বিশেষ সাক্ষাৎকার-লিবিয়ায় আটকে পড়া শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ by রাবাব ফাতিমা
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দিয়েছেন ২০০৭ সালে। এর আগে বাংলাদেশের একজন পেশাদার কূটনীতিক হিসেবে তিনি পালন করেছেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এর মধ্য দিয়ে মানবাধিকার ও মানবিক বিভিন্ন বিষয়ে তিনি বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
ছিলেন নিউইয়র্ক ও জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। লন্ডনে কমনওয়েলথ সচিবালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন মানবাধিকার-সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান হিসেবে। লিবিয়া থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত আনার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তাঁর প্রতিষ্ঠান আইওএম। সাক্ষাৎকারে সে প্রসঙ্গেই কথা বলেছেন তিনি।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ কে এম জাকারিয়া
প্রথম আলো লিবিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনা সেখানে কর্মরত বাংলাদেশিদের জন্য চরম বিপদ ডেকে এনেছে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়তে গিয়ে অনেকে আটকা পড়েছেন মিসর, তিউনিসিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। সেখানে উদ্বাস্তুর মতো অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে অনেক বাংলাদেশিকে। এ পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের উদ্ধারে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে কীভাবে দেখছেন?
রাবাব ফাতিমা দেখুন, লিবিয়ার পরিস্থিতি যে এত খারাপের দিকে মোড় নেবে, সে ব্যাপারে কারোরই আগাম ধারণা ছিল না। পরিস্থিতি দ্রুতই খারাপের দিকে গেছে। মিসর বা তিউনিসিয়ার চেয়ে লিবিয়ার পরিস্থিতি ভিন্ন। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের লোকজন তো বটেই, সেখানে অবস্থানরত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লোকজনই বিপদে পড়েছেন। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি সেখানে কাজ করেন, এই জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়। লিবিয়ার পরিস্থিতি যখন খারাপের দিকে যেতে শুরু করেছে, তখনই বাংলাদেশ সরকার আমাদের প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাসহ (আইওএম) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায় তা ঠিক করার জন্য। বাংলাদেশ সরকারের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখান থেকে পালিয়ে আসার চেষ্টারত বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা। সরকার এ ব্যাপারে আমাদের সহায়তা চেয়েছে শুরুতেই। আমরা তা করার চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে আইওএমের উদ্যোগে এক হাজার ৪৩৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছেন। বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে যোগাযোগ ও সহায়তা পাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রথম আলো লিবিয়া-পরিস্থিতির অবনতির পর সেখানে বিপদে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ কি যথেষ্ট বলে মনে করেন?
রাবাব ফাতিমা সরকার তার সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে বলে আমি মনে করি। সেদিনও এই পরিস্থিতি নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে আমাদের ডাকা হয়েছিল। অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। আমি বলব যে সরকার শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে সজাগ রয়েছে এবং সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করে যাচ্ছে। লিবিয়ার অব্যাহত সংঘাতময় ও জটিল পরিস্থিতিতে সেখানে অবস্থানরত যে বিপুলসংখ্যক বিদেশি নাগরিক দেশ ছাড়ার জন্য বিভিন্ন সীমান্তে গিয়ে জড়ো হয়েছেন, তা সামাল দেওয়া সহজ কাজ নয়। সরকার এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা যেমন চাইছে, তেমনি তিউনিসিয়া ও মিসর সীমান্তে কর্মকর্তা পাঠিয়েছে। পালিয়ে আসা অনেক বাংলাদেশি নাগরিকের প্রয়োজনীয় ট্রাভেল ডকুমেন্ট নেই। বাংলাদেশ সরকারের লোকজন সে ব্যাপারে সহায়তা করছেন।
