চিড়িয়াখানায় পানি নেই-ছোট খাঁচায় প্রাণ যায় by মিঠুন চৌধুরী
মাঝারি আকারের একটা খাঁচার ভেতর ঘোরাফেরা করছে পাঁচ প্রজাতির ১৫টি বক ও পানকৌড়ি। ছয়-সাত ফুট গভীর চৌবাচ্চায় পানির ছিটেফোঁটাও নেই। শুকনো চৌবাচ্চার ভেতর ঝরা পালক, গাছের পাতা আর চিপসের প্যাকেট। দুয়েকটি বক পানির আশায় চৌবাচ্চায় নেমে আবার উঠে এসে ছায়ায় আশ্রয় খুঁজে নেয়।
প্রায় একই রকম অবস্থা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার সব পশু-পাখির।
অতিরিক্ত গরম, ছোট আকারের খাঁচা আর পানির অভাবে চিড়িয়াখানার পশু-পাখির প্রাণ ওষ্ঠাগত। বিনোদনের জন্য আসা দর্শনার্থীরাও পশু-পাখির এ অবস্থা দেখে হতাশ। কর্তৃপক্ষ বলছেন চৌবাচ্চা মেরামত শেষ হলেই পানির সংকট কেটে যাবে।
গত শুক্রবার দুপুরে ও বিকেলে নগরের ফয়’স লেক এলাকায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ প্রাণীই গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কুমিরের জন্য নির্ধারিত স্থানে গিয়ে দেখা যায়, দুটি কুমিরই ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছে। ওই খাঁচার চৌবাচ্চাটিতে এক ফুটের মতো পানি আছে। কিছুক্ষণ পর একটি কুমির সেই পানিতে নামলেও শরীরের উপরি ভাগ পানির ওপরেই থেকে যায়।
চিড়িয়াখানায় ঢুকতেই বানর আর হনুমানের লাফালাফি দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ দুটি খাঁচার পরেই গণশৌচাগার। শৌচাগার থেকে আসা উৎকট গন্ধে দর্শনার্থীরা বিরক্ত। এর পশ্চিমে বনবিড়ালের দুটি খাঁচা। একটিতে বিড়াল থাকলেও অন্যটিতে রাখা হয়েছে একটি পেঁচা। বড় আকারের পেঁচাটির ডানা থেকে অবিরাম রক্ত ঝরছিল। একটু এগিয়ে ‘উল্টো লেজ বানরের’ খাঁচার সামনে গিয়ে দেখা যায়, খাঁচার ভেতরটা আবর্জনায় ভরা। ছোট ছোট পানির দুটি গোলাকার সিমেন্টের তৈরি পাত্রে কোনো পানি নেই। মায়া হরিণ আর হরিণের খাঁচার ভেতর অর্ধেক এলাকায় কোনো ঘাস নেই। বেশ সুন্দর কয়েকটি পূর্ণ বয়স্ক ময়ূর দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে।
চিড়িয়াখানার দক্ষিণ পাশে পাঁচটি খাচায় রাখা হয়েছে মোট ৩৫ প্রজাতির পাখি। শকুনের মতো বেশি উচ্চতার পাখিও রাখা হয়েছে অল্প উচ্চতার খাঁচায়। কয়েক প্রজাতির টিয়া, ময়না, শালিক, ঘুঘু সব রাখা আছে একই খাঁচার ভেতর। দুপুরে রোদের তেজে ক্লান্ত ভালুক দুটো ঘুমোচ্ছিল। ভালুকের খাঁচার চৌবাচ্চাতেও কোনো পানি নেই। সঙ্গীহীন ১৯ বছর বয়সী রয়েল বেঙ্গল টাইগার ‘চন্দ্র’ আসলেই ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। উৎসাহী শিশুদের ডাকাডাকি, চিৎকার—কোনো কিছুই চন্দ্রর ঘুম ভাঙাতে পারেনি।
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন কোনো প্রাণীই নেই। যাও আছে অনেক বয়স্ক। গরমে এসব পশু-পাখির অবস্থা কাহিল। সন্তানদের বিনোদনের জন্য এসেছিলাম। কিন্তু এমন দুরবস্থা দেখে এখন খারাপই লাগছে।’ নতুন পশু-পাখি না থাকলেও ২০ টাকা প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করাকে অযৌক্তিত বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি।
চিড়িয়াখানার বর্তমান অবস্থা বিষয়ে জানতে চাইলে কিউরেটর মো. মনজুর মোরশেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পানির চৌবাচ্চাগুলোর তলা ফেটে গেছে। মেরামতের কাজ শেষ হলেই পানির সংকট কেটে যাবে। গণশৌচাগারের ব্যবস্থাপনা বর্তমানে সিটি করপোরেশনের। এটা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের অধীনে নিতে আবেদন করেছি। পরিচিতি ফলক তৈরির কাজ প্রায় শেষ। আগামী সপ্তাহেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’
