বাংলাদেশও কাঁপল সুমাত্রার ভূমিকম্পে
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় ৮ দশমিক ৬ মাত্রার প্রবল ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশসহ ভারত মহাসাগরের দেশগুলোতে সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। গতকাল বুধবার সুমাত্রার স্থানীয় সময় ৩টা ৩৮ মিনিটে এই ভূমিকম্পের প্রায় একই সময়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূকম্পন অনুভূত হয়।
রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৮। পরে আরো কয়েক দফা ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পন অনুভূত হয়। এ ভূকম্পনে নারায়ণগঞ্জের একটি ভবনে ফাটল ধরা ছাড়া দেশের কোথাও ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভূকম্পনে অনেক অঞ্চলে আতঙ্ক দেখা দেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারভেটরির তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক হুমায়ুন আক্তার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সুমাত্রার ভূমিকম্পের কম্পনই বাংলাদেশ থেকে অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশে এর মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৮। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ থেকে দুই হাজার ৪২৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রায়।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ড. মাকসুদ কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল যেহেতু বাংলাদেশ থেকে দুই হাজারের কিলোমিটারেরও বেশি দূরে এবং সুমাত্রার সমুদ্রের প্রায় ৩৩ কিলোমিটার নিচের দিকে তাই বাংলাদেশে এর কম্পনটি ছিল মৃদু। তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া সরকার প্রাথমিকভাবে সুমাত্রা অঞ্চলটিকে 'সুনামি ওয়াচ জোন' হিসেবে ঘোষণা করে সেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালায়। পরে বাংলাদেশসহ ভারত মহাসাগরের দেশগুলো থেকে সুনামি সতর্কতা প্রত্যাহারও করা হয়। এর পরেও কোনো কারণে সেখানে সুনামি হলে দূরত্বের কারণেই বাংলাদেশে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। তাই আতঙ্কের তেমন কিছু নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তর- ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সুমাত্রার ভূমিকম্পনের কেন্দ্র ছিল বান্দা আচেহ থেকে ৪৩৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে উত্তর সুমাত্রার পশ্চিম উপকূলে। প্রথমে ভূমিকম্পের মাত্রা ৮ দশমিক ৭ বলা হয়। পরে জানানো হয়, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৬।
ভূমিকম্পের পরপরই প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার থেকে প্রথমে ভারত মহাসাগরসংলগ্ন দেশগুলোর জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশও আছে। পরে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়। এর আগে প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টারের তৃতীয় সুনামি বুলেটিনে বলা হয়, সুনামি হলে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে ঢেউ এসে পৌঁছবে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সুনামির ওপর নজর রাখা সংস্থাটি জানিয়েছিল, সমুদ্রপৃষ্ঠের বিভিন্ন পরিমাপ দেখে বোঝা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের ফলে সুনামির সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল ভূমিকম্পের সময় ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা কারওয়ান বাজারের বহুতল ভবনগুলো কেঁপে ওঠে। ভবনগুলো ছেড়ে আতঙ্কিত মানুষ তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন। তারা বড় কোনো বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোথাও কোনো বিপত্তি ঘটেনি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও ভূকম্পনের কারণে আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল।
নারায়ণগঞ্জে ছয়তলা ভবনে ফাটল
আমাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গতকাল দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে মৃদু ভূমিকম্পে জেলার ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগরীতে কনক গার্মেন্ট নামের পোশাক কারখানার ছয়তলা ভবনে ফাটল দেখা দেয়। আতঙ্কে কারখানার শ্রমিকরা বিকল্প সিঁড়ি ব্যবহার করে দ্রুত নেমে আসেন। এ ছাড়া ভূমিকম্পের সময় পুরো নারায়ণগঞ্জ শহরেই ছিল আতঙ্ক।
দেশজুড়ে আতঙ্ক
বাগেরহাট, ভোলা, নোয়াখালী, নড়াইল, মৌলভীবাজার, বান্দরবান, মাদারীপুর, গৌরনদীসহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিরা জানান, ভূকম্পনের সময় সেসব এলাকার বহুতল ভবনগুলো কেঁপে উঠলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কায় সর্বত্র দেখা দেয় আতঙ্ক। এ সময় অনেক এলাকার মসজিদে আজান দেওয়া হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত অঞ্চলে দেওয়া হয় উলুধ্বনি। ভূকম্পনের সময় পুকুর, দিঘি ও জলাশয়ের পানি কাঁপতে থাকে; দেখা দেয় বড় বড় ঢেউ।