হাতে লেখা পাসপোর্টে কর্মীরা বিদেশে যেতে পারবেন না
বিদেশে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশি কর্মীদের এখন থেকে শুধু যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) ব্যবহার করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হাতে লেখা পাসপোর্টে ভিসা না দেওয়ায় সরকার প্রবাসী শ্রমিকদের এমআরপি পাসপোর্ট নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। গত রোববার থেকে ঢাকার সৌদি দূতাবাস বাংলাদেশিদের হাতে লেখা পাসপোর্ট জমা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। হঠাৎ এ সিদ্ধান্তে দুর্ভোগে পড়েছেন অনেকে।
এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতও হাতে লেখা পাসপোর্ট নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এ পাসপোর্ট নিয়ে বিমানবন্দরেও নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক খোরশেদ আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ এমআরপি ছাড়া বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা ইস্যু করছে না। এর অর্থ এমআরপি পাসপোর্ট ছাড়া এখন থেকে বিদেশে কাজের কোনো সুযোগ নেই। তাই বাংলাদেশি সব কর্মীকে নতুন এমআরপি পাসপোর্ট নেওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে যাঁরা হাতে লেখা পাসপোর্ট নিয়ে ফেলেছেন, তাঁদেরও এমআরপি পাসপোর্ট নিতে হবে। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করতে বিএমইটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে।’
তবে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের মতে, এমআরপি ছাড়া যেহেতু এখন ভিসা দেওয়া হয় না, তাই পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও দূতাবাসগুলোর উচিত, হাতে লেখা পাসপোর্ট ইস্যু বন্ধ করে দেওয়া।
জানতে চাইলে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এমআরপি প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক কর্নেল মো. আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকাসহ কোনো আঞ্চলিক কার্যালয় থেকেই এখন হাতে লেখা পাসপার্ট দেওয়া হয় না। বিদেশের ১৮টি দূতাবাসে এমআরপি যন্ত্র দেওয়া হয়ে গেছে। কয়েকটি দূতাবাসে এখনো হাতে লেখা পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। বাস্তবতা হলো, অনেকের হাতে লেখা পাসপোর্টের মেয়াদ রয়ে গেছে। অনেকে সে পাসপোর্ট নবায়ন করছে। তবে সরকার সবাইকে এমআরপি নেওয়ার জন্যই উৎসাহিত করছে।
কর্নেল লতিফ বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থার (আইসিএিও) সব সদস্য দেশেরই ২০১৫ সাল পর্যন্ত হাতে লেখা পাসপোর্টে ভিসা দেওয়ার কথা। তবে সৌদি আরবসহ অনেক দেশ সেটা দিচ্ছে না। তাই আমরা সবাইকে এমআরপি নেওয়ার অনুরোধ করছি।’
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সব জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে বলে দিয়েছি, তারা যেন কোনো কর্মীর কাছ থেকে হাতে লেখা পাসপোর্ট না নেয়।’
মেয়াদ থাকলে শুধু ভ্রমণকারীরা এখনো পুরোনো পাসপোর্টেই বিদেশে যেতে পারবেন। তবে তাঁদেরও বিমানবন্দরে ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে।
No comments