আড়াই থেকে আট লাখ টাকায় রফা! by একরামুল হক
এই যে কাজ না, এর জন্য আমাকে টেন পার্সেন্ট দিতে হয়।... এর কমে না, আরে ধুর মিয়া, এগুলা কী সব বাইর করেন!’ প্রত্যাশার চেয়ে কম পরিমাণের ঘুষ দিতে গেলে বাবুল আকতার নামের রেলওয়ের প্রথম শ্রেণীর এক ঠিকাদারকে এভাবে ধমক দিয়েছিলেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধা।
রেলওয়ের একটি কাজ পাওয়ার জন্য গত বছরের ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রামের সিআরবিতে এই লেনদেনের দৃশ্য ধারণ করেন বাবুল আকতার নিজেই। এই ফুটেজ প্রথম আলোর হাতে এসেছে।
মুঠোফোনে ধারণ করা দৃশ্যে দেখা যায়, ইউসুফ আলী মৃধা ১০ শতাংশের কমে কাজ করেন না শুনে বাবুল আকতার বলেন, ‘স্যার, এইখানে পঞ্চাশ হাজার আছে।’ ইউসুফ আলী বলেন, ‘পঞ্চাশ হাজারে হবে না।’ এবার বাবুল আকতার বলেন, ‘স্যার, স্যার, স্যার, পায়ে ধরছি, স্যার। একবারে পায়ে ধরছি।’ ইউসুফ আলীকে বলতে শোনা যায়, ‘শোনেন, আমার সঙ্গে এইসব ভণিতা করে কথা বলতে হবে না।’ বাবুল আকতার আবারও ‘স্যার, স্যার’ করে উঠলে ইউসুফ আলী ধমকে ওঠেন, ‘আরে, ধুর মিয়া! পঞ্চাশ হাজার টাকায় কাজ হবে না। আরে কী সব বাইর করেন, যান তো মিয়া!’
এরপর বাবুল আকতারকে তিনি বিকেল পাঁচটায় আবার দেখা করতে বললে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান বাবুল।
ঠিকাদার বাবুল আকতার গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি সেদিন ২০ লাখ টাকার একটি কাজ পাওয়ার জন্য ইউসুফ আলী মৃধার কাছে গিয়েছিলেন। আর তা পাওয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত ইউসুফ আলীকে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল।
ঠিকাদারদের কাছ থেকে ‘টেন পার্সেন্ট’ নেওয়া ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধে রেলওয়ের নিয়োগ-বাণিজ্যের বিষয়েও বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, একেকটি পদের জন্য সর্বনিম্ন আড়াই থেকে সর্বোচ্চ আট লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে নিয়োগ কমিটির প্রধান ইউসুফ আলীর মাধ্যমে।
আবদুল কাদির নামের এক ব্যক্তি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে জুনিয়র নিরীক্ষক পদে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে তিনি উত্তীর্ণ হন। এরপর রেলের কর্মকর্তারা তাঁকে বলেন, ‘ছয় লাখ টাকা দিলেই নিয়োগপত্র হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে। নইলে যোগাযোগ করার প্রয়োজন নেই।’
কাদির জানান, টাকা না দেওয়ায় তাঁর চাকরি আর হয়নি। এ কারণে তিনি পরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গত ২১ মার্চ প্রতিকার চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠির ভিত্তিতে রেল মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ের নিরীক্ষক ইস্কান্দর আলী হাওলাদারের মেয়ে জুনিয়র নিরীক্ষক পদের প্রার্থী ছিলেন। মেয়ের চাকরির জন্য তাঁর কাছ থেকেও ছয় লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিয়ে মেয়ের চাকরি নিতে রাজি ছিলেন না তিনি। পরে আর চাকরি হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইস্কান্দর আলী বলেন, ‘আমি টাকার বিনিময়ে ছেলেমেয়ের চাকরি নিয়ে দিতে চাই না। আমার মেয়ের চাকরি কেন হয়নি, সেটা বলতে চাই না।’
