শেম অন ইউ! by সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ
আমাদের রেলমন্ত্রী শ্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত কথা বলেন বেশ গুছিয়ে, রসালোভাবে, ভাষার পাঁচ-মিশালী ব্যঞ্জন মিশিয়ে, কথার যাদু মাখিয়ে শ্রোতা-ভক্তদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন। ভাটিবাংলা থেকে আগত এই নেতা সবার কাছে অতি আদরের, সম্মানের ‘দাদা’ হিসেবে সুখ্যাত।
বিরোধীদের তো বটেই, কখনো নিজ দলীয় সরকারের তীর্যক সমালোচনা করেও দল ও নেত্রীর বিরাগভাজন হওয়ার খ্যাতি-কুখ্যাতি, সবই আছে উনার ঝুলিতে। বর্ষীয়ান এই নেতা পার্লামেন্টেও বেশ জনপ্রিয় তার নানা বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্যের জন্য, বিশেষ করে আইনের মারপ্যাঁচের নানা সস্তা যুক্তি উপস্থাপনে আওয়ামী ঘরানার সবার কাছে উনি সাক্ষাৎ দেবতুল্য।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মইনউদ্দীন-ফখরউদ্দীন প্রভাবিত মাইনাস টু ফর্মুলার অন্যতম সমর্থক এই সুরঞ্জিত দাদা পরবর্তী সময়ে নানান ছলা-কলা-কসরত করে সঙ্গী-সাথী তোফায়েল, জলিল, আমু, মান্না, আখতার, সুলতান মনসুরদের পেছনে ফেলে সভানেত্রীর পাশে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসতে’ যে কতোটা সুচারু কৌশল অবলম্বন করেছেন, তা তার বর্তমান অবস্থানই বলে দেয়। তিনি বড় কাজের কাজী, সকল কাজের ওস্তাদ।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস এবং তার প্রিয়ভাজন ও মনোনীত রেলের কর্তাব্যক্তি নিজেদের গাড়ি, আর সরকারি ড্রাইভার সমেত রাত-বিরাতে নগদ ৭০ লাখটাকাসহ বিজিবি সদরদপ্তরে হাতে-নাতে ধরা পড়েন; আর আমাদের মাননীয় রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত দাদা আহলাদে আটখান হয়ে, একেবারে উপযাযক হয়ে বিজিবি এবং পরে থানার ওপর চাপ প্রয়োগ করে প্রিয় এপিএস, রেলের কর্তাব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। তারপরে আবার সংবাদ সম্মেলন করে অকৃত্রিম সেই হাসি দিয়ে বলেন, নিজেদের আধীনস্থ লোক দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এতোগুলো টাকা রাতের আঁধারে উনারই অধীনস্থ কর্মচারীর গাড়িতে হাতে-নাতে ধরার পড়লো আর আমাদের দাদাবাবু মুখে চিরাচরিত হাসিটা ঝুলিয়ে বলে দিলেন: ‘‘এটাতো তার ব্যক্তিগত টাকা, নিজের টাকা সে কোথায় রাখবে, এটা তার ব্যাপার!’’
দাদাবাবু লজ্জিত না হয় না-ই হলেন, কিন্তু মানবতা এবং আমাদের বিবেকে বড় চোট লাগল দাদা। কষ্ট হয় আপনার ওই খোঁড়া যুক্তি শুনে!
এতো বড় ক্যাশ ঘুষের কেলেংকারির সাথে সরাসরি জড়িত থেকেও কী করে আপনি এখনো রাষ্ট্রের এতোবড় পদ আঁকড়ে ধরে আছেন বা থাকতে পারলেন? সামান্যতম হিতাহিতজ্ঞান থাকলে এই পদে এখন আর আপনার থাকা উচিত নয়। কতো টাকা হলে আপনাদের মতো ‘গরীবের রক্তচোষা’ মন্ত্রী-নেতাদের পেট ভরবে? বাংলা নতুন বছরের শুরুতেই তা বলে দিলে পারেন। আপনারা নিজেরা, দল আর রাষ্ট্রও তখন বেঁচে যাবে এমন অমার্জনীয় অপকর্মের বোঝা বহন করা থেকে।
আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে এতো পচন ধরেছে যে, নির্বাহী, আইন ও বিচার---এই তিনটি বিভাগেই সর্বত্র নীতি-নৈতিকতার বড় অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঘুষ ছাড়াতো কোন ফাইল টেবিলের এপাশ থেকে ওপাশে যায় না বা নড়ে না। সে সাধ্যও নেই। পার্সেন্টেজ না দিলে কোনো প্রজেক্ট পাশ হবে না। হায়রে গণতন্ত্র, হায়রে নেতা-নেত্রী, মাঝেমধ্যে আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখেন তো? বয়স কত হলো সেদিকে খেয়াল আছে?
