টেক্সটাইল খাতে বিনিয়োগ নিবন্ধন বাড়ছে-টেক্সটাইল শিল্পে ২১২টি প্রকল্পে বিনিয়োগ নিবন্ধন by শেখ আবদুল্লাহ

টেক্সটাইল শিল্পে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ নিবন্ধন বাড়ছে। চলতি বছরে একক খাত হিসেবে টেক্সটাইল খাতে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। দেশের উদ্যোক্তারা টেক্সটাইল শিল্পে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।বিনিয়োগ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বিভিন্ন শিল্পে ৫৩৬টি প্রকল্পের নিবন্ধন নিয়েছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা। এসব প্রকল্পে ১৬ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।


এরই মধ্যে টেক্সটাইল শিল্পে ২১২টি প্রকল্পে বিনিয়োগ নিবন্ধন নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। এসব প্রকল্পে ব্যয় হবে দুই হাজার ৮৬৩ কোটি টাকার বেশি। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে টেক্সটাইল খাতে উদ্যোক্তারা ৫৪টি প্রকল্পে নিবন্ধন নিয়েছেন। এছাড়া আগস্টে ৪৮টি, সেপ্টেম্বরে ৩৮টি এবং অক্টোবরে ৭২টি প্রকল্পে বিনিয়োগ নিবন্ধন হয়েছে। অন্যদিকে ২০১১ সালে টেক্সটাইল খাতে ৫৮৬টি প্রকল্পের নিবন্ধন নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। এসব প্রকল্পে ১০ হাজার ২৯২ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও প্রকৌশল শিল্প, রসায়ন শিল্প, কৃষিভিত্তিক শিল্প, সেবা শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্প খাতে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের নিবন্ধন নিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামীন সমকালকে বলেন, অনেকেই টেক্সটাইল খাতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন। এজন্য তারা বিনিয়োগের নিবন্ধন নিচ্ছেন। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় প্রকৃত বিনিয়োগে যেতে পারছেন না। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পাওয়ায় দেশের টেক্সটাইল খাতের একটি বড় অংশ ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কাপড় আসছে। এতে দেশীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা বেড়েছে।
দেশে বর্তমানে ৩৪৫টি স্পিনিং মিল, ৪০০টি টেক্সটাইল উইভিং, এক হাজারের বেশি স্পেশালাইজড টেক্সটাইল ও পাওয়ার লুম রয়েছে। নিট ডাইং, ডাইং ও ফিনিশিং খাতে কাজ করছে তিন হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া প্রায় দেড় লাখ হস্তচালিত তাঁত শিল্প কাজ করছে দেশে। এসব প্রতিষ্ঠান প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার তৈরি পোশাক কারখানার ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি দেশীয় বস্ত্র খাতের চাহিদা মেটাচ্ছে।
সম্প্রতি ভারত ও কানাডা বাংলাদেশের বেশ কিছু তৈরি পোশাক পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার ঘোষণা করেছে। এতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাওয়ায় টেক্সটাইল শিল্পে বিনিয়োগ নিয়ে আসছেন উদ্যোক্তারা। তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের ২৮টি দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সবমিলিয়ে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অংশীদারিত্ব বাড়ছে। এজন্য বিনিয়োগকারীরা তৈরি পোশাকের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প টেক্সটাইল খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন বিনিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্র্তারা। এ বিষয়ে স্থানীয় বিনিয়োগ বিভাগের পরিচালক তৌহিদুর রহমান সমকালকে বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের অংশীদারিত্ব বাড়ছে। এই অতিরিক্ত চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে এগোচ্ছেন টেক্সটাইল শিল্পের বিনিয়োগকারীরা। এসব খাতে বিনিয়োগে সরকারের দেওয়া বিভিন্ন প্রণোদনা সুবিধা থাকায় অনেক উদ্যোক্তা তা নিচ্ছেন।

No comments

Powered by Blogger.