ভিডিও ফুটেজ ধারণকারী ঠিকাদার বাবুল আকতার বলেন, ‘জুনিয়র নিরীক্ষক ও ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসের মোট দুটি পদের জন্য আমার পরিচিত দুই ছেলে আবেদন করে। একজন সাইফুল ইসলাম ও অন্যজন তারেক হোসেন। আমি দুজনের জন্য চার লাখ, তিন লাখসহ মোট সাত লাখ টাকা মহাব্যবস্থাপক মৃধার হাতে দুই দফায় তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু টাকার অঙ্ক নাকি কম হয়েছে। তাই ওই দুই ছেলের চাকরি হয়নি। তাঁদের টাকাও ফেরত দেননি মৃধা সাহেব।’ বাবুল আকতার বলেন, ‘ইউসুফ আলী মৃধা বিএনপির রাজনীতির দর্শনে বিশ্বাসী। আমাদের দুজনের বাড়ি মাদারীপুর এলাকায়।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) ৩৮টি শ্রেণীতে তিন হাজার ২০০ পদের বিপরীতে দরখাস্ত জমা পড়ে প্রায় দেড় লাখ। ২০১০ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে সাতটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদনকারীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। গত বছরের ১৮ আগস্ট নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘুষের টাকা জোগাড়ের জন্য প্রার্থীদের সময় দিতে নিয়োগ-প্রক্রিয়ার সময়সীমা কৌশল করে বাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, মামলার কারণে ১০টি শ্রেণীর প্রায় ৬০০ পদে নিয়োগ-প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি সাপেক্ষে বাকি ৬০০ পদের নিয়োগও শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিলামে সম্পদের দর ওঠার মতো রেলওয়ের নিয়োগগুলোতে যিনি সবচেয়ে বেশি টাকা দিতে পেরেছেন, তাঁর চাকরি হয়েছে।
টাকা জোগাড় করার জন্য চাকরিপ্রার্থীদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়, যে কারণে নিয়োগ-প্রক্রিয়ার মেয়াদ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত কয়েকটি শ্রেণীতে নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ করা যায়নি।
জানতে চাইলে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কল্যাণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্ন যাচাই-বাছাইয়ের কারণে নিয়োগ-প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এই প্রক্রিয়া শেষ করার কথা ছিল। আমরা সব গুটিয়ে এনেছি। শিগগিরই নিয়োগ দেওয়া শেষ হবে।’
রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মহাব্যবস্থাপক মৃধা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের নিয়োগগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন। সর্বনিম্ন আড়াই লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ আট লাখ টাকা পর্যন্ত দর ওঠে একটি নিয়োগের জন্য। যত বেশি নিয়োগ, তত বেশি বাণিজ্যের জন্য কারসাজি করে কয়েকটি শ্রেণীতে পদের সংখ্যাও বাড়ানো হয়।
রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়োগ-বাণিজ্যের টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন ঊর্ধ্বতন কল্যাণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া। তিনি মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধার বিশ্বস্ত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে ঘুষ ছাড়া চাকরি হয়েছে এমন কাউকে পাওয়া কঠিন হবে।’
গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমি তো নিয়োগ কমিটিতে ছিলাম না। তাই ঘুষ-বাণিজ্যের জন্য এককভাবে কাউকে দায়ী করা উচিত নয়।’
এ বিষয়ে ইউসুফ আলী মৃধার বক্তব্য নিতে বারবার ফোন করা হয়েছে। তবে প্রতিবারই তা বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে গত মঙ্গলবার তিনি নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটেছে। এখন লোকজন বানিয়ে বানিয়ে কত কথা বলবে।’
মুঠোফোনে ধারণ করা দৃশ্যে দেখা যায়, ইউসুফ আলী মৃধা ১০ শতাংশের কমে কাজ করেন না শুনে বাবুল আকতার বলেন, ‘স্যার, এইখানে পঞ্চাশ হাজার আছে।’ ইউসুফ আলী বলেন, ‘পঞ্চাশ হাজারে হবে না।’ এবার বাবুল আকতার বলেন, ‘স্যার, স্যার, স্যার, পায়ে ধরছি, স্যার। একবারে পায়ে ধরছি।’ ইউসুফ আলীকে বলতে শোনা যায়, ‘শোনেন, আমার সঙ্গে এইসব ভণিতা করে কথা বলতে হবে না।’ বাবুল আকতার আবারও ‘স্যার, স্যার’ করে উঠলে ইউসুফ আলী ধমকে ওঠেন, ‘আরে, ধুর মিয়া! পঞ্চাশ হাজার টাকায় কাজ হবে না। আরে কী সব বাইর করেন, যান তো মিয়া!’
