তেরখাদার দুঃখ ভুতিয়ার বিলের জলাবদ্ধতা
জলাবদ্ধতার কারণে খুলনার তেরখাদা উপজেলার ভুতিয়ার বিলে এখন আর ফসল হয় না। বছরের পর বছর ফসল মার খেয়ে সচ্ছল কৃষকেরও এখন দরিদ্র দশা। অনেকে কাজের তাগিদে এলাকা ছেড়েছেন। নগরের পাশেই রূপসা নদী পেরিয়ে নর্থ খুলনা বলে পরিচিত তেরখাদা উপজেলার ভুতিয়ার বিলটি আট বছর ধরে জলাবদ্ধ। উপজেলার সাচিদাহ, সাকলাদাহ ও তেরখাদা ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে লক্ষাধিক মানুষ দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।
বিলসংলগ্ন নাচুনিয়া গ্রামের অশীতিপর জহুরুল হক বলেন, ‘না খায়ে মত্তিছি। ছেলেডা কাজের আশায় ঢাকায় গেছে। কিন্তু সে নিজিউ চলতি পাত্তেছে না, আমারে কী দেবে?’ মোল্লা মোনা মিয়া (৫৩) বলেন, ‘পাঁচ বিঘে জমি ছিল। চাষবাস করে ছেলেমেয়ে নিয়ে ভালোই ছিলাম। এখন পানিতি আমার সব ডুবোয়ে দেছে। মাছ মারে সংসার চালাই। ছেলেডাও স্কুল ছাড়ান দিয়ে আমার সাথে মাছ মাত্তি যায়।’
সরেজমিনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুতিয়ার বিলের পানি বের হওয়ার একমাত্র পথ চিত্রা নদী। সেই নদীর তলদেশ পলি পড়ে উঁচু হয়ে যায়। মূলত তখন থেকেই জলাবদ্ধতার শুরু। সেই ২০০০ সালের কথা। দুই-তিন বছরের মধ্যে ২০ হাজার একরের বেশি ফসলি জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তখন থেকে বিলের পানির সঙ্গে অনগ্রসর এই এলাকার লোকজনের চোখের পানি একাকার হয়ে আছে। বিভিন্ন সরকার পানিনিষ্কাশনের লক্ষ্যে খাল কাটাসহ বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বর্তমান পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র গত ২০ জানুয়ারি খাল কাটার উদ্বোধন করেন, কিন্তু বিলের পানি কমেনি।
ঈদুল আজহার পরদিন ৮ নভেম্বর সকালে তেরখাদা সদরে টেলিফোন অফিসের মাঠে ভুতিয়ার বিল বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের ডাকা এক সমাবেশে দাঁড়িয়ে আদালতপুর গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ সানাল সিকদার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘১০ বিঘে জমি ছেল। পাঁচ-ছয় বছর ধরে কোনো ধানই হয় না। আমরা পরের খেতে কিষেন দিতিউ পারিনে। তাই না খায়ে মত্তিছি।’ ইন্দুহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্বদেব মহান্ত জানান, জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার অনেক ছেলেমেয়ে স্কুলে আসে না।
ভুতিয়ার বিল বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব মঞ্জুরুল আলম বলেন, চিত্রা নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এলাকার মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। তাদের বাঁচাতে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সাকলাদহ ইউপির চেয়ারম্যান শেখ দ্বীন ইসলাম বলেন, নদী মরে যাওয়ায় ভুতিয়ার বিলে এই অবস্থা হয়েছে। সরকারকে সেখানে চোখ দিতে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুধেন্দু শেখর মালাকার বলেন, ২০০৪ সাল থেকে শুরু হওয়া জলাবদ্ধতায় ভুতিয়ার বিলের ১৬ হাজার ৪৫২ একর জমি সম্পূর্ণ পানির নিচে আছে। ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ কাজের তাগিদে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। আর যারা আছে, তারা অধিকাংশই বিলে মাছ ধরে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করছে।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রব হাওলাদার জানান, ভুতিয়ার বিলের পানিনিষ্কাশনে ২৩ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজে গত দুই বছরে মাত্র ১৮ শতাংশের কিছু বেশি কাজ হয়েছে। ওই কাজে কোনো ভালোমন্দ বোঝা যায় না। বর্তমানে বিলটি নিয়ে দুটি বিশেষজ্ঞ দল জরিপ করছে। তারা ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করলে তখন বড় প্রকল্প নেওয়া হবে এবং বিলটি জলাবদ্ধতামুক্ত হবে।
