বিশেষ সাক্ষাৎকার-দোষীদের বার্তা দিতে হবে, অন্যায় করলে পার পাওয়া যাবে না by এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম

এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি নেন। এরপর তিনি অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে তৎকালীন সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে (সিএসপি) যোগ দেন এবং পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।


১৯৮০ সালে তিনি বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি জাতিসংঘের এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের পরিচালক, দেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান এবং ২০০৭-০৯ সময়কালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর অনেক গবেষণাপ্রবন্ধ ও প্রকাশনা আছে।
 সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আহসান হাবীব

প্রথম আলো  শেয়ারবাজার বিপর্যয় নিয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে আসা অভিযুক্তদের নাম যদিও গণমাধ্যমে এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে, তথাপি প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ প্রকাশে সরকার যে অনাগ্রহ দেখিয়েছে তা নিয়ে নানা কথা উঠেছে। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  তদন্ত যেহেতু হয়েছে, প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গরূপে প্রকাশ করা উচিত। সরকার স্বচ্ছতার কথা বলে। এখন তথ্য অধিকার আইনও আছে। এটা একটা নীতিগত অবস্থান। তা ছাড়া শেয়ারবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই জানতে চায় কী ঘটেছে। সুতরাং তাদের তথ্য পাওয়ার অধিকারের ওপর দৃষ্টি রেখে প্রতিবেদনটি পূর্ণাঙ্গরূপে প্রকাশ করা উচিত ছিল।
তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রাথমিক কাজ। তাই নাম প্রকাশ করলেই কারও সম্মানহানি ঘটবে বলে মনে করি না। অনেক ক্ষেত্রে নাম প্রকাশ হয়, পরে অনেকে খালাস হয়ে যায়। নিচের আদালতে দণ্ডিত হয়েও অনেকে উচ্চ আদালতে খালাস পেয়ে যান। তাতে যদি তারা সমাজে হেয়প্রতিপন্ন না হয়ে থাকেন, তাহলে এ ক্ষেত্রেও নাম প্রকাশ করলেই যে সমাজে তারা হেয় হবে, সেটা জোরালো যুক্তি বলে মনে হয় না। প্রতিবেদনে যাদের নাম এসেছে, তাদের দোষী সাব্যস্ত করতে হলে তো অধিকতর তদন্ত করতে হবে।
প্রথম আলো  তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বুক বিল্ডিং পদ্ধতি, ডাইরেক্ট লিস্টিং, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট ইত্যাদি ব্যবস্থায় কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। তা সেকেন্ডারি মার্কেটকে উত্তপ্ত করেছে এবং পরে ধস নামিয়েছে। এতে শেয়ারবাজার বিপর্যয়ের কারণ কতটা যথাযথভাবে উঠে এসেছে?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  সেকেন্ডারি মার্কেটে আমরা খুব বড় রকমের উত্থান ঘটতে দেখেছি। দুই বছরে প্রায় তিন গুণ হয়েছে। প্রাইমারি মার্কেটে যা হয়েছে, তার সবই প্রত্যক্ষভাবে সেকেন্ডারি মার্কেটকে প্রভাবিত করার কথা নয়। অবশ্য পরোক্ষভাবে করতে পারে। প্রাইভেট প্লেসমেন্টের কথাই ধরা যাক। এ ক্ষেত্রে কারসাজি হয়ে থাকলে প্রশ্ন আসবে, কোন দামে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট দেওয়া হয়েছে। প্রাইভেট প্লেসমেন্টে যে দাম যাচ্ছে, তা প্রত্যক্ষভাবে সেকেন্ডারি মার্কেটকে প্রভাবান্বিত করার কথা নয়। কেননা, প্রাইভেট প্লেসমেন্টে যেটা যাচ্ছে, সেটা তো এক বছরের মধ্যে বিক্রি করা যাচ্ছে না। সেকেন্ডারি মার্কেটকে প্রভাবিত করেছে কি না, তা বিচার করার জন্য দেখতে হবে আসলেই কৃত্রিমভাবে উচ্চমূল্যে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট দেওয়া হয়েছে কি না।
প্রথম আলো  ডাইরেক্ট লিস্টিংয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  ডাইরেক্ট লিস্টিংয়ের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা সরাসরি দাম নির্ধারণ করছেন। কাজেই এ ক্ষেত্রে কারসাজির প্রশ্ন তেমনভাবে আসে না। তবে আগে থেকে কারসাজির মাধ্যমে যদি কিছু ক্রেতা ঠিক করে রাখা হয়, যাঁরা বেশি দামে অফার দিচ্ছেন, তাহলে ভিন্ন কথা। তবু প্রশ্ন থেকে যাবে, কিছু লোক বেশি দামে অফার দিলে সব বিনিয়োগকারী সেদিকে ঝুঁকবেন কেন? বিনিয়োগকারীর তো বাছবিচার করে কেনার কথা।
প্রথম আলো  তদন্ত প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এসইসির ব্যর্থতা। এসইসির ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, বাইরের লোকদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া নিয়ে নানা কথা আলোচনায় এসেছে। এই বিপর্যয়ে এসইসির ভূমিকাকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  প্রথম কথা হলো, এসইসি অন্য কোনো মার্কেট প্লেয়ারের সঙ্গে যোগসাজশ করেছে কি না, সেটা অনুসন্ধানসাপেক্ষ। দ্বিতীয় কথা হলো, বাজার তদারকির ক্ষেত্রে এসইসি কী ভূমিকা পালন করেছে। একটা মার্চেন্ট ব্যাংক আমাকে বলেছে, এক বছরে ৮৯টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসইসি যে ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বাইরের কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে কি না, সেটাও অনুসন্ধানের ব্যাপার। দেখতে হবে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে কি না কিংবা কোন সিদ্ধান্তটি যথাযথ ছিল না। তবে কারও দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তা অবশ্যই অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রথম আলো  তদন্ত প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে প্রাইমারি মার্কেটে কারসাজির ইঙ্গিত আছে...
