এই নগরীর রাজনীতি by রেজোয়ান সিদ্দিকী
নগরী রাজনীতির কেন্দ্র। মানুষের জীবনাচরণের সঙ্গে রাজনীতি গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। পল্লী অঞ্চলের মানুষ, সাধারণ কৃষক, বর্গাচাষী, দিনমজুর, রাজনীতির অন্ধিমন্ধি নিয়ে সারা দিন ব্যাকুল থাকে না। তার ব্যস্ততা, তার উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা সবটাই শস্য উত্পাদন নিয়ে কিংবা নিতান্তই প্রতিদিনের জীবিকা অর্জন নিয়ে।
ডিজেলের দাম বাড়ল কিনা, সেচের বিদ্যুত্ পাওয়া যাবে কিনা, বীজতলার কী হবে, সার নিয়ে কোনো তেলেসমাতি হচ্ছে কিনা, সঠিক বীজ পাওয়া যাচ্ছে কিনা—এটাই তার চিন্তার মূল। নগরীতে বড় ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটলে সেসব নিয়ে তারা খুব বেশি মাথা ঘামায় না। পুলিশের গুলিতে কেউ খুন হলে তারা উত্কণ্ঠিত হয়। পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করলে তারা কখনও কখনও হাসে, কখনও সেটাকে কোনো গুরুত্বই দেয় না। বড় ঘটনা ঘটলেই কেবল যে নাগরিক মানুষের মতো তারা টিভির সামনে ভিড় জমায়। এ ছাড়া আর সব খবর কৌতূহল হলে অন্য কারও কাছ থেকে জেনে নেয়ার চেষ্টা করে। বরং টিভিতে বাংলা সিনেমা চললে তারা বিনোদন প্রত্যাশায় টিভির সামনে ভিড় করে।
যদিও পল্লীর এই মানুষেরাই জনসংখ্যার সবচেয়ে বড় অংশ, তবুও নাগরিক মানুষের মতো এরা প্রতিদিন কথায় কথায় মিছিল নিয়ে বের হয় না। প্রতিদিন পুলিশের সঙ্গে বিবাদ করে না। ঝাড়ু মিছিল, থালা মিছিল, শূন্য হাঁড়ি মিছিল নিয়ে এটা চাই-ওটা চাই বলে না। কিন্তু এরাই যখন প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে তখন আর সরকার থাকে না, থাকতে পারে না।
পল্লী বিদ্যুতায়নের বিদ্যুত্ সামান্য সময়ই থাকে। ফলে ফ্যান ঘোরে না। ফ্যান যখন ঘোরে না তখন পল্লীর মানুষ ঘর ছেড়ে গাছের ছায়ায় খোলা জায়গায় আশ্রয় নেয়। প্রকৃতি যতটুকু বায়ু দেয় ততটুকুতেই তারা তুষ্ট থাকে; কিন্তু সেচ মৌসুমে যদি সেচের বিদ্যুত্ না পাওয়া যায় তাহলে তারা দল বেঁধে বিদ্যুত্ সাবস্টেশনে গিয়ে ঘেরাও করে। চিত্কার করে বিদ্যুত্ চায়। তারা জানার প্রয়োজনবোধ করে না যে, সাবস্টেশনে বিদ্যুত্ উত্পাদন করে না। আসলে সাবস্টেশন ঘেরাও করে তারা সরকারকেই জানান দিতে চায় যে, বিদ্যুত্ দিতেই হবে। আমরা নাগরিকরা ওয়াসার পানি না পেলে হল্লা-চিল্লা শুরু করি। ওয়াসার পানিতে গন্ধ কেন তা নিয়ে রাজপথ কিংবা টিভির পর্দা কাঁপাই। পল্লী গ্রামে ওয়াসা নেই। নিজের টিউবওয়েলে পানি নেই; অন্য কারও টিউবওয়েল থেকে পানি নিয়ে আসে। সেখানে গ্যাসের প্রেসার আছে কী নেই তাতে কারও কিছু যায়-আসে না। কারণ পল্লী গ্রামে গ্যাসই নেই। চুলা ধরানোর জন্য লাকড়ির সঙ্কট হলে বাঁশঝাড়-গাছতলা ঝাড়ু দিয়ে খড়পাতা জোগাড় করে। তারপর রান্না চড়ে। তিতাসের গ্যাস নেই বলে নাগরিকেরা রান্নার বদলে হোটেল থেকে খাবার এনে খায়। হেঁসেলের লাকড়ি নেই বলে পল্লী গ্রামের কোনো মানুষ ‘হইটালের দিকে ছোটে না।’ নগর আর পল্লীর চাহিদার ভেদরেখা এখানেই।
এই যে নাগরিকরা গ্যাস না থাকলে মিছিল করে, বিদ্যুত্ না থাকলে মিছিল করে, পানি না থাকলে মিছিল করে, রাস্তা মেরামত না হলে মিছিল করে তার কারণও এই নির্ভরতা তত্ত্ব। গ্যাস না থাকলে নাগরিকরা সত্যি সত্যি নিরুপায়। সরকার কখনও কখনও বলে যে, আর কটা দিন সবুর কর রসুন বুনেছি। এসব কথায় নাগরিকের চিঁড়া ভেজে না। গ্যাস না থাকলে তার হাণ্ডি জ্বলবে না। ছেলেপুলে নিয়ে উপোস করার উপক্রম হবে। সবাই মিলে খেটে খাওয়া তার সাধ্যের অতীত। সুতরাং গ্যাস তাকে দিতে হবে।
বিদ্যুত্ ছাড়া নগর জীবন কল্পনাও করা যায় না। নাগরিক বা নগর সম্পূর্ণরূপে বিদ্যুিনর্ভর। বিদ্যুত্ ছাড়া নাগরিকেরা চোখেও দেখে না, কানেও শোনে না। বিদ্যুত্ ছাড়া শিক্ষাঙ্গনের পাঠ বন্ধ, হাসপাতালের চিকিত্সা বন্ধ, উত্পাদনের কল বন্ধ। অফিস-আদালতের কাজ বন্ধ। পল্লীতে তো বিদ্যুত্ নেই। বিদ্যুত্ না থাকলেই সেখানে কেউ ছিনতাইকারীর ভয়ে কুঁকড়ে যায় না। সাপের ভয়ে পথ চলা বন্ধ করে না। বরং গাঢ় অন্ধকারে বাঁশঝাড়ের নিচ দিয়ে করতালি দিয়ে গান গাইতে গাইতে দিব্যি পথ পাড় হয়ে আসে। কিন্তু নগরীর একটি গলি পথের বিদ্যুত্ হঠাত্ চলে গেলে নাগরিকের জানমাল সম্পূর্ণ অনিরাপদ হয়ে পড়ে। ফলে বিদ্যুত্ তার চাই-ই।
নগরীর ভূমি সব দখল করে নিয়েছে ইট-পাথরের দালান। এখানে খোলা হাওয়া নেই। মুক্ত বাতাসে সে হাওয়ায় গা জুড়ানোর ব্যবস্থা নেই। বসতবাটির সঙ্গে ছায়া দাত্রী বৃক্ষ নেই। পল্লীতে কেউ নিজের বাহির-বাড়িতে গাছের ছায়ায় পাটি বিছিয়ে খালি গায়ে ঘুমিয়ে পড়লে তাতে তার ইজ্জত যায় না। নগরীতে কার গাছের ছায়ায় কে কাকে খালি গায়ে ঘুমাতে দেবে। এ রকম দৃশ্য দেখলে নাগরিকরা নিঃসন্দেহে ওই লোকটিকে সম্ভবত পাগল বা মাদকাসক্ত বলে মনে করবে। ফলে নগরীতে ঘরের মধ্যেই পাখা কিংবা এসি চালিয়ে নাগরিককে স্বস্তি সংগ্রহ করতে হবে। বিদ্যুত্ না থাকলে তীব্র গরম এবং অনন্ত আঁধারে সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হবে। নাগরিকদের কেরোসিনের কুপি কিংবা হ্যারিকেন নেই। সুতরাং বিদ্যুতের বিকল্প সাধারণ নাগরিকদের কিছু নেই। তাই তার বিদ্যুত্ চাই-ই চাই। একইভাবে নাগরিক ওয়াসার পানিনির্ভর। নগরীতে কুয়া নেই, টিউবওয়েল নেই, পুকুর নেই, এমনকি স্বচ্ছ পানির নদীও নেই। তাই ওয়াসার পানির ওপর সে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। পানিও তার চাই-ই চাই।
এসব না থাকলে নাগরিককে তাই অনন্যোপায় হয়ে মিছিলে নামতে হয়। অপারগ সরকার এসব মিটিং, মিছিল, সভা, সমাবেশকে আপদ হিসেবে গণ্য করে। সমস্যা সমাধানের বদলে সরকার নাগরিকদের পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষা দেয়। কখনও বা দলীয় কর্মীদের ঠ্যাঙ্গায়। তখন রাজনীতি আসে। যে দল নির্বাচনে হেরে যায় তারা দাঁড়ায় জনগণের পাশে। নগরীতে রাজনীতি জমে ওঠে। তারপর এক সময় পানি চাই, বিদ্যুত্ চাই, গ্যাস চাই—এসব স্লোগান। ‘পানি-বিদ্যুত্ দিতে হবে—নইলে গদি ছাড়তে হবে’ স্লোগান ওঠে এবং এক সময় এ আন্দোলনে সরকারকে গদি ছাড়তে হয়।
