ওরা অঝোরে কাঁদল by ফিরোজ শিবলী,
মিরসরাইয়ে ট্রাক উল্টে নিহত ৪৪ স্কুলছাত্রের বীভৎস স্মৃতি চার মাস পরও ভুলতে পারছে না তাদের সহপাঠীরা। ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া এ সহপাঠীদের প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সেই দুঃসহ স্মৃতি। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে বেঁচে যাওয়া ছাত্ররা কান্নায় ভেঙে পড়ে। সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদল এসব কোমলমতি শিশু। ছাত্রদের কান্নায় কেউ ধরে রাখতে পারেনি তাদের চোখের পানি। আইনজীবী থেকে শুরু করে উপস্থিত সবার চোখে
ঝরেছে পানি। এ সময় এজলাসে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। কান্নার জন্য অনেক ছাত্র আদালতে বক্তব্যও উপস্থাপন করতে পারেনি।
গতকাল সিনিয়র বিচারিক হাকিম ফরিদা ইয়াসমিনের আদালতে দুপুর ১২টা থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে। মিরসরাই আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মেহেদী হাসান, বোরহান উদ্দিন, আশিক রিজভী হৃদয়, আবদুল্লাহ আল মামুন, তাপস চক্রবর্তী ও আলমগীর হোসেন এ সময় সাক্ষ্য দেয়। আগামী রোববার চার্জশিটে থাকা অপর সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এদিকে দেশব্যাপী আলোচিত এ দুর্ঘটনার মামলাকে আলোচিত মামলা হিসেবে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মামলার ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে গত দু'দিনে ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। সাক্ষীদের অধিকাংশই দুর্ঘটনায় বেঁেচ যাওয়া স্কুলছাত্র।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম সমকালকে জানান, সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে শুরু করে ওই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান। চোখ মুছতে মুছতে সে আদালতকে জানায়, 'চলতি বছরের ১১ জুলাই মিরসরাই স্টেডিয়াম থেকে খেলা দেখে একটি ট্রাকে করে ফিরছিলাম আমরা। ওই ট্রাকে আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয়, আবু তোরাব ফাজিল মাদ্রাসা ও স্থানীয় ছেলেরা ছিল। শুরু থেকে চালক মফিজ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো শুরু করেন। তাকে বার বার মানা করা হলেও আমাদের কথা শোনেননি। আমাদের বহনকারী ট্রাকটি বড়তাকিয়া সড়কের সৈয়দ আলী এলাকায় পেঁৗছলে চালক মফিজ মোবাইল ফোনে কথা বলতে শুরু করেন। ব্রিজ থেকে নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমাদের বহনকারী ট্রাকটি উল্টে পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে যায়।' একথা বলেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকে মেহেদী। কিছুক্ষণ কান্নার পর সে আদালতকে বলে, 'ডোবায় আমাদের অনেক বন্ধুকে মারা যেতে দেখিছি। আহত অবস্থায় আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এক মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হই।' মেহেদীর মতো মামলার সাক্ষী পাঁচ স্কুলছাত্রও চালক মফিজের বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং মোবাইল ফোনে কথা বলার কারণে ট্রাকটি উল্টে রাস্তার পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে যায় বলে আদালতকে জানায়।
মেহেদীর কান্নার সঙ্গে সঙ্গে সাক্ষ্য দিতে আসা আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্য ছাত্ররাও কান্না শুরু করে। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরাও কান্না ধরে রাখতে পারেননি। এজলাসের বাইরে থাকা দর্শনার্থীরাও ঘাতক মফিজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি জেলা এপিপি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার শীল জানান, গত বুধবার থেকে মিরসরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। ওইদিন ১২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। গতকাল ৬ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। আগামী রোববারও সাক্ষ্য নেওয়া হবে। মামলায় মোট ৩০ জন সাক্ষী রয়েছে। আশা করি এক সপ্তাহের মধ্যে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে। গত ৩০ অক্টোবর মামলার একমাত্র আসামি চালক মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন আদালত। চালক মফিজ বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছে। গতকাল সাক্ষ্য গ্রহণের সময় ঘাতক ট্রাকচালক মফিজ আদালতে উপস্থিত ছিল। এ সময় তাকেও বেশ বিমর্ষ দেখা গেছে।
