গুলশান-কড়াইল বস্তির মাঝে অবৈধ হাজার সংযোগ-পানিতেই পানি চুরি by অমিতোষ পাল
মহাখালী ও গুলশান-১-এর সংযোগ সড়কের মধ্যবর্তী স্থান। নৌকায় করে গুলশান লেকের দিকে যেতেই মাঝির বৈঠা আটকে যায়। দ্রুত বৈঠা চালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন মাঝি ইউসুফ আলী মজুমদার। পানির নিচে তাকাতেই দেখা যায় প্লাস্টিকের পাইপের আঁকাবাঁকা সারি। সামান্য ডুবে থাকা পাইপগুলোতেই বেধে যাচ্ছে বৈঠা। কিন্তু এত পাইপ কোত্থেকে এল_জিজ্ঞেস করতেই ইউসুফ আলী বললেন, 'এগুলো সব অবৈধ পানির লাইনের পাইপ।
লেকের ভেতর এ রকম হাজারখানেক পাইপ আছে। ওয়াসার লাইন থেকে চোরাই সংযোগ নিয়ে পাইপের মাধ্যমে এই পানি বনানীর কড়াইল বস্তিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বস্তির দুই লক্ষাধিক বাসিন্দা এই চোরাই পানি ব্যবহার করছে। পানির ব্যবসা করার একটি বড় চক্রও গড়ে উঠেছে বস্তিতে।'
চুরির সঙ্গে জড়িত বস্তির প্রভাবশালী ব্যক্তি থেকে শুরু করে ওয়াসার কর্তাব্যক্তি_সবাই কালের কণ্ঠের কাছে অবলীলায় স্বীকার করেছেন ঘটনার সত্যতা।
গত ১২ নভেম্বর শনিবার নৌকায় করে ঝিলে ঘোরার সময় দেখা মেলে পানি চুরির এই অভিনব কৌশল। দেড়-দুই ইঞ্চি ব্যাসের কালো-সবুজ-হলুদ রঙা প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে পানি টেনে নেওয়া হচ্ছে। জানা যায়, মহাখালীর গাউসুল আজম মসজিদের পাশ থেকে বনানী সেতু পর্যন্ত সহস্রাধিক পাইপের মাধ্যমে পানি চুরি হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট হলে বস্তিতে মেশিন লাগিয়েও পানি টানা হয়। ফলে গুলশান এলাকায় সৃষ্টি হয় পানি সংকট।
এলাকাবাসী জানায়, বস্তির কিছু লোক গুলশান প্রান্তের ওয়াসার পাইপ ফুটো করে সংযোগ নিচ্ছে। ওয়াসার কিছু লোকের সঙ্গে যোজসাজশের মাধ্যমে বস্তির কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এ কাজ করছেন। মহাখালী থেকে গুলশান প্রান্ত হয়ে বনানী এলাকা থেকে নেওয়া সংযোগের পাইপগুলো পুরো লেকের ভেতর সাপের মতো আঁকাবাঁকা হয়ে ছড়িয়ে আছে। কোনো কোনো স্থানে পাইপগুলো পানির ওপরও সামান্য ভেসে আছে। ওয়াসার পাইপের যেসব স্থানে ফুটো করা হচ্ছে, সেগুলোর একেকটি পয়েন্ট থেকে ১৫-২০টি সংযোগ নেওয়া হয়েছে। পাইপগুলো বস্তির ভেতর গিয়ে জালের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। ওয়াসার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী মাসোয়ারা নিয়ে অবৈধ পানিবাণিজ্যের সুযোগ দিয়ে ঢাকা ওয়াসাকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছে।
গুলশান-১ নম্বর লেকের পাড়ে ওয়াসার গভীর নলকূপের একজন পাম্প অপারেটরকে পাইপগুলো দেখাতেই তিনি বলেন, 'ভাই ওগুলো চোরাই পানির লাইন। ওই যে দেখা যাচ্ছে মাটি খুঁড়ে কানেকশন নেওয়া হয়েছে। কিছু দিন আগে ওয়াসার ম্যাজিস্ট্রেট এসে কিছু লাইন কেটে দিয়েছিল। কদিন পর আবার যা তাই। আমরা এখানে কষ্ট করে পানি তুলি। সেই পানি নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। অথচ গুলশান এলাকার বাসিন্দারাই মাঝে মাঝে পানি পান না। আমি বলতে গেলে দেখা যাবে আমারই চাকরি থাকবে না।'
সরেজমিন দেখা যায়, লেকের পাড়ে গুলশানের ৩৩ নম্বর সড়কের লেকপ্রান্তের ১৬ নম্বর বাড়ির সামনের রাস্তা খুঁড়ে ওয়াসার পাইপলাইনের সঙ্গে ১৩টি পাইপজুড়ে দিয়ে পানি নেওয়া হচ্ছে। ৩১ নম্বর সড়কের লেক পাশে গিয়ে দেখা যায়, সেখান থেকেও ১৫-২০টা পাইপ বসানো হয়েছে। গাউসুল আজম মসজিদের এলাকা থেকে নেওয়া হয়েছে শতাধিক সংযোগ। পাশের কালভার্ট এলাকা থেকে নেওয়া হয়েছে আরো অন্তত ১০০ সংযোগ। কিছু কিছু পাইপ ফেটে গিয়েও পানি বের হচ্ছে। সব পাইপেরই গন্তব্য কড়াইল বস্তি। কিছু পাইপ পানির ভেতরে থাকতে থাকতে গায়ে শ্যাওলাও পড়ে গেছে। কিছু কিছু পয়েন্টে পাইপগুলো যাতে পানির গভীরে তলিয়ে না যায়, সে জন্য শোলা দিয়ে কয়েকটি স্থানে ভাসিয়ে রাখা হয়েছে। কারণ পাইপ পানির গভীরে চলে গেলে পানি সরবরাহে সমস্যা তৈরি হয়।
বস্তিবাসী জানান, বস্তিতে পানি সরবরাহের জন্য গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটরা প্রতি মাসে কক্ষপ্রতি ৫০ টাকা নিয়ে ঘরগুলোতে পানি সরবরাহ করছে। কড়াইল বস্তিতে প্রায় ৪০ হাজার কক্ষ রয়েছে। এ খাত থেকে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে মাসে ২০ লাখ টাকা। কিছু অংশ দিচ্ছে ওয়াসার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এভাবে বছরের পর বছর চলছে।
গুলশান ২৯ নম্বর সড়কের বাসিন্দা মো. সালাহউদ্দিন বলেন, 'আমরা বৈধভাবে পানির সংযোগ নিয়ে পানি পাই না। অথচ বস্তির লোকজন পানি নিয়ে দেদার ব্যবসা করে চলছে। ওরা খুবই শক্তিশালী। ওদের বিরুদ্ধে কিছু বলাও মুশকিল। কিছু বললেই রাতের অন্ধকারে লেকের পাশে এসে বাড়িতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে দিয়ে যায়।'
বস্তির বাসিন্দারা জানান, এখানে সেলিম ঢালী, পারভীন বেগম, হবিবর রহমান, মতিয়ার রহমান, আলমগীরসহ আরো অনেকে এই অবৈধ পানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। বস্তিতে গিয়ে মতিয়ার রহমানকে খুঁজে পেয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি অবলীলায় পানি চুরির কথা স্বীকার করেন। বলেন, 'এই পানি বিক্রি করে কোনোভাবে সংসার চালিয়ে যাচ্ছি।' এভাবে পানি আনাও খুব ঝামেলা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'মাঝেমধ্যে মাসিক টাকা দিতে সামান্য দেরি হলেই ওয়াসার লোকজন এসে ওপাশের লাইন কেটে দেয়। তখন আবার বেশি টাকা-পয়সা দিয়ে সব ঠিকঠাক করতে হয়। এই কোনোরকমে ব্যবসা করে খাচ্ছি।'
আরেক পানি ব্যবসায়ী ও কড়াইল বস্তি ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম ঢালী বলেন, 'ওয়াসার লোকজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে ব্যবসা চালাচ্ছি। এটাকে খারাপ হিসেবে দেখার কোনো কারণ নেই। কারণ এই লোকগুলোরও তো পানি দরকার।'
স্থানীয়রা জানান, বস্তিতে কেবল পানিই নয়, গ্যাস-বিদ্যুতেরও অবৈধ সংযোগ আছে। তিতাসের লোকজনকে টাকা-পয়সা দিয়ে কয়েক মাস আগে গ্যাসের সংযোগ নেওয়া হয়েছে। আর অবৈধ বিদ্যুতের সংযোগ গেছে গুলশান ১ এলাকা থেকে। লেকের ভেতর বাঁশ পুঁতে নেওয়া হয়েছে বিদ্যুতের লাইন। আর গ্যাস এসেছে বনানী এলাকা থেকে।
এ ব্যাপারে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. তাকসিম এ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট এলাকার সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী সরকার ক্ষিতিশ চন্দ্র বলেন, ওই লাইনগুলো অবৈধ। তবে ওয়াসার লোকজন সুবিধা নেয় কি না সেটা তাঁর জানা নেই। এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী ভালো বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।
নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল ওয়াসেত হজ পালনে সৌদি আরবে অবস্থান করায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে প্রধান প্রকৌশলী কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, 'ওখানে এসব যে চলছে, সেটা আমাদেরও মাথায় আছে। আমিও পাইপ দিয়ে পানির চুরির দৃশ্য দেখেছি। অনেক দিন ধরেই চিন্তা করছি এই সমস্যার সমাধান কী করা যায়। কারণ বস্তির লোকদেরও তো পানি লাগবে। এর আগেও বস্তির লোকজন পানি চেয়েছিল। কিন্তু আমরা দিতে পারিনি। আবার পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিলেও সমস্যা। তখন এনজিওয়ালারা বলে বস্তিতে পানি দেওয়া হচ্ছে না। কোনো এনজিও যদি ওদের পানির বিল দিয়ে দেয়, তাহলে আমরা বৈধভাবে পানি সরবরাহ করতে পারি।'
চুরির সঙ্গে জড়িত বস্তির প্রভাবশালী ব্যক্তি থেকে শুরু করে ওয়াসার কর্তাব্যক্তি_সবাই কালের কণ্ঠের কাছে অবলীলায় স্বীকার করেছেন ঘটনার সত্যতা।
গত ১২ নভেম্বর শনিবার নৌকায় করে ঝিলে ঘোরার সময় দেখা মেলে পানি চুরির এই অভিনব কৌশল। দেড়-দুই ইঞ্চি ব্যাসের কালো-সবুজ-হলুদ রঙা প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে পানি টেনে নেওয়া হচ্ছে। জানা যায়, মহাখালীর গাউসুল আজম মসজিদের পাশ থেকে বনানী সেতু পর্যন্ত সহস্রাধিক পাইপের মাধ্যমে পানি চুরি হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট হলে বস্তিতে মেশিন লাগিয়েও পানি টানা হয়। ফলে গুলশান এলাকায় সৃষ্টি হয় পানি সংকট।
এলাকাবাসী জানায়, বস্তির কিছু লোক গুলশান প্রান্তের ওয়াসার পাইপ ফুটো করে সংযোগ নিচ্ছে। ওয়াসার কিছু লোকের সঙ্গে যোজসাজশের মাধ্যমে বস্তির কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এ কাজ করছেন। মহাখালী থেকে গুলশান প্রান্ত হয়ে বনানী এলাকা থেকে নেওয়া সংযোগের পাইপগুলো পুরো লেকের ভেতর সাপের মতো আঁকাবাঁকা হয়ে ছড়িয়ে আছে। কোনো কোনো স্থানে পাইপগুলো পানির ওপরও সামান্য ভেসে আছে। ওয়াসার পাইপের যেসব স্থানে ফুটো করা হচ্ছে, সেগুলোর একেকটি পয়েন্ট থেকে ১৫-২০টি সংযোগ নেওয়া হয়েছে। পাইপগুলো বস্তির ভেতর গিয়ে জালের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। ওয়াসার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী মাসোয়ারা নিয়ে অবৈধ পানিবাণিজ্যের সুযোগ দিয়ে ঢাকা ওয়াসাকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছে।
গুলশান-১ নম্বর লেকের পাড়ে ওয়াসার গভীর নলকূপের একজন পাম্প অপারেটরকে পাইপগুলো দেখাতেই তিনি বলেন, 'ভাই ওগুলো চোরাই পানির লাইন। ওই যে দেখা যাচ্ছে মাটি খুঁড়ে কানেকশন নেওয়া হয়েছে। কিছু দিন আগে ওয়াসার ম্যাজিস্ট্রেট এসে কিছু লাইন কেটে দিয়েছিল। কদিন পর আবার যা তাই। আমরা এখানে কষ্ট করে পানি তুলি। সেই পানি নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। অথচ গুলশান এলাকার বাসিন্দারাই মাঝে মাঝে পানি পান না। আমি বলতে গেলে দেখা যাবে আমারই চাকরি থাকবে না।'
সরেজমিন দেখা যায়, লেকের পাড়ে গুলশানের ৩৩ নম্বর সড়কের লেকপ্রান্তের ১৬ নম্বর বাড়ির সামনের রাস্তা খুঁড়ে ওয়াসার পাইপলাইনের সঙ্গে ১৩টি পাইপজুড়ে দিয়ে পানি নেওয়া হচ্ছে। ৩১ নম্বর সড়কের লেক পাশে গিয়ে দেখা যায়, সেখান থেকেও ১৫-২০টা পাইপ বসানো হয়েছে। গাউসুল আজম মসজিদের এলাকা থেকে নেওয়া হয়েছে শতাধিক সংযোগ। পাশের কালভার্ট এলাকা থেকে নেওয়া হয়েছে আরো অন্তত ১০০ সংযোগ। কিছু কিছু পাইপ ফেটে গিয়েও পানি বের হচ্ছে। সব পাইপেরই গন্তব্য কড়াইল বস্তি। কিছু পাইপ পানির ভেতরে থাকতে থাকতে গায়ে শ্যাওলাও পড়ে গেছে। কিছু কিছু পয়েন্টে পাইপগুলো যাতে পানির গভীরে তলিয়ে না যায়, সে জন্য শোলা দিয়ে কয়েকটি স্থানে ভাসিয়ে রাখা হয়েছে। কারণ পাইপ পানির গভীরে চলে গেলে পানি সরবরাহে সমস্যা তৈরি হয়।