নগরীর রাজনীতির এই একটা দিক। আরও বহুদিক কেন্দ্র করে রাজনীতি সরগরম থাকে। নগরে নাগরিকরা অধিক রাজনীতি সচেতন। যার যেটা বিষয় নয় সেও সেটা চিন্তা করে। সরকারের মন্ত্রী হয়তো এক বেফাঁস কথা বলে বসেছেন। মুদি দোকানদার তার কিনারা পায় না। তারও মনে হয় কেন এমন বলল সরকার? এত কিছুর পরও বিএনপি কেন দেশব্যাপী সরব প্রতিবাদ করতে পারছে না। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ধর্মহীন কমিউনিস্টরা রাজনীতি করতে পারলে ইসলাম নিয়ে কেন রাজনীতি করতে পারবে না। রিকশাচালকও সুশিক্ষিত যাত্রীদের সংবিধানের ধারা বোঝায়। ঠেলাওয়ালাও আরেকজনকে ফখরুদ্দীন বলে গাল দেয়। এই নগরীতে রাজনীতি এমনই এক সংক্রামক ব্যাধি। কিংবা রাজনীতি নগর জীবনের এমনই অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
জয়ের অভিষেক
শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র শেখ হাসিনার তনয় যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী সজীব ওয়াজেদ জয় সম্প্রতি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি তার পিতার জন্মস্থান এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য হয়েছেন। এই সদস্যপদ লাভের কয়েক দিন পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। তাকে অভিনন্দন। এর আগে রাজনীতি তিনি কখনও করেননি। প্রায় ১৫ বছর আগে প্রারম্ভ তারুণ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তারপর দুই-একবার দেশে ফেরা। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ, তাদের জীবনাচরণ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, জলবায়ু-হাওয়া কোনো কিছুর সঙ্গেই তার তেমন কোনো পরিচয় নেই। তার কৈশোর কাল কেটেছে ভারতে পিতা-মাতার সঙ্গে। তারপর কিছুদিন বাংলাদেশে থাকলেও আবার প্রবাসী হয়েছেন। অভিবাসন নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। শোনা যায় তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রেরই নাগরিক। বিয়ে করেছেন সে দেশেরই এক শ্বেতাঙ্গিনীকে, মোটামুটি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রেই। রাজনীতির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা অতি সামান্যই। এর আগে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তার সঙ্গে মিলে বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থান বিষয়ে প্রবন্ধ লিখে তিনি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের অভিশপ্ত এক-এগারোর খলনায়ক জেনারেল মইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন তিনি।
এই সজীব ওয়াজেদ জয়ের রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে তাই কৌতূহল আছে সাধারণ মানুষের মনে। শেখ হাসিনার পরে কে ধরবেন আওয়ামী লীগের হাল? শেখ রেহানা নাকি সজীব ওয়াজেদ জয়? এ নিয়েও নাগরিকরা জল্পনা-কল্পনা করছেন। তারপর শেখ রেহানা যখন জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসনে বসে অধিবেশন দেখছিলেন তখনও কেউ কেউ এমন কল্পনা করেছেন যে শেখ হাসিনার পরে বোধকরি শেখ রেহানাই আওয়ামী লীগের হাল ধরবেন। সেটা খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। এরই মধ্যে বোধকরি এ নিয়ে একটা প্রাথমিক মীমাংসা হয়ে গেছে। সজীব ওয়াজেদ জয় আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নেয়ায় এখন আর কোনো সংশয় নেই যে, শেখ রেহানা নন জয়ই হতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনার উত্তরাধিকারী।
