চরফ্যাশনের আতঙ্কিত কৃষক-ভূমিসন্ত্রাসীরা যেন আশকারা না পায়
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ৩টি চরের প্রায় ২ হাজার কৃষক তাদের ফলানো আমন ধান লুট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত রিপোর্টে দেখা যায়, দুই জেলার মধ্যে সীমানা বিরোধের কথা বলে ভূমিসন্ত্রাসীরা ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনীর সাহায্যে আমন ফসল কেটে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে। অথচ চর মোতাহার, চর মনোহর ও চর লিউলিনের প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জমি দীর্ঘদিন থেকে সেখানকার চাষিরাই চাষবাস করে আসছেন।
এর মধ্যে সেখানে বসবাসকারী কৃষকদের নামে অনেক জমি বরাদ্দ দেওয়াও হয়ে গেছে। বাদবাকি জমির বরাদ্দও বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। তাই উলি্লখিত জমি নিয়ে চর বিশ্বাসের লোকদের দাবির বৈধ ভিত্তি নেই। কিন্তু এটাকেই জবরদখল করার ষড়যন্ত্র সফল করার ভিত্তি করছে ভূমিসন্ত্রাসীরা। চরফ্যাশনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নুরুল হাফিজ জমিগুলোর মালিক সেখানে বসবাসকারী চরফ্যাশনের কৃষকরা বলে দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করেছেন। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, বিরোধ দেখিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে আমন ফসল লুটের উদ্দেশ্যে। চরাঞ্চলে লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার করে কৃষকদের তাদের বসতঘর ও চাষবাসের জমি থেকে উচ্ছেদ করা নতুন ঘটনা নয়। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন চরাঞ্চলে ফসলের মৌসুমে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। তবে চরাঞ্চলের জমি কৃষকদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়ার পদক্ষেপ জোরালো হওয়ার ফলে ইদানীং সেখানে ভূমিসন্ত্রাসীরা ভিন্ন পথ গ্রহণ করছে। দুটি জেলার মধ্যে সীমানা বিরোধ দেখিয়ে চরফ্যাশনের ৩টি চরের ধান কেটে নেওয়ার পাঁয়তারা লুটেরাদেরই একটি কৌশল মাত্র। ভূমিসন্ত্রাসীদের ভাড়া করা লাঠিয়ালদের প্রতিহত করার জন্য ৩টি চরেই অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের আর্জি জানিয়ে চরফ্যাশনের ওসি উত্তম কাজ করেছেন। জেলা পুলিশ প্রশাসনের উচিত চাহিদামতো পুলিশ ফোর্স নিয়োগের ব্যবস্থা করে চর মোতাহার, চর মনোহর ও চর লিউলিনের আতঙ্কগ্রস্ত কৃষকদের আশ্বস্ত করা। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হতে পারে তার জন্য সেখানে বসবাসকারী কৃষকদের মাঝে জমি বন্দোবস্ত দান ত্বরান্বিত করা দরকার। পটুয়াখালী ও ভোলা জেলা প্রশাসনেরও এ ব্যাপারে তীক্ষষ্ট দৃষ্টি রাখা উচিত।
No comments