এক স্বাপি্নক রাজনীতিক by অধ্যাপক আবদুল গফুর
ইউসুফ আলী চৌধুরী ওরফে মোহন মিয়া জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর। তার বাবা খানসাহেব ময়েজউদ্দিন চৌধুরী সাধারণ অবস্থা থেকে নিজ চেষ্টায় একজন জমিদারে উন্নীত হন। ফরিদপুর মুসলিমপ্রধান জেলা হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় সব ক্ষেত্রে মুসলমানদের পশ্চাৎপদ অবস্থা মোহন মিয়াকে ব্যথিত করত। তিনি উপলব্ধি করেন, উন্নতি সাধনে শিক্ষার বিকল্প নেই। জমিদারির দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম ও
প্রধান চিন্তা ছিল শিক্ষার আলো মুসলিম সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া। এ চিন্তার ফসলই ছিল ফরিদপুর শহরে ময়েজউদ্দিন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা। শুধু শহরেই নয়, গ্রামাঞ্চলেও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে তিনি বিলনালিয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন জুনিয়র মাদ্রাসা। মমিন খাঁর হাটে প্রতিষ্ঠা করেন হাইস্কুল। ১৯৩৮ সালে মুসলমান দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রদের বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার সুবিধাসহ মুসলিম স্টুডেন্ট হোম নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ১৯৩২ সালে ময়েজউদ্দিন হাই মাদ্রাসার অদূরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন জুনিয়র গার্লস মাদ্রাসা, যা এখনও হালিমা গার্লস হাইস্কুল নামে টিকে আছে।
তিনি ফরিদপুর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে শিক্ষা ও শিক্ষার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানকে জেলা বোর্ড তহবিল থেকে অর্থ সাহায্য করেছেন। তিনি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সমাজকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ফরিদপুর শহরের উপকণ্ঠে বায়তুল আমান নামে একটি কৃষি-শিল্প শিক্ষা প্রকল্প চালু করেন। এ প্রকল্পে যেসব কর্মসূচি ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার প্রস্তাব দেওয়া হয় তার মধ্যে ছিল_ ১. আবাসিক স্কুল ও মাদ্রাসা, ২. শিল্প (ইন্ডাস্ট্রিয়াল) বিদ্যালয়, ৩. কৃষি ও ডেইরি ফার্ম, ৪. মৎস্য চাষ, ৫. ছাপাখানা ও মুখপত্র, ৬. বায়তুল আমানের কর্মকর্তা-কর্মীদের আদর্শ বসতি, ৭. লাইব্রেরি, ৮. ব্যায়ামাগার, ৯. মেহমানখানা, ১০. পল্লী উন্নয়ন এবং ১১. চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য।
মোহন মিয়ার রাজনৈতিক জীবন শুরু শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টির মাধ্যমে। ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পর শেরেবাংলা মুসলিম লীগের সঙ্গে কোয়ালিশন করে প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং পরে সদলবলে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। মোহন মিয়া ফরিদপুর জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন নবরূপ লাভ করে। 'বাঁচো এবং বাঁচতে দাও'_ এই নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান দাবিতে অচিরেই উপমহাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ হয়। ফরিদপুর জেলার নেতা ছিলেন মোহন মিয়া। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে মুুসলিম লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং কৃষক শ্রমিক পার্টিতে যোগদান করেন। তিনি যুক্তফ্রন্টের মাধ্যমে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি কিছুদিনের জন্য ফজলুল হক কেবিনেটে স্থানলাভ করেন। ১৯৫৮ সালে মার্শাল ল' জারি হলে সেই ঘোর দুর্দিনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রমুখের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে যে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠিত হয় তার অন্যতম নেতা ছিলেন ইউসুফ আলী চৌধুরী। ১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর তিনি ইন্তেকাল করেন।
তিনি ফরিদপুর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে শিক্ষা ও শিক্ষার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানকে জেলা বোর্ড তহবিল থেকে অর্থ সাহায্য করেছেন। তিনি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সমাজকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ফরিদপুর শহরের উপকণ্ঠে বায়তুল আমান নামে একটি কৃষি-শিল্প শিক্ষা প্রকল্প চালু করেন। এ প্রকল্পে যেসব কর্মসূচি ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার প্রস্তাব দেওয়া হয় তার মধ্যে ছিল_ ১. আবাসিক স্কুল ও মাদ্রাসা, ২. শিল্প (ইন্ডাস্ট্রিয়াল) বিদ্যালয়, ৩. কৃষি ও ডেইরি ফার্ম, ৪. মৎস্য চাষ, ৫. ছাপাখানা ও মুখপত্র, ৬. বায়তুল আমানের কর্মকর্তা-কর্মীদের আদর্শ বসতি, ৭. লাইব্রেরি, ৮. ব্যায়ামাগার, ৯. মেহমানখানা, ১০. পল্লী উন্নয়ন এবং ১১. চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য।
মোহন মিয়ার রাজনৈতিক জীবন শুরু শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টির মাধ্যমে। ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পর শেরেবাংলা মুসলিম লীগের সঙ্গে কোয়ালিশন করে প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং পরে সদলবলে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। মোহন মিয়া ফরিদপুর জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন নবরূপ লাভ করে। 'বাঁচো এবং বাঁচতে দাও'_ এই নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান দাবিতে অচিরেই উপমহাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ হয়। ফরিদপুর জেলার নেতা ছিলেন মোহন মিয়া। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে মুুসলিম লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং কৃষক শ্রমিক পার্টিতে যোগদান করেন। তিনি যুক্তফ্রন্টের মাধ্যমে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি কিছুদিনের জন্য ফজলুল হক কেবিনেটে স্থানলাভ করেন। ১৯৫৮ সালে মার্শাল ল' জারি হলে সেই ঘোর দুর্দিনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রমুখের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে যে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠিত হয় তার অন্যতম নেতা ছিলেন ইউসুফ আলী চৌধুরী। ১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর তিনি ইন্তেকাল করেন।
No comments