নিষেধাজ্ঞার হুমকি রক্তপাত উস্কে দেবে :সিরিয়া

সিরিয়ায় দমনপীড়ন বন্ধ করা এবং পর্যবেক্ষক দল ঢুকতে দেওয়ার দাবিতে আরব লীগের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। আরব লীগের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সিরিয়া পর্যবেক্ষক ঢুকতে না দেওয়ায় দেশটিতে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের বিষয়ে আজ বৈঠকে বসছে আরব লীগ। এ বৈঠকে আরব লীগের বিভিন্ন দেশে সিরিয়ার সম্পদ জব্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিমান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরও করা হতে পারে।


খবর এএফপি, আলজাজিরা, বিবিসি।অন্যদিকে আরব লীগের অবরোধ আরোপের হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সিরিয়া। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সিরিয়ায় রক্তপাত উস্কে দিতেই এ ধরনের হুমকি দিচ্ছে আরব লীগ। দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সানা এ নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়ে বলেছে সিরিয়ার বিদেশি আগ্রাসন ত্বরান্বিত করতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে সিরিয়া। আরব লীগ বিদেশি হস্তক্ষেপের হাতিয়াররূপে কাজ করছে বলে এতে অভিযোগ করা হয়। আরব লীগের একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকেলে আরব লীগের আলটিমেটাম শেষ হয়ে গেলেও সংস্থাটির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো মন্তব্য করেনি সিরিয়ার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকার। এর আগে শুক্রবার সকালে আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন সিরিয়ায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরব লীগের পর্যবেক্ষকদের ঢুকতে না দিলে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে আসাদ সরকারকে। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ দাভুতগলু বলেন, সিরিয়ার শাসকের জন্য এটাই শেষ সুযোগ। আমরা আশা করছি সিরিয়া আমাদের শর্ত মেনে নেবে। তবে শেষ পর্যন্ত এ শর্ত না মানায় আগামীকাল নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে। আরব দেশগুলোর সংগঠন আরব লীগ সদস্য দেশ সিরিয়ায় চলমান বিক্ষোভ এবং সহিংসতার তদন্ত করার জন্য কমপক্ষে ৫০০ পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। আরব লীগের ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র ৪০ পর্যবেক্ষককে প্রবেশের অনুমতি দিতে রাজি হয় আসাদ সরকার, যা প্রত্যাখ্যান করে আরব লীগ। এর আগে ২ নভেম্বরে আরব লীগের প্রস্তাব মেনে সিরিয়া বিভিন্ন শহর থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া, রাজবন্দিদের মুক্তি দেওয়া, বিরোধীদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করা এমনকি পর্যবেক্ষকদের প্রবেশ করতে দেওয়াসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকেও কাজ করতে দিতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু পরে সে অবস্থান থেকে ফিরে আসে আসাদ সরকার। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী গত মার্চ থেকে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। গত এক সপ্তাহের সহিংসতায় সিরিয়ায় প্রায় ৪১ জনের বেশি নিহত হয় বলে দাবি বিক্ষোভকারী ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ চলমান সহিংসতার জন্য সশস্ত্র বিক্ষোভকারীদের দায়ী করে আসছেন।

No comments

Powered by Blogger.