আমাদের রেলমন্ত্রী বাহারি বক্তব্যে বেশ চমক সৃষ্টি করে জনপ্রিয় হয়ে আছেন। এক সময়ের সমাজতন্ত্রী, কখনো একতা পার্টি, কখনো গণতন্ত্রী-সমাজতন্ত্রী, কখনো মার্ক্সীয় ধ্যান-ধারণার প্রচারক, আর কখনো মাইনাস-টু ফর্মুলার কুশীলব, আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ নেতা, উপদেষ্টা, আর এখন জাঁদরেল মন্ত্রী—আকাশে রামধনুর বর্ণিল রং যেভাবে হঠাৎ সবকিছুতে রঙ ছড়িয়ে দিয়ে এক সময় আবার শূন্যে মিলিয়ে যায়, আমাদের দাদাবাবুও তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সেরকম লাল-নীল-সাদা-কালো বর্ণিল রামধনুর আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে বেশ বহাল তবিয়তেই ছিলেন। কিন্তু শেষতক...?
দাদা, বলবেন কি আপনার এই ‘সুনামের’ ভাগীদার আর কে কে, নাকি আপনি একাই সব...? আওয়ামী লীগ সভানেত্রী কেন আপনার এই অপকর্মের বদনাম নিজের সরকার ও দলের উপর নেবেন? আইয়ুব আমলের পাঁচ-পাত্তু, এরশাদের তিব্বত, হাসিনার জয়নাল হাজারী-তাহের, খালেদার বাবর-হারিস গং, জিয়াউর রহমানের ইমদু ডাকাত, সবাইকেই তো দেখছি আপনার স্কুলে এসে শিক্ষা নিতে হবে।কারণ তাদের সবাইকে যে আপনি টেক্কা দিয়েছেন দাদা!
এই আপনি যখন আমার শিক্ষক ড. সিরাজুল ইসলাম, প্রাচ্যের অর্থনীতির স্যামুয়েল আবুল মাল আব্দুল মুহিত, প্রথিতযশা স্থানীয় সরকার ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার, প্রখ্যাত আইনবিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করেন, তাদের বক্তব্য খণ্ডন করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন, তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন, তখন খোদ শয়তানও লজ্জা পায়; কারণ ওই সব প্রথিতযশা ব্যক্তির লেখা-প্রকাশনীর ধারে কাছেও যাবে না আপনার তীর্যক, নেতিবাচক সেইসব তাচ্ছিল্যভরা মন্তব্য।
দয়া করে রাষ্ট্রের এই সুন্দর পদটিকে আর কলুষিত করবেন না, আর কোনো জজমিয়া নাটকের সূত্রপাতও করবেন না। ধরণী কৃতজ্ঞ হয়, আপনি এই পদ আর আঁকড়ে না ধরলে। শেইম অন ইউ দাদা...!!!
Salim932@googlemail.com
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মইনউদ্দীন-ফখরউদ্দীন প্রভাবিত মাইনাস টু ফর্মুলার অন্যতম সমর্থক এই সুরঞ্জিত দাদা পরবর্তী সময়ে নানান ছলা-কলা-কসরত করে সঙ্গী-সাথী তোফায়েল, জলিল, আমু, মান্না, আখতার, সুলতান মনসুরদের পেছনে ফেলে সভানেত্রীর পাশে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসতে’ যে কতোটা সুচারু কৌশল অবলম্বন করেছেন, তা তার বর্তমান অবস্থানই বলে দেয়। তিনি বড় কাজের কাজী, সকল কাজের ওস্তাদ।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস এবং তার প্রিয়ভাজন ও মনোনীত রেলের কর্তাব্যক্তি নিজেদের গাড়ি, আর সরকারি ড্রাইভার সমেত রাত-বিরাতে নগদ ৭০ লাখটাকাসহ বিজিবি সদরদপ্তরে হাতে-নাতে ধরা পড়েন; আর আমাদের মাননীয় রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত দাদা আহলাদে আটখান হয়ে, একেবারে উপযাযক হয়ে বিজিবি এবং পরে থানার ওপর চাপ প্রয়োগ করে প্রিয় এপিএস, রেলের কর্তাব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। তারপরে আবার সংবাদ সম্মেলন করে অকৃত্রিম সেই হাসি দিয়ে বলেন, নিজেদের আধীনস্থ লোক দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এতোগুলো টাকা রাতের আঁধারে উনারই অধীনস্থ কর্মচারীর গাড়িতে হাতে-নাতে ধরার পড়লো আর আমাদের দাদাবাবু মুখে চিরাচরিত হাসিটা ঝুলিয়ে বলে দিলেন: ‘‘এটাতো তার ব্যক্তিগত টাকা, নিজের টাকা সে কোথায় রাখবে, এটা তার ব্যাপার!’’