প্রথম আলো কিন্তু পত্রপত্রিকার বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনের সূত্রে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সরকার সেখানে বিপদে পড়া নাগরিকদের উদ্ধারে যথেষ্ট উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে না।
রাবাব ফাতিমা আসলে বিষয়টি যে খুব জটিল, সেটা আমাদের অনুধাবন করতে হবে। তথ্য-উপাত্ত ও পরিস্থিতির কিছু দিক তুলে ধরলে বিষয়টি কিছুটা পরিষ্কার হবে। লিবিয়ার ঘটনার পর সেখানে কর্মরত মিসর ও তিউনিসিয়ার নাগরিকেরা যেমন পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে নিজ নিজ দেশে ঢুকেছেন, তেমনি এই দেশ দুটিতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকেরাও ঢুকে পড়েছেন বা ঢোকার চেষ্টা করছেন। তিউনিসিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের হাজার দশেক লোক। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই বাংলাদেশের নাগরিক। অর্থাৎ প্রায় সাত হাজার। এই বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে। এই সীমান্তের কাছাকাছি যে বিমানবন্দর রয়েছে, সেখান থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্টসংখ্যক উড়োজাহাজের বেশি ওঠানামা করতে পারে না। ফলে চাইলেই সব বাংলাদেশিকে একবারে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। তা ছাড়া এ জন্য প্রয়োজনীয় উড়োজাহাজের ব্যবস্থা করা, এগুলো ভাড়া করা—এসবই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা আইওএমের উদ্যোগে এগুলো করতে গিয়ে দেখছি যে কাজটি খুবই জটিল। এ ছাড়া এটা সবারই জানা যে মিসর ও তিউনিসিয়াও সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অসন্তোষের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। সরকার বদল হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে এখন তাদের বাড়তি উদ্বেগ রয়েছে। ফলে সেখানে বিদেশিদের জন্য শিবির খোলা ও প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা নিশ্চিত করার বিষয়টি খুব সহজ নয়। এর পরও বাংলাদেশিরা সেখান থেকে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। এখন প্রতিদিন অন্তত গড়ে শ তিনেক করে বাংলাদেশি বিভিন্নভাবে ফিরে আসছেন।
প্রথম আলো সরকারের সামর্থ্যের কি কোনো ঘাটতি নেই?
রাবাব ফাতিমা লোকবলের সমস্যা একটি বড় সমস্যা। লিবিয়ায় কাজ করেন এমন বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার বলে জানা যায়। সেখানে যে বাংলাদেশ মিশন রয়েছে, তার লোকবল সব মিলিয়ে ১০-১২ জনের বেশি হবে না। এই জনবল দিয়ে এত বাংলাদেশি নাগরিকের স্বার্থ রক্ষা করার কাজটি খুবই কঠিন। তিউনিসিয়ায় বাংলাদেশের কোনো মিশনই নেই। মিসরে থাকলেও আকারে খুব বড় নয়। এসব সমস্যা তো রয়েছেই।
প্রথম আলো মিসর ও তিউনিসিয়া সীমান্তে লিবিয়া থেকে পালিয়ে আসা বিদেশিরা যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন, সেখানকার অবস্থা সম্পর্কে তো আপনারা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। পরিস্থিতি এখন কেমন?
রাবাব ফাতিমা সেখানকার অবস্থা খুব ভালো এমন বলা যাবে না। আগেই বলেছি, মিসর ও তিউনিসিয়া—এই দুটি দেশ নিজেরাই সমস্যার মধ্যে রয়েছে। লিবিয়ায় সমস্যা দেখা দেওয়ার পর এই দেশ দুটির অনেক শ্রমিক নিজ নিজ দেশে ফিরে এসেছেন। এর সঙ্গে বিদেশিদের স্রোত। এর পরও আমরা বলব, দেশ দুটি তাদের দেশে ঢুকে পড়া বিদেশিদের ব্যাপারে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা খারাপ নয়। এর পরও সেখানকার আবহাওয়া, রাতের ঠান্ডা, পানি ও খাদ্যসংকট—এসব সমস্যা হয়ে রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ইউএনএইচসিআর, রেডক্রস বা আমাদের প্রতিষ্ঠান আইওএমসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। লিবিয়া থেকে পালিয়ে আসা বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের এই নাগরিকদের নিরাপদে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সত্যিই এক বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য সময় লাগবে।
প্রথম আলো কাজের সন্ধানে বাংলাদেশের যাঁরা লিবিয়ায় গিয়েছিলেন, তাঁদের আত্মীয়স্বজন উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তাঁদের আপনি কী বলে আশ্বস্ত করবেন?