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  প্রতিবেদনে প্রাইমারি মার্কেটের কারসাজির প্রসঙ্গ এসেছে। সেখান থেকে তো আরেকটি পদক্ষেপ আসতে হবে। প্রাইমারি মার্কেটের কারসাজি সেকেন্ডারি মার্কেটকে প্রভাবিত করেছে কি না, করলে কীভাবে করেছে, সেটা দেখতে হবে।
প্রথম আলো  সেকেন্ডারি মার্কেটে আর কী কারণে শেয়ার অতিমূল্যায়ন ঘটেছে?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  উত্থানের পেছনের কারণগুলো খুব ভালোভাবে আসেনি প্রতিবেদনে। কয়েকটি ঘটনার সংযোগে উত্থান ঘটেছে। প্রথমত, সার্বিকভাবে সরকার সঞ্চয়পত্রের ওপর যে করারোপ করেছে তাতে, সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কিছুটা সংকুচিত হয়েছে এবং এর একাংশ পুঁজিবাজারে এসে থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকগুলোর ওপর লেন্ডিং রেট কমানোর চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে তারা একপর্যায়ে ডিপোজিট রেটও কমিয়েছে। এখন অবশ্য চিত্রটা বদলে গেছে। তবে যে সময় উত্থানটা ঘটেছিল, তার আগ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের ওপর এ ধরনের চাপ ছিল। এ কারণেও হয়তো লোকজন আমানত বা সঞ্চয় করার চেয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হয়েছে। তৃতীয়ত, ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা। এর তিনটি মাত্রা। প্রথমত, তারা আমানতের ১০ শতাংশের বেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ করেছে। দ্বিতীয়ত, তাদের সাবসিডিয়ারি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ভূমিকা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের দায়িত্ব আছে। তৃতীয়ত, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো হয়তো শেয়ারের বিপরীতে এবং শেয়ারে আরও বিনিয়োগের জন্য সরাসরি কাস্টমারদের ধার দিয়েছে কিংবা লোকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বা টার্ম লোন ইত্যাদি উদ্দেশ্য দেখিয়ে টাকা ধার নিয়েছে অথচ আসলে তা পুঁজিবাজারে নিয়ে গেছে।
তা ছাড়া বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য ব্রোকারেজ হাউসগুলো বিভিন্ন জেলায় ৫৯০টির ওপর শাখা খুলেছে। একদিকে চাহিদার ওপর চাপ তৈরি করা হয়েছে অর্থাৎ লোকজনকে লাভজনক ক্ষেত্র হিসেবে দেখিয়ে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তোলা হয়েছে, অন্যদিকে জোগান নেই। সরকারি শেয়ার আসেনি। বেসরকারি শেয়ারের কিছু কিছুতে সমস্যা, কিছু ভালো শেয়ারও আছে। ফলে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। এই ভারসাম্যহীনতার ফলে ঊর্ধ্বগতি চরম পর্যায়ে গেছে। কিন্তু সেই পর্যায়ে এসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্যান্য মার্কেট অ্যাক্টর বাজারের চাহিদার দিকটিকে কনটেইন করার চেষ্টা করেনি।
প্রথম আলো  বেশ কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক আইন ভেঙে আমানতের ১০ শতাংশের বেশি অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলেও এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়নি। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে তড়িঘড়ি বিনিয়োগ প্রত্যাহারের মাধ্যমে এরা নেতিবাচক সংকেত দেয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম শেয়ারবাজারের সূচকের বড় রকমের উত্থান ও পরে পতনের সঙ্গে বাজারের তারল্যের সম্পর্ক আছে। সেই তারল্য সরবরাহ বা সংকোচন তদারকির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা ছিল। বাজার ওঠার সময় বাংলাদেশ ব্যাংক খতিয়ে দেখেনি বা এসইসিও হয়তো তাদের নজরে আনেনি, এর পেছনে তারল্য প্রবাহের কী ঘটছে।
যে উত্থানটা হচ্ছিল তার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চয় আরেকটি সূচক লক্ষ করেছে—দেখা যাচ্ছিল বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ অত্যন্ত উঁচু। যেখানে গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি সংকটের কারণে বিনিয়োগ বেশি হচ্ছে না, সেখানে এই সূচকের উচ্চাবস্থা—তাহলে অর্থ কোথায় যাচ্ছে? এটা খতিয়ে দেখা দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের। এসইসির যেমন বড় দায়িত্ব পুরো বাজার তদারকির, তেমনি ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের যে তদারকি দরকার ছিল, সেখানে ঘাটতি লক্ষ করা গেছে।