দাদাবাবু লজ্জিত না হয় না-ই হলেন, কিন্তু মানবতা এবং আমাদের বিবেকে বড় চোট লাগল দাদা। কষ্ট হয় আপনার ওই খোঁড়া যুক্তি শুনে!
এতো বড় ক্যাশ ঘুষের কেলেংকারির সাথে সরাসরি জড়িত থেকেও কী করে আপনি এখনো রাষ্ট্রের এতোবড় পদ আঁকড়ে ধরে আছেন বা থাকতে পারলেন? সামান্যতম হিতাহিতজ্ঞান থাকলে এই পদে এখন আর আপনার থাকা উচিত নয়। কতো টাকা হলে আপনাদের মতো ‘গরীবের রক্তচোষা’ মন্ত্রী-নেতাদের পেট ভরবে? বাংলা নতুন বছরের শুরুতেই তা বলে দিলে পারেন। আপনারা নিজেরা, দল আর রাষ্ট্রও তখন বেঁচে যাবে এমন অমার্জনীয় অপকর্মের বোঝা বহন করা থেকে।
আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে এতো পচন ধরেছে যে, নির্বাহী, আইন ও বিচার---এই তিনটি বিভাগেই সর্বত্র নীতি-নৈতিকতার বড় অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঘুষ ছাড়াতো কোন ফাইল টেবিলের এপাশ থেকে ওপাশে যায় না বা নড়ে না। সে সাধ্যও নেই। পার্সেন্টেজ না দিলে কোনো প্রজেক্ট পাশ হবে না। হায়রে গণতন্ত্র, হায়রে নেতা-নেত্রী, মাঝেমধ্যে আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখেন তো? বয়স কত হলো সেদিকে খেয়াল আছে?
আমাদের রেলমন্ত্রী বাহারি বক্তব্যে বেশ চমক সৃষ্টি করে জনপ্রিয় হয়ে আছেন। এক সময়ের সমাজতন্ত্রী, কখনো একতা পার্টি, কখনো গণতন্ত্রী-সমাজতন্ত্রী, কখনো মার্ক্সীয় ধ্যান-ধারণার প্রচারক, আর কখনো মাইনাস-টু ফর্মুলার কুশীলব, আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ নেতা, উপদেষ্টা, আর এখন জাঁদরেল মন্ত্রী—আকাশে রামধনুর বর্ণিল রং যেভাবে হঠাৎ সবকিছুতে রঙ ছড়িয়ে দিয়ে এক সময় আবার শূন্যে মিলিয়ে যায়, আমাদের দাদাবাবুও তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সেরকম লাল-নীল-সাদা-কালো বর্ণিল রামধনুর আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে বেশ বহাল তবিয়তেই ছিলেন। কিন্তু শেষতক...?
দাদা, বলবেন কি আপনার এই ‘সুনামের’ ভাগীদার আর কে কে, নাকি আপনি একাই সব...? আওয়ামী লীগ সভানেত্রী কেন আপনার এই অপকর্মের বদনাম নিজের সরকার ও দলের উপর নেবেন? আইয়ুব আমলের পাঁচ-পাত্তু, এরশাদের তিব্বত, হাসিনার জয়নাল হাজারী-তাহের, খালেদার বাবর-হারিস গং, জিয়াউর রহমানের ইমদু ডাকাত, সবাইকেই তো দেখছি আপনার স্কুলে এসে শিক্ষা নিতে হবে।কারণ তাদের সবাইকে যে আপনি টেক্কা দিয়েছেন দাদা!
এই আপনি যখন আমার শিক্ষক ড. সিরাজুল ইসলাম, প্রাচ্যের অর্থনীতির স্যামুয়েল আবুল মাল আব্দুল মুহিত, প্রথিতযশা স্থানীয় সরকার ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার, প্রখ্যাত আইনবিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করেন, তাদের বক্তব্য খণ্ডন করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন, তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন, তখন খোদ শয়তানও লজ্জা পায়; কারণ ওই সব প্রথিতযশা ব্যক্তির লেখা-প্রকাশনীর ধারে কাছেও যাবে না আপনার তীর্যক, নেতিবাচক সেইসব তাচ্ছিল্যভরা মন্তব্য।
দয়া করে রাষ্ট্রের এই সুন্দর পদটিকে আর কলুষিত করবেন না, আর কোনো জজমিয়া নাটকের সূত্রপাতও করবেন না। ধরণী কৃতজ্ঞ হয়, আপনি এই পদ আর আঁকড়ে না ধরলে। শেইম অন ইউ দাদা...!!!
Salim932@googlemail.com
No comments