মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়

যরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ভার গ্রহণ করতে চেয়ে কানাডীয় প্রতিষ্ঠানটি মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের একটি চক্র। এমন প্রমাণ পাওয়ার পর বেবিচকের ওই চক্রকে খুঁজে বের করতে উদ্যোগ নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।


বিমান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, কানাডিয়ান কোম্পানি ভিজ্যুয়াল ডিফেন্স ইনকরপোরেশন (ভিডিআই) গত মাসে বেবিচকের কাছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের এক প্রস্তাব পাঠায়। চিঠিতে তারা নিজেদের আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা আয়াটার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করে। কিন্তু গত মঙ্গলবার জানা যায়, এ ধরনের কোনো চুক্তিই আয়াটার সঙ্গে হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের ওই সূত্র জানায়, বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর মাহমুদ হোসেনের আগ্রহেই ভিডিআই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তিনি কসক্যাপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ভিডিআইর সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। তার আগ্রহেই পুরো প্রক্রিয়াটি অতিদ্রুততার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের আগ্রহী হয়ে ওঠে। তবে যাত্রীপ্রতি ৩৫ ডলার বাড়তি অর্থ গ্রহণের সিদ্ধান্তে বিতর্কের ঝড় ওঠে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিমান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মিথ্যা তথ্য দিয়ে বা তথ্য গোপন করে প্রতিবেদন উপস্থাপনের পেছনে যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী ও সচিব। মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। এ চুক্তি কার্যকর হলে দেশের যাত্রীদের ওপর খড়গ নেমে আসত।
যে কারণে বিতর্ক :বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষায় বিদেশগামী প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ৩৫ মার্কিন ডলার করে (প্রায় আড়াই হাজার টাকা) নিরাপত্তা ফি আদায় করবে_ এমন শর্তে ভিডিআইর সঙ্গে চুক্তি করতে চাচ্ছে বেবিচক। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাবটি ইতিমধ্যে অনুমোদন লাভ করেছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় প্রাথমিকভাবে বিদেশি এ প্রতিষ্ঠানটি ২৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে যাত্রীপ্রতি ৩৫ ডলার আদায়ের মাধ্যমে প্রথম বছরেই তুলে নেবে ৯৩৪ কোটি টাকা। আর ১৫ শতাংশ হারে সরকারের আয় হবে ১৪৮ কোটি টাকা।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহির্গমন যাত্রীসংখ্যা ছিল ৪১ লাখ ৯৪ হাজার ৩৮৫ জন। এ হিসাবে প্রতি বছর টোল আয় হবে প্রায় এক হাজার ৯৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ২৫ বছরের জন্য ভিডিআইর সঙ্গে চুক্তি করা হলে তারা প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাবে। আর যাত্রী বৃদ্ধির হারের সঙ্গে তুলনা করলে অর্থের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.