রাবাব ফাতিমা লিবিয়ার পরিস্থিতি এতটা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে, সে ব্যাপারে কারোরই ধারণা ছিল না। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর লোকজন পালাতে শুরু করেন। আবার বাংলাদেশের সব নাগরিক যে বিপদের মধ্যে আছেন বা সবাই ফিরে আসতে চান, বিষয়টি এ রকমও নয়। যাঁরা বিভিন্নভাবে পালিয়ে লিবিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের অনেকে এখন নানা সমস্যার মধ্যে থাকলেও তাঁদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে আমাদের উদ্যোগের অভাব নেই। আমরা এ জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছি এবং সাড়া পাচ্ছি। অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাও কাজ করছে। সবার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে হয়তো সময় লাগবে, কিন্তু সেটা নিশ্চয় করা সম্ভব হবে। বর্তমান অবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা। শুধু লিবিয়া থেকে যাঁরা পালিয়েছেন তাঁদের ব্যাপারেই নয়, যাঁরা এখনো লিবিয়ায় আটকে আছেন, তাঁদের ব্যাপারেও আমরা সজাগ রয়েছি। এখন নিরাপত্তা-পরিস্থিতি খারাপ বলে লিবিয়ার ভেতরে আমরা তেমন কাজ করতে পারছি না। তবে বেনগাজির পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো থাকায় সেদিনও আইওএমের বাসে করে বিদেশি নাগরিকদের বেনগাজি বন্দরে আনা হয়েছে। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে জাতিসংঘ এবং এর বিভিন্ন সংস্থা সেখানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
প্রথম আলো আইওএমের উদ্যোগে গতকাল শনিবার পর্যন্ত এক হাজার ৪৩৭ জন ফিরেছেন বলে আপনি জানালেন। সব মিলিয়ে লিবিয়া থেকে এ পর্যন্ত কতজন ফিরেছেন? তাঁরা কীভাবে ফিরেছেন? এই প্রক্রিয়ায় সরকার কি ভূমিকা পালন করেছে?
রাবাব ফাতিমা লিবিয়ায় সংকট শুরু হওয়ার পর অনেকে নিজ উদ্যোগে দেশে ফিরেছেন। বিভিন্ন নামীদামি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন এমন অনেকে দেশে ফিরেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহায়তায়। আমাদের কাছে সর্বশেষ (শনিবার পর্যন্ত) যে তথ্য আছে, সে অনুযায়ী হাজার তিনেক লোক দেশে ফিরেছেন। আমরা যাঁদের এ পর্যন্ত দেশে নিয়ে এসেছি, তাঁদের অনেকেরই প্রয়োজনীয় ট্রাভেল ডকুমেন্ট ছিল না। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মিসর ও তিউনিসিয়ায় পাঠানো মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা দ্রুত সে কাজগুলো করে দিয়েছেন। আমাদের এই প্রত্যাবাসন কাজকে নির্বিঘ্ন করতে সরকার সহায়তা করে যাচ্ছে, আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আমরা যাঁদের দেশে নিয়ে এসেছি, তাঁদের ব্যাপারে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ ইমিগ্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আসার পর তাঁদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছে বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক। শহরের বিভিন্ন স্টপেজে নামিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ বাস সার্ভিস ও বাড়ি ফেরার হাতখরচ হিসেবে প্রতিজনকে এক হাজার করে টাকা দেওয়া হচ্ছে।
প্রথম আলো সব মিলিয়ে কতজন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে হবে বলে আপনি মনে করেন? এই বাংলাদেশিদের সবাই লিবিয়ায় কাজ করতেন ও অর্থ উপার্জন করতেন। তাঁরা তো কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়লেন। পরবর্তী সময়ে তাঁদের জীবিকা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে করণীয় কী?
রাবাব ফাতিমা আমাদের ধারণা, ২০ থেকে ২৫ হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে হবে। আমাদের বর্তমান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিপদে পড়া এই বাংলাদেশি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা। এরপর তাঁদের জীবিকার বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই আমাদের ভাবতে হবে। পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হলে ফিরে আসা এই বাংলাদেশিদের অনেকেই আগের চাকরিতে ফিরে যেতে পারবেন বলে মনে করি। বর্তমানে যাঁরা দেশে ফিরে আসছেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা সরকার লিপিবদ্ধ করছে। সরকারের কাছে সবার প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত থেকে যাবে। সরকার নিজে উদ্যোগী হয়ে বা বায়রার সহযোগিতায় অন্য কোন দেশে তাঁদের পাঠানোর উদ্যোগ নিতে পারে। সেখানে যাঁরা কাজ করতেন, তাঁদের অনেকেই দক্ষ কর্মী। ফলে সরকার অন্য কোনো দেশে জনশক্তি পাঠানোর চুক্তি করলে, সেখানে এই দক্ষ কর্মীদের প্রাধান্য দিতে পারে। এ ছাড়া আমাদের দেশেও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা চাইলে এই কর্মীদের অনেককে নিয়োগ দিতে পারবে। তাদেরও তো দেশের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। সব দায়িত্ব সরকারের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে আমরা চাইলে নিজেরাও কিছু করতে পারি। আমরা বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী সময়ে কাজ করব।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
রাবাব ফাতিমা আপনাকেও ধন্যবাদ।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ কে এম জাকারিয়া
প্রথম আলো লিবিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনা সেখানে কর্মরত বাংলাদেশিদের জন্য চরম বিপদ ডেকে এনেছে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে দেশ ছাড়তে গিয়ে অনেকে আটকা পড়েছেন মিসর, তিউনিসিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। সেখানে উদ্বাস্তুর মতো অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে অনেক বাংলাদেশিকে। এ পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের উদ্ধারে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে কীভাবে দেখছেন?