উত্তরাধিকারের রাজনীতি সঠিক কী বেঠিক সে প্রশ্ন অবান্তর। উপমহাদেশের সর্বত্র উত্তরাধিকারের রাজনীতির ধারাই চলছে। আরও অনেক দিন ধরে তা চলবে বলেই মনে হয়। এটা ঠেকানোর কোনো মানে হয় না এবং সম্ভবত উপায়ও নেই। রাজনীতি করা একজন মানুষের মৌলিক অধিকার। আর সে রাজনীতির সমর্থকরা যদি উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে কাউকে নেতা নির্বাচন করে তাহলে বলারও কিছু নেই। তিনিই নেতা হবেন। জয় তো কেবল শুরু করলেন। বয়সে তিনি তরুণ। রাজনীতি-অভিজ্ঞতায় নবীন। অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তার সামনে দীর্ঘ সময় পড়ে রয়েছে। ফলে তার নবযাত্রায় কোনো অসুবিধা নেই। তার কল্যাণ হোক।
জয় আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নেয়ার খবর থেকে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে নাগরিকদের মধ্যে। বিএনপির নেতৃত্বে ক্রমেই উঠে আসছেন তারেক রহমান। বিগত দেড় দশক ধরে তিনি সক্রিয় আছেন বিএনপির রাজনীতিতে। এর আগে যখনই তিনি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন থেকেই তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সুসংহত করার জন্য তারেক রহমান দলটিকে তৃণমূল পর্যায় থেকে সুসংগঠিত করতে শুরু করেন। ফলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একটি শক্ত রাজনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে যায়। বিএনপির এই তরুণ নেতা তারেক রহমানকেও দলের যেটুকু দায়িত্ব দেয়া হয় তা তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সৃষ্টিশীলতার সঙ্গে পালন করে দলে এক নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটান। এতে তার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলে তারেক রহমান একটি শক্তিশালী নাম বলে বিবেচিত হতে থাকে। সে ক্ষেত্রে তার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল নিজেদের সংশোধিত না করে বরং তারেক রহমানেরই চরিত্র হননের নিষ্ঠুর ও পরাভব মানসিকতার পরিচয় দিতে থাকে। সেই মানসিকতা থেকেই তারেক রহমানের চরিত্র হননের জন্য তারা উঠে-পড়ে লেগে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় এক-এগারোর সরকার তাকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক শারীরিক নির্যাতন পর্যন্ত করে। এখন তিনি বিদেশে চিকিত্সাধীন। কিন্তু গ্রামে-গঞ্জে বিএনপির সভা-সমাবেশে গেলে টের পাওয়া যায় তারেক রহমান কতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তাদের কাছে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে বিএনপির রাজনীতিকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন তিনি। তার এই উদ্যোগ সন্দেহ নেই বিএনপির রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এনেছে।
আমরা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেও ভবিষ্যতে আওয়ামী রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনই আশা করব। তিনিও যদি জনগণের পাশে গিয়ে জনগণের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে তার দলের রাজনীতিতে পরিবর্তনের সূচনা ঘটাতে পারেন তাহলে রাষ্ট্রের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তাকে আবারও অভিনন্দন।
ফুটনোট
