অটোরিকশার আয়ু-কথা ও কাজে মিল থাকুক
রাজধানী ঢাকায় সিএনজি গ্যাসচালিত অটোরিকশা চালুর সময় প্রধান যুক্তি ছিল_ পরিবেশ দূষণ রোধ। প্রথম দফায় যে ১৬ হাজার অটোরিকশা রাস্তায় নেমেছিল, সেগুলোর রঙ ছিল সবুজ। পরে আরও কয়েক হাজার সবুজ যান পথে নামে। এর ফলে রাজপথে কখনও কখনও দেখা যেত সবুজের সমারোহ।
বিষয়টি যেন প্রতীকী হয়ে ওঠে_ দূষণ কমাতে এগিয়ে এসেছে সবুজ। এ যানের আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছিল মিটারে চলার ব্যবস্থা। চালকরা মিটারে কাছে বা দূরের যে কোনো দূরত্বে যেতে বাধ্য_ এটাই ছিল আইন। প্রথমদিকে সেটা মানাও হচ্ছিল। কিন্তু ভালো কিছু যেন বেশিদিন আমাদের সহ্য হয় না। মিটারে ট্যাক্সি বা অটোরিকশা পাওয়া এখন অকল্পনীয়। আইন আছে, প্রয়োগ নেই_ এটাই বাস্তবতা। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান বলেছেন, প্রথম দফায় যে ১৬ হাজার অটোরিকশা ঢাকায় চলার অনুমতি দেওয়া হয়, সেগুলোর ইকোনমিক লাইফ বেঁধে দেওয়া ছিল ৯ বছর। অর্থাৎ আগামী ২০১৩ সালে এগুলো আর সড়কে নামতে পারবে না। বাস্তবে কি সরকার এ আইন বলবত করতে পারবে? নাকি চালকরা হাজারে হাজারে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়ে বলবে যে, তাদের পেটে লাথি মারার আইন তুলে দিতে হবে? তারা আরও বলতে পারে, বিএনপি আমলে এ আইন করা হয়েছিল এবং তার লক্ষ্য ছিল গরিবের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাও দাঁড়াতে পারেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক ও চালকদের পক্ষে। দেখা যাক, কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। তবে একটি বিষয় ইতিমধ্যে সহজেই নজরে আসার কথা। সিএনজিচালিত গাড়িগুলো কিন্তু এখন আর সবুজ নেই। চালকরা যাত্রীবান্ধবও নয়। তারা সহজে সিএনজি গ্যাসও পায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সময় অপচয় হয় এবং সেটা পুষিয়ে নিতে বোঝা চাপায় যাত্রীদের ওপর। তাদের আরও অভিযোগ, গাড়ির মালিক বেশি অর্থ আদায় করে। কিন্তু সরকার নির্বিকার। অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। সরকার যাত্রীদের জন্যও কিছু করে বলে মনে হয় না; চালকদের জন্যও না। তারা জীর্ণ হয়ে পড়ার অভিযোগে আগামী বছর ১৬ হাজার যান রাজপথ থেকে তুলে দিতে পারে কিনা_ সেটাই দেখার বিষয়।
No comments