রাবাব ফাতিমা দেখুন, লিবিয়ার পরিস্থিতি যে এত খারাপের দিকে মোড় নেবে, সে ব্যাপারে কারোরই আগাম ধারণা ছিল না। পরিস্থিতি দ্রুতই খারাপের দিকে গেছে। মিসর বা তিউনিসিয়ার চেয়ে লিবিয়ার পরিস্থিতি ভিন্ন। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের লোকজন তো বটেই, সেখানে অবস্থানরত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লোকজনই বিপদে পড়েছেন। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি সেখানে কাজ করেন, এই জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়। লিবিয়ার পরিস্থিতি যখন খারাপের দিকে যেতে শুরু করেছে, তখনই বাংলাদেশ সরকার আমাদের প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাসহ (আইওএম) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায় তা ঠিক করার জন্য। বাংলাদেশ সরকারের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখান থেকে পালিয়ে আসার চেষ্টারত বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা। সরকার এ ব্যাপারে আমাদের সহায়তা চেয়েছে শুরুতেই। আমরা তা করার চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে আইওএমের উদ্যোগে এক হাজার ৪৩৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছেন। বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে যোগাযোগ ও সহায়তা পাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রথম আলো লিবিয়া-পরিস্থিতির অবনতির পর সেখানে বিপদে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ কি যথেষ্ট বলে মনে করেন?
রাবাব ফাতিমা সরকার তার সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে বলে আমি মনে করি। সেদিনও এই পরিস্থিতি নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে আমাদের ডাকা হয়েছিল। অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। আমি বলব যে সরকার শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে সজাগ রয়েছে এবং সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করে যাচ্ছে। লিবিয়ার অব্যাহত সংঘাতময় ও জটিল পরিস্থিতিতে সেখানে অবস্থানরত যে বিপুলসংখ্যক বিদেশি নাগরিক দেশ ছাড়ার জন্য বিভিন্ন সীমান্তে গিয়ে জড়ো হয়েছেন, তা সামাল দেওয়া সহজ কাজ নয়। সরকার এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা যেমন চাইছে, তেমনি তিউনিসিয়া ও মিসর সীমান্তে কর্মকর্তা পাঠিয়েছে। পালিয়ে আসা অনেক বাংলাদেশি নাগরিকের প্রয়োজনীয় ট্রাভেল ডকুমেন্ট নেই। বাংলাদেশ সরকারের লোকজন সে ব্যাপারে সহায়তা করছেন।
প্রথম আলো কিন্তু পত্রপত্রিকার বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনের সূত্রে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সরকার সেখানে বিপদে পড়া নাগরিকদের উদ্ধারে যথেষ্ট উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে না।
রাবাব ফাতিমা আসলে বিষয়টি যে খুব জটিল, সেটা আমাদের অনুধাবন করতে হবে। তথ্য-উপাত্ত ও পরিস্থিতির কিছু দিক তুলে ধরলে বিষয়টি কিছুটা পরিষ্কার হবে। লিবিয়ার ঘটনার পর সেখানে কর্মরত মিসর ও তিউনিসিয়ার নাগরিকেরা যেমন পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে নিজ নিজ দেশে ঢুকেছেন, তেমনি এই দেশ দুটিতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকেরাও ঢুকে পড়েছেন বা ঢোকার চেষ্টা করছেন। তিউনিসিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের হাজার দশেক লোক। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই বাংলাদেশের নাগরিক। অর্থাৎ প্রায় সাত হাজার। এই বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে। এই সীমান্তের কাছাকাছি যে বিমানবন্দর রয়েছে, সেখান থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্টসংখ্যক উড়োজাহাজের বেশি ওঠানামা করতে পারে না। ফলে চাইলেই সব বাংলাদেশিকে একবারে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। তা ছাড়া এ জন্য প্রয়োজনীয় উড়োজাহাজের ব্যবস্থা করা, এগুলো ভাড়া করা—এসবই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা আইওএমের উদ্যোগে এগুলো করতে গিয়ে দেখছি যে কাজটি খুবই জটিল। এ ছাড়া এটা সবারই জানা যে মিসর ও তিউনিসিয়াও সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অসন্তোষের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। সরকার বদল হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে এখন তাদের বাড়তি উদ্বেগ রয়েছে। ফলে সেখানে বিদেশিদের জন্য শিবির খোলা ও প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা নিশ্চিত করার বিষয়টি খুব সহজ নয়। এর পরও বাংলাদেশিরা সেখান থেকে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। এখন প্রতিদিন অন্তত গড়ে শ তিনেক করে বাংলাদেশি বিভিন্নভাবে ফিরে আসছেন।
প্রথম আলো সরকারের সামর্থ্যের কি কোনো ঘাটতি নেই?
