এড জয়েসের দুই যমজ বোন by সামীউর রহমান

মরা শুধুই অনুশীলন করছিলাম, এর বেশি কিছু না। কিন্তু দেয়ালের ওপারে শত শত মানুষ শুধু আমাদের দেখার জন্যই দাঁড়িয়ে। একে অন্যের গায়ে ধাক্কা দিচ্ছে, এমনভাবে আমাদের দেখছে যেন আমরা চাঁদে পা রাখা প্রথম মানুষ। লিভারপুলের অন্ধ সমর্থক হিসেবে আমি জানি, খেলার জন্য কতটা পাগল হলে মানুষ এটা করতে পারে'_২০১১ সালের বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দলের হয়ে খেলতে এসে নিজের দিনপঞ্জিতে বাংলাদেশকে এভাবেই বর্ণনা করেছিলেন


জন মুনি। পেশায় ইলেকট্রিক টেকনিশিয়ান, লেখাপড়াটা শেষ করার জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বছর খানেকের ছুটিও নিয়েছিলেন। প্রায় ৯ মাস পর মহিলা বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে খেলতে এসে এই আইরিশ ক্রিকেটারের দেখা বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো অমিল খুঁজে পাননি ইসোবেল জয়েস। এমনকি ভাই এড জয়েসের কাছ থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে যা কিছু জেনেছেন, তার সঙ্গেও কোনো পার্থক্য নেই। এখানকার প্রকৃতি উষ্ণ, সেই সঙ্গে মানুষের হৃদয়টাও।
আইরিশ মহিলা দলের অধিনায়ক হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন ইসোবেল। এর আগেই অবশ্য জয়েস পরিবারের আরেক সদস্য এসেছিলেন এখানে, ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপ খেলতে ঢাকায় আসা হয়েছিল ভাই এড জয়েসের। তাঁর কাছ থেকেই খানিকটা শুনেছিলেন বাংলাদেশ সম্পর্কে, 'বলেছিল গরমটা খুব ভোগাবে। যদিও এখন তাপমাত্রা অনেক কম, কিন্তু আমাদের জন্য এটাও অনেক গরম। আর বলেছিল মানুষজন খুব আন্তরিক, খুব অতিথিপরায়ণ। এখানে এসেও তাই দেখছি। বাসে করে আমরা আসার সময় লোকে দেখতে পেলেই হাত নাড়ে... আমরা এখানকার কেউ নই, তার পরও আমাদের খেলা দেখতে এসেছে, হাততালি দিয়ে অনুপ্রাণিত করেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এসে খুব ভালো লাগছে।' একই দলে অবশ্য জয়েস পরিবারের আরো এক সদস্য আছেন! তিনি ইসোবেলের যমজ বোন সেসিলা জয়েস। দুই বোনই খেলেন আয়ারল্যান্ডের মহিলা দলে, দুজনেই ব্যাট করতে পছন্দ করেন। দুজনকে আলাদা করতে অনেক সময় সতীর্থরাই ভুল করে বসেন, আর মাথায় হেলমেট থাকলে তো চেনাই মুশকিল। এত মিল থাকলেও পেশায় দুজন আবার দুই মেরুর! ইসোবেল কাজ করেন একটি সংবাদপত্রের সহসম্পাদক হিসেবে, এ ছাড়া হকিরও কোচ তিনি। অন্যদিকে সেসিলা ক্যারিয়ার গড়ছেন আইন পেশায়। সব মিলিয়ে আয়ারল্যান্ডের উইকলো উপকূলের জয়েস পরিবারের পাঁচ ছেলেমেয়েই ক্রিকেটার। সবার বড় অগাস্টিন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেললেও জাতীয় দলে আসতে পারেননি, হয়নি তাঁর। এড জয়েস তো ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড দুই দলের হয়েই খেলেছেন। তার ছোট ডমিনিক খেলেছেন তিনটি ওয়ানডে। সবার শেষে দুই বোন ইসোবেল ও সেসিলা, তাঁরাও হেঁটেছেন ভাইদের দেখানো পথেই।

No comments

Powered by Blogger.