‘সুপাত্র’
পাত্র ডক্টর শরীফুল ইসলাম। অস্ট্রেলিয়া থেকে পিএইচডি করা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (পুলিশ শাখা) সিনিয়র সহকারী সচিব। ঢাকার গুলশানে নিজের বাড়ি। তাঁর জন্য মিষ্টি চেহারার উচ্চশিক্ষিতা পাত্রী প্রয়োজন। এভাবে পত্রিকায় একাধিক বিজ্ঞাপন দিয়ে একে একে পাঁচটি বিয়ে করেছেন। বিজ্ঞাপনে দেওয়া তথ্যগুলোর মধ্যে শুধু ফোন নম্বরটিই সঠিক। বাকি সব ভুয়া। এই ‘সুপাত্রের’ নাম হাফিজুর রহমান ওরফে জাহিদ (৪০)।
থাকেন মিরপুর কমার্স কলেজ সড়কে নিজের ফ্ল্যাটে। গ্রামের বাড়ি বরগুনার আমতলীতে। হাফিজকে গত বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, এই প্রক্রিয়ায় পাঁচটি বিয়ে করেছেন তিনি। আরও অন্তত ১৫ জনকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া স্কলারশিপ (বৃত্তি) নিয়ে বিদেশে পাঠানো, চাকরি দেওয়া ও বদলির কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা নিয়েছেন। সামনে-পেছনে ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়’ লেখা স্টিকার লাগানো চকচকে গাড়িতে চলাফেরা করেন তিনি। বোকা বানিয়ে টাকা আদায় করেছেন পুলিশের কাছ থেকেও। নোয়াখালীর কারাধ্যক্ষকে (জেলার) বোকা বানিয়ে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।
দীর্ঘদিন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে কিছুদিনের জন্য মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন হাফিজ। সেখান থেকে এসেই শুরু করেছেন প্রতারণা। বিয়ের সময় তিনি যে লিখিত জীবনবৃত্তান্ত পাত্রীপক্ষকে দিতেন, তাতে লেখা রয়েছে—বাবা সাবেক যুগ্ম সচিব, বড় ভাই সেনাবাহিনীর কর্নেল, বড় বোন কানাডাপ্রবাসী চিকিৎসক আর অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ছোট বোন বুয়েট থেকে পাস করা প্রকৌশলী।
গ্রেপ্তারের পর পর হাফিজকে পত্রিকায় মিথ্যা বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযোগে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা। তাঁর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা নিয়মিত মামলাও করবেন বলে জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আগারগাঁওয়ে র্যাব-২-এর ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হয় হাফিজকে। সেখানে এসেছিলেন তাঁর দুই স্ত্রী আর কয়েকজন ভুক্তভোগীও।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২-এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাইফুল করিম বলেন, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পশ্চিম রাজাবাজার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর ব্যবহূত গাড়িটি মিরপুরের একটি রেন্ট এ কার থেকে ভাড়া করা।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ বলেন, তিনি এ পর্যন্ত পাঁচটি বিয়ে করেছেন। পত্রিকায় দুই দফা ‘পাত্রী চাই’ বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন সম্ভাব্য পাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকেরা।
হাফিজ বোকা বানিয়েছেন পুলিশকেও। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ময়নামতিতে তাঁর গাড়ি একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে দুর্ঘটনায় পড়লে তিনি থানা পুলিশের মাধ্যমে আটোরিকশার মালিকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করেন।
যোগাযোগ করা হলে কুমিল্লার ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পরিচয় দিয়ে হাফিজ সবাইকে তটস্থ করে রেখেছিলেন। এ কারণে পুলিশ তাঁকে ক্ষতিপূরণ পেতে সাহায্য করেছে।
হাফিজ বোকা বানিয়েছেন নোয়াখালী কারাগারের কারাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলমকেও। তাঁর ভাগনেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন হাফিজ। কারাধ্যক্ষের ভাগনের বন্ধুকে ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিয়েছেন আরও এক লাখ টাকা।
যোগাযোগ করলে মাহবুবুল আলম টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাফিজ তাঁর ভাগনের সঙ্গে সখ্য গড়ে এই টাকা হাতিয়ে নেন। তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁরা অনেক দিন থেকে চেষ্টা করছেন।
হাফিজের ব্যবহূত ভাড়া করা গাড়িটির মালিক রেন্ট এ কার ব্যবসায়ী এস কে মুশতাক আরেফিন। তিনি বলেন, চার মাস ধরে প্রায়ই গাড়িটি ভাড়া নিতেন হাফিজ। গাড়িটি নিয়ে তিনি বান্দরবানসহ বিভিন্ন জায়গায় যেতেন।
হাফিজের প্রথম স্ত্রী জানান, চার মাস ধরে বাসায় আসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন হাফিজ। তাঁর আরেকটি বিয়ে করা এবং বিভিন্ন প্রতারণার কথা শুনতে পান তিনি। তবে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে একাধিক বিয়ে করার কথা তিনি জানতেন না।
র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা জানান, ভুয়া নামেই একাধিক বিয়ে করেছেন হাফিজ। সর্বশেষ সাভারে এক কলেজপড়ুয়া তরুণীকে বিয়ে করেছেন। তরুণীর বাবার সাভারে বেশ কিছু জমি আছে। হাফিজ সেই জমির কিছু অংশ কোটি টাকায় বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ঈদের দুই দিন আগে তাঁর আরেকটি বিয়ে করার কথা ছিল, কিন্তু কোনো কারণে সেটি হয়নি।
র্যাবের সূত্র জানায়, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে বোনের বিয়ের জন্য হাফিজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন একজন। তিনি খোঁজখবর করতে গিয়ে জানতে পারেন, হাফিজের সব পরিচয় ভুয়া। এরপর তিনি বিষয়টি র্যাবকে জানান।
দীর্ঘদিন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে কিছুদিনের জন্য মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন হাফিজ। সেখান থেকে এসেই শুরু করেছেন প্রতারণা। বিয়ের সময় তিনি যে লিখিত জীবনবৃত্তান্ত পাত্রীপক্ষকে দিতেন, তাতে লেখা রয়েছে—বাবা সাবেক যুগ্ম সচিব, বড় ভাই সেনাবাহিনীর কর্নেল, বড় বোন কানাডাপ্রবাসী চিকিৎসক আর অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ছোট বোন বুয়েট থেকে পাস করা প্রকৌশলী।
গ্রেপ্তারের পর পর হাফিজকে পত্রিকায় মিথ্যা বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযোগে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা। তাঁর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা নিয়মিত মামলাও করবেন বলে জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আগারগাঁওয়ে র্যাব-২-এর ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হয় হাফিজকে। সেখানে এসেছিলেন তাঁর দুই স্ত্রী আর কয়েকজন ভুক্তভোগীও।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২-এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাইফুল করিম বলেন, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পশ্চিম রাজাবাজার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর ব্যবহূত গাড়িটি মিরপুরের একটি রেন্ট এ কার থেকে ভাড়া করা।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ বলেন, তিনি এ পর্যন্ত পাঁচটি বিয়ে করেছেন। পত্রিকায় দুই দফা ‘পাত্রী চাই’ বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন সম্ভাব্য পাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকেরা।
হাফিজ বোকা বানিয়েছেন পুলিশকেও। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ময়নামতিতে তাঁর গাড়ি একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে দুর্ঘটনায় পড়লে তিনি থানা পুলিশের মাধ্যমে আটোরিকশার মালিকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করেন।
যোগাযোগ করা হলে কুমিল্লার ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পরিচয় দিয়ে হাফিজ সবাইকে তটস্থ করে রেখেছিলেন। এ কারণে পুলিশ তাঁকে ক্ষতিপূরণ পেতে সাহায্য করেছে।
হাফিজ বোকা বানিয়েছেন নোয়াখালী কারাগারের কারাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলমকেও। তাঁর ভাগনেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন হাফিজ। কারাধ্যক্ষের ভাগনের বন্ধুকে ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিয়েছেন আরও এক লাখ টাকা।
যোগাযোগ করলে মাহবুবুল আলম টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাফিজ তাঁর ভাগনের সঙ্গে সখ্য গড়ে এই টাকা হাতিয়ে নেন। তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁরা অনেক দিন থেকে চেষ্টা করছেন।
হাফিজের ব্যবহূত ভাড়া করা গাড়িটির মালিক রেন্ট এ কার ব্যবসায়ী এস কে মুশতাক আরেফিন। তিনি বলেন, চার মাস ধরে প্রায়ই গাড়িটি ভাড়া নিতেন হাফিজ। গাড়িটি নিয়ে তিনি বান্দরবানসহ বিভিন্ন জায়গায় যেতেন।
হাফিজের প্রথম স্ত্রী জানান, চার মাস ধরে বাসায় আসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন হাফিজ। তাঁর আরেকটি বিয়ে করা এবং বিভিন্ন প্রতারণার কথা শুনতে পান তিনি। তবে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে একাধিক বিয়ে করার কথা তিনি জানতেন না।
র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা জানান, ভুয়া নামেই একাধিক বিয়ে করেছেন হাফিজ। সর্বশেষ সাভারে এক কলেজপড়ুয়া তরুণীকে বিয়ে করেছেন। তরুণীর বাবার সাভারে বেশ কিছু জমি আছে। হাফিজ সেই জমির কিছু অংশ কোটি টাকায় বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ঈদের দুই দিন আগে তাঁর আরেকটি বিয়ে করার কথা ছিল, কিন্তু কোনো কারণে সেটি হয়নি।
র্যাবের সূত্র জানায়, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে বোনের বিয়ের জন্য হাফিজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন একজন। তিনি খোঁজখবর করতে গিয়ে জানতে পারেন, হাফিজের সব পরিচয় ভুয়া। এরপর তিনি বিষয়টি র্যাবকে জানান।
No comments