রাবাব ফাতিমা লোকবলের সমস্যা একটি বড় সমস্যা। লিবিয়ায় কাজ করেন এমন বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার বলে জানা যায়। সেখানে যে বাংলাদেশ মিশন রয়েছে, তার লোকবল সব মিলিয়ে ১০-১২ জনের বেশি হবে না। এই জনবল দিয়ে এত বাংলাদেশি নাগরিকের স্বার্থ রক্ষা করার কাজটি খুবই কঠিন। তিউনিসিয়ায় বাংলাদেশের কোনো মিশনই নেই। মিসরে থাকলেও আকারে খুব বড় নয়। এসব সমস্যা তো রয়েছেই।
প্রথম আলো মিসর ও তিউনিসিয়া সীমান্তে লিবিয়া থেকে পালিয়ে আসা বিদেশিরা যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন, সেখানকার অবস্থা সম্পর্কে তো আপনারা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। পরিস্থিতি এখন কেমন?
রাবাব ফাতিমা সেখানকার অবস্থা খুব ভালো এমন বলা যাবে না। আগেই বলেছি, মিসর ও তিউনিসিয়া—এই দুটি দেশ নিজেরাই সমস্যার মধ্যে রয়েছে। লিবিয়ায় সমস্যা দেখা দেওয়ার পর এই দেশ দুটির অনেক শ্রমিক নিজ নিজ দেশে ফিরে এসেছেন। এর সঙ্গে বিদেশিদের স্রোত। এর পরও আমরা বলব, দেশ দুটি তাদের দেশে ঢুকে পড়া বিদেশিদের ব্যাপারে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা খারাপ নয়। এর পরও সেখানকার আবহাওয়া, রাতের ঠান্ডা, পানি ও খাদ্যসংকট—এসব সমস্যা হয়ে রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ইউএনএইচসিআর, রেডক্রস বা আমাদের প্রতিষ্ঠান আইওএমসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। লিবিয়া থেকে পালিয়ে আসা বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের এই নাগরিকদের নিরাপদে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সত্যিই এক বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য সময় লাগবে।
প্রথম আলো কাজের সন্ধানে বাংলাদেশের যাঁরা লিবিয়ায় গিয়েছিলেন, তাঁদের আত্মীয়স্বজন উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তাঁদের আপনি কী বলে আশ্বস্ত করবেন?
