টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ চুক্তিঃ উদ্বেগ জানায়নি বাংলাদেশ
বাংলাদেশকে না জানিয়ে ভারত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে এগোলেও দিল্লির পুরোনো আশ্বাসেই সন্তুষ্ট ঢাকা। তবে বরাক নদের ওপর টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ বিষয়ে করা চুক্তির বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে খোঁজ নিচ্ছে বাংলাদেশ। টিপাইমুখ বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এনএইচপিসি, এসজেভিএন ও মণিপুর রাজ্য সরকার গত ২২ অক্টোবর একটি যৌথ বিনিয়োগ চুক্তি সই করে।
পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা, টিপাইমুখে বাঁধ ও বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে বিরাট এলাকার পাহাড়-জঙ্গল পানিতে তলিয়ে যাবে। তা ছাড়া টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পর সেটি ভূমিকম্পে ধসে পড়লে আসাম ও বাংলাদেশের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের একটি প্রকল্প নিয়ে ভারত কাজ শুরু করলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো উদ্বেগ জানানো হয়নি। দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক এ করিম গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিপাইমুখ প্রকল্পের ব্যাপারে আমরা ভারতের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছি।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রতিশ্রুতির পরও কেন দিল্লি বাংলাদেশকে না জানিয়ে এ প্রকল্প শুরু করছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
গতকাল সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক শামীম আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ চলছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে দেওয়া আশ্বাসের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। আমরা আশা করছি, সোমবারের মধ্যে টিপাইমুখের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।’
২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশ-ভারত শীর্ষ বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো প্রকল্প টিপাইমুখে নেওয়া হবে না। গত ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে দেওয়া বক্তব্যের সময় এ কথা উল্লেখ করেন তিনি। ভারতের পক্ষ থেকে এটাও বলা হয়েছিল যে বরাক নদে কোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে বাংলাদেশকে জানানো হবে।
মণিপুর রাজ্যের চন্দ্রচূড় জেলায় প্রস্তাবিত এ প্রকল্পে ১৬২ দশমিক ৮০ মিটার উঁচু পাথরের বাঁধের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ছয়টি ইউনিট থাকবে। নয় হাজার ২১১ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ের এ প্রকল্প শেষ হবে ৮৭ মাসে।
সমীক্ষার প্রতিশ্রুতিও রাখেনি: ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ভারতের টিপাইমুখে গিয়েছিল। সফরকারী দলের অন্যতম সদস্য সাংসদ আবদুর রহমান বলেন, বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি ভারত সরকার জানালেও আরও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর এ বিষয়ে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা হয়েছিল। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় বিবিসিকে বলেন, ‘টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ সম্পর্কে আমাদের অবহিত করা হয়েছিল এবং আমরা সেটি সরেজমিনে দেখেছিলামও। সেই অবধি কোনো স্থাপনা সেখানে নির্মিত হয়নি। আরও সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করে তারা তাদের এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে। প্রতিনিধিদলে আমাদের কারিগরি কমিটি ছিল, তারাও সে জিনিসটি তাদের কাছ থেকে বুঝেছে যে ওখানে বাঁধ বা ড্যাম নির্মাণ করা হলে বাংলাদেশ বরং উপকৃত হবে। কারণ বর্ষা মৌসুমে যখন পানি থাকবে, তখন বাংলাদেশ প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পাবে এবং যখন শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকবে না, তখন বাংলাদেশ পানি সেখান থেকে পাবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ বরং সংরক্ষিতই হবে।’
নতজানু পররাষ্ট্রনীতির খেসারত: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা ও অযোগ্যতার কারণেই টিপাইমুখ বাঁধ হচ্ছে। এমনকি নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে এ সরকার ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারছে না।
গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত ‘যোগাযোগ খাতে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি’ শীর্ষক সেমিনারে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
প্রতিবাদ: বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি, টিপাইমুখ বাঁধ প্রতিরোধ কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
গতকাল সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক শামীম আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ চলছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে দেওয়া আশ্বাসের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। আমরা আশা করছি, সোমবারের মধ্যে টিপাইমুখের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।’
২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশ-ভারত শীর্ষ বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো প্রকল্প টিপাইমুখে নেওয়া হবে না। গত ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে দেওয়া বক্তব্যের সময় এ কথা উল্লেখ করেন তিনি। ভারতের পক্ষ থেকে এটাও বলা হয়েছিল যে বরাক নদে কোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে বাংলাদেশকে জানানো হবে।
মণিপুর রাজ্যের চন্দ্রচূড় জেলায় প্রস্তাবিত এ প্রকল্পে ১৬২ দশমিক ৮০ মিটার উঁচু পাথরের বাঁধের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ছয়টি ইউনিট থাকবে। নয় হাজার ২১১ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয়ের এ প্রকল্প শেষ হবে ৮৭ মাসে।
সমীক্ষার প্রতিশ্রুতিও রাখেনি: ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ভারতের টিপাইমুখে গিয়েছিল। সফরকারী দলের অন্যতম সদস্য সাংসদ আবদুর রহমান বলেন, বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি ভারত সরকার জানালেও আরও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর এ বিষয়ে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা হয়েছিল। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় বিবিসিকে বলেন, ‘টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ সম্পর্কে আমাদের অবহিত করা হয়েছিল এবং আমরা সেটি সরেজমিনে দেখেছিলামও। সেই অবধি কোনো স্থাপনা সেখানে নির্মিত হয়নি। আরও সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করে তারা তাদের এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে। প্রতিনিধিদলে আমাদের কারিগরি কমিটি ছিল, তারাও সে জিনিসটি তাদের কাছ থেকে বুঝেছে যে ওখানে বাঁধ বা ড্যাম নির্মাণ করা হলে বাংলাদেশ বরং উপকৃত হবে। কারণ বর্ষা মৌসুমে যখন পানি থাকবে, তখন বাংলাদেশ প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পাবে এবং যখন শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকবে না, তখন বাংলাদেশ পানি সেখান থেকে পাবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ বরং সংরক্ষিতই হবে।’
নতজানু পররাষ্ট্রনীতির খেসারত: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা ও অযোগ্যতার কারণেই টিপাইমুখ বাঁধ হচ্ছে। এমনকি নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে এ সরকার ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারছে না।
গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত ‘যোগাযোগ খাতে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি’ শীর্ষক সেমিনারে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
প্রতিবাদ: বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি, টিপাইমুখ বাঁধ প্রতিরোধ কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
No comments