গত ১১ জুলাই মিরসরাই সদর স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা দেখে ফেরার পথে বড়তাকিয়া-আবু তোরাব সড়কের সৈয়দ আলী এলাকায় ট্রাক উল্টে নিহত হয় মিরসরাইর ৪৪ স্কুলছাত্র। দুর্ঘটনায় আহত হয় অন্তত ৩০ জন। এ ঘটনায় মিরসরাইর মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমদ নিজামী বাদী হয়ে চালক মফিজকে আসামি করে মিরসরাই থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মিরসরাই থানার ওসি (তদন্ত) অংসা থোয়াই ২৫ সেপ্টেম্বর চালক মফিজের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
গতকাল সিনিয়র বিচারিক হাকিম ফরিদা ইয়াসমিনের আদালতে দুপুর ১২টা থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে। মিরসরাই আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মেহেদী হাসান, বোরহান উদ্দিন, আশিক রিজভী হৃদয়, আবদুল্লাহ আল মামুন, তাপস চক্রবর্তী ও আলমগীর হোসেন এ সময় সাক্ষ্য দেয়। আগামী রোববার চার্জশিটে থাকা অপর সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এদিকে দেশব্যাপী আলোচিত এ দুর্ঘটনার মামলাকে আলোচিত মামলা হিসেবে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মামলার ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে গত দু'দিনে ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। সাক্ষীদের অধিকাংশই দুর্ঘটনায় বেঁেচ যাওয়া স্কুলছাত্র।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী জেলা পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম সমকালকে জানান, সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে শুরু করে ওই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান। চোখ মুছতে মুছতে সে আদালতকে জানায়, 'চলতি বছরের ১১ জুলাই মিরসরাই স্টেডিয়াম থেকে খেলা দেখে একটি ট্রাকে করে ফিরছিলাম আমরা। ওই ট্রাকে আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয়, আবু তোরাব ফাজিল মাদ্রাসা ও স্থানীয় ছেলেরা ছিল। শুরু থেকে চালক মফিজ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো শুরু করেন। তাকে বার বার মানা করা হলেও আমাদের কথা শোনেননি। আমাদের বহনকারী ট্রাকটি বড়তাকিয়া সড়কের সৈয়দ আলী এলাকায় পেঁৗছলে চালক মফিজ মোবাইল ফোনে কথা বলতে শুরু করেন। ব্রিজ থেকে নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমাদের বহনকারী ট্রাকটি উল্টে পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে যায়।' একথা বলেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকে মেহেদী। কিছুক্ষণ কান্নার পর সে আদালতকে বলে, 'ডোবায় আমাদের অনেক বন্ধুকে মারা যেতে দেখিছি। আহত অবস্থায় আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এক মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হই।' মেহেদীর মতো মামলার সাক্ষী পাঁচ স্কুলছাত্রও চালক মফিজের বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং মোবাইল ফোনে কথা বলার কারণে ট্রাকটি উল্টে রাস্তার পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে যায় বলে আদালতকে জানায়।
মেহেদীর কান্নার সঙ্গে সঙ্গে সাক্ষ্য দিতে আসা আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্য ছাত্ররাও কান্না শুরু করে। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরাও কান্না ধরে রাখতে পারেননি। এজলাসের বাইরে থাকা দর্শনার্থীরাও ঘাতক মফিজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি জেলা এপিপি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার শীল জানান, গত বুধবার থেকে মিরসরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। ওইদিন ১২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। গতকাল ৬ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। আগামী রোববারও সাক্ষ্য নেওয়া হবে। মামলায় মোট ৩০ জন সাক্ষী রয়েছে। আশা করি এক সপ্তাহের মধ্যে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে। গত ৩০ অক্টোবর মামলার একমাত্র আসামি চালক মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন আদালত। চালক মফিজ বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছে। গতকাল সাক্ষ্য গ্রহণের সময় ঘাতক ট্রাকচালক মফিজ আদালতে উপস্থিত ছিল। এ সময় তাকেও বেশ বিমর্ষ দেখা গেছে।
গত ১১ জুলাই মিরসরাই সদর স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা দেখে ফেরার পথে বড়তাকিয়া-আবু তোরাব সড়কের সৈয়দ আলী এলাকায় ট্রাক উল্টে নিহত হয় মিরসরাইর ৪৪ স্কুলছাত্র। দুর্ঘটনায় আহত হয় অন্তত ৩০ জন। এ ঘটনায় মিরসরাইর মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমদ নিজামী বাদী হয়ে চালক মফিজকে আসামি করে মিরসরাই থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মিরসরাই থানার ওসি (তদন্ত) অংসা থোয়াই ২৫ সেপ্টেম্বর চালক মফিজের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
No comments