দুর্নীতি দমন প্রহসনে পরিণত হবে-দুদক আইন সংশোধন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের আশঙ্কাই সত্য হলো। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত দুদকের ক্ষমতা খর্ব করবে, প্রতিষ্ঠানটি পরিণত হবে নখ ও দন্তহীন বাঘে। এর ফলে দেশে দুর্নীতি দমন তো নয়ই, বরং দুর্নীতির শেকড় আরও গভীরে বিস্তৃত হবে।
সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়েরে প্রধানমন্ত্রীর পূর্বানুমোদন ফিরিয়ে আনার প্রস্তাবটি প্রকৃত অর্থেই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। এটা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সামরিক শাসনামলের ধারাবাহিকতা। আইয়ুব খানের পর জেনারেল এরশাদের আমলেও আমরা দেখেছি, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারীরা সব সময় জবাবদিহির ঊর্ধ্বে থাকার চেষ্টা করেছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবারও আমরা তারই ধারাবাহিকতা দেখলাম। দল আসে দল যায়। কিন্তু গণকর্মচারী, বিশেষ করে যাঁরা উঁচুতলার, যাঁরা মন্ত্রীদের সারথি, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা শিকেয় তোলা থাকে, প্রচলিত আইন কাজ করে না।
এখন দেখার বিষয়, মন্ত্রিসভার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত সংসদ কীভাবে গ্রহণ করে। আশা বড় ক্ষীণ, তবুও আমরা দুদকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সুর মেলাতে উন্মুখ। সংসদ ও নির্বাহী বিভাগ এক সত্তা নয়। উদগ্র সরকারকে লাগাম পরানোই সংসদের প্রধান কাজ। সংসদীয় গণতন্ত্রের কার্যকরতা সেখানেই। সংসদ যদি নির্বিকারচিত্তে মন্ত্রিসভার প্রস্তাবিত দুদক দুর্বলকরণ আইন প্রণয়নে উদ্যোগী হয়, তাহলে দুদক দুর্দশাগ্রস্ত ব্যুরো জমানায় ফিরে যাবে। দুর্নীতি দমন প্রহসনে পরিণত হবে।
সংশোধিত আইন অনুযায়ী দুদক রাষ্ট্রপতির কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। বলা হচ্ছে, দুদক কারও কাছে দায়বদ্ধ ছিল না বলেই বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু বাস্তবতা তা প্রমাণ করে না। আপিল বিভাগ সম্প্রতি সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্লার মামলায় দুদকের পক্ষে রায় দিয়ে রাজনৈতিক অপপ্রচারের বিরুদ্ধে একটা শক্ত জবাব দিয়েছে। মিথ্যা মামলা করলে শাস্তির বিধান প্রচলিত আইনেই আছে। সে জন্য নতুন বিধান অর্থহীন।
দুদকের জবাবদিহি আগে থেকেই রাষ্ট্রপতির কাছে ন্যস্ত ছিল। কারণ, প্রধান বিচারপতি ও পরবর্তী দুজন জ্যেষ্ঠ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত কাউন্সিল বিচারকদের যে উপায়ে জবাবদিহি নিশ্চিত করে, সেভাবে তা দুদক কমিশনারদের জন্যও প্রযোজ্য। এই বিধানের লক্ষ্য ছিল দুদককে দায়িত্ব পালনে আদালতের মতোই স্বাধীন রাখা। কিন্তু মন্ত্রিসভা আমাদের হতাশ করল।
আমরা আশা করেছিলাম, ক্ষমতাসীন সরকার নির্বাচনী ইশতেহার না ভুলে দুদককে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে দেবে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কিছু ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি, ভুলত্রুটি কিংবা পক্ষপাতের ঘটনা নিশ্চয় ঘটেছিল। কিন্তু তা অবশ্যই দুদক আইন বা পদ্ধতির জন্য নয়। এ জন্য আইনি প্রতিকার চাওয়া যেতে পারে। কিন্তু মন্ত্রিসভার দুদক দুর্বলকরণ সিদ্ধান্তের নেপথ্যে স্পষ্টতই অসূয়াপ্রসূত দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করেছে।
আমরা আশা করব, শেষ পর্যন্ত সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। প্রস্তাবিত সিদ্ধান্ত সংসদে গেলে তাতে বড় রকমের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানোর সুযোগ থাকবে। সংসদ যেন সেই সুযোগ কাজে লাগায়। তারা যেন প্রমাণ দেয়, সরকার ও সংসদ সমার্থক নয়। বিরোধী দলও ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, মন্ত্রিসভার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত সংসদ কীভাবে গ্রহণ করে। আশা বড় ক্ষীণ, তবুও আমরা দুদকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সুর মেলাতে উন্মুখ। সংসদ ও নির্বাহী বিভাগ এক সত্তা নয়। উদগ্র সরকারকে লাগাম পরানোই সংসদের প্রধান কাজ। সংসদীয় গণতন্ত্রের কার্যকরতা সেখানেই। সংসদ যদি নির্বিকারচিত্তে মন্ত্রিসভার প্রস্তাবিত দুদক দুর্বলকরণ আইন প্রণয়নে উদ্যোগী হয়, তাহলে দুদক দুর্দশাগ্রস্ত ব্যুরো জমানায় ফিরে যাবে। দুর্নীতি দমন প্রহসনে পরিণত হবে।
সংশোধিত আইন অনুযায়ী দুদক রাষ্ট্রপতির কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। বলা হচ্ছে, দুদক কারও কাছে দায়বদ্ধ ছিল না বলেই বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু বাস্তবতা তা প্রমাণ করে না। আপিল বিভাগ সম্প্রতি সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্লার মামলায় দুদকের পক্ষে রায় দিয়ে রাজনৈতিক অপপ্রচারের বিরুদ্ধে একটা শক্ত জবাব দিয়েছে। মিথ্যা মামলা করলে শাস্তির বিধান প্রচলিত আইনেই আছে। সে জন্য নতুন বিধান অর্থহীন।
দুদকের জবাবদিহি আগে থেকেই রাষ্ট্রপতির কাছে ন্যস্ত ছিল। কারণ, প্রধান বিচারপতি ও পরবর্তী দুজন জ্যেষ্ঠ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত কাউন্সিল বিচারকদের যে উপায়ে জবাবদিহি নিশ্চিত করে, সেভাবে তা দুদক কমিশনারদের জন্যও প্রযোজ্য। এই বিধানের লক্ষ্য ছিল দুদককে দায়িত্ব পালনে আদালতের মতোই স্বাধীন রাখা। কিন্তু মন্ত্রিসভা আমাদের হতাশ করল।
আমরা আশা করেছিলাম, ক্ষমতাসীন সরকার নির্বাচনী ইশতেহার না ভুলে দুদককে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে দেবে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কিছু ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি, ভুলত্রুটি কিংবা পক্ষপাতের ঘটনা নিশ্চয় ঘটেছিল। কিন্তু তা অবশ্যই দুদক আইন বা পদ্ধতির জন্য নয়। এ জন্য আইনি প্রতিকার চাওয়া যেতে পারে। কিন্তু মন্ত্রিসভার দুদক দুর্বলকরণ সিদ্ধান্তের নেপথ্যে স্পষ্টতই অসূয়াপ্রসূত দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করেছে।
আমরা আশা করব, শেষ পর্যন্ত সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। প্রস্তাবিত সিদ্ধান্ত সংসদে গেলে তাতে বড় রকমের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানোর সুযোগ থাকবে। সংসদ যেন সেই সুযোগ কাজে লাগায়। তারা যেন প্রমাণ দেয়, সরকার ও সংসদ সমার্থক নয়। বিরোধী দলও ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
No comments