দেশি-বিদেশি সংস্থার আগ্রহ-মহামায়া ও মুহুরীতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি by মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন,
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মহামায়া প্রকল্প ও সোনাগাজী উপজেলার সীমান্তবর্তী মুহুরী প্রকল্পের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে দেশি-বিদেশি নানা সংস্থার। এসব প্রকল্প এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছে তারা। দেশের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের একটি সংস্থার প্রতিনিধিদল ইতিমধ্যে মহামায়া প্রকল্প এলাকা ঘুরে গেছে।
এদিকে সরকারের বন মন্ত্রণালয়ও এখানে পর্যটনকেন্দ্র করতে খুব দ্রুত প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, মিরসরাইয়ের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও আশার বাণী শুনিয়ে বলেছেন, 'দেশের অত্যাধুনিক পর্যটনকেন্দ্র হবে মহামায়া লেকে।'
মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে এবং হবে। মহামায়ায় ইতিমধ্যে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। ভবিষ্যতে পর্যটনকেন্দ্রও হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য পরিকল্পনাও আলোর মুখ দেখবে।' তিনি বলেন, 'মহামায়া প্রকল্পে পর্যটনকেন্দ্র করতে দেশের বিভিন্ন সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে। সরকার শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামের ফয়'স লেকের আদলে মহামায়ায় একটি নয়নাভিরাম পর্যটনকেন্দ্র করতে বন মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দিয়েছে।'
বন প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বরাত দিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, 'পর্যটন মন্ত্রণালয় অর্থ সংকটে রয়েছে। বন মন্ত্রণালয় অন্যান্য দপ্তর থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে। মোটা অঙ্কের একটা ফান্ড গঠনের কাজ চলছে।'
মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, মহামায়া প্রকল্পে পর্যটনকেন্দ্র করতে সিঙ্গাপুরের লং ডি ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেম লিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মহামায়া প্রকল্প এলাকা ঘুরে গেছে। তাদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ সরকার চুক্তি করলে একটি অত্যাধুনিক পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠবে মহামায়ায়।
প্রসঙ্গত, সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে মহামায়া প্রকল্পের কাজ শুরু হয় গত বছরের শুরুতেই। প্রায় ২৬ কোটি টাকার এ প্রকল্প গত ২৯ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেচ সম্প্রসারণ ছাড়াও এ প্রকল্প পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে পর্যটন ও বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন।
পর্যটকমুখর মহামায়া
পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার আগেই মিরসরাইয়ের মহামায়া প্রকল্প এলাকা রেকর্ড-সংখ্যক পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত হচ্ছে। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে দেখা গেছে দর্শনার্থীর ঢল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ছুটে আসছে, বনভোজন করছে।
বনভোজন ছাড়াও পরিবার-পরিজন নিয়ে দূর থেকে অনেকেই এসেছেন মহামায়ার মায়ার টানে। বন্ধু-স্বজন সঙ্গে নিয়ে বারবার ছুটে আসছেন পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া নিরবধি পানির কলধ্বনি শুনতে। মহামায়ার ভেতরের পাহাড়ের ঝরনা দেখতে ডিঙি, ইঞ্জিনচালিত বোট নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন পর্যটকরা।
মুহুরীতে সূর্যাস্ত : মিরসরাইয়ের আরেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুহুরী প্রকল্প। মিরসরাই ও সোনাগাজী উপজেলার সীমান্তবর্তী এ প্রকল্পে সূর্যাস্ত যেন আরেক নৈসর্গিক সৌন্দর্য। পশ্চিমাকাশে যখন সূর্য অস্ত যায়, তখন দূর আকাশে যেন অরুণিমার নীলিমা ছড়ায়। আধো পানি, আধো কাদার ফেনী নদীতে যখন আছড়ে পড়ে আকাশের নীলিমা; তখন পুরোদস্তুর এক নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দৃশ্যমান হয় এখানে। এ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে অনেক মানুষ। হিমশীতল পরিবেশে ফেনী নদীর পানিতে ডিঙি নিয়ে ঘুরতে দেখা যায় পর্যটকদের। ১৯৮৬ সালে ১৮৪ কোটি টাকায় বাস্তবায়িত এ প্রকল্পে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকলেও আজও তা পূর্ণতা পায়নি।
ভ্রমণপথে ভাঙা রাস্তার ভোগান্তি : মহামায়া ও মুহুরী প্রকল্পের অপরূপ দৃশ্য দেখতে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসু মানুষ ভাঙাচোরা রাস্তা পাড়ি দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে। দুটি প্রকল্পেই পর্যটকদের ঢল নামে নানা মৌসুমসহ বছরের প্রতিটি দিনে। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে পর্যটকদের পোহাতে হয় ভোগান্তি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের ঠাকুরদীঘি বাজারের পূর্বে এক কিলোমিটর সড়ক ভাঙা ও খানাখন্দে ভরা। এরপর রেললাইন, এর পরই কাপের্টিং সড়ক শেষে মহামায়া। কিন্তু ভাঙা ওই এক কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে ভোগান্তি পোহাতে হয় পর্যটকদের। মহামায়ায় কথা হয় মাইজদী থেকে আসা নুর হোসেন, বেলাল, রূপম ও রিয়াজের সঙ্গে। তাঁরা সবার আগে এখানে আসার রাস্তা মেরামতের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, সরকার এ এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার আগে শুধু যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করলে এটি হবে দেশের এক নম্বর পর্যটনকেন্দ্র।
মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে এবং হবে। মহামায়ায় ইতিমধ্যে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। ভবিষ্যতে পর্যটনকেন্দ্রও হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য পরিকল্পনাও আলোর মুখ দেখবে।' তিনি বলেন, 'মহামায়া প্রকল্পে পর্যটনকেন্দ্র করতে দেশের বিভিন্ন সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে। সরকার শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামের ফয়'স লেকের আদলে মহামায়ায় একটি নয়নাভিরাম পর্যটনকেন্দ্র করতে বন মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দিয়েছে।'
বন প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বরাত দিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, 'পর্যটন মন্ত্রণালয় অর্থ সংকটে রয়েছে। বন মন্ত্রণালয় অন্যান্য দপ্তর থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে। মোটা অঙ্কের একটা ফান্ড গঠনের কাজ চলছে।'
মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, মহামায়া প্রকল্পে পর্যটনকেন্দ্র করতে সিঙ্গাপুরের লং ডি ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেম লিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মহামায়া প্রকল্প এলাকা ঘুরে গেছে। তাদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ সরকার চুক্তি করলে একটি অত্যাধুনিক পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠবে মহামায়ায়।
প্রসঙ্গত, সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে মহামায়া প্রকল্পের কাজ শুরু হয় গত বছরের শুরুতেই। প্রায় ২৬ কোটি টাকার এ প্রকল্প গত ২৯ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেচ সম্প্রসারণ ছাড়াও এ প্রকল্প পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে পর্যটন ও বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন।
পর্যটকমুখর মহামায়া
পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার আগেই মিরসরাইয়ের মহামায়া প্রকল্প এলাকা রেকর্ড-সংখ্যক পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত হচ্ছে। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে দেখা গেছে দর্শনার্থীর ঢল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ছুটে আসছে, বনভোজন করছে।
বনভোজন ছাড়াও পরিবার-পরিজন নিয়ে দূর থেকে অনেকেই এসেছেন মহামায়ার মায়ার টানে। বন্ধু-স্বজন সঙ্গে নিয়ে বারবার ছুটে আসছেন পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া নিরবধি পানির কলধ্বনি শুনতে। মহামায়ার ভেতরের পাহাড়ের ঝরনা দেখতে ডিঙি, ইঞ্জিনচালিত বোট নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন পর্যটকরা।
মুহুরীতে সূর্যাস্ত : মিরসরাইয়ের আরেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুহুরী প্রকল্প। মিরসরাই ও সোনাগাজী উপজেলার সীমান্তবর্তী এ প্রকল্পে সূর্যাস্ত যেন আরেক নৈসর্গিক সৌন্দর্য। পশ্চিমাকাশে যখন সূর্য অস্ত যায়, তখন দূর আকাশে যেন অরুণিমার নীলিমা ছড়ায়। আধো পানি, আধো কাদার ফেনী নদীতে যখন আছড়ে পড়ে আকাশের নীলিমা; তখন পুরোদস্তুর এক নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দৃশ্যমান হয় এখানে। এ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে অনেক মানুষ। হিমশীতল পরিবেশে ফেনী নদীর পানিতে ডিঙি নিয়ে ঘুরতে দেখা যায় পর্যটকদের। ১৯৮৬ সালে ১৮৪ কোটি টাকায় বাস্তবায়িত এ প্রকল্পে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকলেও আজও তা পূর্ণতা পায়নি।
ভ্রমণপথে ভাঙা রাস্তার ভোগান্তি : মহামায়া ও মুহুরী প্রকল্পের অপরূপ দৃশ্য দেখতে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসু মানুষ ভাঙাচোরা রাস্তা পাড়ি দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে। দুটি প্রকল্পেই পর্যটকদের ঢল নামে নানা মৌসুমসহ বছরের প্রতিটি দিনে। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে পর্যটকদের পোহাতে হয় ভোগান্তি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের ঠাকুরদীঘি বাজারের পূর্বে এক কিলোমিটর সড়ক ভাঙা ও খানাখন্দে ভরা। এরপর রেললাইন, এর পরই কাপের্টিং সড়ক শেষে মহামায়া। কিন্তু ভাঙা ওই এক কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে ভোগান্তি পোহাতে হয় পর্যটকদের। মহামায়ায় কথা হয় মাইজদী থেকে আসা নুর হোসেন, বেলাল, রূপম ও রিয়াজের সঙ্গে। তাঁরা সবার আগে এখানে আসার রাস্তা মেরামতের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, সরকার এ এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার আগে শুধু যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করলে এটি হবে দেশের এক নম্বর পর্যটনকেন্দ্র।
No comments