আলোচনা করছিলেন দুই বন্ধু। একজন বললেন, ‘আগে তো জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম ছিল জিয়া। পাইলটরা বলতেন আমরা জিয়ায় অবতরণ করব। এখন তার নাম কী হবে? অপর বন্ধু ঝট করে জবাব দিলেন, ‘কেন, হজরত শাহ্জালাল রহমতুল্লাহে আলাইহে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’। আগের বন্ধু বললেন, পাইলটরা এত বড় নাম বলে না। সংক্ষেপে বলে। সে ক্ষেত্রে এখন থেকে জিয়ার নাম হবে ‘হাসিনা’। অন্যজন প্রশ্ন করলেন ‘কীভাবে’? প্রথম বন্ধু জবাব দিলেন, ‘হজরত এর এইচএ, শাহ্জালালের এস, ইন্টারন্যাশনালের আইএন, এয়ারপোর্টের এ, সমান সমান হাসিনা।’
যদিও পল্লীর এই মানুষেরাই জনসংখ্যার সবচেয়ে বড় অংশ, তবুও নাগরিক মানুষের মতো এরা প্রতিদিন কথায় কথায় মিছিল নিয়ে বের হয় না। প্রতিদিন পুলিশের সঙ্গে বিবাদ করে না। ঝাড়ু মিছিল, থালা মিছিল, শূন্য হাঁড়ি মিছিল নিয়ে এটা চাই-ওটা চাই বলে না। কিন্তু এরাই যখন প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে তখন আর সরকার থাকে না, থাকতে পারে না।
পল্লী বিদ্যুতায়নের বিদ্যুত্ সামান্য সময়ই থাকে। ফলে ফ্যান ঘোরে না। ফ্যান যখন ঘোরে না তখন পল্লীর মানুষ ঘর ছেড়ে গাছের ছায়ায় খোলা জায়গায় আশ্রয় নেয়। প্রকৃতি যতটুকু বায়ু দেয় ততটুকুতেই তারা তুষ্ট থাকে; কিন্তু সেচ মৌসুমে যদি সেচের বিদ্যুত্ না পাওয়া যায় তাহলে তারা দল বেঁধে বিদ্যুত্ সাবস্টেশনে গিয়ে ঘেরাও করে। চিত্কার করে বিদ্যুত্ চায়। তারা জানার প্রয়োজনবোধ করে না যে, সাবস্টেশনে বিদ্যুত্ উত্পাদন করে না। আসলে সাবস্টেশন ঘেরাও করে তারা সরকারকেই জানান দিতে চায় যে, বিদ্যুত্ দিতেই হবে। আমরা নাগরিকরা ওয়াসার পানি না পেলে হল্লা-চিল্লা শুরু করি। ওয়াসার পানিতে গন্ধ কেন তা নিয়ে রাজপথ কিংবা টিভির পর্দা কাঁপাই। পল্লী গ্রামে ওয়াসা নেই। নিজের টিউবওয়েলে পানি নেই; অন্য কারও টিউবওয়েল থেকে পানি নিয়ে আসে। সেখানে গ্যাসের প্রেসার আছে কী নেই তাতে কারও কিছু যায়-আসে না। কারণ পল্লী গ্রামে গ্যাসই নেই। চুলা ধরানোর জন্য লাকড়ির সঙ্কট হলে বাঁশঝাড়-গাছতলা ঝাড়ু দিয়ে খড়পাতা জোগাড় করে। তারপর রান্না চড়ে। তিতাসের গ্যাস নেই বলে নাগরিকেরা রান্নার বদলে হোটেল থেকে খাবার এনে খায়। হেঁসেলের লাকড়ি নেই বলে পল্লী গ্রামের কোনো মানুষ ‘হইটালের দিকে ছোটে না।’ নগর আর পল্লীর চাহিদার ভেদরেখা এখানেই।
এই যে নাগরিকরা গ্যাস না থাকলে মিছিল করে, বিদ্যুত্ না থাকলে মিছিল করে, পানি না থাকলে মিছিল করে, রাস্তা মেরামত না হলে মিছিল করে তার কারণও এই নির্ভরতা তত্ত্ব। গ্যাস না থাকলে নাগরিকরা সত্যি সত্যি নিরুপায়। সরকার কখনও কখনও বলে যে, আর কটা দিন সবুর কর রসুন বুনেছি। এসব কথায় নাগরিকের চিঁড়া ভেজে না। গ্যাস না থাকলে তার হাণ্ডি জ্বলবে না। ছেলেপুলে নিয়ে উপোস করার উপক্রম হবে। সবাই মিলে খেটে খাওয়া তার সাধ্যের অতীত। সুতরাং গ্যাস তাকে দিতে হবে।
