জেনেভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মিথ্যাচারঃ বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বন্ধেই মঙ্গল
আবারও তাক লাগিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি। জেনেভায় অনুষ্ঠিত মানবাধিকার কাউন্সিলের সভায় তিনি বলেছেন, তাদের সরকার নাকি হত্যাসহ বিচারবহির্ভূত কোনো কিছুতেই বিশ্বাস করে না এবং এ সরকারের সময় দেশে নাকি মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে! দীপু মনি আরও বলেছেন, সরকার শুধু বিচারবহির্ভূত তথা বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরোধী নয়, প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণাও দিয়েছেন যে, কোনো ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ডই সহ্য করা হবে না।
যারা এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে তাদের প্রত্যেককে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী নাকি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ! দৈনিক আমার দেশ-এ প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, মানবাধিকার কাউন্সিলের ওই সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের জন্য পূর্ববর্তী বিভিন্ন সরকারের ওপর দোষারোপ করেছেন।
মন্ত্রীর কথাগুলো যে কারোর আক্কেল গুড়ুম করার মতোই বটে! কারণ, অন্য সবকিছুর বাইরে শুধু বিচারবহির্ভূত হত্যার ক্ষেত্রেই বর্তমান সরকারের প্রথম বছরে দীর্ঘ ১৪ বছরের রেকর্ড ম্লান হয়ে গেছে। অধিকার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০০৯ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ২২৯টি। এ সময়ে তিনজন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন ১৭৫ জন। নারী নির্যাতনের দিক থেকেও বর্তমান সরকারের শাসনকাল মাত্র এক বছরেই রেকর্ড তৈরি করেছে। এ সময়ে ধর্ষণের পর ৬২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৩৯ জন। এদের মধ্যে ১৫৫ জন আবার গণধর্ষণের শিকার। পাশাপাশি এমন কিছু তথ্য-পরিসংখ্যানও রয়েছে, যেগুলোর উল্লেখ করা হলে দীপু মনিদের লজ্জিত হতে হবে—যদিও লজ্জা সবার সমান থাকে না। এরকম একটি তথ্য হলো, ২০০৯ সালে যৌতুকের জন্য ১৮৯ নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এর বাইরে যৌতুক না দিতে পারায় নির্যাতনের কবলে পড়েছে ২৭৭ জন। প্রধানমন্ত্রীসহ চার-চারজন নারী মন্ত্রী থাকার পরও এই সরকারের আমলে এত মারাত্মক নারী নির্যাতনের ঘটনা নিশ্চয়ই দীপু মনির জেনেভায় দেয়া বক্তৃতাকে সত্যায়িত করে না! অন্য কিছু তথ্য-পরিসংখ্যানও দীপু মনিকে মিথ্যাচারের দায়ে অভিযুক্ত করে। যেমন ১০ হাজারের বেশি রাজনৈতিক নেতাকর্মীর ওপর নিষ্ঠুর দমন-নির্যাতন চালিয়েছে সরকার। এখনও কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তাদের অনেককে বেআইনিভাবে রিমান্ডে নিয়েও নির্যাতন করা হচ্ছে।
এক কথায় বলা দরকার, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো একটি বিষয়েই সত্য বলেননি। উদাহরণ দেয়ার জন্য বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করা দরকার। দীপু মনি এমনভাবে অতীত সরকারগুলোর ওপর সব দোষ চাপিয়েছেন যেন অতীতের কোনো পর্যায়ে তারা নিজেরা তথা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না! অন্যদিকে যে প্র্যাকটিসের কথা তিনি বলেছেন, সে প্র্যাকটিসের তথা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সূচনা হয়েছিল স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। ওই সরকার সর্বহারা পার্টির নেতা সিরাজ সিকদার এবং তার আগে-পরে ৩৭ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল—অবশ্যই বিচারবহির্ভূতভাবে। ১৯৮৭ সালের জুলাই মাসে সরকারি নথিপত্র ঘেঁটেই ৩৭ হাজার সংখ্যাটা জানিয়েছিলেন জেনারেল এরশাদ—যিনি এখন আওয়ামী মহাজোটের দ্বিতীয় প্রধান পার্টনার। এত বেশি পেছনেই বা যাওয়া কেন? দীপু মনিরা নিজেরাও যে যথেষ্ট দেখিয়ে চলেছেন, তার প্রমাণ তো ওপরের তথ্য-পরিসংখ্যানগুলোই।
আমরা অবশ্য দীপু মনির মিথ্যাচারে বিস্মিত হইনি। কারণ, তিনি যে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও নানা প্রসঙ্গে অসত্য শুনতে শুনতে মানুষের অভ্যাস হয়ে গেছে। তারা সম্ভবত বারবার বলার মধ্য দিয়ে মিথ্যাকেই সত্য বানানোর কল্পনা করছেন। অন্যদিকে বাস্তব পরিস্থিতি কিন্তু মোটেও সেরকম নয়। দেশের ভেতরে তো বটেই, জেনেভাসহ দেশের বাইরেও সরকারের মিথ্যাচার দ্রুতই ধরা পড়ে যাচ্ছে। এর পরিণতি ঠিক কেমন হতে পারে, সে অনুমানে যাওয়ার পরিবর্তে বলা দরকার, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধ করার মধ্যেই সবার জন্য মঙ্গল নিহিত রয়েছে।
মন্ত্রীর কথাগুলো যে কারোর আক্কেল গুড়ুম করার মতোই বটে! কারণ, অন্য সবকিছুর বাইরে শুধু বিচারবহির্ভূত হত্যার ক্ষেত্রেই বর্তমান সরকারের প্রথম বছরে দীর্ঘ ১৪ বছরের রেকর্ড ম্লান হয়ে গেছে। অধিকার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০০৯ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ২২৯টি। এ সময়ে তিনজন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন ১৭৫ জন। নারী নির্যাতনের দিক থেকেও বর্তমান সরকারের শাসনকাল মাত্র এক বছরেই রেকর্ড তৈরি করেছে। এ সময়ে ধর্ষণের পর ৬২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৩৯ জন। এদের মধ্যে ১৫৫ জন আবার গণধর্ষণের শিকার। পাশাপাশি এমন কিছু তথ্য-পরিসংখ্যানও রয়েছে, যেগুলোর উল্লেখ করা হলে দীপু মনিদের লজ্জিত হতে হবে—যদিও লজ্জা সবার সমান থাকে না। এরকম একটি তথ্য হলো, ২০০৯ সালে যৌতুকের জন্য ১৮৯ নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এর বাইরে যৌতুক না দিতে পারায় নির্যাতনের কবলে পড়েছে ২৭৭ জন। প্রধানমন্ত্রীসহ চার-চারজন নারী মন্ত্রী থাকার পরও এই সরকারের আমলে এত মারাত্মক নারী নির্যাতনের ঘটনা নিশ্চয়ই দীপু মনির জেনেভায় দেয়া বক্তৃতাকে সত্যায়িত করে না! অন্য কিছু তথ্য-পরিসংখ্যানও দীপু মনিকে মিথ্যাচারের দায়ে অভিযুক্ত করে। যেমন ১০ হাজারের বেশি রাজনৈতিক নেতাকর্মীর ওপর নিষ্ঠুর দমন-নির্যাতন চালিয়েছে সরকার। এখনও কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তাদের অনেককে বেআইনিভাবে রিমান্ডে নিয়েও নির্যাতন করা হচ্ছে।
এক কথায় বলা দরকার, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো একটি বিষয়েই সত্য বলেননি। উদাহরণ দেয়ার জন্য বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করা দরকার। দীপু মনি এমনভাবে অতীত সরকারগুলোর ওপর সব দোষ চাপিয়েছেন যেন অতীতের কোনো পর্যায়ে তারা নিজেরা তথা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না! অন্যদিকে যে প্র্যাকটিসের কথা তিনি বলেছেন, সে প্র্যাকটিসের তথা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সূচনা হয়েছিল স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। ওই সরকার সর্বহারা পার্টির নেতা সিরাজ সিকদার এবং তার আগে-পরে ৩৭ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল—অবশ্যই বিচারবহির্ভূতভাবে। ১৯৮৭ সালের জুলাই মাসে সরকারি নথিপত্র ঘেঁটেই ৩৭ হাজার সংখ্যাটা জানিয়েছিলেন জেনারেল এরশাদ—যিনি এখন আওয়ামী মহাজোটের দ্বিতীয় প্রধান পার্টনার। এত বেশি পেছনেই বা যাওয়া কেন? দীপু মনিরা নিজেরাও যে যথেষ্ট দেখিয়ে চলেছেন, তার প্রমাণ তো ওপরের তথ্য-পরিসংখ্যানগুলোই।
আমরা অবশ্য দীপু মনির মিথ্যাচারে বিস্মিত হইনি। কারণ, তিনি যে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও নানা প্রসঙ্গে অসত্য শুনতে শুনতে মানুষের অভ্যাস হয়ে গেছে। তারা সম্ভবত বারবার বলার মধ্য দিয়ে মিথ্যাকেই সত্য বানানোর কল্পনা করছেন। অন্যদিকে বাস্তব পরিস্থিতি কিন্তু মোটেও সেরকম নয়। দেশের ভেতরে তো বটেই, জেনেভাসহ দেশের বাইরেও সরকারের মিথ্যাচার দ্রুতই ধরা পড়ে যাচ্ছে। এর পরিণতি ঠিক কেমন হতে পারে, সে অনুমানে যাওয়ার পরিবর্তে বলা দরকার, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধ করার মধ্যেই সবার জন্য মঙ্গল নিহিত রয়েছে।
No comments