকূপটি বন্ধ করতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বিপিকে অপরাধ আইনে অভিযুক্ত করে আদালতে নেওয়ার দাবি ওঠে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবার প্রেসিডেন্ট ওবামাকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারার দোষে দুষ্ট দেখাতে সচেষ্ট হয়ে ওঠে।
একসময় ওবামা ঠিকই বুঝতে পারেন, সাইক্লোন ক্যাটরিনা যেমন প্রেসিডেন্ট বুশের পতনের গোড়াপত্তন করেছিল, বিপির এই অভিশপ্ত কূপ তাঁর জন্য অশুভ ক্ষণ বয়ে নিয়ে আসতে পারে। পরিস্থিতি এতটা খারাপ হওয়ার আগেই তিনি দুইবার উপকূল এলাকা ঘুরে এসেছেন। কিন্তু এখন যেন সবকিছুই ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে। তৃতীয়বার তিনি উপকূল এলাকা ঘুরে এসে বুঝতে পারলেন, এ কূপ সহসা বন্ধ হবে না, আরও লাখ লাখ গ্যালন তেলের দূষণ তাঁকে তাড়া করে ছাড়বে। প্রেসিডেন্ট ওবামা বিশ্বব্যাপী একজন ঠান্ডা মাথার সুষ্ঠুভাষী বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে সুপরিচিত। কিন্তু পরিস্থিতি তাঁকে এতটাই ক্ষিপ্ত করে তুলেছে যে তাঁর বক্তব্যে ভিন্নতর সুর চলে আসে। ৭ জুন অর্থাৎ দুর্ঘটনার ৫০ দিন পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি উচ্চস্বরেই বললেন, ‘...I talk to the experts because they have the best answer, so I know whose ass to kick...’ অর্থাৎ ‘...আমি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি, এটি ঠিক করার জন্য যে, কার পশ্চাৎদেশে আমাকে লাথিটা মারতে হবে।’ অনেকেই বুঝতে পেরেছেন যে প্রেসিডেন্ট ওবামা বিপির প্রধান কর্তাব্যক্তি টনি হেইউডকে মাথায় রেখেই কথাটি বলেছেন।
এদিকে কী পরিমাণ তেল প্রতিদিন ফাটা পাইপ দিয়ে বের হয়ে সাগরের পানিতে মিশছে, তা নিয়ে বেধে যায় আরেক হইচই। বিপি প্রথম দিকে জানায়, এর পরিমাণ প্রতিদিন পাঁচ হাজার গ্যালন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বিপির কর্মকাণ্ডে অবিশ্বাসী মনোভাবের গন্ধ পায় মার্কিন জনগণ। একজন কংগ্রেসম্যান বিপিকে বাধ্য করেন সাগরের তলদেশে লাগানো ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করা চলমান চিত্র প্রকাশ করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক চলমান ভিডিও চিত্রের ওপর ভিত্তি করে তেলের প্রবাহ নির্ধারণ করার পন্থা উদ্ভাবন করেন। তিনি হিসাব কষে দেখান, ভাঙা কূপ দিয়ে বের হওয়া তেলের পরিমাণ প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার গ্যালন। প্রবাহিত তেলের প্রকৃত পরিমাণ না জানানোর উদ্দেশ্য কী তা সহজেই বুঝতে পারে জনগণ। দূষণের মাত্রা ও বিনষ্ট তেলের পরিমাণের ওপর নির্ভর করবে চূড়ান্তভাবে বিপিকে কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
নির্গত তেল সরাসরি সাগর ও উপকূল ভূমিকে দূষিত করেছে বটে, কিন্তু ক্ষতির মাত্রা তাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সমুদ্র উপকূল বরাবর বিস্তীর্ণ এলাকায় মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী চাষ করে জীবিকা অর্জন করে এমন হাজার হাজার কর্মী সমুদ্র দূষণের কারণে বেকার হয়ে পথে বসেছে। সমুদ্র উপকূল দূষণের ফলে কেবল ফ্লোরিডা প্রদেশে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকতের পর্যটন ব্যবসায় ধস নামার ফলে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হারাতে হয়েছে। ইতিমধ্যেই পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে প্রেসিডেন্ট ওবামা আগামী ছয় মাস সমুদ্রে নতুন কূপ খননের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। ফলে তেলকূপ খনন ব্যবসায় নিয়োজিত হাজার হাজার কর্মী তাঁদের চাকরি হারিয়েছে।
সবার মুখে এখন প্রশ্ন, এই তেলপ্রবাহ আর এই তেল দূষণ কবে থামবে? ইতিমধ্যে বিপি কয়েক দফায় কয়েক প্রকারের পদ্ধতিতে কূপের মুখ বন্ধ করতে চেষ্টা চালায়, কিন্তু কোনোটিই সফল হয়নি। সমস্যা হলো, সাগরের তলে যেখানে কূপটি দিয়ে তেল বের হয়ে চলেছে, সেখানে পানির গভীরতা পাঁচ হাজার ফুট। এত গভীরে কোনো মানুষ গিয়ে কাজ করতে পারে না। সবই করতে হয় দূর থেকে নিয়ন্ত্রিত রোবট দিয়ে। অথচ এ গভীরতায় তীব্র পানির চাপ ও অতিনিম্ন তাপমাত্রা যেকোনো ধরনের কাজকে অতিশয় জটিল করে তোলে। বিশ্বে ইতিপূর্বে কোথাও কখনো এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তাই তা সামাল দেওয়াব অভিজ্ঞতাও কারও নেই।
বিপি তার ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, সহসা এই তেলপ্রবাহ বন্ধ করা যাবে না। এর জন্য প্রকৃত পদ্ধতি রিলিফ কূপ খনন করা দরকার, যা ইতিমধ্যে শুরু করা হয়েছে। কিন্তু রিলিফ কূপ খনন সম্পন্ন করতে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময় লাগবে। তার আগ পর্যন্ত তেলপ্রবাহ ও সমুদ্র দূষণ চলতে থাকবে। এই তেলকূপ দুর্ঘটনায় হাজার হাজার মার্কিন জনগণের জীবনে যেমন দুর্যোগ নেমে এসেছে, বিপির অবস্থাও সেই রকম বেসামাল। ইতিমধ্যে স্টক মার্কেটে বিপির শেয়ারের দামে পতন ঘটেছে। কোটি কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি সামলাতে আগামী মাস ও বছরগুলোতে বিপি হিমশিম খাবে। অনেকে মনে করেন, এই দুর্ঘটনা বিপিকে দেউলিয়া করে ছাড়বে।সর্বকালের সর্ববৃহৎ এই তেলকূপ দুর্ঘটনা ইতিহাসের পাতায় বিপি কোম্পানিকে কালো অক্ষরে চিহ্নিত করে রাখবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
ড. বদরূল ইমাম: অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, রেজাইনা বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments