পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কী ঘটছে?- দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখতে হবে
পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি দিন দিনই জটিল করে তোলা হচ্ছে। ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সীমানাছড়া-গঙ্গারামের বাঙালি-পাহাড়ি বিরোধ উসকে দিয়ে পরিস্থিতি অশান্ত করে তোলার আলামত দেখা যাচ্ছে। দেশের বাইরেও বিষয়টি নিয়ে পানি ঘোলা করার খবর পাওয়া গেছে।
বাঙালি-পাহাড়ি সংঘর্ষের জের ধরে সেখানকার সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের বদলি করার পর প্রশাসনের একচোখা ভূমিকা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সর্বত্র পাহাড়িদের একচেটিয়া প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। সাম্প্রতিক বিরোধে ভূমিকা পালনকারী পাহাড়িরাই প্রশাসনের ছত্রছায়ায় এখন এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বাঙালিদের মিছিলে এবং ইউএনওর ওপর হামলায় নেতৃত্বদানকারীরাই সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে রিলিফ বিলি করে বেড়াচ্ছে। সরকারি রিলিফ থেকে বাঙালিরা শুধু বঞ্চিতই হচ্ছে না, তারা আশ্রয় ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। উপজাতি সন্ত্রাসীদের হাতে আহত বাঙালিরা চিকিত্সার সুযোগ পাচ্ছে না বলে গতকাল আমার দেশ-এ প্রকাশিত খাগড়াছড়ি প্রতিনিধির রিপোর্টে জানা গেছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা কর্মকর্তার ওপর প্রকাশ্যে হামলাকারীদের কারও বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা না করা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি টের পাওয়া যায়। কারও নাম উল্লেখ না করে একটি জিডি করেই কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব সেরেছে। আর ত্রাণসামগ্রী বিলিবণ্টনের ব্যাপারে এলাকার উপজাতিদের জন্য ব্যাপক আয়োজন থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালিদের দিকে কারও নজর নেই। দেশের নাগরিক হিসেবে প্রাপ্য অধিকার ও নিরাপত্তা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে। প্রশাসনের লোকজনের আচরণও খুবই অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক। বাঙালিদের প্রতি সহানুভূতি দেখালে ওপরের কোপানলে পড়ার ভয়ে সবাইকে তটস্থ থাকতে দেখা যায়। খাগড়াছড়িতে এমন পরিস্থিতির সঙ্গে রাজধানীতে বাঙালিবিরোধী তত্পরতার সম্পর্ক থাকা খুবই স্বাভাবিক। অতিসম্প্রতি সাজেক ভূমিরক্ষা কমিটির নামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আহ্বায়ক পরিচয়দানকারী ব্যক্তিটি খাগড়াছড়ি শহরের বাসিন্দা হয়েও সাজেক এলাকার যে ‘ভূমি রক্ষার’ জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন, সেটা হলো সংরক্ষিত বনাঞ্চল। তাছাড়া খাগড়াছড়িতে বাঙালিদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে বাঙালিরা মিছিল-মিটিং করলেও এখন বেছে বেছে বিএনপির লোকজনকেই গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি পৌর বিএনপির সভাপতি এবং বিএনপি সমর্থক জনৈক শ্রমিক নেতাকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। যেখানে পাহাড়ে বসবাসকারী বাঙালি-উপজাতি সবার মধ্যে সমঝোতা ও সম্প্রীতির সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রশাসনের নিরপেক্ষ উদ্যোগ নেয়ার কথা, সেখানে একপক্ষকে সুবিধা দিয়ে বিরোধীদলীয়দের দমনের ঘটনা প্রধানমন্ত্রীর ‘শিক্ষা দেয়ার’ নির্দেশ অনুযায়ী হচ্ছে কিনা, তা ভেবে দেখার বিষয়।
ঘটনা এখানেই সীমাবদ্ধ নেই। দেশের বাইরে থেকে পাওয়া খবর আরও আশঙ্কাজনক। পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনার সঙ্গে বিদেশিদের সম্পর্ক থাকার কথাই প্রমাণ হয় কলকাতা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে। চট্টগ্রাম হিলট্রাক্টস সাপোর্ট গ্রুপ কলকাতার নামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়িত না হলে পুনরায় অস্ত্রধারণের ঘোষণাও দেয়া হয়েছে সেখানে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের ‘হামলার’ প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে দেখানো তথ্যচিত্রে আগুনে পোড়া ও লুণ্ঠিত ঘরবাড়ি, ভাঙা বুদ্ধমূর্তি ও পুড়ে যাওয়া বৌদ্ধ মন্দিরের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ এবং নির্যাতিত উপজাতি নরনারীদেরও একপেশে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। সেখানকার ঘটনা সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্যের সত্যতা নেই জানিয়ে তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার প্রতি সেখানে প্রতিনিধি পাঠানোর দাবিও জানিয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে জনৈক তরুণ স্যানাল মুক্তিযুদ্ধে চাকমাদের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে স্বাধীন বাংলাদেশে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার দাবির জবাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বাঙালি হয়ে যাও’ বলাটা অনুচিত হয়েছে—এমন মন্তব্য করার কথাও পত্রিকান্তরে জানা গেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে সেখানকার ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী নষ্ট করার লক্ষ্যেই চালানোর অভিযোগের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী ও মুসলমানদের বিতাড়নের দাবি জানানো হয়েছে। এসব দাবিতে কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে সমাবেশ করার কর্মসূচি সংবলিত প্রচারপত্রও বিলি করা হয়েছে সেখানে।
