অবৈধ বালু উত্তোলন-প্রতিরোধের দায়িত্ব কার?

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীর সোনাকান্দা ও সৈয়দপুর এলাকায় বালু দস্যুদের প্রতিরোধ করার জন্য শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীকে একাট্টা হয়ে এগিয়ে আসতে হয়েছে। জীবিকা ও বসতি রক্ষার তাগিদ গ্রামবাসীকে সাহস জুগিয়েছে। সোমবার সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বালু উত্তোলনের ফলে বসতি, হাটবাজার, শিল্প-কারখানা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তাই ধলেশ্বরী থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে


আসছে এলাকার মানুষ। কিন্তু এতে কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। সাধারণ মানুষ তাই ধরেই নিয়েছে, নিজেদের জীবিকা, বসতি, জমিজিরাত ও সম্পদ রক্ষার জন্য তাদের নিজেদেরই সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। গত রোববার কেরানীগঞ্জের সোনাকান্দা ও সৈয়দপুর এলাকায় বালুদস্যুদের সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের সংঘর্ষের ঘটনাটি এরই পরিণতি। জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া নদী থেকে বালু উত্তোলন অবৈধ। অথচ বালুদস্যুরা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজনও অনুভব করেনি। নিশ্চয়ই এসব বালুদস্যুর খুঁটির জোর অনেক শক্তিশালী। তা না হলে স্থানীয় জনগণ তাদের প্রতিরোধ করতে পারে, এমন সম্ভাবনা সত্ত্বেও এরা বালু উত্তোলন করতে যাওয়ার সাহস পেল কী করে?
জেলা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন এ দেশে নতুন নয়। এর বিরুদ্ধে পরিবেশবাদীরা দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে। এ কারণে জনসচেতনতা সৃষ্টি হওয়ায় এর বিরুদ্ধে প্রশাসনের ওপর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের চাপও বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপরও সময়-সুযোগ বুঝে রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রশ্রয়ে ও প্রশাসনে একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির কারণে নদী থেকে বালু উত্তোলন, নদী দখল ইত্যাদি পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্টকারী কর্মকাণ্ড চলে। প্রশাসনের উচিত এসব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করা এবং এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তা না হলে গত রোববার কেরানীগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীতে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বালুদস্যুদের সঙ্গে এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মতো অনভিপ্রেত ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হবে।

No comments

Powered by Blogger.