পুলিশের জন্য ২১৪টি পিকআপঃ কেনার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন by কামরুল হাসান
বাংলাদেশ পুলিশের জন্য ২১৪টি দ্বৈত কেবিন পিকআপ কেনা হচ্ছে। এসব গাড়ি সরবরাহের ক্রয়াদেশ পেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ফোর্ড মোটরের এসব গাড়ি কেনার জন্য প্রগতি কানাডার এক এজেন্টের মাধ্যমে ঋণপত্র (এলসি) খুলেছে। ওই প্রতিষ্ঠানটিকে ফোর্ডের রপ্তানি পরিবেশক এজেন্ট বলা হলেও ফোর্ডের ওয়েবসাইটে তাদের নাম পাওয়া যায়নি। অভিযোগ উঠেছে, এ গাড়ি কেনায় গণখাতে ক্রয় নীতিমালাও (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-পিপিআর) লঙ্ঘন করা হয়েছে।
পিপিআরের ৭৬(ছ) ধারা অনুযায়ী, কেবল সরকারি শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত পণ্যই সরকারি অর্থে সরাসরি কেনা যাবে। কিন্তু এসব গাড়ি প্রগতির নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত বা সংযোজন হচ্ছে না। প্রতিযোগিতামূলক দরে এসব গাড়ি কিনতে দরপত্রও আহ্বান করা হয়নি। প্রগতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, সেটা দেখার দায়িত্ব প্রগতির নয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। প্রগতির কাজ সরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে সম্পূর্ণ তৈরি গাড়ি কেনা, সংযোজন ও সরবরাহ করা।’
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (ইএনটি) মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, প্রগতির মাধ্যমে গাড়ি কেনার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্ত রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে (নভেম্বর) গাড়িগুলো আসবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বিভিন্ন থানার জন্য দ্বৈত কেবিন পিকআপ কিনতে মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম দফায় ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে এ বরাদ্দ বাড়ানো হয়। পুলিশ সদর দপ্তর গাড়িগুলো প্রতিযোগিতামূলক দরে কেনার জন্য দরপত্র না ডেকে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে দর চায়। প্রগতি প্রথমে মাত্র দুটি গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের (জাপানের মিৎসুবিশি করপোরেশন ও যুক্তরাজ্যের ফোর্ড মোটর কোম্পানি) দর পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠায়। ওই দর অস্বাভাবিক হওয়ায় আবার দর চাওয়া হয়। তখন প্রগতি কিছুটা কমিয়ে নতুন দর দেয়। দুই প্রতিষ্ঠানের দরে সামান্য হেরফের হওয়ায় পুলিশ সদর দপ্তর ফোর্ড মোটরের গাড়ি সরবরাহের জন্য প্রগতিকে আদেশ দেয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ-সংক্রান্ত কাগজপত্রে দেখা যায়, এসব পিকআপের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা, জানালা, দরজা ও গিয়ার-ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়। শুল্ক বাদে প্রতিটি গাড়ির দাম প্রায় ১৮ লাখ ১০ হাজার টাকা (২৩ হাজার ৮৫০ মার্কিন ডলার)। প্রগতি গাড়িপ্রতি কমিশন পাবে ৪০০ ডলার।
প্রগতির সূত্র জানায়, ফোর্ডের স্থানীয় এজেন্টের কাছ থেকে পাওয়া দরের ভিত্তিতে পুলিশের জন্য কানাডা থেকে সম্পূর্ণ তৈরি (সিবিইউ) গাড়ি আমদানি করা হচ্ছে। ফোর্ড মোটর কোম্পানি সরাসরি গাড়ি বিক্রি করবে না। তাই গাড়িগুলো আনা হচ্ছে কানাডায় ফোর্ডের এজেন্ট বলে দাবি করা ট্রায়ম্ফ ইনকরপোরেটের মাধ্যমে। ঋণপত্র খোলাসহ যাবতীয় কাগজপত্রও তৈরি হয়েছে ট্রায়ম্ফের নামে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাগজপত্রে ট্রায়ম্ফ ইনকরপোরেটের ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে বার্নহ্যামথর্প রোড, পশ্চিম, ম্যাসিসগা অন্টারিও, কানাডা। ইন্টারনেটে দেখা যায়, একটি ভবনের দুটি স্যুইট নিয়ে ট্রায়ম্ফের কার্যালয়। প্রতিষ্ঠানে মাত্র একটি নম্বর। তাতেই টেলিফোন ও ফ্যাক্সের ব্যবহার করা হয়। ঢাকা থেকে সম্প্রতি ওই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কারও সাড়া মেলেনি। ফোর্ড মোটরের ওয়েবসাইটে তাদের রপ্তানি পরিবেশক হিসেবে ট্রায়ম্ফের নাম পাওয়া যায়নি।
