সিলেটে পারিবারিক কলহের বলি হলেন রুমা-স্বামীসহ আটক ২

সোহেল আহমদ মাসুদকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তানজিনা আকতার রুমা। কিন্তু বিয়ের ৬ বছর যেতে না যেতেই তাদের জীবনের প্রেম ফুরিয়ে গেল! শেষ পর্যন্ত দাম্পত্য জীবনের তিক্ততার বলি হলেন রুমা। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে রুমা প্রাণ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার মা ও বোন। তাকে খুন করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় বলে ধারণা করছে পুলিশও।


রুমা বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জের ছোট চাময়া গ্রামের সিদ্দিক শরীফের মেয়ে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার আগেই ৪ বছরের ছেলেকে বাসায় রেখে সাত মাসের মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় সোহেল। নগরীর কুমারপাড়া
বি বল্গকের ৩৪/২ নম্বর বাসা থেকে বুধবার রাতে রুমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বাসায় সোহেল-রুমা দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন। ওই রাতেই নগরীর বাগবাড়ীর এক আত্মীয়ের বাসা থেকে সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। সোহেল নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জের বল্লী গ্রামের বক্কু মিয়া বেগের ছেলে। পুলিশ এ সময় সোহেলের বন্ধু শাহেদ আহমদকেও আটক করে।
কোতোয়ালি থানার ওসি খন্দকার নওরোজ আহমদ জানান, রুমার মা খুকি বেগম বাদী হয়ে সোহেল, তার ভাই জুয়েল ও ভাবী নতুনী বেগমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সোহেলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিহত রুমার ছোট বোন সুমাইয়া আকতার সুমি জানান, ২০০৫ সালে প্রেম করে বিয়ে করেন সোহেল ও রুমা। বিয়ের দুই বছর পর থেকে সোহেল বিভিন্ন অজুহাতে রুমাকে নির্যাতন শুরু করে। কয়েক মাস আগে নির্যাতন সইতে না পেরে রুমা সিলেট কোতোয়ালি থানায় সোহেলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর রুমা নগরীর রায়নগরে ছোট বোনের বাসায় ওঠেন। পরে আর নির্যাতন না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রুমাকে আবারও ঘরে ফিরিয়ে নেয় সোহেল। তিনি জানান, বুধবার সকালে রুমা ফোন করে তাকে বলেন, স্বামী সোহেল, ভাসুর জুয়েল ও ভাসুরের স্ত্রী নতুনী বেগম রাতভর তার ওপর নির্যাতন করেছে। সন্ধ্যায় ৬টায় সোহেল সুমিকে ফোন করে রুমার খবর নিতে বলে। পরে সুমি ও তার পরিবারের সদস্যরা বাইরে থেকে বাসা তালাবদ্ধ দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ রাত ১০টায় দরজা ভেঙে রুমার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহ মোবাশ্বির আলী জানান, রুমার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যুর আগে রুমাকে টেনে-হিঁচড়ে মারধর করে গলায় ফাঁস দিয়ে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.