দলীয় সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে by নুরুল ইসলাম বিএসসি
নারায়ণগঞ্জের মেয়র নির্বাচন শেষ হয়েছে। জনতা যাকে পছন্দ করেছে, তাকেই নির্বাচিত করেছে। প্রার্থী নির্বাচন ও সমর্থনে ভুল হলে জনতা তা শুদ্ধ করে নিতে পারে_ এটা প্রমাণিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের প্রভাব খুব একটা কাজ করে না, এটা এখন পরিষ্কার। দলের মধ্যেও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদক সমর্থন করে বক্তৃতা-বিবৃতি দেওয়ার পরপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এই সমর্থন তাদের ব্যক্তিগত, দলের নয় বলে বিবৃতি দিয়ে
অবস্থাকে আরও খারাপের দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময় আবার একই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম ওসমানের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করাতে সন্দেহের দানা আরও বড় হয়। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, দলের মধ্যে শৃঙ্খলা আছে কি-না।
শামীম ওসমানের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না, কিন্তু কেন্দ্রের নেতারা যেভাবে সময় ও সুযোগকে হ্যান্ডেল করেছেন, এটাকে নির্ঘাত পাঁঠা বলি বললে ভুল হওয়ার নয়। কী প্রয়োজন ছিল বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার। ঘটনা যাই হোক, সরকারের নৈতিক জয় হয়েছে। সরকার যে তার নিজের প্রার্থীকে জেতানোর কোনো চেষ্টাই করেনি, এটাও পরিষ্কার। চট্টগ্রামেও সরকার নিজের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার কোনো কৌশল করেনি। এখান থেকেই প্রমাণিত হয়, শেখ হাসিনার সরকার সবসময় নির্বাচন নিয়ে নিরপেক্ষ থাকে। শেখ হাসিনার পক্ষেই আগামী যে কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে করা সম্ভব। এটির নামই দেশপ্রেম, এটির নামই জনগণের প্রতি ভালোবাসা। শেখ হাসিনার চাওয়া-পাওয়ার কিছুই নেই। তিনি সব হারিয়েছেন। জনতার ভালোবাসা, দেশপ্রেম তিনি হারাতে চান না। এটিই তার শেষ সম্বল।
এই অবস্থায় বিএনপি হলে কী করত? ফলাফল যাই হোক, নিজেদের প্রার্থীকেই বিজয়ী ঘোষণা দিয়ে জনতার রায়কে পানিতে নিক্ষেপ করত। তারা তো খামাখা মধ্যরাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে নিজেদের অবস্থান সাধারণ মানুষের কাছে আরও পরিষ্কার করে ফেলেছেন। নির্বাচনে জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই বুঝতে পেরেই মধ্যরাতের ঘোষণা কোনো কাজেই আসেনি। ভোট যা পাওয়ার তাই তারা পেয়েছে।
স্যামুয়েল পি হান্টিংটনের পর্যবেক্ষণের যথার্থতা এখান থেকে নির্ণয় করা সম্ভব। সনাতনী ও আধুনিক উভয় প্রকার সমাজেরই সুস্থিরতার প্রতি ঝোঁক থাকে। সমস্যা দেখা দেয় আধুনিকায়নের প্রাথমিক স্তরে। নতুন প্রজন্মের আধুনিকায়নের প্রতি বেশি আকৃষ্ট থাকে। ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে যারা নির্বাচন করেছেন, তাদের বেশিরভাগই তরুণ সমাজ। তারা সনাতনী পদ্ধতির একটা পরিবর্তন চায়। এটি তারই ইঙ্গিত। বঙ্গবন্ধুকন্যাও ডিজিটাল বাংলাদেশ চান। হয়তো কেউ তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ডা. সেলিনা হায়াৎকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যা সম্ভব হয়নি। সেলিনা হায়াৎ বলেছেন, তার ধমনিতে আওয়ামী লীগের রক্ত, ওখান থেকে বিচ্যুত হবেন না। আমরা এখন সনাতনী ও আধুনিক ব্যবস্থা উত্তরণের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছি। এখান থেকে পতন ঘটলে, মধ্যযুগে চলে যেতে হবে। মৌলবাদীরা দেশটাকে সনাতনী যুগে নিয়ে যেতে চায়। যুব সম্প্রদায় আধুনিকায়নে বিশ্বাসী। এখানে