প্রগতির কারখানায় সংযোজিত গাড়ি সরবরাহ না করে সম্পূর্ণ তৈরি গাড়ি সরবরাহ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রগতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রগতির বিধি অনুসারে তাঁরা সম্পূর্ণ তৈরি ও নিজ কারখানায় সংযোজিত—দুই ধরনের গাড়িই সরবরাহ করতে পারেন। সরাসরি ফোর্ড থেকে না কিনে কেন অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনা হচ্ছে—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফোর্ড সরাসরি গাড়ি বিক্রি করে না। তাই ট্রায়ম্ফ থেকে কেনা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এভাবে গাড়ি কেনা পিপিআরের লঙ্ঘন। এ ছাড়া পুলিশ এর আগে ফোর্ড গাড়ি ব্যবহার করেনি। দেশে ফোর্ডের মেরামত কারখানা নেই, খুচরা যন্ত্রাংশও সহজলভ্য নয়। ফলে গাড়ি নষ্ট হলে অকেজো হয়ে যাবে। তাঁরা দাবি করেন, উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করলে এর চেয়ে কম দামে আরও ভালো প্রতিষ্ঠানের গাড়ি কেনা যেত।
এ প্রসঙ্গে প্রগতির উপমহাব্যবস্থাপক (ক্রয়) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, প্রগতি মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এ কারণে অন্য প্রতিষ্ঠানের দাম দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পুলিশ স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চেয়েছে। স্বয়ংক্রিয় গাড়ি হওয়ায় দাম বেড়েছে। ম্যানুয়াল হলে দাম কম হতো।
পিপিআর লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (পুলিশ) নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পিপিআর লঙ্ঘন হয়নি। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনার কারণে দামের হেরফের হতে পারে। এতে সরকারের এক খাতের টাকা অন্য খাতে যাবে। বাইরের লোকজনের পকেটে যাওয়ার সুযোগ কম।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বাইরে পুলিশের কোনো কেনাকাটার সুযোগ নেই। সব যাচাই করার পরই মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (ইএনটি) মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, প্রগতির মাধ্যমে গাড়ি কেনার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্ত রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে (নভেম্বর) গাড়িগুলো আসবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বিভিন্ন থানার জন্য দ্বৈত কেবিন পিকআপ কিনতে মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম দফায় ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে এ বরাদ্দ বাড়ানো হয়। পুলিশ সদর দপ্তর গাড়িগুলো প্রতিযোগিতামূলক দরে কেনার জন্য দরপত্র না ডেকে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে দর চায়। প্রগতি প্রথমে মাত্র দুটি গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের (জাপানের মিৎসুবিশি করপোরেশন ও যুক্তরাজ্যের ফোর্ড মোটর কোম্পানি) দর পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠায়। ওই দর অস্বাভাবিক হওয়ায় আবার দর চাওয়া হয়। তখন প্রগতি কিছুটা কমিয়ে নতুন দর দেয়। দুই প্রতিষ্ঠানের দরে সামান্য হেরফের হওয়ায় পুলিশ সদর দপ্তর ফোর্ড মোটরের গাড়ি সরবরাহের জন্য প্রগতিকে আদেশ দেয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ-সংক্রান্ত কাগজপত্রে দেখা যায়, এসব পিকআপের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা, জানালা, দরজা ও গিয়ার-ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়। শুল্ক বাদে প্রতিটি গাড়ির দাম প্রায় ১৮ লাখ ১০ হাজার টাকা (২৩ হাজার ৮৫০ মার্কিন ডলার)। প্রগতি গাড়িপ্রতি কমিশন পাবে ৪০০ ডলার।
