ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আলোচনা সভায় বক্তারাঃ যুদ্ধাপরাধের বিচার না করে পিছু হটার রাস্তা নেই
যুদ্ধাপরাধের বিচারের ইস্যু থেকে মহাজোট সরকারের পিছু হটার কোনো রাস্তা নেই। চলতি মেয়াদের মধ্যেই যুদ্ধাপরাধের বিচার না হলে আগামী নির্বাচনে মহাজোট সরকারের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাও নেই। আর সরকার এই মেয়াদে এ বিচারকাজ শেষ করতে না পারলে দেশে গণ-আন্দোলন শুরু হওয়ার আশঙ্কা আছে।
গতকাল রাজধানীর ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে ৪০তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় কয়েকজন বক্তা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ‘পঞ্চদশ সংশোধনীর আলোকে বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি মুনতাসীর মামুন।
আলোচনায় একাধিক বক্তা বলেন, বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক দলের পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর বিরোধিতা করার একটাই কারণ, যাতে যুদ্ধাপরাধের বিচার-প্রক্রিয়ার গতি ধীর হয়ে যায়। এ বিষয়ে সরকারের সামান্যতম ভুল পদক্ষেপ দেশ-জাতির জন্য বিশাল সমস্যা বয়ে নিয়ে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাই পঞ্চদশ সংশোধনী পুনর্মূল্যায়ন করার দাবিও জানান তাঁরা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, সংবিধানে এখনো কিছু সাংঘর্ষিক ধারা রয়ে গেছে। এগুলো বিরোধী দল, আইন বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ জনমতের ভিত্তিতে সংশোধন করা যেতে পারে। আর সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার প্রসঙ্গটি এখন আদালতে আছে। রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আদিবাসী-উপজাতি বিতর্ক প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এ নিয়ে বিভ্রান্তি বা বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। এ ক্ষেত্রে বাঙালি জাতিকে বাংলাদেশের বৃহৎ ও পূর্ব অধিবাসী হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে প্রথমবারের মতো সংবিধানের ২৩(ক) ধারায় যুক্ত করা হয়েছে। এর পরও এ বিষয়ে কারও মতামত, সুপারিশ বা আপত্তি থাকলে তা লিখিত আকারে সংবিধান কমিটির কাছে দিতে পারেন। পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন বলেন, ‘বাঙালিদের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আদিবাসীরাও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। এখন জাতিধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে সবাই তাকিয়ে আছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রমের দিকে।’
আদিবাসী-উপজাতি বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রমোদ মানকিন বলেন, ‘এ নিয়ে সবার মধ্যেই বিভ্রান্তি রয়েছে। কারণ, আমরা নিজেদের ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন বর্ণমালা নিয়ে শুরু থেকেই আজও বর্তমান রয়েছি। যেহেতু আমাদের মধ্যকার আদি অভ্যাস এখনো প্রচলিত, তাই নিজেদের আমরা আদিবাসী বলে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। বিষয়টি সরকার পুনর্বিবেচনা করলে দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মনোব্যথা দূর হবে।’
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখেই বলছি, সংবিধানের সাংঘর্ষিক ধারাগুলোর বদল না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর তরুণ প্রজন্মের আস্থা কমে যাবে। আর সাম্প্রদায়িক দলগুলো ওই পরস্পরবিরোধী ধারার সুযোগ নিয়ে দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে “গৃহযুদ্ধ” হিসেবে অভিহিত করবে। তাতে বাধাগ্রস্ত হবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।’ তিনি সংবিধানে উপজাতির বদলে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহারের দাবি জানান।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, সরকারের আড়াই বছর পার হয়েছে। জনগণ বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস-নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বমূল্য নিয়ে জর্জরিত। কিন্তু মহাজোট সরকার যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে না পারে, তবে সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না।
সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে হাসানুল হক ইনু বলেন, আদিবাসী বা উপজাতি না বলে সব কটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সরাসরি পরিচয়, যেমন—মারমা, চাকমা, গারো, সাঁওতাল লেখা যেতে পারে।
মূল প্রবন্ধ পাঠ করে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে একটি বিশেষ মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে সরকারকে কঠোর অবস্থানে অটল থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের জোর দাবি জানিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার যদি এখনই এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে সংবিধানের এই ফাঁক ধরেই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি দেশে অনর্থ ঘটাবে।