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর দেশে মাঝারি ভূকম্পন অনুভূত হয়। সে ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ভারতের সিকিম থেকে ৬৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং ঢাকা থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দূরে। সিকিমে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮ আর ঢাকায় অনভূত হয়েছে ৪ দশমিক ২ মাত্রার কম্পন। সেই কম্পন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৪৪ সেকেন্ড থেকে দুই মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এতে বেশ কয়েকটি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছিল, হেলে পড়েছিল অন্তত দুটি বহুতল ভবন। এর পরেও দেশে অন্তত দুটি মৃদু ভূকম্পন হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারভেটরির তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক হুমায়ুন আক্তার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সুমাত্রার ভূমিকম্পের কম্পনই বাংলাদেশ থেকে অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশে এর মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৮। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ থেকে দুই হাজার ৪২৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রায়।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ড. মাকসুদ কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল যেহেতু বাংলাদেশ থেকে দুই হাজারের কিলোমিটারেরও বেশি দূরে এবং সুমাত্রার সমুদ্রের প্রায় ৩৩ কিলোমিটার নিচের দিকে তাই বাংলাদেশে এর কম্পনটি ছিল মৃদু। তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া সরকার প্রাথমিকভাবে সুমাত্রা অঞ্চলটিকে 'সুনামি ওয়াচ জোন' হিসেবে ঘোষণা করে সেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালায়। পরে বাংলাদেশসহ ভারত মহাসাগরের দেশগুলো থেকে সুনামি সতর্কতা প্রত্যাহারও করা হয়। এর পরেও কোনো কারণে সেখানে সুনামি হলে দূরত্বের কারণেই বাংলাদেশে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। তাই আতঙ্কের তেমন কিছু নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তর- ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সুমাত্রার ভূমিকম্পনের কেন্দ্র ছিল বান্দা আচেহ থেকে ৪৩৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে উত্তর সুমাত্রার পশ্চিম উপকূলে। প্রথমে ভূমিকম্পের মাত্রা ৮ দশমিক ৭ বলা হয়। পরে জানানো হয়, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৬।
ভূমিকম্পের পরপরই প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার থেকে প্রথমে ভারত মহাসাগরসংলগ্ন দেশগুলোর জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশও আছে। পরে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়। এর আগে প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টারের তৃতীয় সুনামি বুলেটিনে বলা হয়, সুনামি হলে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে ঢেউ এসে পৌঁছবে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সুনামির ওপর নজর রাখা সংস্থাটি জানিয়েছিল, সমুদ্রপৃষ্ঠের বিভিন্ন পরিমাপ দেখে বোঝা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের ফলে সুনামির সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল ভূমিকম্পের সময় ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকা কারওয়ান বাজারের বহুতল ভবনগুলো কেঁপে ওঠে। ভবনগুলো ছেড়ে আতঙ্কিত মানুষ তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসেন। তারা বড় কোনো বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোথাও কোনো বিপত্তি ঘটেনি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও ভূকম্পনের কারণে আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল।
নারায়ণগঞ্জে ছয়তলা ভবনে ফাটল
আমাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গতকাল দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে মৃদু ভূমিকম্পে জেলার ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগরীতে কনক গার্মেন্ট নামের পোশাক কারখানার ছয়তলা ভবনে ফাটল দেখা দেয়। আতঙ্কে কারখানার শ্রমিকরা বিকল্প সিঁড়ি ব্যবহার করে দ্রুত নেমে আসেন। এ ছাড়া ভূমিকম্পের সময় পুরো নারায়ণগঞ্জ শহরেই ছিল আতঙ্ক।
দেশজুড়ে আতঙ্ক
বাগেরহাট, ভোলা, নোয়াখালী, নড়াইল, মৌলভীবাজার, বান্দরবান, মাদারীপুর, গৌরনদীসহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিরা জানান, ভূকম্পনের সময় সেসব এলাকার বহুতল ভবনগুলো কেঁপে উঠলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কায় সর্বত্র দেখা দেয় আতঙ্ক। এ সময় অনেক এলাকার মসজিদে আজান দেওয়া হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত অঞ্চলে দেওয়া হয় উলুধ্বনি। ভূকম্পনের সময় পুকুর, দিঘি ও জলাশয়ের পানি কাঁপতে থাকে; দেখা দেয় বড় বড় ঢেউ।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর দেশে মাঝারি ভূকম্পন অনুভূত হয়। সে ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ভারতের সিকিম থেকে ৬৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং ঢাকা থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দূরে। সিকিমে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮ আর ঢাকায় অনভূত হয়েছে ৪ দশমিক ২ মাত্রার কম্পন। সেই কম্পন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৪৪ সেকেন্ড থেকে দুই মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এতে বেশ কয়েকটি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছিল, হেলে পড়েছিল অন্তত দুটি বহুতল ভবন। এর পরেও দেশে অন্তত দুটি মৃদু ভূকম্পন হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প
No comments