রেলমন্ত্রীর এপিএসের গাড়িতে টাকা-বিচার বিভাগীয় তদন্ত হোক
রেলের অনিয়ম ও দুর্নীতি দমনের অঙ্গীকার করে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যে ‘কালো বিড়াল’ ধরার কথা বলেছিলেন, সেটি এখন তাঁর সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস) গাড়িতে পাওয়া গেছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম), তাঁর নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং মন্ত্রীর এপিএস তাঁর গাড়িতে ৭০ লাখ বা মতান্তরে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে
রেলমন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পথে তাঁর গাড়িচালক নাকি টাকার ভাগ চান, সেটা না পাওয়ায় তিনি পিলখানায় বিজিবির সদর দপ্তরে গাড়ি ঢুকিয়ে দেন। সেখানে গাড়িসহ সবাই এক রাত আটক থাকার পর ছাড়া পান। এপিএস বলেছেন, টাকা ছিল ২৫ লাখ, সেটা নাকি তাঁর নিজের টাকা। গাড়িচালক ‘ব্ল্যাকমেইল’ করতে চেয়েছিলেন বলেই তিনি গাড়ি বিজিবি সদর দপ্তরে ঢুকিয়ে দেন বলে এপিএস অভিযোগ করেন।
কিন্তু টাকাসহ গাড়িটি যাচ্ছিল রেলমন্ত্রীর বাসায়। রেলমন্ত্রী বলেছেন, ওটা তাঁর এপিএসের ব্যক্তিগত টাকা, যা তাঁর আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড খতিয়ে দেখবে। এটা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয় বলে তিনি দাবি করেছেন।
এখানে তিনটি প্রশ্ন ওঠে। প্রথমত, এত রাতে এত টাকা নিয়ে কেন কর্মকর্তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন? রেলওয়েতে বর্তমানে ছোট-বড় প্রায় সাত হাজার পদে কর্মী নিয়োগ চলছে। এ প্রক্রিয়ায় টাকাপয়সা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। গাড়িতে রেলের যে মহাব্যবস্থাপক ছিলেন, তিনি পূর্বাঞ্চলের নিয়োগ কমিটির প্রধান। টাকার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। তাহলে টাকার গাড়িতে তাঁর উপস্থিতি কি নেহাত কাকতালীয়? আর এত রাতে দপ্তরের কাজে তাঁকে টাকার গাড়িতে চড়ে মন্ত্রীর বাসায় যেতে হলো কেন?
দ্বিতীয়ত, মন্ত্রী তাঁর এপিএসের কাজের দায় নিতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু পিএস, এপিএস ও অন্যান্য কর্মকর্তার কাজের তদারক করা মন্ত্রীর দায়িত্বের অংশ। ৭০ লাখ, ৩০ লাখ বা ২৫ লাখ—যে অঙ্কই হোক না কেন, এই টাকা নিশ্চয়ই হাওয়া থেকে আসেনি। মহাব্যবস্থাপককে নিয়ে এপিএস যাচ্ছিলেন মন্ত্রীর বাসায়, পথে সেই গাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়া হলো বিজিবির সদর দপ্তরে! এত সব কর্মকাণ্ডের দায় মন্ত্রী কীভাবে অস্বীকার করেন?
তৃতীয়ত, এপিএসের ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রীর একান্ত সচিবকে (পিএস), আর জিএমের বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে (প্রশাসন)। যেখানে স্বয়ং মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিবের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে, সেখানে মন্ত্রীর পিএস দ্বারা তদন্ত করলে সত্য উদ্ঘাটিত হবে না বলে আমরা মনে করি। আবার রেলের মহাব্যবস্থাপকের বিষয়েও তদন্ত একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দ্বারা হতে পারে না।
এ অবস্থায় অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। এতে অন্তত হস্তক্ষেপমুক্ত তদন্ত আশা করা যায়। এত টাকার উৎস কী, কেন এত রাতে কর্মকর্তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন, কেন গাড়িচালক পিলখানায় বিজিবির সদর দপ্তরে গাড়ি ঢুকিয়ে দিলেন—এসব রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত একান্ত প্রয়োজন। মন্ত্রীর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির স্বার্থেই ‘কালো বিড়ালের’ রহস্য উদ্ঘাটিত হওয়া জরুরি।
কিন্তু টাকাসহ গাড়িটি যাচ্ছিল রেলমন্ত্রীর বাসায়। রেলমন্ত্রী বলেছেন, ওটা তাঁর এপিএসের ব্যক্তিগত টাকা, যা তাঁর আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড খতিয়ে দেখবে। এটা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয় বলে তিনি দাবি করেছেন।
এখানে তিনটি প্রশ্ন ওঠে। প্রথমত, এত রাতে এত টাকা নিয়ে কেন কর্মকর্তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন? রেলওয়েতে বর্তমানে ছোট-বড় প্রায় সাত হাজার পদে কর্মী নিয়োগ চলছে। এ প্রক্রিয়ায় টাকাপয়সা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। গাড়িতে রেলের যে মহাব্যবস্থাপক ছিলেন, তিনি পূর্বাঞ্চলের নিয়োগ কমিটির প্রধান। টাকার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। তাহলে টাকার গাড়িতে তাঁর উপস্থিতি কি নেহাত কাকতালীয়? আর এত রাতে দপ্তরের কাজে তাঁকে টাকার গাড়িতে চড়ে মন্ত্রীর বাসায় যেতে হলো কেন?
দ্বিতীয়ত, মন্ত্রী তাঁর এপিএসের কাজের দায় নিতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু পিএস, এপিএস ও অন্যান্য কর্মকর্তার কাজের তদারক করা মন্ত্রীর দায়িত্বের অংশ। ৭০ লাখ, ৩০ লাখ বা ২৫ লাখ—যে অঙ্কই হোক না কেন, এই টাকা নিশ্চয়ই হাওয়া থেকে আসেনি। মহাব্যবস্থাপককে নিয়ে এপিএস যাচ্ছিলেন মন্ত্রীর বাসায়, পথে সেই গাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়া হলো বিজিবির সদর দপ্তরে! এত সব কর্মকাণ্ডের দায় মন্ত্রী কীভাবে অস্বীকার করেন?
তৃতীয়ত, এপিএসের ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রীর একান্ত সচিবকে (পিএস), আর জিএমের বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে (প্রশাসন)। যেখানে স্বয়ং মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিবের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে, সেখানে মন্ত্রীর পিএস দ্বারা তদন্ত করলে সত্য উদ্ঘাটিত হবে না বলে আমরা মনে করি। আবার রেলের মহাব্যবস্থাপকের বিষয়েও তদন্ত একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দ্বারা হতে পারে না।
এ অবস্থায় অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। এতে অন্তত হস্তক্ষেপমুক্ত তদন্ত আশা করা যায়। এত টাকার উৎস কী, কেন এত রাতে কর্মকর্তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন, কেন গাড়িচালক পিলখানায় বিজিবির সদর দপ্তরে গাড়ি ঢুকিয়ে দিলেন—এসব রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত একান্ত প্রয়োজন। মন্ত্রীর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির স্বার্থেই ‘কালো বিড়ালের’ রহস্য উদ্ঘাটিত হওয়া জরুরি।
No comments