রাবাব ফাতিমা লিবিয়ার পরিস্থিতি এতটা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে, সে ব্যাপারে কারোরই ধারণা ছিল না। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর লোকজন পালাতে শুরু করেন। আবার বাংলাদেশের সব নাগরিক যে বিপদের মধ্যে আছেন বা সবাই ফিরে আসতে চান, বিষয়টি এ রকমও নয়। যাঁরা বিভিন্নভাবে পালিয়ে লিবিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের অনেকে এখন নানা সমস্যার মধ্যে থাকলেও তাঁদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে আমাদের উদ্যোগের অভাব নেই। আমরা এ জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছি এবং সাড়া পাচ্ছি। অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাও কাজ করছে। সবার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে হয়তো সময় লাগবে, কিন্তু সেটা নিশ্চয় করা সম্ভব হবে। বর্তমান অবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা। শুধু লিবিয়া থেকে যাঁরা পালিয়েছেন তাঁদের ব্যাপারেই নয়, যাঁরা এখনো লিবিয়ায় আটকে আছেন, তাঁদের ব্যাপারেও আমরা সজাগ রয়েছি। এখন নিরাপত্তা-পরিস্থিতি খারাপ বলে লিবিয়ার ভেতরে আমরা তেমন কাজ করতে পারছি না। তবে বেনগাজির পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো থাকায় সেদিনও আইওএমের বাসে করে বিদেশি নাগরিকদের বেনগাজি বন্দরে আনা হয়েছে। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে জাতিসংঘ এবং এর বিভিন্ন সংস্থা সেখানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
প্রথম আলো আইওএমের উদ্যোগে গতকাল শনিবার পর্যন্ত এক হাজার ৪৩৭ জন ফিরেছেন বলে আপনি জানালেন। সব মিলিয়ে লিবিয়া থেকে এ পর্যন্ত কতজন ফিরেছেন? তাঁরা কীভাবে ফিরেছেন? এই প্রক্রিয়ায় সরকার কি ভূমিকা পালন করেছে?
রাবাব ফাতিমা লিবিয়ায় সংকট শুরু হওয়ার পর অনেকে নিজ উদ্যোগে দেশে ফিরেছেন। বিভিন্ন নামীদামি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন এমন অনেকে দেশে ফিরেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহায়তায়। আমাদের কাছে সর্বশেষ (শনিবার পর্যন্ত) যে তথ্য আছে, সে অনুযায়ী হাজার তিনেক লোক দেশে ফিরেছেন। আমরা যাঁদের এ পর্যন্ত দেশে নিয়ে এসেছি, তাঁদের অনেকেরই প্রয়োজনীয় ট্রাভেল ডকুমেন্ট ছিল না। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মিসর ও তিউনিসিয়ায় পাঠানো মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা দ্রুত সে কাজগুলো করে দিয়েছেন। আমাদের এই প্রত্যাবাসন কাজকে নির্বিঘ্ন করতে সরকার সহায়তা করে যাচ্ছে, আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আমরা যাঁদের দেশে নিয়ে এসেছি, তাঁদের ব্যাপারে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ ইমিগ্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আসার পর তাঁদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছে বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক। শহরের বিভিন্ন স্টপেজে নামিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ বাস সার্ভিস ও বাড়ি ফেরার হাতখরচ হিসেবে প্রতিজনকে এক হাজার করে টাকা দেওয়া হচ্ছে।
প্রথম আলো সব মিলিয়ে কতজন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে হবে বলে আপনি মনে করেন? এই বাংলাদেশিদের সবাই লিবিয়ায় কাজ করতেন ও অর্থ উপার্জন করতেন। তাঁরা তো কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়লেন। পরবর্তী সময়ে তাঁদের জীবিকা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে করণীয় কী?
রাবাব ফাতিমা আমাদের ধারণা, ২০ থেকে ২৫ হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে হবে। আমাদের বর্তমান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিপদে পড়া এই বাংলাদেশি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা। এরপর তাঁদের জীবিকার বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই আমাদের ভাবতে হবে। পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হলে ফিরে আসা এই বাংলাদেশিদের অনেকেই আগের চাকরিতে ফিরে যেতে পারবেন বলে মনে করি। বর্তমানে যাঁরা দেশে ফিরে আসছেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা সরকার লিপিবদ্ধ করছে। সরকারের কাছে সবার প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত থেকে যাবে। সরকার নিজে উদ্যোগী হয়ে বা বায়রার সহযোগিতায় অন্য কোন দেশে তাঁদের পাঠানোর উদ্যোগ নিতে পারে। সেখানে যাঁরা কাজ করতেন, তাঁদের অনেকেই দক্ষ কর্মী। ফলে সরকার অন্য কোনো দেশে জনশক্তি পাঠানোর চুক্তি করলে, সেখানে এই দক্ষ কর্মীদের প্রাধান্য দিতে পারে। এ ছাড়া আমাদের দেশেও অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা চাইলে এই কর্মীদের অনেককে নিয়োগ দিতে পারবে। তাদেরও তো দেশের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। সব দায়িত্ব সরকারের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে আমরা চাইলে নিজেরাও কিছু করতে পারি। আমরা বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী সময়ে কাজ করব।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
রাবাব ফাতিমা আপনাকেও ধন্যবাদ।
No comments