বিদ্যুত্ ছাড়া নগর জীবন কল্পনাও করা যায় না। নাগরিক বা নগর সম্পূর্ণরূপে বিদ্যুিনর্ভর। বিদ্যুত্ ছাড়া নাগরিকেরা চোখেও দেখে না, কানেও শোনে না। বিদ্যুত্ ছাড়া শিক্ষাঙ্গনের পাঠ বন্ধ, হাসপাতালের চিকিত্সা বন্ধ, উত্পাদনের কল বন্ধ। অফিস-আদালতের কাজ বন্ধ। পল্লীতে তো বিদ্যুত্ নেই। বিদ্যুত্ না থাকলেই সেখানে কেউ ছিনতাইকারীর ভয়ে কুঁকড়ে যায় না। সাপের ভয়ে পথ চলা বন্ধ করে না। বরং গাঢ় অন্ধকারে বাঁশঝাড়ের নিচ দিয়ে করতালি দিয়ে গান গাইতে গাইতে দিব্যি পথ পাড় হয়ে আসে। কিন্তু নগরীর একটি গলি পথের বিদ্যুত্ হঠাত্ চলে গেলে নাগরিকের জানমাল সম্পূর্ণ অনিরাপদ হয়ে পড়ে। ফলে বিদ্যুত্ তার চাই-ই।
নগরীর ভূমি সব দখল করে নিয়েছে ইট-পাথরের দালান। এখানে খোলা হাওয়া নেই। মুক্ত বাতাসে সে হাওয়ায় গা জুড়ানোর ব্যবস্থা নেই। বসতবাটির সঙ্গে ছায়া দাত্রী বৃক্ষ নেই। পল্লীতে কেউ নিজের বাহির-বাড়িতে গাছের ছায়ায় পাটি বিছিয়ে খালি গায়ে ঘুমিয়ে পড়লে তাতে তার ইজ্জত যায় না। নগরীতে কার গাছের ছায়ায় কে কাকে খালি গায়ে ঘুমাতে দেবে। এ রকম দৃশ্য দেখলে নাগরিকরা নিঃসন্দেহে ওই লোকটিকে সম্ভবত পাগল বা মাদকাসক্ত বলে মনে করবে। ফলে নগরীতে ঘরের মধ্যেই পাখা কিংবা এসি চালিয়ে নাগরিককে স্বস্তি সংগ্রহ করতে হবে। বিদ্যুত্ না থাকলে তীব্র গরম এবং অনন্ত আঁধারে সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হবে। নাগরিকদের কেরোসিনের কুপি কিংবা হ্যারিকেন নেই। সুতরাং বিদ্যুতের বিকল্প সাধারণ নাগরিকদের কিছু নেই। তাই তার বিদ্যুত্ চাই-ই চাই। একইভাবে নাগরিক ওয়াসার পানিনির্ভর। নগরীতে কুয়া নেই, টিউবওয়েল নেই, পুকুর নেই, এমনকি স্বচ্ছ পানির নদীও নেই। তাই ওয়াসার পানির ওপর সে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। পানিও তার চাই-ই চাই।
এসব না থাকলে নাগরিককে তাই অনন্যোপায় হয়ে মিছিলে নামতে হয়। অপারগ সরকার এসব মিটিং, মিছিল, সভা, সমাবেশকে আপদ হিসেবে গণ্য করে। সমস্যা সমাধানের বদলে সরকার নাগরিকদের পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষা দেয়। কখনও বা দলীয় কর্মীদের ঠ্যাঙ্গায়। তখন রাজনীতি আসে। যে দল নির্বাচনে হেরে যায় তারা দাঁড়ায় জনগণের পাশে। নগরীতে রাজনীতি জমে ওঠে। তারপর এক সময় পানি চাই, বিদ্যুত্ চাই, গ্যাস চাই—এসব স্লোগান। ‘পানি-বিদ্যুত্ দিতে হবে—নইলে গদি ছাড়তে হবে’ স্লোগান ওঠে এবং এক সময় এ আন্দোলনে সরকারকে গদি ছাড়তে হয়।
নগরীর রাজনীতির এই একটা দিক। আরও বহুদিক কেন্দ্র করে রাজনীতি সরগরম থাকে। নগরে নাগরিকরা অধিক রাজনীতি সচেতন। যার যেটা বিষয় নয় সেও সেটা চিন্তা করে। সরকারের মন্ত্রী হয়তো এক বেফাঁস কথা বলে বসেছেন। মুদি দোকানদার তার কিনারা পায় না। তারও মনে হয় কেন এমন বলল সরকার? এত কিছুর পরও বিএনপি কেন দেশব্যাপী সরব প্রতিবাদ করতে পারছে না। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ধর্মহীন কমিউনিস্টরা রাজনীতি করতে পারলে ইসলাম নিয়ে কেন রাজনীতি করতে পারবে না। রিকশাচালকও সুশিক্ষিত যাত্রীদের সংবিধানের ধারা বোঝায়। ঠেলাওয়ালাও আরেকজনকে ফখরুদ্দীন বলে গাল দেয়। এই নগরীতে রাজনীতি এমনই এক সংক্রামক ব্যাধি। কিংবা রাজনীতি নগর জীবনের এমনই অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
জয়ের অভিষেক
শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র শেখ হাসিনার তনয় যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী সজীব ওয়াজেদ জয় সম্প্রতি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি তার পিতার জন্মস্থান এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য হয়েছেন। এই সদস্যপদ লাভের কয়েক দিন পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। তাকে অভিনন্দন। এর আগে রাজনীতি তিনি কখনও করেননি। প্রায় ১৫ বছর আগে প্রারম্ভ তারুণ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তারপর দুই-একবার দেশে ফেরা। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ, তাদের জীবনাচরণ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, জলবায়ু-হাওয়া কোনো কিছুর সঙ্গেই তার তেমন কোনো পরিচয় নেই। তার কৈশোর কাল কেটেছে ভারতে পিতা-মাতার সঙ্গে। তারপর কিছুদিন বাংলাদেশে থাকলেও আবার প্রবাসী হয়েছেন। অভিবাসন নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। শোনা যায় তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রেরই নাগরিক। বিয়ে করেছেন সে দেশেরই এক শ্বেতাঙ্গিনীকে, মোটামুটি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রেই। রাজনীতির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা অতি সামান্যই। এর আগে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তার সঙ্গে মিলে বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থান বিষয়ে প্রবন্ধ লিখে তিনি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের অভিশপ্ত এক-এগারোর খলনায়ক জেনারেল মইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন তিনি।
এই সজীব ওয়াজেদ জয়ের রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে তাই কৌতূহল আছে সাধারণ মানুষের মনে। শেখ হাসিনার পরে কে ধরবেন আওয়ামী লীগের হাল? শেখ রেহানা নাকি সজীব ওয়াজেদ জয়? এ নিয়েও নাগরিকরা জল্পনা-কল্পনা করছেন। তারপর শেখ রেহানা যখন জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসনে বসে অধিবেশন দেখছিলেন তখনও কেউ কেউ এমন কল্পনা করেছেন যে শেখ হাসিনার পরে বোধকরি শেখ রেহানাই আওয়ামী লীগের হাল ধরবেন। সেটা খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। এরই মধ্যে বোধকরি এ নিয়ে একটা প্রাথমিক মীমাংসা হয়ে গেছে। সজীব ওয়াজেদ জয় আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নেয়ায় এখন আর কোনো সংশয় নেই যে, শেখ রেহানা নন জয়ই হতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনার উত্তরাধিকারী।
উত্তরাধিকারের রাজনীতি সঠিক কী বেঠিক সে প্রশ্ন অবান্তর। উপমহাদেশের সর্বত্র উত্তরাধিকারের রাজনীতির ধারাই চলছে। আরও অনেক দিন ধরে তা চলবে বলেই মনে হয়। এটা ঠেকানোর কোনো মানে হয় না এবং সম্ভবত উপায়ও নেই। রাজনীতি করা একজন মানুষের মৌলিক অধিকার। আর সে রাজনীতির সমর্থকরা যদি উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে কাউকে নেতা নির্বাচন করে তাহলে বলারও কিছু নেই। তিনিই নেতা হবেন। জয় তো কেবল শুরু করলেন। বয়সে তিনি তরুণ। রাজনীতি-অভিজ্ঞতায় নবীন। অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তার সামনে দীর্ঘ সময় পড়ে রয়েছে। ফলে তার নবযাত্রায় কোনো অসুবিধা নেই। তার কল্যাণ হোক।