আইনজীবী আমীর-উল ইসলাম বলেন, সংবিধানের সাংঘর্ষিক ধারাগুলো দ্রুত বাতিল করা না হলে দেশের সার্বিক অবস্থার অবনতি হতে পারে। তিনি সংবিধান কমিটির কাজের সমালোচনা করে বলেন, একটি ধারার সঙ্গে অপর ধারার পরস্পরবিরোধী সম্পর্কের কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই শিগগির আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে সংবিধানের বিতর্কিত অংশগুলো সমাধানের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
আলোচনায় একাধিক বক্তা বলেন, বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক দলের পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর বিরোধিতা করার একটাই কারণ, যাতে যুদ্ধাপরাধের বিচার-প্রক্রিয়ার গতি ধীর হয়ে যায়। এ বিষয়ে সরকারের সামান্যতম ভুল পদক্ষেপ দেশ-জাতির জন্য বিশাল সমস্যা বয়ে নিয়ে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাই পঞ্চদশ সংশোধনী পুনর্মূল্যায়ন করার দাবিও জানান তাঁরা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, সংবিধানে এখনো কিছু সাংঘর্ষিক ধারা রয়ে গেছে। এগুলো বিরোধী দল, আইন বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ জনমতের ভিত্তিতে সংশোধন করা যেতে পারে। আর সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার প্রসঙ্গটি এখন আদালতে আছে। রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আদিবাসী-উপজাতি বিতর্ক প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এ নিয়ে বিভ্রান্তি বা বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। এ ক্ষেত্রে বাঙালি জাতিকে বাংলাদেশের বৃহৎ ও পূর্ব অধিবাসী হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে প্রথমবারের মতো সংবিধানের ২৩(ক) ধারায় যুক্ত করা হয়েছে। এর পরও এ বিষয়ে কারও মতামত, সুপারিশ বা আপত্তি থাকলে তা লিখিত আকারে সংবিধান কমিটির কাছে দিতে পারেন। পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন বলেন, ‘বাঙালিদের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আদিবাসীরাও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। এখন জাতিধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে সবাই তাকিয়ে আছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রমের দিকে।’
আদিবাসী-উপজাতি বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রমোদ মানকিন বলেন, ‘এ নিয়ে সবার মধ্যেই বিভ্রান্তি রয়েছে। কারণ, আমরা নিজেদের ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন বর্ণমালা নিয়ে শুরু থেকেই আজও বর্তমান রয়েছি। যেহেতু আমাদের মধ্যকার আদি অভ্যাস এখনো প্রচলিত, তাই নিজেদের আমরা আদিবাসী বলে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। বিষয়টি সরকার পুনর্বিবেচনা করলে দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মনোব্যথা দূর হবে।’
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখেই বলছি, সংবিধানের সাংঘর্ষিক ধারাগুলোর বদল না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর তরুণ প্রজন্মের আস্থা কমে যাবে। আর সাম্প্রদায়িক দলগুলো ওই পরস্পরবিরোধী ধারার সুযোগ নিয়ে দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে “গৃহযুদ্ধ” হিসেবে অভিহিত করবে। তাতে বাধাগ্রস্ত হবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।’ তিনি সংবিধানে উপজাতির বদলে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহারের দাবি জানান।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, সরকারের আড়াই বছর পার হয়েছে। জনগণ বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস-নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বমূল্য নিয়ে জর্জরিত। কিন্তু মহাজোট সরকার যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে না পারে, তবে সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না।
সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে হাসানুল হক ইনু বলেন, আদিবাসী বা উপজাতি না বলে সব কটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সরাসরি পরিচয়, যেমন—মারমা, চাকমা, গারো, সাঁওতাল লেখা যেতে পারে।
মূল প্রবন্ধ পাঠ করে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে একটি বিশেষ মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে সরকারকে কঠোর অবস্থানে অটল থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের জোর দাবি জানিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার যদি এখনই এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে সংবিধানের এই ফাঁক ধরেই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি দেশে অনর্থ ঘটাবে।
আইনজীবী আমীর-উল ইসলাম বলেন, সংবিধানের সাংঘর্ষিক ধারাগুলো দ্রুত বাতিল করা না হলে দেশের সার্বিক অবস্থার অবনতি হতে পারে। তিনি সংবিধান কমিটির কাজের সমালোচনা করে বলেন, একটি ধারার সঙ্গে অপর ধারার পরস্পরবিরোধী সম্পর্কের কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই শিগগির আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে সংবিধানের বিতর্কিত অংশগুলো সমাধানের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
No comments