বস্তিবাসী জানান, বস্তিতে পানি সরবরাহের জন্য গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটরা প্রতি মাসে কক্ষপ্রতি ৫০ টাকা নিয়ে ঘরগুলোতে পানি সরবরাহ করছে। কড়াইল বস্তিতে প্রায় ৪০ হাজার কক্ষ রয়েছে। এ খাত থেকে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে মাসে ২০ লাখ টাকা। কিছু অংশ দিচ্ছে ওয়াসার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এভাবে বছরের পর বছর চলছে।
গুলশান ২৯ নম্বর সড়কের বাসিন্দা মো. সালাহউদ্দিন বলেন, 'আমরা বৈধভাবে পানির সংযোগ নিয়ে পানি পাই না। অথচ বস্তির লোকজন পানি নিয়ে দেদার ব্যবসা করে চলছে। ওরা খুবই শক্তিশালী। ওদের বিরুদ্ধে কিছু বলাও মুশকিল। কিছু বললেই রাতের অন্ধকারে লেকের পাশে এসে বাড়িতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে দিয়ে যায়।'
বস্তির বাসিন্দারা জানান, এখানে সেলিম ঢালী, পারভীন বেগম, হবিবর রহমান, মতিয়ার রহমান, আলমগীরসহ আরো অনেকে এই অবৈধ পানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। বস্তিতে গিয়ে মতিয়ার রহমানকে খুঁজে পেয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি অবলীলায় পানি চুরির কথা স্বীকার করেন। বলেন, 'এই পানি বিক্রি করে কোনোভাবে সংসার চালিয়ে যাচ্ছি।' এভাবে পানি আনাও খুব ঝামেলা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'মাঝেমধ্যে মাসিক টাকা দিতে সামান্য দেরি হলেই ওয়াসার লোকজন এসে ওপাশের লাইন কেটে দেয়। তখন আবার বেশি টাকা-পয়সা দিয়ে সব ঠিকঠাক করতে হয়। এই কোনোরকমে ব্যবসা করে খাচ্ছি।'
আরেক পানি ব্যবসায়ী ও কড়াইল বস্তি ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম ঢালী বলেন, 'ওয়াসার লোকজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে ব্যবসা চালাচ্ছি। এটাকে খারাপ হিসেবে দেখার কোনো কারণ নেই। কারণ এই লোকগুলোরও তো পানি দরকার।'
স্থানীয়রা জানান, বস্তিতে কেবল পানিই নয়, গ্যাস-বিদ্যুতেরও অবৈধ সংযোগ আছে। তিতাসের লোকজনকে টাকা-পয়সা দিয়ে কয়েক মাস আগে গ্যাসের সংযোগ নেওয়া হয়েছে। আর অবৈধ বিদ্যুতের সংযোগ গেছে গুলশান ১ এলাকা থেকে। লেকের ভেতর বাঁশ পুঁতে নেওয়া হয়েছে বিদ্যুতের লাইন। আর গ্যাস এসেছে বনানী এলাকা থেকে।
এ ব্যাপারে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. তাকসিম এ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট এলাকার সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী সরকার ক্ষিতিশ চন্দ্র বলেন, ওই লাইনগুলো অবৈধ। তবে ওয়াসার লোকজন সুবিধা নেয় কি না সেটা তাঁর জানা নেই। এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী ভালো বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।
নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল ওয়াসেত হজ পালনে সৌদি আরবে অবস্থান করায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে প্রধান প্রকৌশলী কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, 'ওখানে এসব যে চলছে, সেটা আমাদেরও মাথায় আছে। আমিও পাইপ দিয়ে পানির চুরির দৃশ্য দেখেছি। অনেক দিন ধরেই চিন্তা করছি এই সমস্যার সমাধান কী করা যায়। কারণ বস্তির লোকদেরও তো পানি লাগবে। এর আগেও বস্তির লোকজন পানি চেয়েছিল। কিন্তু আমরা দিতে পারিনি। আবার পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিলেও সমস্যা। তখন এনজিওয়ালারা বলে বস্তিতে পানি দেওয়া হচ্ছে না। কোনো এনজিও যদি ওদের পানির বিল দিয়ে দেয়, তাহলে আমরা বৈধভাবে পানি সরবরাহ করতে পারি।'
No comments