প্রথম আলো  বলা হচ্ছে, প্রাইমারি মার্কেটের কারসাজির ক্ষেত্রে নিয়মের বিশেষ ব্যত্যয় ঘটেনি। এটা সত্যি হয়ে থাকলে পদ্ধতিগত পরিবর্তন অথবা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং আইন প্রণয়ন অথবা সংশোধনের প্রয়োজন আছে কি?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  আমি মনে করি, এসইসির যথেষ্ট স্বায়ত্তশাসন আছে। এসইসির আইন অনুসারে, বিধি ও নীতি প্রণয়নের ক্ষমতা তাদের। শুধু আইন পরিবর্তন করতে গেলে সরকারের অনুমোদন দরকার। অন্য ক্ষেত্রে অনুমোদন দরকার নেই। তবে আইনে একটা অমনিবাস বা ব্লাংকেট বিধি আছে যে সরকার এসইসিকে কোন ব্যাপারে নির্দেশনা দিতে পারবে। সে ক্ষেত্রেও আগে এসইসির কাছ থেকে মতামত নিতে হবে। এটা খুব কম ব্যবহার করা হয়। সার্বিকভাবে আমি মনে করি, এটা বিকেন্দ্রীকরণের প্রশ্ন নয়। যাঁরা এসইসিতে কর্মরত আছেন, আইনগতভাবে তাঁদের যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষমতা তাঁরা স্বাধীনভাবে ব্যবহার করবেন কি না, সেই মানসিকতাটা হচ্ছে বড় ব্যাপার।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো আইন সংস্কারের দরকার হতে পারে। যেমন—বুক বিল্ডিং। সেটা এসইসি নিজেই করতে পারে। প্রাইভেট প্লেসমেন্ট বিষয়ে বিধি প্রণয়নের প্রয়োজন আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজন আছে। আইনের কোনো ফাঁক থাকলে তা বন্ধ করতে হবে। অনৈতিক কাজের দায়ে তো কাউকে শাস্তি দেওয়া যাবে না।
প্রথম আলো  ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য কোন কোন বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  কিছু লোকের কারসাজি বন্ধ করার জন্য আমরা যদি এমন কোনো ব্যবস্থা নিই যে নতুন কোনো ইস্যুয়ার আর পুঁজিবাজারে আসবে না, তাহলে তো পুঁজিবাজারের আর প্রবৃদ্ধি হবে না, উন্নতি হবে না। বুক বিল্ডিংয়ের কথাই ধরা যাক। এটা সব দেশে প্রচলিত প্রথা। এখন এটা স্থগিত। বুক বিল্ডিং বাতিল করলে বেসরকারি খাতের পুঁজিবাজারে আসার আগ্রহ আরও কমবে। কারসাজির সুযোগ থাকলে সেগুলো বন্ধ করতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদে ডিমিউচুয়ালাইজেশন জরুরি। দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এটা করা যেতে পারে। তবে ডিমিউচুয়ালাইজেশন হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে—সার্বিক পরিপ্রেক্ষিতে এটা বাস্তবভিত্তিক আশা হবে না। তবু ডিমিউচুয়ালাইজেশন একটা যৌক্তিক পদক্ষেপ—এদিকে অগ্রসর হওয়া উচিত। আইনি সংস্কার বা ফাঁক দূর করার পদক্ষেপ নেওয়ার সময় বিদেশিদের অনুশীলনের ওপর দৃষ্টি রাখতে হবে। বাজার মূলত নির্ভর করবে ফেয়ার প্লে, নিয়মিত তদারকি ও নজরদারি এবং নজরদারির ওপর ভিত্তি করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর। এ তিনটি উপাদানের ওপর বাজারের গতি নির্ভর করবে।
প্রথম আলো  তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের আশু কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  প্রথমেই সরকারের পক্ষ থেকে একটা স্পষ্ট বার্তা দেওয়া দরকার—এই তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনমতো আরও অনুসন্ধান করে যদি কোনো ব্যক্তিকে দোষী পাওয়া যায়, ওই ব্যক্তি যিনিই হোন না কেন, যে দলের হোন না কেন, তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ-সংক্রান্ত মামলাগুলো যাতে ত্বরিত সুরাহা হয়, সে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। দ্বিতীয়ত, এসইসি পুনর্গঠনের সুপারিশ গুরুত্ব দিয়ে চিন্তাভাবনা করে সরকার খুব শিগগির একটা সময়সীমা বেঁধে দিতে পারে। এসইসির পক্ষ থেকে যেসব অনিয়মের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর অনুসন্ধান করা উচিত। এসইসির সঙ্গে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সমন্বয় জোরদার করা উচিত।
প্রথম আলো  আপনাকে ধন্যবাদ।
এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.