প্রগতির সূত্র জানায়, ফোর্ডের স্থানীয় এজেন্টের কাছ থেকে পাওয়া দরের ভিত্তিতে পুলিশের জন্য কানাডা থেকে সম্পূর্ণ তৈরি (সিবিইউ) গাড়ি আমদানি করা হচ্ছে। ফোর্ড মোটর কোম্পানি সরাসরি গাড়ি বিক্রি করবে না। তাই গাড়িগুলো আনা হচ্ছে কানাডায় ফোর্ডের এজেন্ট বলে দাবি করা ট্রায়ম্ফ ইনকরপোরেটের মাধ্যমে। ঋণপত্র খোলাসহ যাবতীয় কাগজপত্রও তৈরি হয়েছে ট্রায়ম্ফের নামে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাগজপত্রে ট্রায়ম্ফ ইনকরপোরেটের ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে বার্নহ্যামথর্প রোড, পশ্চিম, ম্যাসিসগা অন্টারিও, কানাডা। ইন্টারনেটে দেখা যায়, একটি ভবনের দুটি স্যুইট নিয়ে ট্রায়ম্ফের কার্যালয়। প্রতিষ্ঠানে মাত্র একটি নম্বর। তাতেই টেলিফোন ও ফ্যাক্সের ব্যবহার করা হয়। ঢাকা থেকে সম্প্রতি ওই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কারও সাড়া মেলেনি। ফোর্ড মোটরের ওয়েবসাইটে তাদের রপ্তানি পরিবেশক হিসেবে ট্রায়ম্ফের নাম পাওয়া যায়নি।
প্রগতির কারখানায় সংযোজিত গাড়ি সরবরাহ না করে সম্পূর্ণ তৈরি গাড়ি সরবরাহ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রগতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রগতির বিধি অনুসারে তাঁরা সম্পূর্ণ তৈরি ও নিজ কারখানায় সংযোজিত—দুই ধরনের গাড়িই সরবরাহ করতে পারেন। সরাসরি ফোর্ড থেকে না কিনে কেন অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনা হচ্ছে—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফোর্ড সরাসরি গাড়ি বিক্রি করে না। তাই ট্রায়ম্ফ থেকে কেনা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এভাবে গাড়ি কেনা পিপিআরের লঙ্ঘন। এ ছাড়া পুলিশ এর আগে ফোর্ড গাড়ি ব্যবহার করেনি। দেশে ফোর্ডের মেরামত কারখানা নেই, খুচরা যন্ত্রাংশও সহজলভ্য নয়। ফলে গাড়ি নষ্ট হলে অকেজো হয়ে যাবে। তাঁরা দাবি করেন, উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করলে এর চেয়ে কম দামে আরও ভালো প্রতিষ্ঠানের গাড়ি কেনা যেত।
এ প্রসঙ্গে প্রগতির উপমহাব্যবস্থাপক (ক্রয়) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, প্রগতি মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এ কারণে অন্য প্রতিষ্ঠানের দাম দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পুলিশ স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চেয়েছে। স্বয়ংক্রিয় গাড়ি হওয়ায় দাম বেড়েছে। ম্যানুয়াল হলে দাম কম হতো।
পিপিআর লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (পুলিশ) নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পিপিআর লঙ্ঘন হয়নি। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনার কারণে দামের হেরফের হতে পারে। এতে সরকারের এক খাতের টাকা অন্য খাতে যাবে। বাইরের লোকজনের পকেটে যাওয়ার সুযোগ কম।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বাইরে পুলিশের কোনো কেনাকাটার সুযোগ নেই। সব যাচাই করার পরই মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে।
No comments