উন্মুক্ত পদ্ধতিতে স্বর্ণ তোলার প্রতিবাদে পেরুতে বিক্ষোভ-৪৮০ কোটি ডলার ব্যয়ে এ প্রকল্প নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউমন্ট মাইনিং করপোরেশন।
উন্মুক্ত পদ্ধতিতে স্বর্ণ উত্তোলনের পরিকল্পনার প্রতিবাদে পেরুর কাহামারকা অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। গত বৃহস্পতিবার এ বিক্ষোভ হয়। এতে যোগ দেওয়া প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী ও কৃষক। তাদের অভিযোগ, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে স্বর্ণ উত্তোলন করা হলে তা পরিবেশদূষণ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
৪৮০ কোটি ডলার ব্যয়ে কাহামারকা অঞ্চলের কঙ্গা খনি খননের প্রকল্প হাতে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউমন্ট মাইনিং করপোরেশন। তাদের সঙ্গে পেরুর একটি কম্পানি যৌথভাবে কাজ করবে। পেরুর ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে ব্যয়বহুল খনি প্রকল্প।
স্থানীয়রা জানায়, স্বর্ণখনির কাজ শুরু হলে কাহামারকা এলাকার চারটি হ্রদের পানিপ্রবাহের পথ পাল্টে যাবে। এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে কৃষিকাজ ও পশুপালনের ওপর। তবে নিউমন্ট কম্পানি বলছে, হুমকির মুখে পড়া হ্রদগুলোর জায়গায় তারা আধুনিক জলাধার নির্মাণ করে দেবে।
লোকজন বৃহস্পতিবার ঐতিহ্যবাহী দেশীয় পোশাক পরে ঘোড়ায় চড়ে পাহাড়ের ওপর ওই চার হ্রদের কাছে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। অনেকে পায়ে হেঁটেই যোগ দেয়। কাহামারকা অঞ্চলের রাজধানী কাহামারকায়ও বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ পালিত হয়। 'কাহামারকা পরিবেশরক্ষা ফ্রন্ট' নামের বিক্ষোভকারীদের জোট এ কর্মসূচির আয়োজন করে। বিক্ষোভ উপলক্ষে সেখানকার স্কুল, কলেজ ও সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।
জোটের প্রধান উইলফেদ্রো সাভেদ্রা বলেন, 'এটা ছিল পরিপূর্ণ ধর্মঘট।' এক বিক্ষোভকারীর হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল 'স্বর্ণ ছাড়া বাঁচতে পারেব, পানি ছাড়া বাঁচা যাবে না' এবং 'এখানকার পানি মানুষের, কম্পানির নয়'।
পেরুর অর্থনীতিতে খনি শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে চলমান বিক্ষোভ দেশটির প্রেসিডেন্ট ওয়ান্তা উমালার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। কারণ ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের স্বার্থ রক্ষা করেই খনি শিল্পের উন্নয়নের অঙ্গীকার করে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।
No comments