বার্সার অন্য প্রতিপক্ষ by সিয়াম রহমান
মেসি, জাভি, ইনিয়েস্তাদের পায়ে বল পড়লেই সূর্যোদয়। আলোর বিচ্ছুরণ। মুগ্ধ হয়ে বিপক্ষ দলেরও কুর্নিশ জানানো। কিন্তু কুর্নিশই জানাতে হলে আর ফুটবল খেলা কেন, দর্শক হলেই হয়! তাই বার্সেলেনার মসৃণ গতি থামাতে বাঁকা পথের বন্দোবস্ত করা ছাড়া উপায় কী? পথে কয়েকটা ‘স্পিড ব্রেকার’ বসিয়ে দাও, সঙ্গে বিছিয়ে দাও কাঁটা আর লোহালক্কড়
ব্যস, ছন্দ খুঁজে পেতেই হিমশিম খাবে বার্সেলোনা! এই কাজটাই এখন করছে বিপক্ষ কিছু দল। অসমান মাঠে কখনো লম্বা ঘাস রেখে কখনো বা ন্যাড়া করে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে মেসিদের। ছন্দপতন তাতেই। মার্সিডিজ হয়ে পড়ছে ঢাকার রাস্তার টয়োটা কার!
সর্বশেষ উদাহরণ চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে মিলানের সান সিরো মাঠ। রিয়াল মাদ্রিদের পরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে যারা, সেই দলটাই কিনা বার্সেলোনাকে খেলাল অমসৃণ মাঠে। যেখানে ফ্রি কিক নিতে গিয়ে পড়ে গেলেন মেসি। বল পায়ে পিকাসো-ভিঞ্চি হয়ে ওঠা শিল্পী জাভি, ইনিয়েস্তারা হয়ে পড়লেন করিম-জব্বারের মতো শ্রমিক! ধিক্কার জানালেন গার্দিওলা। নালিশ গেল উয়েফাতেও। কিন্তু কাজের কাজ হলো না কিছুই। হবে কীভাবে, আইনই যে নেই। ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ বলে যে কথা আছে একটা। নিজেদের ঘরের ম্যাচে ইচ্ছেমতো মাঠ তৈরি করতে পারে যেকোনো দল। কেউ বাঁকা উঠোন তৈরি করে রাখলে নাচতে হবে সেখানেই। তাই বার্সার বিপক্ষে সম্ভব হলে ন্যাড়া খেতে ম্যাচের আয়োজন করে দলগুলো!
সান সিরোর মাঠের দুর্দশার অবশ্য আরেকটা কারণ থাকতে পারে। এটি এসি ও ইন্টার দুই মিলানেরই মাঠ। প্রতি সপ্তাহেই তাই খেলা হয় এখানে, মাঠটা বিশ্রামই পায় না। তবে এখানে অন্য কোনো ব্যাপার আছে কিনা, সেই সন্দেহের কারণ চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার ১২ নম্বর প্রতিপক্ষ হিসেবে বিপক্ষ অনেক দলই কাজে লাগাচ্ছে নিজেদের মাঠকে।
রিয়াল মাদ্রিদ আর পোর্তোর মতো দলও এই মৌসুমে বার্সেলোনার বিপক্ষে মাঠকে ব্যবহার করেছে ১২ নম্বর প্রতিপক্ষ হিসেবে। ২০০৬ সালে চেলসির কোচ থাকার সময় স্টাম্পফোর্ড ব্রিজ ন্যাড়া করে বার্সেলোনাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন হোসে মরিনহো। গত বছর ডিসেম্বরে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর এল ক্লাসিকোতেও নাকি মাঠকর্মীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা ছিল ‘স্পেশাল ওয়ান’-এর। সে অনুযায়ী লম্বা আর শুষ্ক ঘাস রেখে বার্সার ফুটবলের গতি কমানোর চেষ্টা করেছিলেন মাঠকর্মীরা। কাজ হয়নি তাতে। পাসের ঝরনা বইয়ে সানচেজ, মার্শেলো, ফ্যাব্রিগাসের গোলে ৩-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল গার্দিওলার দল।
উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালটা হয়েছিল নিরপেক্ষ ভেন্যুতেই। তার পরও ‘দ্বিতীয় লুই মোনাকো’ মাঠের বেহাল দশা কীভাবে হলো, বোঝা কঠিন। বার্সেলোনার ভাগ্য ভালো যে ম্যাচটিতে পোর্তোর দু-দুজন খেলোয়াড় লালকার্ড দেখেছিলেন। তাই ৯ জনের দলের বিপক্ষে মেসি, ফ্যাব্রিগাসের গোলে ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গার্দিওলার দল।
বার্সেলোনার ফুটবল-দর্শন হলো, ‘মাঠে বল থাকবে, খেলতে হবে সেই বল নিয়ে। এ জন্য রাখতে হবে বলের দখল।’ অজস্র পাসে গতিময় ফুটবল খেলতে ন্যু ক্যাম্পের মাঠটাও মসৃণ। চাইলে বল নিয়ে তোলা যায় ফেরারির গতি। আর সেই গতিটাই আটকে দিতে বিপক্ষ দল তৈরি করে অসমান মাঠ। এবারের স্প্যানিশ লা লিগাতে রিয়ালের পাশাপাশি এমন করেছে রেসিং সান্তান্দার, ভ্যালেন্সিয়া আর ওসাসুনাও। রেসিংয়ের মাঠ এল সারদিনেরো ছিল শক্ত আর ধুলোময়। ধুলো উড়ছিল প্রতিটা শটেই। ভ্যালেন্সিয়ার মাস্তেলা ছিল শুকনো আর অমসৃণ। ওসাসুনার রেইনো ডি নাভারার খারাপ মাঠটা আরও খারাপ হয়েছিল কনকনে ঠান্ডায়। খারাপ মাঠে ওসাসুনার সঙ্গে ২-৩ গোলে হেরে যায় বার্সা আর ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ড্র করে। খারাপ মাঠের ফাঁদে ভিনগ্রহের দল বার্সা আটকে যাওয়াতেই তো উৎসাহী হয়েছে এসি মিলান। সামনে হয়তো হবে অন্য কোনো দল।
১২ নম্বর প্রতিপক্ষ বলতে সাধারণত বোঝানো হয় বিপক্ষ দলের দর্শকদের। গ্যালারির সব প্রান্ত থেকে ছুটে আসা নানা মন্তব্যে আর নিজেদের দলের জন্য সমুদ্রের গর্জনে প্রতিপক্ষের ভড়কে যাওয়াই স্বাভাবিক। এখন থেকে বার্সেলোনার ১২ নম্বর প্রতিপক্ষ বলা যেতে পারে মাঠকেও, যা বড় পরীক্ষায় ফেলছে মেসিদের। বদলে দিচ্ছে কোচ গার্দিওলার মুখের জ্যামিতিও।
সর্বশেষ উদাহরণ চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে মিলানের সান সিরো মাঠ। রিয়াল মাদ্রিদের পরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে যারা, সেই দলটাই কিনা বার্সেলোনাকে খেলাল অমসৃণ মাঠে। যেখানে ফ্রি কিক নিতে গিয়ে পড়ে গেলেন মেসি। বল পায়ে পিকাসো-ভিঞ্চি হয়ে ওঠা শিল্পী জাভি, ইনিয়েস্তারা হয়ে পড়লেন করিম-জব্বারের মতো শ্রমিক! ধিক্কার জানালেন গার্দিওলা। নালিশ গেল উয়েফাতেও। কিন্তু কাজের কাজ হলো না কিছুই। হবে কীভাবে, আইনই যে নেই। ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ বলে যে কথা আছে একটা। নিজেদের ঘরের ম্যাচে ইচ্ছেমতো মাঠ তৈরি করতে পারে যেকোনো দল। কেউ বাঁকা উঠোন তৈরি করে রাখলে নাচতে হবে সেখানেই। তাই বার্সার বিপক্ষে সম্ভব হলে ন্যাড়া খেতে ম্যাচের আয়োজন করে দলগুলো!
সান সিরোর মাঠের দুর্দশার অবশ্য আরেকটা কারণ থাকতে পারে। এটি এসি ও ইন্টার দুই মিলানেরই মাঠ। প্রতি সপ্তাহেই তাই খেলা হয় এখানে, মাঠটা বিশ্রামই পায় না। তবে এখানে অন্য কোনো ব্যাপার আছে কিনা, সেই সন্দেহের কারণ চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার ১২ নম্বর প্রতিপক্ষ হিসেবে বিপক্ষ অনেক দলই কাজে লাগাচ্ছে নিজেদের মাঠকে।
রিয়াল মাদ্রিদ আর পোর্তোর মতো দলও এই মৌসুমে বার্সেলোনার বিপক্ষে মাঠকে ব্যবহার করেছে ১২ নম্বর প্রতিপক্ষ হিসেবে। ২০০৬ সালে চেলসির কোচ থাকার সময় স্টাম্পফোর্ড ব্রিজ ন্যাড়া করে বার্সেলোনাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন হোসে মরিনহো। গত বছর ডিসেম্বরে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর এল ক্লাসিকোতেও নাকি মাঠকর্মীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা ছিল ‘স্পেশাল ওয়ান’-এর। সে অনুযায়ী লম্বা আর শুষ্ক ঘাস রেখে বার্সার ফুটবলের গতি কমানোর চেষ্টা করেছিলেন মাঠকর্মীরা। কাজ হয়নি তাতে। পাসের ঝরনা বইয়ে সানচেজ, মার্শেলো, ফ্যাব্রিগাসের গোলে ৩-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল গার্দিওলার দল।
উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালটা হয়েছিল নিরপেক্ষ ভেন্যুতেই। তার পরও ‘দ্বিতীয় লুই মোনাকো’ মাঠের বেহাল দশা কীভাবে হলো, বোঝা কঠিন। বার্সেলোনার ভাগ্য ভালো যে ম্যাচটিতে পোর্তোর দু-দুজন খেলোয়াড় লালকার্ড দেখেছিলেন। তাই ৯ জনের দলের বিপক্ষে মেসি, ফ্যাব্রিগাসের গোলে ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গার্দিওলার দল।
বার্সেলোনার ফুটবল-দর্শন হলো, ‘মাঠে বল থাকবে, খেলতে হবে সেই বল নিয়ে। এ জন্য রাখতে হবে বলের দখল।’ অজস্র পাসে গতিময় ফুটবল খেলতে ন্যু ক্যাম্পের মাঠটাও মসৃণ। চাইলে বল নিয়ে তোলা যায় ফেরারির গতি। আর সেই গতিটাই আটকে দিতে বিপক্ষ দল তৈরি করে অসমান মাঠ। এবারের স্প্যানিশ লা লিগাতে রিয়ালের পাশাপাশি এমন করেছে রেসিং সান্তান্দার, ভ্যালেন্সিয়া আর ওসাসুনাও। রেসিংয়ের মাঠ এল সারদিনেরো ছিল শক্ত আর ধুলোময়। ধুলো উড়ছিল প্রতিটা শটেই। ভ্যালেন্সিয়ার মাস্তেলা ছিল শুকনো আর অমসৃণ। ওসাসুনার রেইনো ডি নাভারার খারাপ মাঠটা আরও খারাপ হয়েছিল কনকনে ঠান্ডায়। খারাপ মাঠে ওসাসুনার সঙ্গে ২-৩ গোলে হেরে যায় বার্সা আর ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ড্র করে। খারাপ মাঠের ফাঁদে ভিনগ্রহের দল বার্সা আটকে যাওয়াতেই তো উৎসাহী হয়েছে এসি মিলান। সামনে হয়তো হবে অন্য কোনো দল।
১২ নম্বর প্রতিপক্ষ বলতে সাধারণত বোঝানো হয় বিপক্ষ দলের দর্শকদের। গ্যালারির সব প্রান্ত থেকে ছুটে আসা নানা মন্তব্যে আর নিজেদের দলের জন্য সমুদ্রের গর্জনে প্রতিপক্ষের ভড়কে যাওয়াই স্বাভাবিক। এখন থেকে বার্সেলোনার ১২ নম্বর প্রতিপক্ষ বলা যেতে পারে মাঠকেও, যা বড় পরীক্ষায় ফেলছে মেসিদের। বদলে দিচ্ছে কোচ গার্দিওলার মুখের জ্যামিতিও।
No comments