আদালত ও দুদকের কাজে হস্তক্ষেপ কাম্য নয়-এরশাদের দুর্নীতির মামলা
সাবেক স্বৈরশাসক ও মহাজোট সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে বিচারাধীন একটি দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে এ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি ওয়াদার বরখেলাপ করেছে। এর আগে তারা বলেছিল, আর কোনো দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হবে না।
দ্বিতীয়ত, কমিটির দায়িত্ব ছিল পূর্ববর্তী জোট সরকার (২০০১-২০০৬) এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দায়ের করা মামলাগুলো যাচাই-বাছাই করা। এখন তারা সেখান থেকে সরে এসেছে। এরশাদের বিরুদ্ধে ফ্রিগেট ক্রয়ে দুর্নীতির মামলাটি দায়ের করা হয় ১৯৯২ সালে, খালেদা জিয়ার প্রথম সরকারের আমলে। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার আরও এক মেয়াদে (১৯৯৬-২০০১) ক্ষমতায় ছিল। রাজনৈতিক বিবেচনায় এরশাদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়ে থাকলে তখন কেন প্রত্যাহার করা হলো না? এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, কমিটির সুপারিশে দুর্নীতির কোনো মামলা প্রত্যাহার করা হবে না। কেননা, প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান ও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই এসব মামলা করা হয়েছে। তার পরও কমিটির এই সুপারিশ দুদকের কাজে অন্যায় হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছু নয়। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ মহাজোট সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি তাঁর দলকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়ায় প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এখন তাঁর মামলা প্রত্যাহারে কমিটির সুপারিশ সেই ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হয়। কারও জোটে থাকা না-থাকা তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয় আর মামলা নিষ্পত্তির এখতিয়ার আদালতের। এর সঙ্গে কোনোভাবেই রাজনীতিকে জড়ানো যাবে না। অতীতেও দুর্নীতির মামলাকে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে জনসমর্থনহীন সামরিক শাসনামলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জেলখানা থেকে ছাড়িয়ে এনে মন্ত্রী করার একাধিক নজিরও রয়েছে। গণতান্ত্রিক সরকারের আমলেও সেই ধারা বজায় থাকলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক।
গত দুই বছরে মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। কমিটির প্রধান ‘কিছু ভুলের’ কথা স্বীকার করলেও এর অসামান্য ক্ষতি সহজে পুষিয়ে নেওয়া যাবে না। রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছে। হত্যা মামলা থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম কর্তন কিংবা সাবেক দুর্নীতিবাজ শাসকের মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে কমিটি শুধু নিজের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেনি, ন্যায়বিচারের পথও রুদ্ধ করেছে। ইতিমধ্যে তারা যেসব মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। অতএব রাজনৈতিক মামলার নামে গয়রহ মামলা প্রত্যাহারের মহড়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। যেখানে সরকারের উচিত দুর্নীতি দমনে দুদককে সহায়তা করা, সেখানে পদে পদে তার কাজে বাধা সৃষ্টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আসামি নির্দোষ হলে আদালতেই তিনি প্রমাণ করবেন, কমিটির করুণা নিয়ে দায়মুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই।
গত দুই বছরে মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। কমিটির প্রধান ‘কিছু ভুলের’ কথা স্বীকার করলেও এর অসামান্য ক্ষতি সহজে পুষিয়ে নেওয়া যাবে না। রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনা কাজ করেছে। হত্যা মামলা থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম কর্তন কিংবা সাবেক দুর্নীতিবাজ শাসকের মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে কমিটি শুধু নিজের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেনি, ন্যায়বিচারের পথও রুদ্ধ করেছে। ইতিমধ্যে তারা যেসব মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। অতএব রাজনৈতিক মামলার নামে গয়রহ মামলা প্রত্যাহারের মহড়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। যেখানে সরকারের উচিত দুর্নীতি দমনে দুদককে সহায়তা করা, সেখানে পদে পদে তার কাজে বাধা সৃষ্টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আসামি নির্দোষ হলে আদালতেই তিনি প্রমাণ করবেন, কমিটির করুণা নিয়ে দায়মুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই।
No comments