এরা কারা? এরা কি বাংলাদেশের নাগরিক? বন্ধুরাষ্ট্রের মাটিতে প্রকাশ্যে বাংলাদেশবিরোধী এমন কর্মকাণ্ডই বা চলছে কীভাবে—এসব প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। এসব প্রশ্নের জবাব জানার পাশাপাশি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতাবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নেয়াটাও সমান জরুরি বলে আমরা মনে করি।
বাঘাইছড়ি উপজেলা কর্মকর্তার ওপর প্রকাশ্যে হামলাকারীদের কারও বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা না করা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি টের পাওয়া যায়। কারও নাম উল্লেখ না করে একটি জিডি করেই কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব সেরেছে। আর ত্রাণসামগ্রী বিলিবণ্টনের ব্যাপারে এলাকার উপজাতিদের জন্য ব্যাপক আয়োজন থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালিদের দিকে কারও নজর নেই। দেশের নাগরিক হিসেবে প্রাপ্য অধিকার ও নিরাপত্তা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে। প্রশাসনের লোকজনের আচরণও খুবই অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক। বাঙালিদের প্রতি সহানুভূতি দেখালে ওপরের কোপানলে পড়ার ভয়ে সবাইকে তটস্থ থাকতে দেখা যায়। খাগড়াছড়িতে এমন পরিস্থিতির সঙ্গে রাজধানীতে বাঙালিবিরোধী তত্পরতার সম্পর্ক থাকা খুবই স্বাভাবিক। অতিসম্প্রতি সাজেক ভূমিরক্ষা কমিটির নামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আহ্বায়ক পরিচয়দানকারী ব্যক্তিটি খাগড়াছড়ি শহরের বাসিন্দা হয়েও সাজেক এলাকার যে ‘ভূমি রক্ষার’ জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন, সেটা হলো সংরক্ষিত বনাঞ্চল। তাছাড়া খাগড়াছড়িতে বাঙালিদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে বাঙালিরা মিছিল-মিটিং করলেও এখন বেছে বেছে বিএনপির লোকজনকেই গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি পৌর বিএনপির সভাপতি এবং বিএনপি সমর্থক জনৈক শ্রমিক নেতাকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। যেখানে পাহাড়ে বসবাসকারী বাঙালি-উপজাতি সবার মধ্যে সমঝোতা ও সম্প্রীতির সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রশাসনের নিরপেক্ষ উদ্যোগ নেয়ার কথা, সেখানে একপক্ষকে সুবিধা দিয়ে বিরোধীদলীয়দের দমনের ঘটনা প্রধানমন্ত্রীর ‘শিক্ষা দেয়ার’ নির্দেশ অনুযায়ী হচ্ছে কিনা, তা ভেবে দেখার বিষয়।
ঘটনা এখানেই সীমাবদ্ধ নেই। দেশের বাইরে থেকে পাওয়া খবর আরও আশঙ্কাজনক। পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনার সঙ্গে বিদেশিদের সম্পর্ক থাকার কথাই প্রমাণ হয় কলকাতা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে। চট্টগ্রাম হিলট্রাক্টস সাপোর্ট গ্রুপ কলকাতার নামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়িত না হলে পুনরায় অস্ত্রধারণের ঘোষণাও দেয়া হয়েছে সেখানে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের ‘হামলার’ প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে দেখানো তথ্যচিত্রে আগুনে পোড়া ও লুণ্ঠিত ঘরবাড়ি, ভাঙা বুদ্ধমূর্তি ও পুড়ে যাওয়া বৌদ্ধ মন্দিরের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ এবং নির্যাতিত উপজাতি নরনারীদেরও একপেশে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। সেখানকার ঘটনা সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্যের সত্যতা নেই জানিয়ে তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার প্রতি সেখানে প্রতিনিধি পাঠানোর দাবিও জানিয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে জনৈক তরুণ স্যানাল মুক্তিযুদ্ধে চাকমাদের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে স্বাধীন বাংলাদেশে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার দাবির জবাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বাঙালি হয়ে যাও’ বলাটা অনুচিত হয়েছে—এমন মন্তব্য করার কথাও পত্রিকান্তরে জানা গেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে সেখানকার ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী নষ্ট করার লক্ষ্যেই চালানোর অভিযোগের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী ও মুসলমানদের বিতাড়নের দাবি জানানো হয়েছে। এসব দাবিতে কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে সমাবেশ করার কর্মসূচি সংবলিত প্রচারপত্রও বিলি করা হয়েছে সেখানে।
এরা কারা? এরা কি বাংলাদেশের নাগরিক? বন্ধুরাষ্ট্রের মাটিতে প্রকাশ্যে বাংলাদেশবিরোধী এমন কর্মকাণ্ডই বা চলছে কীভাবে—এসব প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। এসব প্রশ্নের জবাব জানার পাশাপাশি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতাবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নেয়াটাও সমান জরুরি বলে আমরা মনে করি।
No comments