জয় আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নেয়ার খবর থেকে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে নাগরিকদের মধ্যে। বিএনপির নেতৃত্বে ক্রমেই উঠে আসছেন তারেক রহমান। বিগত দেড় দশক ধরে তিনি সক্রিয় আছেন বিএনপির রাজনীতিতে। এর আগে যখনই তিনি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন থেকেই তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সুসংহত করার জন্য তারেক রহমান দলটিকে তৃণমূল পর্যায় থেকে সুসংগঠিত করতে শুরু করেন। ফলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একটি শক্ত রাজনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে যায়। বিএনপির এই তরুণ নেতা তারেক রহমানকেও দলের যেটুকু দায়িত্ব দেয়া হয় তা তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সৃষ্টিশীলতার সঙ্গে পালন করে দলে এক নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটান। এতে তার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলে তারেক রহমান একটি শক্তিশালী নাম বলে বিবেচিত হতে থাকে। সে ক্ষেত্রে তার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল নিজেদের সংশোধিত না করে বরং তারেক রহমানেরই চরিত্র হননের নিষ্ঠুর ও পরাভব মানসিকতার পরিচয় দিতে থাকে। সেই মানসিকতা থেকেই তারেক রহমানের চরিত্র হননের জন্য তারা উঠে-পড়ে লেগে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় এক-এগারোর সরকার তাকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক শারীরিক নির্যাতন পর্যন্ত করে। এখন তিনি বিদেশে চিকিত্সাধীন। কিন্তু গ্রামে-গঞ্জে বিএনপির সভা-সমাবেশে গেলে টের পাওয়া যায় তারেক রহমান কতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তাদের কাছে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে বিএনপির রাজনীতিকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন তিনি। তার এই উদ্যোগ সন্দেহ নেই বিএনপির রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এনেছে।
আমরা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেও ভবিষ্যতে আওয়ামী রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনই আশা করব। তিনিও যদি জনগণের পাশে গিয়ে জনগণের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে তার দলের রাজনীতিতে পরিবর্তনের সূচনা ঘটাতে পারেন তাহলে রাষ্ট্রের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তাকে আবারও অভিনন্দন।
ফুটনোট
আলোচনা করছিলেন দুই বন্ধু। একজন বললেন, ‘আগে তো জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম ছিল জিয়া। পাইলটরা বলতেন আমরা জিয়ায় অবতরণ করব। এখন তার নাম কী হবে? অপর বন্ধু ঝট করে জবাব দিলেন, ‘কেন, হজরত শাহ্জালাল রহমতুল্লাহে আলাইহে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’। আগের বন্ধু বললেন, পাইলটরা এত বড় নাম বলে না। সংক্ষেপে বলে। সে ক্ষেত্রে এখন থেকে জিয়ার নাম হবে ‘হাসিনা’। অন্যজন প্রশ্ন করলেন ‘কীভাবে’? প্রথম বন্ধু জবাব দিলেন, ‘হজরত এর এইচএ, শাহ্জালালের এস, ইন্টারন্যাশনালের আইএন, এয়ারপোর্টের এ, সমান সমান হাসিনা।’
No comments