যুব সমাজের জয় হয়েছে। সনাতনী পদ্ধতি পরিহারে এরা রায় দিয়েছে। এই রায়ের প্রতি সম্মান শুধু এখন নয়, আগামীতে দেখানোর কোনো বিকল্প নেই। আর এই পদ্ধতিই শুধু পারে মৌলবাদদের দমন করতে। শামীম ওসমানের প্রতি আহ্বান, সাজানো নির্বাচন বলে, সরকারের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ না করাই মঙ্গল। নিজের সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নাটক সাজাতে যাবে কেন দল? আমরা একযুগ সন্ধিক্ষণে এক্ষুণি বসবাস করছি, সনাতনী ও আধুনিক। সবাই আধুনিক ব্যবস্থায় আসতে চায়। এই নির্বাচনের ফলাফল তারই ধারাবাহিকতা।
আরও একটি কথা এখানে পরিষ্কার করা প্রয়োজন যে, সামরিক বাহিনী ছাড়াও নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে করা যায়। যে নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে বিএনপি বারবার পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন প্রমাণ করেছে এরা সবসময় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বিগত সংসদ নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে_ এতে কোনো সন্দেহ নেই। এবার বিএনপি কোন অজুহাত খাড়া করবে তা দেখার বিষয়।
নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে দল অংশগ্রহণ করেছে, সরকার অংশগ্রহণ করেনি। এ জন্য নির্বাচনের আগে ওসি বদলি, শত শত র্যাব নিয়োগ, চোখে পড়ার মতো পুলিশের তৎপরতা প্রমাণ করে, সরকার কোনো হস্তক্ষেপ বা ইনফ্লুয়েন্স করেনি। এ জন্যই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে হয়।
শামীম ওসমানও রাজনৈতিক নেতার পরিচয় দিয়ে বলেছিলেন, ফলাফল যাই হোক তিনি মেনে নেবেন। ফল এখন ডা. সেলিনা হায়াতের পক্ষে। বিশ্বাস করতে হয়, শামীম ওসমান সর্বতোভাবে ডাক্তারকে সাহায্য করবেন। ইতিহাস অনেক ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি হয়। ডা. সেলিনা হায়াতের ক্ষেত্রেও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এখান থেকেই সবার শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ আছে।
জনতাকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের জন্য ডা. সেলিনা হায়াৎকে অভিনন্দন। আবারও অভিনন্দন জানাই, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ঘোষণা দেওয়ায়।
স নুরুল ইসলাম বিএসসি :সংসদ সদস্য
শামীম ওসমানের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না, কিন্তু কেন্দ্রের নেতারা যেভাবে সময় ও সুযোগকে হ্যান্ডেল করেছেন, এটাকে নির্ঘাত পাঁঠা বলি বললে ভুল হওয়ার নয়। কী প্রয়োজন ছিল বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার। ঘটনা যাই হোক, সরকারের নৈতিক জয় হয়েছে। সরকার যে তার নিজের প্রার্থীকে জেতানোর কোনো চেষ্টাই করেনি, এটাও পরিষ্কার। চট্টগ্রামেও সরকার নিজের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার কোনো কৌশল করেনি। এখান থেকেই প্রমাণিত হয়, শেখ হাসিনার সরকার সবসময় নির্বাচন নিয়ে নিরপেক্ষ থাকে। শেখ হাসিনার পক্ষেই আগামী যে কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে করা সম্ভব। এটির নামই দেশপ্রেম, এটির নামই জনগণের প্রতি ভালোবাসা। শেখ হাসিনার চাওয়া-পাওয়ার কিছুই নেই। তিনি সব হারিয়েছেন। জনতার ভালোবাসা, দেশপ্রেম তিনি হারাতে চান না। এটিই তার শেষ সম্বল।
এই অবস্থায় বিএনপি হলে কী করত? ফলাফল যাই হোক, নিজেদের প্রার্থীকেই বিজয়ী ঘোষণা দিয়ে জনতার রায়কে পানিতে নিক্ষেপ করত। তারা তো খামাখা মধ্যরাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে নিজেদের অবস্থান সাধারণ মানুষের কাছে আরও পরিষ্কার করে ফেলেছেন। নির্বাচনে জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই বুঝতে পেরেই মধ্যরাতের ঘোষণা কোনো কাজেই আসেনি। ভোট যা পাওয়ার তাই তারা পেয়েছে।
স্যামুয়েল পি হান্টিংটনের পর্যবেক্ষণের যথার্থতা এখান থেকে নির্ণয় করা সম্ভব। সনাতনী ও আধুনিক উভয় প্রকার সমাজেরই সুস্থিরতার প্রতি ঝোঁক থাকে। সমস্যা দেখা দেয় আধুনিকায়নের প্রাথমিক স্তরে। নতুন প্রজন্মের আধুনিকায়নের প্রতি বেশি আকৃষ্ট থাকে। ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে যারা নির্বাচন করেছেন, তাদের বেশিরভাগই তরুণ সমাজ। তারা সনাতনী পদ্ধতির একটা পরিবর্তন চায়। এটি তারই ইঙ্গিত। বঙ্গবন্ধুকন্যাও ডিজিটাল বাংলাদেশ চান। হয়তো কেউ তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ডা. সেলিনা হায়াৎকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যা সম্ভব হয়নি। সেলিনা হায়াৎ বলেছেন, তার ধমনিতে আওয়ামী লীগের রক্ত, ওখান থেকে বিচ্যুত হবেন না। আমরা এখন সনাতনী ও আধুনিক ব্যবস্থা উত্তরণের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছি। এখান থেকে পতন ঘটলে, মধ্যযুগে চলে যেতে হবে। মৌলবাদীরা দেশটাকে সনাতনী যুগে নিয়ে যেতে চায়। যুব সম্প্রদায় আধুনিকায়নে বিশ্বাসী। এখানে যুব সমাজের জয় হয়েছে। সনাতনী পদ্ধতি পরিহারে এরা রায় দিয়েছে। এই রায়ের প্রতি সম্মান শুধু এখন নয়, আগামীতে দেখানোর কোনো বিকল্প নেই। আর এই পদ্ধতিই শুধু পারে মৌলবাদদের দমন করতে। শামীম ওসমানের প্রতি আহ্বান, সাজানো নির্বাচন বলে, সরকারের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ না করাই মঙ্গল। নিজের সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নাটক সাজাতে যাবে কেন দল? আমরা একযুগ সন্ধিক্ষণে এক্ষুণি বসবাস করছি, সনাতনী ও আধুনিক। সবাই আধুনিক ব্যবস্থায় আসতে চায়। এই নির্বাচনের ফলাফল তারই ধারাবাহিকতা।
আরও একটি কথা এখানে পরিষ্কার করা প্রয়োজন যে, সামরিক বাহিনী ছাড়াও নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে করা যায়। যে নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে বিএনপি বারবার পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন প্রমাণ করেছে এরা সবসময় নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বিগত সংসদ নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে_ এতে কোনো সন্দেহ নেই। এবার বিএনপি কোন অজুহাত খাড়া করবে তা দেখার বিষয়।
নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে দল অংশগ্রহণ করেছে, সরকার অংশগ্রহণ করেনি। এ জন্য নির্বাচনের আগে ওসি বদলি, শত শত র্যাব নিয়োগ, চোখে পড়ার মতো পুলিশের তৎপরতা প্রমাণ করে, সরকার কোনো হস্তক্ষেপ বা ইনফ্লুয়েন্স করেনি। এ জন্যই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে হয়।
শামীম ওসমানও রাজনৈতিক নেতার পরিচয় দিয়ে বলেছিলেন, ফলাফল যাই হোক তিনি মেনে নেবেন। ফল এখন ডা. সেলিনা হায়াতের পক্ষে। বিশ্বাস করতে হয়, শামীম ওসমান সর্বতোভাবে ডাক্তারকে সাহায্য করবেন। ইতিহাস অনেক ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি হয়। ডা. সেলিনা হায়াতের ক্ষেত্রেও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এখান থেকেই সবার শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ আছে।
জনতাকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের জন্য ডা. সেলিনা হায়াৎকে অভিনন্দন। আবারও অভিনন্দন জানাই, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ঘোষণা দেওয়ায়।
স নুরুল ইসলাম বিএসসি :সংসদ সদস্য
No comments