ব্র্যাকের ঋণ নিয়ে দুই শিশুসহ মা কারাগারে by সোহেল হাফিজ,
প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেই বেঁচে আছেন উপকূলীয় জেলা বরগুনার হতদরিদ্র দম্পতি শুক্কুর আলী ও দুলু বেগম। শত অভাব-অনটন সত্ত্বেও গভীর মমতায় আগলে রেখেছেন চার সন্তানকে। প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরও তাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। কিন্তু সেই সংগ্রামী পরিবারকে গতকাল শুক্রবার বিচ্ছিন্ন করেছে বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) ঋণ। দুই শিশুসন্তান নিয়ে মা দুলু বেগম এখন কারাগারের চার দেয়ালে বন্দি।
আর বাইরে অন্য দুই সন্তান নিয়ে বাবা শুক্কুর আলী।শুক্কুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি। দুলু বেগম গৃহিণী। বরগুনার গ্রিন রোড এলাকায় তাঁদের বাড়ি। তাঁদের চার সন্তান মীম, তানভীর, রাব্বী ও মারিয়া গতকাল সকালে একত্রে খেলাধুলা করেছে। কিন্তু দুপুরে হঠাৎ করেই দুলু বেগমসহ চার সন্তানকে থানায় ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। সঙ্গে আসেন শুক্কুর আলীও। চার ভাইবোনের মধ্যে ছোট দুজন মারিয়া ও রাব্বীকে নিয়ে মা দুলু বেগম যান কারাগারে। অন্য দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন শুক্কুর আলী।
কারাগারে গেলে কী হয়? কেনই বা সেখানে যেতে হয়? সেখানে গেলে আর কখনো ফিরে আসা যায় কি না?_এসব কিছুই জানে না অবুঝ চার শিশু। ছোট দুই ভাইবোনসহ মাকে কারাগারে রেখে বাড়ি ফেরার সময় বরগুনা জেলা কারাগারের সামনে ছয় বছরের ছোট ভাই তানভীরকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে আট বছরের মীম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনজিও ব্র্যাকের কাছ থেকে সিডরের আগে নেওয়া ঋণ শোধ করতে না পাড়ায় অবুঝ দুই শিশুসন্তান নিয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে দুলু বেগমকে। তাঁর নামেই ওই ঋণ নেওয়া হয়েছিল।
দুলুর স্বামী শুক্কুর আলী কালের কণ্ঠকে জানান, ২০০৭ সালে আঘাত হানা সিডরের চার মাস আগে তাঁরা ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ব্র্যাকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন। দ্রুত ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আগেই ৫০০ টাকা নেন সংশ্লিষ্ট মাঠকর্মী। ঋণ পাওয়ার পর সঞ্চয় হিসাবে ৫০০ টাকা রেখে দেন শাখা ব্যবস্থাপক। সে হিসাবে ৯ হাজার টাকা হাতে পান। সিডরের আগ পর্যন্ত তাঁরা প্রতি সপ্তাহে আড়াই শ টাকা করে সাপ্তাহিক কিস্তি জমা দিতে থাকেন। এতে আনুমানিক চার হাজার টাকা তাঁদের পরিশোধ হয়েছে। এর মধ্যে সিডরের সময় ঘরবাড়িসহ তাঁদের সবকিছু বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এরপর ব্র্যাক থেকে কেউই তাঁদের কাছে ঋণের টাকা আনতে যাননি। তাঁরা শুনেছিলেন সিডরের কারণে সব টাকা মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ব্র্যাকের শাখা ব্যবস্থাপক হঠাৎ করে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে বলেন, সব টাকা এককালীন শোধ করতে হবে। নইলে তাঁরা আইনের আশ্রয় নেবেন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল দুপুরে পুলিশ সব ছেলেমেয়েসহ শুক্কুরের স্ত্রী দুলু বেগমকে ধরে নিয়ে যায়।
তবে ব্র্যাকের বরগুনা সদর শাখার ব্যবস্থাপক নিরাপদ দে বলেন, সিডরের আগে ২০০৭ সালের ৯ অক্টোবর দুলু ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। সার্ভিস চার্জসহ তাঁর সাড়ে ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা। সঞ্চয় হিসেবে রাখা ৫০০ টাকাসহ তাঁর ঋণ পরিশোধ হয়েছে আড়াই হাজার টাকার মতো। সিডরের পর বিভিন্ন সময়ে বাকি টাকা পরিশোধের কথা বলা হলেও সে তা শোধ করেনি। ঋণ দিতে ঘুষ আদায়ের বিষয়টি শাখা ব্যবস্থাপক অস্বীকার করেন। আর ঋণ মওকুফের ব্যাপারে তিনি বলেন, সিডরের পর সাময়িক ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ ছিল। ঋণ মওকুফ করা হয়নি।
