পবিত্র কোরআনের আলো-ফেরাউন বনি ইসরাইলের ওপর আরো নির্যাতন চালানোর পরিকল্পনা করল
১২৬. ওয়া মা তানকি্বমু মিন্না ইল্লা আন্ আ-মান্না বিআ-ইয়া-তি রাবি্বনা লাম্মা জা-আতনা; রাব্বা-না আফ্রিগ্ আ'লাইনা সাব্রান ওয়া তাওয়াফ্ফানা মুছলিমীন। ১২৭. ওয়া ক্বা-লাল মালাউ মিন্ ক্বাওমি ফিরআ'ওনা আতাযারু মূছা ওয়া ক্বাওমাহূ লিইউফছিদূ ফিল আরদ্বি ওয়া ইয়াযারাকা ওয়া আ-লিহাতাক; ক্বা-লা ছানুক্বাত্তিলু আব্না-আহুম ওয়া নাছতাহ্য়ী নিছা-আহুম ওয়া ইন্না ফাওক্বাহুম ক্বা-হিরূন। ১২৮. ক্বা-লা মূছা লিক্বাওমিহিছ্ তাঈ'নূ বিল্লাহি ওয়াস্বিরূ;
ইন্নাল আরদ্বা লিল্লাহি ইঊরিছুহা- মান ইয়াশা-উ মিন ই'বা-দিহী; ওয়ালআ'-কি্ববাতু লিলমুত্তাক্বীন। [সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১২৫-১২৮]
অনুবাদ : ১২৬. (জাদুকররা বলল, হে মিসর সম্রাট) আপনি তো আমাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন কেবল আমাদের এ কাজটির জন্য যে যখন আমাদের কাছে আমাদের প্রতিপালকের নিদর্শনগুলো এসে গেছে তখন আমরা তাতে ইমান এনেছি। (তারা আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানাল) হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি আমাদের ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দাও এবং তোমার অনুগত বান্দা হিসেবে আমাদের মৃত্যু দিয়ো।
১২৭. ফেরাউনের কওমের নেতারা তাকে বলল, আপনি কি মুসা ও তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের মুক্ত করে দেবেন, যাতে তারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং আপনাকে ও আপনার উপাস্যকে বর্জন করবে? তখন ফেরাউন বলল, আমরা তাদের পুত্রদের হত্যা করব এবং তাদের কন্যাদের বাঁচিয়ে রাখব। আমরা তাদের দণ্ডমুণ্ডের মালিক।
১২৮. মুসা এবার তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও এবং ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চিত জেনে রেখো, এই পৃথিবী আল্লাহ তায়ালার। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে চান তাকেই এর ওপর ক্ষমতা দান করেন। চূড়ান্ত সাফল্য তাদের জন্যই, যারা দায়িত্বনিষ্ঠতা অবলম্বন করে।
ব্যাখ্যা : ১২৬ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, নবী মুসার কাছে জাদুর মোকাবিলায় পরাজিত হয়ে জাদুকররা যে দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে সত্যের পথে চলে এল এবং ইমানের বলে বলীয়ান হয়ে উঠল সে কথা। তারা কোনো অর্থবিত্তের লোভে নয় বরং চেতনার উৎকর্ষের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ বান্দায় পরিণত হয়েছিল।
১২৭ নম্বর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে নবী মুসার কাছে নৈতিক পরাজয়ের পর সম্রাট যখন অনেকটাই ভড়কে গেছে এবং বনি ইসরাইলদের ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে তখন তার পারিষদবর্গ তাকে আরো কঠোর হওয়ার যে পরামর্শ দিচ্ছিল সেসব কথা। যেসব জাদুকর ইমান এনেছিল ফেরাউন তাদের শাস্তির হুমকি দিলেও মুসা (আ.)-এর মুজিজা এবং জাদুকরদের ইমান আনা ও ইমানে অবিচলতা দেখে মানসিকভাবে দমে গিয়েছিল। ফেরাউনের সমাবেশ ভেঙে যাওয়ার পর মুসা (আ.) ও তাঁর অনুসারীরা বিজয়ের আমেজ নিয়েই নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে গেলেন। এ সময় ফেরাউনের অমাত্যবর্গ তার দরবারে বসে যেসব কথা আলোচনা করছিল, সেগুলোই এই আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। তাদের বক্তব্যের সারমর্ম ছিল এই, আপনি তাদের ছেড়ে দিলেন, এতে তারা পার পেয়ে গেল। এখন এরা স্বাধীনভাবে চলতে শুরু করবে এবং দিন দিন শক্তি সঞ্চয় করে আপনার রাজশক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার চেষ্টা করবে। ফেরাউন নিজ অপমান লুকানোর জন্য তাদের উত্তর দিল, আপাতত আমি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিলেও অবিলম্বে তাদের কঠোরভাবে শায়েস্তা করব। আমি বনি ইসরাইলদের ছেলেসন্তানগুলোকে জন্মানোর পরপরই এক এক করে হত্যা করব এবং মেয়েসন্তানগুলো বাঁচিয়ে রাখব আমাদের সেবাদাসী বানানোর জন্য। পারিষদবর্গ সম্রাটকে যেমনভাবে কঠোর হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল, তেমনি তিনিও তাঁর লোকদের আশ্বস্ত করলেন যে, তিনি এদের কঠোরহস্তে দমন করবেন। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং বনি ইসরাইলরা পুরোপুরি তার কর্তৃত্বের অধীনে রয়েছে। এভাবে ফেরাউন বনি ইসরাইলদের ওপর নির্মম নির্যাতন আরো বাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করল। ১২৮ নম্বর আয়াতে এ পরিস্থিতিতে মুসা (আ.) তাঁর সম্প্রদায়কে যেভাবে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তা বর্ণনা করা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১২৬. (জাদুকররা বলল, হে মিসর সম্রাট) আপনি তো আমাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন কেবল আমাদের এ কাজটির জন্য যে যখন আমাদের কাছে আমাদের প্রতিপালকের নিদর্শনগুলো এসে গেছে তখন আমরা তাতে ইমান এনেছি। (তারা আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানাল) হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি আমাদের ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দাও এবং তোমার অনুগত বান্দা হিসেবে আমাদের মৃত্যু দিয়ো।
১২৭. ফেরাউনের কওমের নেতারা তাকে বলল, আপনি কি মুসা ও তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের মুক্ত করে দেবেন, যাতে তারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং আপনাকে ও আপনার উপাস্যকে বর্জন করবে? তখন ফেরাউন বলল, আমরা তাদের পুত্রদের হত্যা করব এবং তাদের কন্যাদের বাঁচিয়ে রাখব। আমরা তাদের দণ্ডমুণ্ডের মালিক।
১২৮. মুসা এবার তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও এবং ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চিত জেনে রেখো, এই পৃথিবী আল্লাহ তায়ালার। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে চান তাকেই এর ওপর ক্ষমতা দান করেন। চূড়ান্ত সাফল্য তাদের জন্যই, যারা দায়িত্বনিষ্ঠতা অবলম্বন করে।
ব্যাখ্যা : ১২৬ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, নবী মুসার কাছে জাদুর মোকাবিলায় পরাজিত হয়ে জাদুকররা যে দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে সত্যের পথে চলে এল এবং ইমানের বলে বলীয়ান হয়ে উঠল সে কথা। তারা কোনো অর্থবিত্তের লোভে নয় বরং চেতনার উৎকর্ষের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ বান্দায় পরিণত হয়েছিল।
১২৭ নম্বর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে নবী মুসার কাছে নৈতিক পরাজয়ের পর সম্রাট যখন অনেকটাই ভড়কে গেছে এবং বনি ইসরাইলদের ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে তখন তার পারিষদবর্গ তাকে আরো কঠোর হওয়ার যে পরামর্শ দিচ্ছিল সেসব কথা। যেসব জাদুকর ইমান এনেছিল ফেরাউন তাদের শাস্তির হুমকি দিলেও মুসা (আ.)-এর মুজিজা এবং জাদুকরদের ইমান আনা ও ইমানে অবিচলতা দেখে মানসিকভাবে দমে গিয়েছিল। ফেরাউনের সমাবেশ ভেঙে যাওয়ার পর মুসা (আ.) ও তাঁর অনুসারীরা বিজয়ের আমেজ নিয়েই নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে গেলেন। এ সময় ফেরাউনের অমাত্যবর্গ তার দরবারে বসে যেসব কথা আলোচনা করছিল, সেগুলোই এই আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। তাদের বক্তব্যের সারমর্ম ছিল এই, আপনি তাদের ছেড়ে দিলেন, এতে তারা পার পেয়ে গেল। এখন এরা স্বাধীনভাবে চলতে শুরু করবে এবং দিন দিন শক্তি সঞ্চয় করে আপনার রাজশক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার চেষ্টা করবে। ফেরাউন নিজ অপমান লুকানোর জন্য তাদের উত্তর দিল, আপাতত আমি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিলেও অবিলম্বে তাদের কঠোরভাবে শায়েস্তা করব। আমি বনি ইসরাইলদের ছেলেসন্তানগুলোকে জন্মানোর পরপরই এক এক করে হত্যা করব এবং মেয়েসন্তানগুলো বাঁচিয়ে রাখব আমাদের সেবাদাসী বানানোর জন্য। পারিষদবর্গ সম্রাটকে যেমনভাবে কঠোর হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল, তেমনি তিনিও তাঁর লোকদের আশ্বস্ত করলেন যে, তিনি এদের কঠোরহস্তে দমন করবেন। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং বনি ইসরাইলরা পুরোপুরি তার কর্তৃত্বের অধীনে রয়েছে। এভাবে ফেরাউন বনি ইসরাইলদের ওপর নির্মম নির্যাতন আরো বাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করল। ১২৮ নম্বর আয়াতে এ পরিস্থিতিতে মুসা (আ.) তাঁর সম্প্রদায়কে যেভাবে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তা বর্ণনা করা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments