ভোগান্তির নাম সিএনজি by শানিলা এনাম ও সারিয়া তানজিম

রাজধানীতে সিএনজির সংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়েই বেড়ে চলেছে জনগণের ভোগান্তি। সকাল থেকে শুরু করে এ ভোগান্তি ঢাকাবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। এ ভোগান্তির প্রধান অনুষঙ্গই হলো চালকের দরকষাকষি ও নানা বাহানায় যাত্রী পরিবহনে অনীহা।


সিএনজিতে মিটার থেকে ১০ কিংবা ২০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার আবদার পুরনো, এখন মিটারের ব্যবহারই দুষ্প্রাপ্য। আইনের হাত থেকে রেহাই কিংবা ট্রাফিক পুলিশদের হাত থেকে রক্ষাকবচ হিসেবেই কেবল ব্যবহার হচ্ছে 'মিটার' নামক যন্ত্রটি। 'মিটার' চালকদের রক্ষক হলেও চালকরাই মিটারের সদ্ব্যবহার করছেন না।
প্রাইভেট সিএনজিগুলোকে আরেক অর্থে বলা যেতে পারে 'দুর্ভোগের সহায়ক শক্তি'। প্রাইভেট সিএনজিগুলোর গায়ে বড় বড় হরফে 'প্রাইভেট' কথাটি লেখা থাকলেও, এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো 'পাবলিক সার্ভিস'। তাই মিটার ব্যবহার এড়ানো ও জনসেবা দুই উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে প্রাইভেট সিএনজি নামক যানবাহনটির মাধ্যমে। সিএনজি সমস্যা ও যাত্রীদের এ অনিশ্চয়তার প্রধান দায় কেবল সিএনজিচালকদেরই নয়, যাত্রীদের নিজস্বকেন্দ্রিক মানসিকতাও এর অন্যতম কারণ। অনেক ক্ষেত্রেই চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করা সত্ত্বেও যাত্রীরা ঝামেলাবিহীন গন্তব্য নিশ্চিত করার জন্য প্রতিবাদহীন ভূমিকা পালন করে। অতিরিক্ত ভাড়া মেনে নিয়েই আমরা গন্তব্যে পেঁৗছানোর চেষ্টা করি। অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ন্ত্রণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
ট্রাফিক পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। যথাযথ আইনি হস্তক্ষেপ নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বর দেওয়া থাকলেও সেগুলো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না। পুলিশ কন্ট্রোল নম্বরগুলো অনেক ক্ষেত্রে সক্রিয় নয়। ফলে যাত্রীরা সাহায্যের জন্য আবেদন করলেও আশানুরূপ সহযোগিতা পাচ্ছে না। কার্যকর মালিক-শ্রমিক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করে সিএনজি সমস্যা সমাধান সম্ভব। মালিক কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে চালকদের অপারগতা তাদের যাত্রীদের ওপর বাড়তি চাপ প্রয়োগে বাধ্য করছে। সিএনজিচালকদের স্বার্থরক্ষা সরকারের অন্যতম কর্তব্য হলেও অধিকারবঞ্চিত চালকরা বাড়তি আয়ের আশায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কেই একমাত্র উপায় হিসেবে চিহ্নিত করছেন। সমস্যা জর্জরিত সিএনজি সেবাকে উন্নত করার ক্ষেত্রে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি সরকার ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতামূলক মনোভাব ও আইন প্রয়োগ নিশ্চিন্তকরণ একান্ত কাম।

স লেখকবৃন্দ :শিক্ষার্থী, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি
মহাখালী, ঢাকা

No comments

Powered by Blogger.