গদ্যকার্টুন-ফুটবল থেকে সাবধান by আনিসুল হক
ফুটবল খুব মহান খেলা হতে পারে, আর বিশ্বকাপ হতে পারে ভূগ্রহের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী, কিন্তু এটা থেকে আমরা যা শিখছি, তার সবই যে মহান, চিরকল্যাণকর, তা ফিফার প্রেসিডেন্টও দাবি করতে পারবেন না, দাবি করতে পারবেন না আলবেয়ার কামুও। কয়েকটা খেলা অতি আপনজনের টেলিভিশন পর্দায় অবলোকন করে আমার মনে হয়েছে, ফুটবল থেকে নিচের শিক্ষাগুলো গ্রহণ না করাই হবে শ্রেয়।
১. যেখানে-সেখানে থুতু ফেলা: ফুটবলারদের শুচিতাবোধের অভাব খুব বেশি। এরা যেখানে খেলে, যে মাঠ তার পেশার ক্ষেত্র, তাকে যশ-খ্যাতি-জীবিকা-অর্থ দান করে, সেই মাঠেই কীভাবে একজন খেলোয়াড় এত থুতু ছিটাতে পারে। সারাক্ষণই তো দেখি এরা গুইসাপের মতো থু থু করছে।
২. হাত দিয়ে খেলা: আমেরিকানরা উল্টো জাতি। তারা ফুটবল খেলে হাত দিয়ে, পা দিয়ে খেলে সকার। চিরকাল শুনে এসেছি। কিন্তু অন্য জাতি, যারা পা দিয়েই ফুটবল খেলে, তারাও যে উল্টাপাল্টা কাজ করছে না, তা বলা যাবে না। বরং ফুটবল মাঠে হাতের এত কাজ কেন? টেলিভিশনের কল্যাণে ক্লোজশটে আমরা যা দেখছি, তাতে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, ফুটবলারদের হাত না থাকলেই খেলাটা সুন্দর হতে পারত। বড় বড় দলের বাঘা বাঘা খেলোয়াড় সুযোগ পেলেই প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের জার্সি টেনে ধরে থাকছে। আর হাত দিয়ে পিঠে ধাক্কা মারা, মুখে কনুই দিয়ে গুঁতো মারা—এসবও চালানো হচ্ছে দেদারসে, বেশ গেরিলা থেকে সম্মুখ রণকৌশল অনুযায়ী, কখনো চোরাগোপ্তা, কখনো প্রকাশ্যে। হাত দিয়ে একেবারে গলা জড়িয়ে ধরা, খেলোয়াড়কে দুই হাতে জড়িয়ে ফেলা—এসব টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখে লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাওয়ার দরকার। নিউজিল্যান্ডের এক খেলোয়াড় তো ইতালির আক্রমণভাগের এক খেলোয়াড়কে পুরো দুই মিনিট হাতে ধরে টেনে রাখার অদম্য অক্লান্ত চেষ্টা করলেন এবং শেষে প্রতিপক্ষকে ভূমিসাৎ করতে সক্ষম হলেন। এসব কী? আর হাত দিয়ে গোল করা? এ নিয়ে কথা যত কম বলা যায়, ততই ভালো।
৩. অতি অভিনয়: অভিনয় একটু সুনিপুণ কলা। এই শিল্পটির পরিমিত প্রয়োগ আমাদের জীবন যাপনকে, আমাদের নন্দনজগৎকে আনন্দপূর্ণ ও সুষমামণ্ডিত করে এসেছে। আমরা যাত্রার উচ্চকিত অভিনয়, মঞ্চনাটকের কায়িক ও বাচনিক একটু চিৎকৃত অভিনয় আর চলচ্চিত্রের পরিমিত অভিনয় দেখে চিরকালই মুগ্ধ হয়েছি। সেই অভিনয়ের এ কী নিদারুণ করুণ পরিণতি ঘটেছে বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠে। ঊর্ধ্বগগন থেকে পড়ন্ত একটা ফুটবলে মাথা ছোঁয়াতে একসঙ্গে দুজন খেলোয়াড় যেই লম্ফমান হন, একজন অবশ্যম্ভাবী আরেকজনের মুখে, মাথার পেছনে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করেন, তারপর নিচে নেমে আঘাতকারী এমনভাবে কাতরাতে থাকেন যেন তিনিই আক্রান্ত! ব্রাজিল আর আইভরি কোস্টের খেলায় যে নিপুণ অভিনয়-ছলনায় বিভ্রান্ত করে কাকাকে লাল কার্ডের অকারণ অসহায় শিকারে পরিণত করা হয়েছে, টেলিভিশনের রিপ্লেতে তা দেখে ৩০০ কোটি মানুষ লজ্জায় অধোবদন হয়ে গেছেন। তবে ব্রাজিল যে কেবল শিকারে পরিণত হয়েছে তাই নয়, এর আগে শিকারও করেছিল, এই শিক্ষা আইভরি কোস্টের খেলোয়াড়টি ব্রাজিলের রিভালদোর কাছ থেকেই পেয়েছিল। তুরস্কের বিরুদ্ধে রিভালদো এই কৌশল প্রয়োগ করেই একবার একজনকে লাল কার্ড দেখিয়ে প্রথম রাউন্ডের বৈতরণী অতিকষ্টে পার হয়েছিল। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো বড় খেলোয়াড়ও ফাউল করে রেফারির সঙ্গে এমন আচরণ করেন যে পৃথিবীর যত অন্যায় সিদ্ধান্তের শিকার একমাত্র তিনিই হচ্ছেন। অভিনয় শিল্পই বটে, কিন্তু তাতে তো পরিমিতি বোধের পরিচয় থাকতে হবে। এই অতিনাটকীয় অতিচিৎকৃত যাকে মেলোড্রামাটিক অভিনয় আর কাহাতক সহ্য করা যায়!
৪. ভুল বিচার: মানুষ মাত্রই ভুল করে। ভুল করলেই আমরা বুঝতে পারি, যিনি ভুল করছেন তিনি মানুষ। রেফারিরা যে মানুষ, বারবার ভুল করে সেই সিদ্ধান্তটাই যেন তাঁরা প্রমাণ করতে চান।
এ কী লাল কার্ড হলুদ কার্ড দেখানো চলছে! কাকাকে দেখানো দুটো হলুদ কার্ডই ছিল অযৌক্তিক। জার্মানির ক্লোজার লাল কার্ডটিও নাকি অকারণ ছিল। বিচারকেরা নিজেরা ভুল করলে দর্শকেরা বিচারকদের প্রতি আস্থা রাখবেন কী করে?
কিন্তু এসব হয়তো খেলারই অংশ। খেলায় সব হবে। মানবিক ভুলভ্রান্তি হবে। রেফারিরা ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন। সেটা মেনে নিতে পারতে হবে। খেলাটা যে খেলাই, হয়তো ছেলেখেলাই, এই কথাটা যেন আমরা ভুলে না যাই। সেটাই যেন পুরো ব্যাপারটা আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
৫. স্বার্থপরতা: ফুটবল খেলোয়াড়দের স্বার্থপরতা ভয়াবহ। আক্রমণভাগের একেকজন খেলোয়াড় পাশের সতীর্থ খেলোয়াড়কে পাস দিলে নিশ্চিত গুণ জেনেও বা জেনেই সরাসরি নিজে বল মারতে চেষ্টা করছে গোল লক্ষ্য করে এবং একটার পর একটা সমূহ সম্ভাবনা দিচ্ছে জলাঞ্জলি। এই স্বার্থপরদের আমাদের বলতে হবে, পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না, পরের জন্যে তোমার গোল—কুসুমকে প্রস্ফুটিত করিও।
৬. ছয় নম্বর পয়েন্টটা অবশ্য বিশ্বকাপের মাঠে ঘটে না। সাধারণত এটা ঘটে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রশংসিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় বন্ধ করে দিতে হয়। কারণ ছেলেরা বিশ্বকাপ খেলা দেখার জন্য ছুটি চায়। কর্তৃপক্ষ ছুটি দিতে চান না। তখন একটা মারামারি লাগে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়টি অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষিত হয়। এটা আমরা বহুদিন থেকে দেখে আসছি। এ বছরও এর ব্যতিক্রম ঘটল না। এভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই প্রতি চার বছর অন্তর বিশ্বকাপ উপলক্ষে বন্ধ করে দিতে হয়! এই শিক্ষাটা দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুক, আমরা কায়মনোবাক্যে তা-ই চাইব।
তার পরও আমরা ফুটবল দেখব। কারণ জিনিসটাকে আমাদের বিচার করতে হচ্ছে খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব নিয়ে। যা কিছু ঘটছে, সবই মজার জন্য।
(আমার এই লেখাটা যদি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া কোনো খেলোয়াড় বা কোচ পড়তেন, তবে তাঁকে একটা টিপস আমি দিতাম। এবারের বল জাবুলানির একটা গা-জ্বালানি বদঅভ্যাস আছে। দূর থেকে মারলে তা সাধারণত গোলপোস্টের বহু বাইরে দিয়ে যায়। এটাকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে জালে না ঢোকালে সে গোলের মায়াজালে জড়াতে চায় না। কাজেই রবিনহো বা রোনালদো যেন দূর থেকে শট মেরে সুযোগগুলো নষ্ট না করে। সে কারণেই এবার লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনা বেশি, কারণ ওরাই সাধারণত বলটা নিয়ে গোলপোস্টের মধ্যে ঢুকে পড়তে পছন্দ করে।)