এরপর বাবুল আকতারকে তিনি বিকেল পাঁচটায় আবার দেখা করতে বললে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান বাবুল।
ঠিকাদার বাবুল আকতার গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি সেদিন ২০ লাখ টাকার একটি কাজ পাওয়ার জন্য ইউসুফ আলী মৃধার কাছে গিয়েছিলেন। আর তা পাওয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত ইউসুফ আলীকে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল।
ঠিকাদারদের কাছ থেকে ‘টেন পার্সেন্ট’ নেওয়া ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধে রেলওয়ের নিয়োগ-বাণিজ্যের বিষয়েও বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, একেকটি পদের জন্য সর্বনিম্ন আড়াই থেকে সর্বোচ্চ আট লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে নিয়োগ কমিটির প্রধান ইউসুফ আলীর মাধ্যমে।
আবদুল কাদির নামের এক ব্যক্তি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে জুনিয়র নিরীক্ষক পদে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে তিনি উত্তীর্ণ হন। এরপর রেলের কর্মকর্তারা তাঁকে বলেন, ‘ছয় লাখ টাকা দিলেই নিয়োগপত্র হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে। নইলে যোগাযোগ করার প্রয়োজন নেই।’
কাদির জানান, টাকা না দেওয়ায় তাঁর চাকরি আর হয়নি। এ কারণে তিনি পরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গত ২১ মার্চ প্রতিকার চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠির ভিত্তিতে রেল মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ের নিরীক্ষক ইস্কান্দর আলী হাওলাদারের মেয়ে জুনিয়র নিরীক্ষক পদের প্রার্থী ছিলেন। মেয়ের চাকরির জন্য তাঁর কাছ থেকেও ছয় লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিয়ে মেয়ের চাকরি নিতে রাজি ছিলেন না তিনি। পরে আর চাকরি হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইস্কান্দর আলী বলেন, ‘আমি টাকার বিনিময়ে ছেলেমেয়ের চাকরি নিয়ে দিতে চাই না। আমার মেয়ের চাকরি কেন হয়নি, সেটা বলতে চাই না।’
ভিডিও ফুটেজ ধারণকারী ঠিকাদার বাবুল আকতার বলেন, ‘জুনিয়র নিরীক্ষক ও ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসের মোট দুটি পদের জন্য আমার পরিচিত দুই ছেলে আবেদন করে। একজন সাইফুল ইসলাম ও অন্যজন তারেক হোসেন। আমি দুজনের জন্য চার লাখ, তিন লাখসহ মোট সাত লাখ টাকা মহাব্যবস্থাপক মৃধার হাতে দুই দফায় তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু টাকার অঙ্ক নাকি কম হয়েছে। তাই ওই দুই ছেলের চাকরি হয়নি। তাঁদের টাকাও ফেরত দেননি মৃধা সাহেব।’ বাবুল আকতার বলেন, ‘ইউসুফ আলী মৃধা বিএনপির রাজনীতির দর্শনে বিশ্বাসী। আমাদের দুজনের বাড়ি মাদারীপুর এলাকায়।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) ৩৮টি শ্রেণীতে তিন হাজার ২০০ পদের বিপরীতে দরখাস্ত জমা পড়ে প্রায় দেড় লাখ। ২০১০ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে সাতটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদনকারীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। গত বছরের ১৮ আগস্ট নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘুষের টাকা জোগাড়ের জন্য প্রার্থীদের সময় দিতে নিয়োগ-প্রক্রিয়ার সময়সীমা কৌশল করে বাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, মামলার কারণে ১০টি শ্রেণীর প্রায় ৬০০ পদে নিয়োগ-প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি সাপেক্ষে বাকি ৬০০ পদের নিয়োগও শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিলামে সম্পদের দর ওঠার মতো রেলওয়ের নিয়োগগুলোতে যিনি সবচেয়ে বেশি টাকা দিতে পেরেছেন, তাঁর চাকরি হয়েছে।
টাকা জোগাড় করার জন্য চাকরিপ্রার্থীদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়, যে কারণে নিয়োগ-প্রক্রিয়ার মেয়াদ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত কয়েকটি শ্রেণীতে নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ করা যায়নি।
জানতে চাইলে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কল্যাণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্ন যাচাই-বাছাইয়ের কারণে নিয়োগ-প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এই প্রক্রিয়া শেষ করার কথা ছিল। আমরা সব গুটিয়ে এনেছি। শিগগিরই নিয়োগ দেওয়া শেষ হবে।’
রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মহাব্যবস্থাপক মৃধা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের নিয়োগগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন। সর্বনিম্ন আড়াই লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ আট লাখ টাকা পর্যন্ত দর ওঠে একটি নিয়োগের জন্য। যত বেশি নিয়োগ, তত বেশি বাণিজ্যের জন্য কারসাজি করে কয়েকটি শ্রেণীতে পদের সংখ্যাও বাড়ানো হয়।
রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়োগ-বাণিজ্যের টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন ঊর্ধ্বতন কল্যাণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া। তিনি মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধার বিশ্বস্ত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে ঘুষ ছাড়া চাকরি হয়েছে এমন কাউকে পাওয়া কঠিন হবে।’
গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমি তো নিয়োগ কমিটিতে ছিলাম না। তাই ঘুষ-বাণিজ্যের জন্য এককভাবে কাউকে দায়ী করা উচিত নয়।’
এ বিষয়ে ইউসুফ আলী মৃধার বক্তব্য নিতে বারবার ফোন করা হয়েছে। তবে প্রতিবারই তা বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে গত মঙ্গলবার তিনি নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটেছে। এখন লোকজন বানিয়ে বানিয়ে কত কথা বলবে।’
No comments