খুলনা-৪ (তেরখাদা-রূপসা-দিঘলিয়া) আসনের সাংসদ মোল্লা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, নির্বাচিত হলে ভুতিয়ার বিলকে জলমুক্ত করবই। আশা করি, আমার সময়ের মধ্যে ভুতিয়ার বিল পানিমুক্ত হবে।’
সরেজমিনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুতিয়ার বিলের পানি বের হওয়ার একমাত্র পথ চিত্রা নদী। সেই নদীর তলদেশ পলি পড়ে উঁচু হয়ে যায়। মূলত তখন থেকেই জলাবদ্ধতার শুরু। সেই ২০০০ সালের কথা। দুই-তিন বছরের মধ্যে ২০ হাজার একরের বেশি ফসলি জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তখন থেকে বিলের পানির সঙ্গে অনগ্রসর এই এলাকার লোকজনের চোখের পানি একাকার হয়ে আছে। বিভিন্ন সরকার পানিনিষ্কাশনের লক্ষ্যে খাল কাটাসহ বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বর্তমান পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র গত ২০ জানুয়ারি খাল কাটার উদ্বোধন করেন, কিন্তু বিলের পানি কমেনি।
ঈদুল আজহার পরদিন ৮ নভেম্বর সকালে তেরখাদা সদরে টেলিফোন অফিসের মাঠে ভুতিয়ার বিল বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের ডাকা এক সমাবেশে দাঁড়িয়ে আদালতপুর গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ সানাল সিকদার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘১০ বিঘে জমি ছেল। পাঁচ-ছয় বছর ধরে কোনো ধানই হয় না। আমরা পরের খেতে কিষেন দিতিউ পারিনে। তাই না খায়ে মত্তিছি।’ ইন্দুহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্বদেব মহান্ত জানান, জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার অনেক ছেলেমেয়ে স্কুলে আসে না।
ভুতিয়ার বিল বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব মঞ্জুরুল আলম বলেন, চিত্রা নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এলাকার মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। তাদের বাঁচাতে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সাকলাদহ ইউপির চেয়ারম্যান শেখ দ্বীন ইসলাম বলেন, নদী মরে যাওয়ায় ভুতিয়ার বিলে এই অবস্থা হয়েছে। সরকারকে সেখানে চোখ দিতে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুধেন্দু শেখর মালাকার বলেন, ২০০৪ সাল থেকে শুরু হওয়া জলাবদ্ধতায় ভুতিয়ার বিলের ১৬ হাজার ৪৫২ একর জমি সম্পূর্ণ পানির নিচে আছে। ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ কাজের তাগিদে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। আর যারা আছে, তারা অধিকাংশই বিলে মাছ ধরে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করছে।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রব হাওলাদার জানান, ভুতিয়ার বিলের পানিনিষ্কাশনে ২৩ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজে গত দুই বছরে মাত্র ১৮ শতাংশের কিছু বেশি কাজ হয়েছে। ওই কাজে কোনো ভালোমন্দ বোঝা যায় না। বর্তমানে বিলটি নিয়ে দুটি বিশেষজ্ঞ দল জরিপ করছে। তারা ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করলে তখন বড় প্রকল্প নেওয়া হবে এবং বিলটি জলাবদ্ধতামুক্ত হবে।
খুলনা-৪ (তেরখাদা-রূপসা-দিঘলিয়া) আসনের সাংসদ মোল্লা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, নির্বাচিত হলে ভুতিয়ার বিলকে জলমুক্ত করবই। আশা করি, আমার সময়ের মধ্যে ভুতিয়ার বিল পানিমুক্ত হবে।’
No comments