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
২. হাত দিয়ে খেলা: আমেরিকানরা উল্টো জাতি। তারা ফুটবল খেলে হাত দিয়ে, পা দিয়ে খেলে সকার। চিরকাল শুনে এসেছি। কিন্তু অন্য জাতি, যারা পা দিয়েই ফুটবল খেলে, তারাও যে উল্টাপাল্টা কাজ করছে না, তা বলা যাবে না। বরং ফুটবল মাঠে হাতের এত কাজ কেন? টেলিভিশনের কল্যাণে ক্লোজশটে আমরা যা দেখছি, তাতে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, ফুটবলারদের হাত না থাকলেই খেলাটা সুন্দর হতে পারত। বড় বড় দলের বাঘা বাঘা খেলোয়াড় সুযোগ পেলেই প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের জার্সি টেনে ধরে থাকছে। আর হাত দিয়ে পিঠে ধাক্কা মারা, মুখে কনুই দিয়ে গুঁতো মারা—এসবও চালানো হচ্ছে দেদারসে, বেশ গেরিলা থেকে সম্মুখ রণকৌশল অনুযায়ী, কখনো চোরাগোপ্তা, কখনো প্রকাশ্যে। হাত দিয়ে একেবারে গলা জড়িয়ে ধরা, খেলোয়াড়কে দুই হাতে জড়িয়ে ফেলা—এসব টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখে লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাওয়ার দরকার। নিউজিল্যান্ডের এক খেলোয়াড় তো ইতালির আক্রমণভাগের এক খেলোয়াড়কে পুরো দুই মিনিট হাতে ধরে টেনে রাখার অদম্য অক্লান্ত চেষ্টা করলেন এবং শেষে প্রতিপক্ষকে ভূমিসাৎ করতে সক্ষম হলেন। এসব কী? আর হাত দিয়ে গোল করা? এ নিয়ে কথা যত কম বলা যায়, ততই ভালো।
৩. অতি অভিনয়: অভিনয় একটু সুনিপুণ কলা। এই শিল্পটির পরিমিত প্রয়োগ আমাদের জীবন যাপনকে, আমাদের নন্দনজগৎকে আনন্দপূর্ণ ও সুষমামণ্ডিত করে এসেছে। আমরা যাত্রার উচ্চকিত অভিনয়, মঞ্চনাটকের কায়িক ও বাচনিক একটু চিৎকৃত অভিনয় আর চলচ্চিত্রের পরিমিত অভিনয় দেখে চিরকালই মুগ্ধ হয়েছি। সেই অভিনয়ের এ কী নিদারুণ করুণ পরিণতি ঘটেছে বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠে। ঊর্ধ্বগগন থেকে পড়ন্ত একটা ফুটবলে মাথা ছোঁয়াতে একসঙ্গে দুজন খেলোয়াড় যেই লম্ফমান হন, একজন অবশ্যম্ভাবী আরেকজনের মুখে, মাথার পেছনে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করেন, তারপর নিচে নেমে আঘাতকারী এমনভাবে কাতরাতে থাকেন যেন তিনিই আক্রান্ত! ব্রাজিল আর আইভরি কোস্টের খেলায় যে নিপুণ অভিনয়-ছলনায় বিভ্রান্ত করে কাকাকে লাল কার্ডের অকারণ অসহায় শিকারে পরিণত করা হয়েছে, টেলিভিশনের রিপ্লেতে তা দেখে ৩০০ কোটি মানুষ লজ্জায় অধোবদন হয়ে গেছেন। তবে ব্রাজিল যে কেবল শিকারে পরিণত হয়েছে তাই নয়, এর আগে শিকারও করেছিল, এই শিক্ষা আইভরি কোস্টের খেলোয়াড়টি ব্রাজিলের রিভালদোর কাছ থেকেই পেয়েছিল। তুরস্কের বিরুদ্ধে রিভালদো এই কৌশল প্রয়োগ করেই একবার একজনকে লাল কার্ড দেখিয়ে প্রথম রাউন্ডের বৈতরণী অতিকষ্টে পার হয়েছিল। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো বড় খেলোয়াড়ও ফাউল করে রেফারির সঙ্গে এমন আচরণ করেন যে পৃথিবীর যত অন্যায় সিদ্ধান্তের শিকার একমাত্র তিনিই হচ্ছেন। অভিনয় শিল্পই বটে, কিন্তু তাতে তো পরিমিতি বোধের পরিচয় থাকতে হবে। এই অতিনাটকীয় অতিচিৎকৃত যাকে মেলোড্রামাটিক অভিনয় আর কাহাতক সহ্য করা যায়!