পাখির খাঁচার অপ্রতুলতার বিষয়টি স্বীকার করে মনজুর মোরশেদ চৌধুরী বলেন, ‘এখন চিড়িয়াখানার জমির পরিমাণ মাত্র ছয় একর। আরও ১১ একর জমির জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। জমি বরাদ্দ পেলে পার্শ্ববর্তী পাহাড়টি লোহার তারে ঘিরে পাখির জন্য বিশেষ খাঁচা বানানো হবে। আরও দুটি বাঘ সংগ্রহের জন্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’
অতিরিক্ত গরম, ছোট আকারের খাঁচা আর পানির অভাবে চিড়িয়াখানার পশু-পাখির প্রাণ ওষ্ঠাগত। বিনোদনের জন্য আসা দর্শনার্থীরাও পশু-পাখির এ অবস্থা দেখে হতাশ। কর্তৃপক্ষ বলছেন চৌবাচ্চা মেরামত শেষ হলেই পানির সংকট কেটে যাবে।
গত শুক্রবার দুপুরে ও বিকেলে নগরের ফয়’স লেক এলাকায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ প্রাণীই গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কুমিরের জন্য নির্ধারিত স্থানে গিয়ে দেখা যায়, দুটি কুমিরই ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছে। ওই খাঁচার চৌবাচ্চাটিতে এক ফুটের মতো পানি আছে। কিছুক্ষণ পর একটি কুমির সেই পানিতে নামলেও শরীরের উপরি ভাগ পানির ওপরেই থেকে যায়।
চিড়িয়াখানায় ঢুকতেই বানর আর হনুমানের লাফালাফি দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ দুটি খাঁচার পরেই গণশৌচাগার। শৌচাগার থেকে আসা উৎকট গন্ধে দর্শনার্থীরা বিরক্ত। এর পশ্চিমে বনবিড়ালের দুটি খাঁচা। একটিতে বিড়াল থাকলেও অন্যটিতে রাখা হয়েছে একটি পেঁচা। বড় আকারের পেঁচাটির ডানা থেকে অবিরাম রক্ত ঝরছিল। একটু এগিয়ে ‘উল্টো লেজ বানরের’ খাঁচার সামনে গিয়ে দেখা যায়, খাঁচার ভেতরটা আবর্জনায় ভরা। ছোট ছোট পানির দুটি গোলাকার সিমেন্টের তৈরি পাত্রে কোনো পানি নেই। মায়া হরিণ আর হরিণের খাঁচার ভেতর অর্ধেক এলাকায় কোনো ঘাস নেই। বেশ সুন্দর কয়েকটি পূর্ণ বয়স্ক ময়ূর দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে।
চিড়িয়াখানার দক্ষিণ পাশে পাঁচটি খাচায় রাখা হয়েছে মোট ৩৫ প্রজাতির পাখি। শকুনের মতো বেশি উচ্চতার পাখিও রাখা হয়েছে অল্প উচ্চতার খাঁচায়। কয়েক প্রজাতির টিয়া, ময়না, শালিক, ঘুঘু সব রাখা আছে একই খাঁচার ভেতর। দুপুরে রোদের তেজে ক্লান্ত ভালুক দুটো ঘুমোচ্ছিল। ভালুকের খাঁচার চৌবাচ্চাতেও কোনো পানি নেই। সঙ্গীহীন ১৯ বছর বয়সী রয়েল বেঙ্গল টাইগার ‘চন্দ্র’ আসলেই ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। উৎসাহী শিশুদের ডাকাডাকি, চিৎকার—কোনো কিছুই চন্দ্রর ঘুম ভাঙাতে পারেনি।
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন কোনো প্রাণীই নেই। যাও আছে অনেক বয়স্ক। গরমে এসব পশু-পাখির অবস্থা কাহিল। সন্তানদের বিনোদনের জন্য এসেছিলাম। কিন্তু এমন দুরবস্থা দেখে এখন খারাপই লাগছে।’ নতুন পশু-পাখি না থাকলেও ২০ টাকা প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করাকে অযৌক্তিত বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি।
চিড়িয়াখানার বর্তমান অবস্থা বিষয়ে জানতে চাইলে কিউরেটর মো. মনজুর মোরশেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পানির চৌবাচ্চাগুলোর তলা ফেটে গেছে। মেরামতের কাজ শেষ হলেই পানির সংকট কেটে যাবে। গণশৌচাগারের ব্যবস্থাপনা বর্তমানে সিটি করপোরেশনের। এটা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের অধীনে নিতে আবেদন করেছি। পরিচিতি ফলক তৈরির কাজ প্রায় শেষ। আগামী সপ্তাহেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’
পাখির খাঁচার অপ্রতুলতার বিষয়টি স্বীকার করে মনজুর মোরশেদ চৌধুরী বলেন, ‘এখন চিড়িয়াখানার জমির পরিমাণ মাত্র ছয় একর। আরও ১১ একর জমির জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। জমি বরাদ্দ পেলে পার্শ্ববর্তী পাহাড়টি লোহার তারে ঘিরে পাখির জন্য বিশেষ খাঁচা বানানো হবে। আরও দুটি বাঘ সংগ্রহের জন্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’
No comments