নিরাপদ দে জানান, ঋণ পরিশোধ না করায় তিনি বাদী হয়ে চলতি বছরের ৮ জুন বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুলুর নামে একটি মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।
বরগুনা সদর থানার ওসি জাকির হোসেন ফকির বলেন, দুলুর বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কারাগারে গেলে কী হয়? কেনই বা সেখানে যেতে হয়? সেখানে গেলে আর কখনো ফিরে আসা যায় কি না?_এসব কিছুই জানে না অবুঝ চার শিশু। ছোট দুই ভাইবোনসহ মাকে কারাগারে রেখে বাড়ি ফেরার সময় বরগুনা জেলা কারাগারের সামনে ছয় বছরের ছোট ভাই তানভীরকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে আট বছরের মীম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনজিও ব্র্যাকের কাছ থেকে সিডরের আগে নেওয়া ঋণ শোধ করতে না পাড়ায় অবুঝ দুই শিশুসন্তান নিয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে দুলু বেগমকে। তাঁর নামেই ওই ঋণ নেওয়া হয়েছিল।
দুলুর স্বামী শুক্কুর আলী কালের কণ্ঠকে জানান, ২০০৭ সালে আঘাত হানা সিডরের চার মাস আগে তাঁরা ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ব্র্যাকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন। দ্রুত ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আগেই ৫০০ টাকা নেন সংশ্লিষ্ট মাঠকর্মী। ঋণ পাওয়ার পর সঞ্চয় হিসাবে ৫০০ টাকা রেখে দেন শাখা ব্যবস্থাপক। সে হিসাবে ৯ হাজার টাকা হাতে পান। সিডরের আগ পর্যন্ত তাঁরা প্রতি সপ্তাহে আড়াই শ টাকা করে সাপ্তাহিক কিস্তি জমা দিতে থাকেন। এতে আনুমানিক চার হাজার টাকা তাঁদের পরিশোধ হয়েছে। এর মধ্যে সিডরের সময় ঘরবাড়িসহ তাঁদের সবকিছু বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এরপর ব্র্যাক থেকে কেউই তাঁদের কাছে ঋণের টাকা আনতে যাননি। তাঁরা শুনেছিলেন সিডরের কারণে সব টাকা মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ব্র্যাকের শাখা ব্যবস্থাপক হঠাৎ করে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে বলেন, সব টাকা এককালীন শোধ করতে হবে। নইলে তাঁরা আইনের আশ্রয় নেবেন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল দুপুরে পুলিশ সব ছেলেমেয়েসহ শুক্কুরের স্ত্রী দুলু বেগমকে ধরে নিয়ে যায়।
তবে ব্র্যাকের বরগুনা সদর শাখার ব্যবস্থাপক নিরাপদ দে বলেন, সিডরের আগে ২০০৭ সালের ৯ অক্টোবর দুলু ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। সার্ভিস চার্জসহ তাঁর সাড়ে ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা। সঞ্চয় হিসেবে রাখা ৫০০ টাকাসহ তাঁর ঋণ পরিশোধ হয়েছে আড়াই হাজার টাকার মতো। সিডরের পর বিভিন্ন সময়ে বাকি টাকা পরিশোধের কথা বলা হলেও সে তা শোধ করেনি। ঋণ দিতে ঘুষ আদায়ের বিষয়টি শাখা ব্যবস্থাপক অস্বীকার করেন। আর ঋণ মওকুফের ব্যাপারে তিনি বলেন, সিডরের পর সাময়িক ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ ছিল। ঋণ মওকুফ করা হয়নি।
নিরাপদ দে জানান, ঋণ পরিশোধ না করায় তিনি বাদী হয়ে চলতি বছরের ৮ জুন বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুলুর নামে একটি মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।
বরগুনা সদর থানার ওসি জাকির হোসেন ফকির বলেন, দুলুর বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
No comments