৪. ভুল বিচার: মানুষ মাত্রই ভুল করে। ভুল করলেই আমরা বুঝতে পারি, যিনি ভুল করছেন তিনি মানুষ। রেফারিরা যে মানুষ, বারবার ভুল করে সেই সিদ্ধান্তটাই যেন তাঁরা প্রমাণ করতে চান।
এ কী লাল কার্ড হলুদ কার্ড দেখানো চলছে! কাকাকে দেখানো দুটো হলুদ কার্ডই ছিল অযৌক্তিক। জার্মানির ক্লোজার লাল কার্ডটিও নাকি অকারণ ছিল। বিচারকেরা নিজেরা ভুল করলে দর্শকেরা বিচারকদের প্রতি আস্থা রাখবেন কী করে?
কিন্তু এসব হয়তো খেলারই অংশ। খেলায় সব হবে। মানবিক ভুলভ্রান্তি হবে। রেফারিরা ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন। সেটা মেনে নিতে পারতে হবে। খেলাটা যে খেলাই, হয়তো ছেলেখেলাই, এই কথাটা যেন আমরা ভুলে না যাই। সেটাই যেন পুরো ব্যাপারটা আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
৫. স্বার্থপরতা: ফুটবল খেলোয়াড়দের স্বার্থপরতা ভয়াবহ। আক্রমণভাগের একেকজন খেলোয়াড় পাশের সতীর্থ খেলোয়াড়কে পাস দিলে নিশ্চিত গুণ জেনেও বা জেনেই সরাসরি নিজে বল মারতে চেষ্টা করছে গোল লক্ষ্য করে এবং একটার পর একটা সমূহ সম্ভাবনা দিচ্ছে জলাঞ্জলি। এই স্বার্থপরদের আমাদের বলতে হবে, পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না, পরের জন্যে তোমার গোল—কুসুমকে প্রস্ফুটিত করিও।
৬. ছয় নম্বর পয়েন্টটা অবশ্য বিশ্বকাপের মাঠে ঘটে না। সাধারণত এটা ঘটে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রশংসিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় বন্ধ করে দিতে হয়। কারণ ছেলেরা বিশ্বকাপ খেলা দেখার জন্য ছুটি চায়। কর্তৃপক্ষ ছুটি দিতে চান না। তখন একটা মারামারি লাগে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়টি অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষিত হয়। এটা আমরা বহুদিন থেকে দেখে আসছি। এ বছরও এর ব্যতিক্রম ঘটল না। এভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই প্রতি চার বছর অন্তর বিশ্বকাপ উপলক্ষে বন্ধ করে দিতে হয়! এই শিক্ষাটা দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুক, আমরা কায়মনোবাক্যে তা-ই চাইব।
তার পরও আমরা ফুটবল দেখব। কারণ জিনিসটাকে আমাদের বিচার করতে হচ্ছে খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব নিয়ে। যা কিছু ঘটছে, সবই মজার জন্য।
(আমার এই লেখাটা যদি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া কোনো খেলোয়াড় বা কোচ পড়তেন, তবে তাঁকে একটা টিপস আমি দিতাম। এবারের বল জাবুলানির একটা গা-জ্বালানি বদঅভ্যাস আছে। দূর থেকে মারলে তা সাধারণত গোলপোস্টের বহু বাইরে দিয়ে যায়। এটাকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে জালে না ঢোকালে সে গোলের মায়াজালে জড়াতে চায় না। কাজেই রবিনহো বা রোনালদো যেন দূর থেকে শট মেরে সুযোগগুলো নষ্ট না করে। সে কারণেই এবার লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনা বেশি, কারণ ওরাই সাধারণত বলটা নিয়ে গোলপোস্টের মধ্যে ঢুকে পড়তে পছন্দ করে।)
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
No comments